01/08/2024
হারুনকে আল্লাহ্ কেন পুরো জাতির সামনে বেইজ্জতি করলো তার একটা নমুনা দেখুন৷ ............
রমজানের মাঝামাঝি সময় আমাকে একের পর এক রিমান্ডে নিচ্ছে। এক থানা থেকে অন্য থানায়!
সিরিয়াল পড়ল তেজগাঁও থানায়। বিকেল ৫টা। হঠাৎ এসআই শোয়েব আসলো- আমার শরীরের মাপ নিচ্ছে, কাপড় বানালে দর্জি যেমন মাপ নেয়!
আমি কিছুই বুঝতেছিলাম না, তবে মাথায় শুধু একটাই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে কেন মাপ নিল..?
বুঝে আসলো রাত ১২টার দিকে, মামলার আইও শোয়েব বলল, হুজুর লকাপ থেকে বের হয়ে আসেন, এক জায়গায় যেতে হবে। আমি ত অবাক, এত রাতে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
তেজগাঁও থানার সামনে থেকে গাড়িতে উঠানো হলো।
সাথে গাড়িতে ওসি তদন্ত শাহ আলম (বাড়ি নেত্রকোনা মদনপুর), এসআই শোয়েব ও গাড়ির ড্রাইভার নাম মনে নেই!
চোখের সামনে কাপড় বেঁধে দিল কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বুঝার উপায় নেই কিছুক্ষণ পর মানুষের হই হুল্লোড় শুনে বুঝতে পারলাম কাওরান বাজার জ্যামের কারনে গাড়ি অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেওয়া হলো!
গাড়ি থামল। জোর করে আমার পাঞ্জাবী খোলা হল, লুঙ্গি খোলা হলো। আমার মাপের একটা শার্ট এবং প্যান্ট পরানো হলো, তখন বুঝতে পারলাম, কেন দিনের বেলা মাপ নেওয়া হয়েছিল!
গাড়ি থেকে আমাকে শার্ট প্যান্ট পরা অবস্থায় ধরে ধরে নামানো হলো। চোখ খুললে নিজেকে একটা লাল বোরকা পকিহিত মেয়ের কাছে দেখে আমার অন্তরাত্মা কাঁপে- হায় আল্লাহ, না জানি আমার সাথে কি হতে যাচ্ছে আজ.?
আয় হায় চারদিকে অসংখ্য ক্যামেরা নিয়ে বসে আছে লোকজন, সামনে একটা নদীর মতো খাল, বসার জন্য সিড়ি করা সুন্দর জায়গা উপরে সুন্দর সুন্দর গাছ একবার ঢাকার হাতিরঝিল লেকে যাওয়া যে কেউ চিনতে পারবে জায়গাটা!
চারদিকে সুনশান নিরবতা আসার সময় একবার হাত দিয়ে চোখের কাপড়টা সরিয়ে দেখেছিলাম রাস্তার প্রবেশপথে অনেকগুলো পুলিশের গাড়ি! বুঝতে বাকি রইলো না দুই পাশে রাস্তা পুলিশ দিয়ে বন্ধ করা!
ভেবেছিলাম চিৎকার দিব, তখনই মনে হলো রাস্তা ত বন্ধ- আমার আওয়াজ কেউ শুনবে না হঠাৎ একটা ইনডিপেনডেন্ট চ্যানেলের গাড়ি রাস্তায় এসে গেল। মনে একটু আশা জেগেছিল- সাংবাদিকদের গাড়ি চলে এসেছে, হয়তো আমাকে আর কিছু করতে পারবে না!
কিন্তু ওরা সবাই রাগে ফায়ার হুমকি ধামকি দিয়ে সরিয়ে দিল গাড়িটাকে!
এবার মেয়েটা আমাকে জড়িয়ে ধরছে, আমি হাত সরিয়ে নিব, ঠিক তখনই জোর করে আমাকে আরেকজন মেয়েটার হাতে হাত তুলে দিচ্ছে! ধমক দিচ্ছে। গালি দিচ্ছে! জোরে একটা চাপ দিয়ে বসিয়ে ফেলছে, আর চারদিকে ছবি তুলছে!
আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছিল। উপরদিকে তাকিয়ে আল্লাহকে বলছিলাম, মালিক, তুমি ত সব দেখছ! তারপর আমার হাতে একটা সিগারেট ধরিয়ে দিলো। আমি ফেলে দিলাম। গালি দিয়ে ধমক দিয়ে হাতে চাপ দিয়ে আবার সিগারেট ধরিয়ে দিলো। এসবকিছু হচ্ছে অনেকগুলো ক্যামেরা অন অবস্থায়!
নিজেকে কতটা অসহায় মনে হয়েছিল বলতে পারব না, শুধু মনে হচ্ছিল এই দুনিয়ায় আমার আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই, আর আমার চেয়ে অসহায়ও কেউ নাই!
কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে যাচ্ছিল! গাড়িতে উঠানো হলো,আমার অতিরিক্ত কান্না দেখে ওসি তদন্ত শাহ আলম ও এসআই শোয়েব ওদের খুব কষ্ট হচ্ছিল। ওরা বলল, হুজুর আমাদের কোন দোষ নেই, আমাদের জন্য বদদোয়া কইরেন না! ঘটনাটা ২০২১ সালের এপ্রিলে রমজানের মাঝামাঝি সময়ে!
তখন তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুনুর রশিদ, বর্তমান ডিবি প্রধান। আমি তখন ওদেরকে বললাম, আচ্ছা আপানারা যে আমার সাথে এইরকম করলেন, সেটা কি হারুন সাহেব জানেন? তখন উভয়ই বলল, হুজুর এই নাটকের পরিচালক হারুন স্যার!
সেদিন তেজগাঁও থানায় তাহাজ্জুদ পরে সারারাত হাটুর উপর ভর করে গলা উচু করে দু‘হাত উপরে তুলে এত কান্না করেছি! শুধু একটাই দোয়া করেছিলাম, মালিক আপনি ছাড়া কেউ নাই আমাকে যারা লাঞ্চিত অপমানিত করেছে, তাদের বিচার আপনি করবেন! শেষ কথা, আল্লাহ ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না!
[বিঃ দ্রঃ আমার এই বিষয়টা কারাগারে থাকা দেশের বড় বড় সমস্ত আলেমগনই জানেন! আমি সবাইকে বলেছি। এমনকি আমি চিৎকার করে আদালতে বিচারকের সামনেও বলেছি!]
============
আল্লাহ বিচার করেছেন- সারা দেশের মানুষের কাছে সেই হারুন এখন উলঙ্গ!
(লিখেছেন শিশু বক্তা খ্যাত জনাব মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী )