
19/09/2025
#শাশুড়ী রোজ রাতে চুরি করে খাবার খায়। একদিন দুইদিন হলেও বিষয়টা স্বাভাবিক ছিল কিন্তুু রোজ রাতে #খাবার চুরি করে খাওয়া ব্যাপারটা আমার বেশ ভাবালো। আমি ইতু। বিয়ে হয়ে এই খান বাড়িতে এসেছি সবে সাতদিন। কিন্তুু বিয়ে তৃতীয়দিন জল খেতে খাবার ঘরে আসতেই দেখি শাশুড়ীমা চুপিচুপি ফ্রিজ খুলে কিছু খাচ্ছেন আর বারবার চারিদিকে তাকিয়ে দেখছেন কেউ দেখলো কি না? আমি ভাবলাম হয়তো খিদে পেয়েছে তাই খাচ্ছে। তাই মুচকি হেসে ওনার অগোচরে চলে গেলাম। কিন্তুু পরেরদিন ও এই একই ঘটনা দেখলাম। এইভাবে আজ পরপর ৪ দিন তবুও দেখি উনি লুকিয়ে খাবার খাচ্ছে। অথচ সবার সাথে বসে উনিও খাবার খায়। আজকে রাতে তো আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওনাকে পেট ভরে মাংস ভাত খাইয়েছি কিন্তুু তবুও রাতে এইভাবে উঠে কেন খাচ্ছে?
মনের মধ্যে নানারকম প্রশ্ন জেগে উঠলো তাই অত না ভেবে মনেমনে ঠিক করলাম শাশুড়ী মাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করবো উনি কেন এরকম করেন? আর খিদে পেতেই পারে তার জন্য এরকম লুকিয়ে খাওয়ার কি আছে।
আমি রান্নাঘরের দিকে পা বকড়াবো তখনই পেছন থেকে আমার স্বামী হাবিব আমার হাত ধরে বলে, কি করছো ইতু এখানে? আমি তোমাকে কখন থেকে খুজছি। চলো।
আমি এইসবকিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।
পরেরদিন সকালে আমি আর হাবিব আঠরা ভাঙাতে আমার বাবার বাড়ি আসলাম। সব ঠিক থাকলেও ঘটনাটা আমার মনকে বারবার অশান্ত করে তুলছিল। মা বোধয় বিষয়টা বুঝতে পেরেছিল। তাই আমাকে ডেকে মাথায় তেল দিতে দিতে বললো, কিছু নিয়ে কি তুই চিন্তা করছিস মা?
আমি একবার ভাবলাম সবটা বলি কিন্তুু আবার ভাবলাম না থাক। বিষয়টা আমি নিজেই সমাধান করবো।তাই হেসে বললাম, না মা। আসলে আবার তোমাদের ছেড়ে চলে যেতে হবে তো তাই একটু মন খারাপ হচ্ছে।
মা বললো, এখন তো একটু মন খারাপ হবে তারপর দেখবি কিছুদিন গেলেই ওইটাই আপন লাগবে। স্বামীর ঘরই যে মেয়েদের আপন ঠাই।
আমি মাথা নাড়ালাম তারপর মায়ের কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করলাম। এক অন্যরকম শান্তিতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম টেরই পেলাম না।
---
#দুইদিন পর বাবার বাড়ি থেকে ফিরে আসলাম। দিনগুলো বেশ ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিল। তবে সেই রাতের দৃশ্যগুলো আমার মনে বারবার ফিরে আসছিল। অবশেষে একদিন সাহস করে আমার বড় জায়ের কাছে কথাটা তুলে ফেললাম।
— "ভাবী, আপনি কিছু না মনে করলে আমি কিছু একটা বলতে চাইছিলাম…
#ভাবী বললেন, কি বলবে বলো? তুমি আমাকে নিজের বোনের মতোই ভাবতে পারো।
আমি ধীর স্থীর হয়ে বললাম, ভাবী মা রোজ রাতে ফ্রিজ খুলে লুকিয়ে লুকিয়ে খায়। একদিন দুইদিন হলে তাও হতো কিন্তুু......
#ভাবী আমার কথা শুনে মুচকি হেসে দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
— "ওটা আসলে খাওয়ার জন্য না, ইতু। ওনার এক মানসিক অসুখ আছে। বাইরে থেকে বোঝা যায় না। ডাক্তাররা বলেন, ওটা একধরনের ‘ফুড অ্যানজাইটি’। মানে, সবসময় মনে হয় খাবার শেষ হয়ে যাবে, তাই লুকিয়ে খাবার খুঁজে বের করে খান। অথচ আসলেই কিছুই খান না, বরং এমন অভিনয় করেন যেন গোপনে ভুরিভোজ করছেন।"
আমি অবাক হয়ে বললাম, "কিন্তু এমন কেন হলো?"
ভাবী মাথা নিচু করে বললো,
"অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে, ওষুধও খেয়েছেন। কিন্তু পুরোপুরি সারেনি। ছোটবেলায় ভীষণ অভাবে বড় হয়েছেন তিনি। সেই ভয়টা আজও মনের মধ্যে বেঁচে আছে।"
কথাটা শুনে মুহূর্তে বুকটা হু হু করে উঠলো আমার। মনেমনে শাশুড়ী মায়ের জন্য ভীষণ মায়া লাগলো। তাঁর চোখেমুখের লুকোনো আতঙ্ক যেন এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমি। মনের অজান্তেই চোখ থেকে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো। ভাবী বললো, মন খারাপ করো না ইতু। এমনিতে উনি সুস্থ শুধু রাত হলেই আতঙ্ক ওনাকে ঘিরে ধরে। যদিও তুমি ওনার কাছে গেলে আর তোমাকে বুঝতে দেবে না। চিন্তা করো না।
আমি ভাবীর কথায় সম্মতি জানিয়ে চোখের জল মুছে ভাবীকর কাজে সাহায্য করতে লাগলাম। আমার স্বামীরা দুই ভাই। হাবিবই ছোট। বড় ভাইয়ের ছোট একটা মেয়েও আছে। বয় তিন বছরের নাম পরি দেখতেও পরি। সবকিছু মিলিয়ে সবার সাথে ভালোভাবেই দিনগুলো এভাবেই কেটে যেতে লাগলো। আমি এখন আর অবাক হই না রাতের বেলা শাশুড়ী কে ফ্রিজ খুলতে দেখে বরং যখনই তাঁকে রাতের বেলা চুপি সারে খাবার ঘরে যেতে দেখি, মায়ায় ভরে ওঠে মন। যেন নিজের অজান্তেই আমিও তাঁর অদ্ভুত অভ্যাসের সঙ্গী হয়ে গেছি।
কিন্তুু একদিন রাত দুটো নাগাদ হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গেল আমার। রান্নাঘর থেকে শব্দ আসছে শুনেই বুঝলাম—আবারও নিশ্চয়ই শাশুড়ীরা রান্নাঘরে । কি মনেকরে সমিও চুপিচুপি পা টিপে টিপে রান্নাঘরের দিকে এগোলাম।
ফ্রিজের দরজা খোলা, ভেতরের আলো ছড়িয়ে পড়েছে। আমি নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কিন্তু অন্যদিনেে চেয়ে এইবার দৃশ্যটা আলাদা।
চলবে......
#গল্প_গোপন_বাক্স
পর্বঃ (১)
আপনারা অনেকেই অভিযোগ করেন যে প্রতিটা গল্পের প্রথম পর্ব পড়েন কিন্তু পরে পর্বগুলো আর পড়তে পারেন না মানে খুঁজে পান না।
আসলে এই সমস্যাগুলো হওয়ার কারণ হলো আপনারা সম্ভবত পেজটিকে ফলো করে রাখেননি।
যদি গল্পগুলো ভালো লাগে তাহলে পরবর্তী পর্বগুলো পাওয়ার জন্য পেজটিকে ফলো করে রাখতে হবে।
তাই পেইজে নতুন না থাকলে পরবর্তী পর্ব পাওয়ার জন্য পেজটিকে ফলো করে রাখুন।
আর যদি এমন হয় যে পেজ ফলো করা আছে তবুও পরবর্তী পর্বগুলো পাচ্ছেন না তাহলে দয়া করে পেইজের পোস্টে লাইক এবং কমেন্ট করবেন আশা করি তাহলে প্রতিটি পর্ব পোস্ট করার সাথে সাথে আপনাদের সামনে চলে যাবে।
ধন্যবাদ 🥰
ার_ইচ্ছা ゚