
07/08/2025
ডিম পাড়ার সময় কোকাটেল পাখির যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে কিছু বিশেষ সতর্কতা এবং পরিচর্যা প্রয়োজন, যাতে মা পাখি ও ডিমগুলো সুস্থ থাকে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:
১. পুষ্টিকর খাবার
ডিম পাড়ার সময় পাখির শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান খরচ হয়। তাই এ সময় তার খাদ্যে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
* ক্যালসিয়াম: পাখির খাঁচায় ক্যাটল ফিশ বোন (Cuttlefish Bone) বা মিনারেল ব্লক রাখুন। এটি ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। ডিমের খোসা গুঁড়ো করে খাবারের সাথে মিশিয়েও দিতে পারেন।
* সফট ফুড: নরম খাবার যেমন- ডিম সিদ্ধ (খোসা সহ), ভেজানো ছোলা, ভুট্টা, অঙ্কুরিত গম ইত্যাদি দিন।
* সবুজ শাক-সবজি: পালংশাক, ধনেপাতা, পুঁইশাক, ব্রকলি, এবং অন্যান্য সবুজ শাক-সবজি দিন। এগুলো ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎস।
* পানি: সব সময় পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখুন।
২. পরিবেশ ও নিরাপত্তা
ডিম পাড়ার সময় পাখি খুবই সংবেদনশীল থাকে। তাই তার জন্য একটি শান্ত ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
* শান্ত পরিবেশ: খাঁচাটি এমন জায়গায় রাখুন যেখানে কোনো ধরনের কোলাহল বা অতিরিক্ত মানুষের আনাগোনা নেই।
* নিরাপত্তা: বিড়াল, কুকুর বা অন্য কোনো প্রাণী থেকে পাখিকে দূরে রাখুন।
* গোপনীয়তা: ডিম পাড়ার জন্য একটি বক্স বা হাঁড়ি দিন। এটি পাখির জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করবে এবং সে স্বস্তিতে ডিম পাড়তে পারবে।
৩. ডিমের যত্ন
ডিম পাড়ার পর কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।
* ডিম চেক করা: নিয়মিত ডিমগুলো পরীক্ষা করে দেখুন যে সেগুলো উর্বর কিনা। যদি ডিমের রঙ বা গঠনে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখেন, তাহলে সে বিষয়ে সচেতন হন।
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: হাঁড়ি বা বক্সের ভেতরটা পরিষ্কার রাখুন। ডিমের নিচে কোনো ময়লা বা নোংরা জিনিস যেন না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
* হাঁড়িতে তা দেওয়া: সাধারণত মা ও বাবা পাখি পালা করে ডিমে তা দেয়। তাদের এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে বাধা দেবেন না।
৪. পাখির আচরণ পর্যবেক্ষণ
এ সময় পাখির আচরণে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে, যেমন:
* তলপেট ফুলে যাওয়া: ডিম পাড়ার আগে মা পাখির তলপেট ফুলে যায় এবং সে বেশি সময় হাঁড়িতে বসে থাকে।
* কম খাওয়া: ডিম পাড়ার আগে সে স্বাভাবিকের চেয়ে কম খেতে পারে।
* আক্রমণাত্মক আচরণ: সে নিজের ডিমের সুরক্ষার জন্য একটু আক্রমণাত্মক আচরণ করতে পারে।
৫. কিছু সতর্কতা
* অতিরিক্ত গরম: অতিরিক্ত গরম খাবার বা পরিবেশ পাখির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
* বারবার বিরক্ত করা: ডিম পাড়ার পর পাখিকে বারবার বিরক্ত করা বা ডিমের হাঁড়িতে হাত দেওয়া উচিত নয়। এতে পাখি ভয় পেয়ে ডিম নষ্ট করে দিতে পারে।
* রোগের লক্ষণ: যদি পাখির মধ্যে কোনো অস্বাভাবিক আচরণ, যেমন: দুর্বলতা, খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া, অতিরিক্ত মলত্যাগ ইত্যাদি দেখেন, তাহলে দ্রুত একজন পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
এই সময়ে যথাযথ যত্ন নিলে আপনার কোকাটেল পাখি সুস্থ ডিম ও বাচ্চা দিতে সক্ষম হবে।