11/09/2024
১১ সেপ্টেম্বর: ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়
আজ থেকে ২৩ বছর আগে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, নিউ ইয়র্কে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলা বিশ্ববাসীর জন্য এক চরম আতঙ্কের দিন হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ৩,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়, যা আধুনিক যুগের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সকালের দিকে চারটি বাণিজ্যিক যাত্রীবাহী বিমান আল-কায়েদা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের দ্বারা হাইজ্যাক করা হয়। দুটি বিমান নিউ ইয়র্ক সিটির ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে আঘাত করে। প্রথম বিমানটি সকাল ৮:৪৬ মিনিটে উত্তর টাওয়ারে এবং দ্বিতীয়টি ৯:০৩ মিনিটে দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে। এরপর, মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে দুটো টাওয়ারই ভেঙে পড়ে, যা শহরটিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।
একই সময়ে, তৃতীয় বিমানটি আঘাত হানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে, এবং চতুর্থ বিমানটি পেনসিলভানিয়ার একটি মাঠে বিধ্বস্ত হয়, যখন যাত্রীরা হাইজ্যাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এই হামলায় প্রায় ৩,০০০ মানুষের মৃত্যু ঘটে, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বজুড়ে একটি অভূতপূর্ব শোকের মুহূর্ত তৈরি করে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পাশাপাশি আশপাশের বেশ কিছু ভবন ধ্বংস হয় এবং বড় পরিসরে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় যুক্তরাষ্ট্র।
এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে নামার ঘোষণা দেয়, যা “ওয়ার অন টেরর” নামে পরিচিত। এর ফলস্বরূপ আফগানিস্তানে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়, যা পরবর্তী দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলে। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নতুন সংস্থা যেমন- ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (TSA) গঠন করা হয়।
১১ সেপ্টেম্বরের আক্রমণের প্রভাব কেবল যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ থাকেনি; এটি সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক সম্পর্ককে পরিবর্তিত করেছে। বিভিন্ন দেশ সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
প্রতি বছর ১১ সেপ্টেম্বরকে যুক্তরাষ্ট্রে "Patriot Day" হিসেবে পালন করা হয়, যেখানে নিহতদের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। নিউ ইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ধ্বংসাবশেষের উপর গড়ে তোলা **৯/১১ মেমোরিয়াল মিউজিয়াম** বিশ্ববাসীর জন্য এক শোকাবহ স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে।
৯/১১-এর ঘটনা আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয় যে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় একতাবদ্ধ হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।