Voice of Kachalong

Voice of Kachalong Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Voice of Kachalong, Media/News Company, Kachalong, Rangamati.

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম গণহত্যা ; কলমপতি গণহত্যা____________________________________________১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর গ...
25/03/2025

পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম গণহত্যা ; কলমপতি গণহত্যা
____________________________________________

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যকার ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙালিদের কর্তৃক পাহাড়ীদের উপর কমপক্ষে ১৩টি গণহত্যা চালানো হয়। বাংলাদেশ সরকার এই গণহত্যাগুলোর একটিরও বিচার এখনও পর্যন্ত করেনি। এমনই এক নৃসংশ গণহত্যা সংঘটিত হয় ১৯৮০ সালের ২৫ মার্চের আজকের এই দিনে যা সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙালি কর্তৃক সংগঠিত পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম গণহত্যা হিসেবে গণ্য করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন কর্তৃক ১৯৯১ সালে প্রকাশিত ‘জীবন আমাদের নয়’ প্রতিবেদন অনুযায়ী তৎকালীন সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেতবুনিয়া থানার অর্ন্তগত কলমপতি ইউনিয়নের কাউখালী বাজার, মুখ পোয়া, পোয়া পাড়া, তোং পাড়া এবং হেডম্যান পাড়ায় এই হত্যাযজ্ঞ ঘটানো হয় এবং এ ঘটনায় কমপক্ষে ৩০০ পাহাড়ী মারা যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলকে ধ্বংস এবং জুম্ম জনগণকে জাতিগত নির্মূলীকরণের লক্ষ্যেই সেনাবাহিনী ও সেটেলার বাঙালিরা পরিকল্পিতভাবে বর্বরোচিত এই গণহত্যা ঘটিয়েছিল।

সেনাবাহিনী কর্তৃক নৃশংস গণহত্যার সূত্রপাত:
রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার কলমপতি আর্মি জোনের প্রধান এক ধর্মীয় সভার নামে কলমপতি ইউনিয়নের পাহাড়ি নেতাদের জড়ো করান। ১৯৮০ সালের ২৫ মার্চ সকাল বেলায় ঘোষণা দেয়া হয় পোয়াপাড়া বৌদ্ধ মন্দিরের সংস্কার কাজে আর্মিরা সহায়তা করবে আর এই সংস্কার কাজের জন্য সাধারণ পাহাড়ীদের ডাকা হয়। সাধারণ পাহাড়ীরা এতে সাড়া দিয়ে মিটিংয়ে উপস্থিত হয় এবং এরপর আর্মিরা তাদের এক লাইনে দাঁড়াতে বলা বলে। লাইনে দাঁড়ানো মাত্র সেনা সদস্যরা উপস্থিত পাহাড়ীদের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে সেনাবাহিনীর গুলিতে সঙ্গে সঙ্গে মারা যায় কাউখালী বাজার চৌধুরী কুমুদ বিকাশ তালুকদার, স্থানীয় স্কুল কমিটির সেক্রেটারি শরদিহর চাকমাসহ শতাধিক ব্যক্তি। গুরুতর আহত হন ইন্দু কুমার চাকমা, পিটিয়া চাকমাসহ ১২ জনের অধিক। এদের রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই দিন পোয়াপাড়া হত্যাকান্ড শেষে প্রায় ৩০ জন পাহাড়ী নারীকে জোরপূর্বক কলমপতি আর্মি ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যায় শিশু ও বৃদ্ধাদের ছেড়ে দেয়া হলেও তরুণীদের ছেড়ে দেয়া হয়নি, যাদের হদিস আর পাওয়া যায় নি।

পাহাড়ীদের উপর সেটেলার বাঙলিদের হামলাঃ
সেনাসদস্যরা উপস্থিত শতাধিক পাহাড়ীদেরকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা সেটেলার বাঙালিদের সঙ্গে নিয়ে পাহাড়ী অধ্যুষিত কাউখালী মুখ পাড়া, পোয়াপাড়া, কাউখালী বাজার, তোংপাড়া এবং হেডম্যান পাড়া আক্রমণ করে। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেটেলার বাঙালিরা সমস্ত বাড়িঘর তছনছ ও লুটপাট চালায় এবং পুড়িয়ে দেয়। প্রাক্তন সংসদ সদস্য চাইথোয়াই রোয়াজার বাড়িও লুট করা হয়। এছাড়াও মুখপাড়া কিয়াং, তোংপাড়া আনন্দ মোহন বৌদ্ধ মন্দির, পোয়াপাড়া মন্দিরেরও ধ্বংস সাধন করে। কিয়াংগুলোর স্বর্ণ, রৌপ্য, পিতলের বৌদ্ধমূর্তি, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়। হাতিরপাড়া ও কাউখালির দুইটি বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়েও দেয় সেটেলাররা। সেটেলাররা সামনে যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে। সেটেলার বাঙালিদের নৃশংস আক্রমণে কমপক্ষে দুইশত পাহাড়ী মারা যায়। সেটেলার বাঙালিদের হামলার মুখে পাহাড়ীর দৌড়ে পালিয়ে গভীর জঙ্গলে আশ্রয় নেয় এবং পরবর্তীতে এক হাজারের অধিক পাহাড়ীকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। গুরুদাস চাকমা নামে একজন বেঁচে যাওয়া পাহাড়ী গ্রামবাসী একটি গণকবর দেখিয়ে দেন যেখানে পঞ্চাশ থেকে ষাট জন পাহাড়ীকে কবর দেয়া হয়েছে। পাহাড়ীদের রেখে যাওয়া জায়গাগুলোতে বর্তমানে সেটলার বাঙালিরা বেদখল করে বসতি স্থাপন করেছে, বৌদ্ধ মন্দিরের জায়গায় মসজিদ বানিয়েছে।

গণহত্যা পরবর্তী ঘটনা:
১৯৮০ সালের ১ এপ্রিল তৎকালীন জাসদের সংসদ সদস্য উপেন্দ্র লাল চাকমা ঢাকাস্থ জাসদের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কলমপতি হত্যাকান্ডের কথা প্রথমে প্রকাশ করেন। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য ৫ (পাঁচ) সদস্যের একটি সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয় এবং সেখানে এমপি উপেন্দ্র লাল চাকমাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয় নি।

সংসদীয় কমিটির বিপরীতে স্বাধীনভাবে হ*ত্যাকান্ডটি তদন্তের জন্য জাসদের এমপি শাহজাহান সিরাজ, উপেন্দ্র লাল চাকমা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক রাশেদ খান মেননসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট এক সত্য অনুসন্ধানকারী দল গঠন করা হয়। দলটি নিজস্ব উদ্যোগে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তাঁদের পরিদর্শনের সংবাদ পেয়ে প্রায় ৫০০ জন ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়ী কয়েক মাইল হেঁটে চেলাছড়ায় তদন্ত টিমের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের দুর্ভোগের কথা জানায়। প্লেকার্ড ও পোস্টারের মাধ্যমে তারা সমতল থেকে অবৈধ আগমনকারী বাঙালিদের হামলায় হ*ত্যাকান্ডে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ বন্ধের উদ্দেশ্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রক্ষা, ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী মৃতদের দাহ, পাহাড়ীদের জন্য আত্ননিয়ন্ত্রণাধিকার এবং সেটেলারদের ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানায়।

সত্য অনুসন্ধানকারী দলের বক্তব্য:
১৯৮০ সালের ২১ তারিখে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সত্য অনুসন্ধানী দলটি ঘটনার বিবরণ দেন। তাদের বক্তব্য অনুসারে, “ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর, আমরা ২৫ মার্চ ১৯৮০ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রামের বেতবুনিয়া পুলিশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রাধীন কলমপতি ইউনিয়নস্থ কাউখালি বাজারের আর্মির এক ইউনিট কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকান্ড ও নৃশংসতার প্রমাণ পেয়েছি। সদ্য আগত সেটলাররাও হত্যাকান্ড ও লুটতরাজে অংশ নেয়। এমনকি ঘটনার ১ মাস পরও গোটা এলাকা ভয়ের রাজত্ব বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পাহাড়ী নেতৃবৃন্দের শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উচ্ছেদের শিকার হওয়া গরীব পাহাড়ীরা নিজেদের ধ্বংস হয় যাওয়া গ্রামে ফিরে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। কারণ হয়রানিমূলক গ্রেপ্তার, যখন তখন মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সেটলারদের হুমকি প্রদান এসব চলছে।”
তারা আরো বলেন, “একই সাথে আমরা সেটেলারদের বাসকৃত বাড়িগুলোকে খুব ভালো অবস্থায় দেখেছি। এগুলো পাহাড়ীদের জমিতে তৈরি করা হয়েছিল। এই সেটেলারদের আনা হয়েিেছল ভিন্ন জেলা থেকে সাপ্তাহিক রেশন ও আশ্রয়ের প্রলোভনে। একজন স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের জানিয়েছেন যে ২,৬৩৭ পরিবারকে বাড়ি নির্মাণের জন্য জমি দেয়া হয়েছে এবং ৩০০ পরিবারকে চাষের জমি দেয়া হয়েছে। প্রতি পরিবারকে সপ্তাহে ১২ সের গম প্রদান করা হয়। কিন্তু যখন সরকার কি সিদ্ধান্তের কারণে এখানে সেটেলারদের নিয়ে আসা হয়েছে বলে জিজ্ঞেস করা হয় তখন স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যান। তারা আমাদের বলেন যে সেটেলারদের ক্রমাগত আগমন বন্ধ হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে ইতিমধ্যে ২০ হাজার সেটলার পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে।”
সবশেষে তাঁরা বলেন, “এটি আমাদের কাছে সুস্পষ্ট যে কলমপতির ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি সুনির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা ও পন্থায় সংঘটিত করা হয়েছে। “

সংবাদ সম্মেলনে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি যেসকল সুপারিশ করেছিল:
১। কলমপতি ইউনিয়নে ২৫ মার্চ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ঘাতকদের শাস্তি;
২। ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পুনর্বাসন;
৩। ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনঃর্নিমাণ, মন্দির ধ্বংস সাধনের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান ও ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত দানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা;
৪। সেটেলার বাঙালিদের আগমন বন্ধ করা;
৫। যেসব সেটেলার ইতোমধ্যে এখানে বসতি গড়েছে তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নেয়া;
৬। বাজারগুলোতে মালামাল আনা-নেয়ার ব্যাপারে বাঁধা প্রত্যাহার;

বাংলাদেশ সরকার সত্য অনুসন্ধান দলের সুপারিশ গ্রহণ করেনি এবং কোন ধরণের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদান করেনি। সংসদীয় কমিটি নামেমাত্র গঠন করা হয়েছিল। কোন ধরণের তদন্ত রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। বরং বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই গণহত্যার হোতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল, যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তী গণহত্যাগুলো সংঘটিত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে দেয়।

রাষ্ট্রযন্ত্র এসব গণহত্যা ভূলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও পাহাড়ের নিপীড়িত জুম্ম জনগণ কখনও গণহত্যার কথা ভূলেনি এবং গণহত্যার শহীদদের আত্মত্যাগের কথা ভূলে যাবে না। পাহাড়ের নতুন প্রজম্ম শহীদদের আত্মত্যাগকে শিরোধার্য্য করে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অধিকতর সামিল হবে এবং নতুন সূর্যোদয়ের আনার জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করার শপথ নিবে। শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না।

Photo By Genocide in the Chittagong Hill Tracts, Bangladesh, Wolfgang Mey.

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর-আবেদন পত্রগণ প্রজাতন্ত...
15/03/2025

বাংলাদেশ খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নিকট পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের শাসনতান্ত্রিক অধিকার দাবীর-

আবেদন পত্র

গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী শাসনতন্ত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসনতান্ত্রিক অধিকার যাতে গৃহীত হয় তজ্জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি প্রতিনিধিদল গত ৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ ইংরেজী তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন । আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ এই স্মারকলিপিখানি মনে প্রাণে সমর্থন করি এবং গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবী শাসনতন্ত্রে “নবজীবনের” প্রতীক্ষায় রয়েছি ।
স্মারকলিপিতে নিম্নলিখিত “চারিটি বিষয়” উত্থাপন করা হয়েছে :-
১। পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল হবে এবং ইহার একটি নিজস্ব আইন পরিষদ থাকবে।
২। উপজাতীয় জনগণের অধিকার সংরক্ষণের জন্য “১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির” ন্যায় অনুরূপ সংবিধি ব্যাবস্থা শাসনতন্ত্রে থাকবে ।
৩। উপজাতীয় রাজাগণের দফতর সংরক্ষণ করা হবে।
৪। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয় নিয়ে কোন শাসনতান্ত্রিক সংশোধন বা পরিবর্তন যেন না হয়, এরূপ সংবিধি ব্যাবস্থা শাসনতন্ত্রে থাকবে ৷

স্মারকলিপিতে বর্ণিত “চারিটি বিষয়” যে আমাদের ন্যায় সঙ্গত দাবী, তজ্জন্য আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি। এক কথায় বলতে গেলে “চারিটি বিষয়” হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জাতীয় অস্তিত্বের চাবিকাঠি। নিজস্ব আইন পরিষদ সহ একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পরিণত করার জন্য আমরা আমাদের দাবী উত্থাপন করেছি। বছরকে বছর ধরে ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ আমলের দিন থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ধ্বংসের দিন পর্যন্ত আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীরা খুবই দুর্বিসহ জীবন যাপন করেছি ; যার ফলে আমাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে এবং আমাদের জাতীয় উন্নতি ব্যাহত হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি পৃথক শাসিত অঞ্চল (Excluded Area)। কিন্তু ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস যদিও পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশে “উপজাতীয় জনগণের আবাসভূমি” হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল তথাপি বাস্তবে ইহা মিথ্যা এবং প্রহসন ছাড়া আর কিছুই ছিলনা ।

বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামরে একটি পৃথক শাসিত অঞ্চলরূপে রাখার জন্য শাসনের সুবিধার্থে আইন প্রয়োগের জন্য ১৯০০ সালে ব্রিটিশ সরকার “১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি” ঘোষণা করেন। এই শাসনবিধি পুরোপুরি ত্রুটি পূর্ণ। এই শাসন বিধি একটি অগণতান্ত্রিক শাসনবিধি। এই শাসনবিধিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রতিনিধিদের কোন বিধি ব্যাবস্থা গৃহীত হয়নি। বাংলাদেশের গর্ভনরের হাতে সকল ক্ষমতা ন্যাস্ত করা হয়েছে এই শাসনবিধি দ্বারা । গর্ভণর খুবই ক্ষমতাশালী । তিনি যেকোন সময়ে যখন মনে করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সুশাসন ও শান্তির পক্ষে ইহা প্রয়োজন, উপযোগী এবং উপযুক্ত, তখন তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে আইন প্রয়োগ করেন, নতুন রুলস ও রেগুলেশন প্রনয়ণ করেন। তিনি এতই শক্তি শালী যে স্বেচ্চারমূলকভাবে তিনি অনেক কিছু করতে পারেন। তিনি কোনও আইন পরিষদের নিকট জবাবদেহি হতে বাধ্য নন। গভর্ণর হলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের আইন পরিষদ। গর্ভণর আইন প্রনয়ণ করেন এবং তার জেলা প্রশাসন ইহা কার্যকরী করেন। ফলে পৃথক শাসিত অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন ব্যাবস্থা অর্থহীন হয়ে পড়ে। সর্বক্ষেত্রে আগের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ পিছিয়ে পড়ে থাকলো।

ব্রিটিশ সরকার আমাদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের হতভাগ্য জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। জনগণের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দিবার জন্য ব্রিটিশ সরকার একটি অদ্ভূত অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যাবস্থা পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবর্তন করে। জনগণ গর্ভণর ও তার প্রশাসনের দয়ার উপর নির্ভর করে বাস করতে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে বঞ্চিত করে ব্রিটিশ সরকার বাইরের মানুষকে প্রশাসন বিভাগে নিয়োগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসন কার্য চালিয়ে যাবার ব্যাবস্থা করে এবং এইভাবে কালক্রমে বহিরাগতদের প্রভাব জেলা প্রশাসনে প্রাধান্য লাভ করে। ব্যাবসা-বানিজ্যের কেন্দ্র অর্থাৎ বাজার, নদী বন্দর প্রভৃতি সমস্ত ব্যবসায়ী কেন্দ্র সমূহ বহিরাগতদের হাতে চলে যায় । এই রূপে রাজনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ জেলা প্রশাসন থেকে চাত হয় এবং দূরে সরে পড়ে থাকতে বাধ্য হয়, অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ বহিরাগত ব্যবসায়ীদের শোষণের শিকারে পরিণত হয়।

ব্রিটিশ সরকারের ন্যায় পাকিস্তান সরকারও পার্বত্য চট্টগ্রামের হতভাগ্য জনগণকে রাজনৈতিক নিপীড়ন ও অর্থনৈতিক শোষণ থেকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসেনি। বরং পক্ষান্তরে স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের পৃথক শাসিত অঞ্চলের সত্ত্বাকে চিরতরে লুপ্ত করে দিবার পথ প্রশস্ত করে দেয়। অন্যায় অবিচার সমগ্র জেলায় চরম নৈরাশ্য ও ভীতির রাজত্ব সৃষ্টি করে। কাপ্তাই বাঁধের ফলে ৯৯ হাজার ৯ শত ৭৭ জন মানুষ ১৯৬০ সালে গৃহহারা, জমিহারা হয়ে যায়। সরকার উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ ও উপযুক্ত পূর্ণবাসনের কোন ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করেনি। স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের মতামত যাচাই না করে ১৯৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের পৃথক শাসিত অঞ্চলের সত্বাকে চিরতবে ঘুচিয়ে দিবার জন্য পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে একটি শাসনতান্ত্রিক সংশোধনী প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেয়। স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকারের অগণতান্ত্রিক এবং নিপীড়নমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ প্রতিবাদ করতে পারেনি । সুতরাং শেষ পর্যন্ত অনন্যোপায় হয়ে জন্মভূমি চিরতরে ত্যাগ করে প্রায় পঞ্চাশ হাজার নরনারী ১৯৬৪ সালে ভারতে আশ্রয় পাবার আশায় সীমান্ত পাড়ি দেয় ৷

বেআইনী অনুপ্রবেশ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় জনসংখ্যা ছিল ১৪.৪৭% অমুসলমান ২.৫৯% এবং মুসলমান ২.৯৪%। মুসলমান ও অমুসলমান জনসংখ্যার কিছু অংশ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিম বাসিন্দা আর বাদবাকী অংশ ছিল বাইরে থেকে আগত ব্যবসায়ী ও সরকারী কর্মচারীবৃন্দ। কিন্তু গত চব্বিশ বছরে বহিরাগতদের সংখ্যা অসম্ভব রকমভাবে বেড়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ বারবার পাকিস্তান সরকারকে এই বেআইনী অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দিবার জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করে। বহিরাগতদের দ্বারা বেআইনী জমি বন্দোবস্তী ও বেআইনী জমি বেদখল তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়। “১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি” অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনও রকমের বন্দোবস্তী বহিরাগতদের জন্য নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গর্ভণর এবং তার জেলা প্রশাসন এই শাসনবিধিকে কার্যকরী করেনি। পক্ষান্তরে গর্ভণর ও তার জেলা প্রশাসক বহিরাগতদেরকে বেআইনী জমি বন্দোবস্তী ও বেআইনী জমি বেদখলের পথ নীরবে প্রশস্থ করেছে। “১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি” বেআইনী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারেনি, পারেনি বেআইনী জমি বন্দোবস্তী ও বেআইনী জমি বেদখল বন্ধ করে দিতে। এই শাসনবিধি অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের পৃথক শাসিত অঞ্চলের স্বত্বা জনগণের যুগ যুগ ধরে পিছিয়ে পড়ে থাকার অবস্থার কোন পরিবর্তন এনে দিতে পারেনি। কালক্রমে এই পৃথক শাসিত অঞ্চলের স্বত্বা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের নিকট অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায় ।

জনগণের অধিকার সংরক্ষণের ব্যপারে পৃথক শাসিত অঞ্চলের সত্ত্বা যথেষ্ট নয় । ইহা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জাতীয় অস্তিত্বের নিরাপত্তাবোধ এনে দিতে পারেনি। গণতান্ত্রিকশাসন ব্যবস্থা ব্যতীত পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষণ করা যাবেনা। এই জন্যই আমরা “ চারিটি বিষয়” উত্থাপন করে নিজস্ব আইন পরিষদ সম্বলিত একটি আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবী তুলে ধরেছি। সুতরাং
ক) আমরা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সত্ত্বেও পৃথক অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পেতে চাই ।
খ) আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার থাকবে, এরকম শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন চাই।
গ) আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত হবে এমন শাসন ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই ৷
ঘ) আমাদের জমি স্বত্বা জুম চাষের জমি ও কর্ষণযোগ্য সমতল জমির স্বত্বা সংরক্ষিত হয় এমন শাসন ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই।
ঙ) বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল হতে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন কোন বসতি স্থাপন করতে না পারে তজ্জন্য শাসনতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার প্রবর্তন চাই ।

আমাদের দাবী ন্যায় সঙ্গত দাবী। বছরকে বছর ধরে ইহা একটি অবহেলিত শাসিত অঞ্চল ছিল। এখন আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের পার্বত্য চট্টগ্রামকে গণতান্ত্রিক পৃথক শাসিত অঞ্চল অর্থাৎ আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্ব শাসিত অঞ্চলে বাস্তবে পেতে চাই । ভারত তার বিভিন্ন জাতিসমূহের সমস্যাসমূহ সমাধান করেছেন। ভারতের জাতিসমূহ—বড় বা ছোট সকলে শাসনতান্ত্রিক অধিকার পাচ্ছে । ভারতের জাতি সমূহ ক্রমান্নয়ে ইউনিয়ন টেরিটরি এবং রাজ্য পর্যায়ের মর্যাদার অধিকারী হতে চলেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নও তার জাতি সমূহের সমস্যার সমাধান করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন সকল জাতি সমূহকে শাসনতান্ত্রিক মর্যাদা দিয়েছে এবং গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ইউনিয়ন রিপাবলিক, স্বশাসিত রিপাবলিক, স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল ও জাতীয় অঞ্চলে বিভক্ত করে জাতি সমূহের সমস্যার সমাধান করেছে। পাকিস্তান সরকার আমাদিগকে নির্মমভাবে নিপীড়ন করেছে। গত চব্বিশ বছর আমরা সকল মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা অর্থাৎ প্রত্যেক বিষয়ে আমরা আগের মতো পিছিয়ে পড়ে রয়েছি। এখনও আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে হাজার হাজার মানুষ অর্ধ নগ্ন পরিবেশে বাস করছে, এখনও হাজার হাজার মানুষ আদিম যুগের পরিবেশে বাস করছে। এখন নিপীড়নকারী, স্বৈরচারী পাকিস্তান সরকারের দিন আর নেই। আমরা স্বৈরচারী মানুষ আদিম যুগের পরিবেশে বাস করছে। এখন নিপীড়নকারী, স্বৈরচারী পাকিস্তান সরকারের দিন আর নেই। আমরা স্বৈরচারী পাকিস্তান সরকারের সর্বরকমের নিপীড়ন ও অত্যাচার থেকে মুক্ত হয়েছি।

আমাদের বাংলাদেশ এখন মুক্ত। উপনিবেশিক শাসনের জোয়াল ভেঙে গেছে। এখন আমাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ চারিটি মূলনীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে উর্দ্ধে তুলেধরে উজ্জল ভবিষ্যত নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণও বাংলাদেশের অন্যান্য অংশের ভাই বোনদের সাথে একযোগে এগিয়ে যেতে চাই। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ মনে করে এবং বিশ্বাস করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের যুগযুগান্তের অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ভুলে দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জাতীয় অস্তিত্বের সংরক্ষণের অধিকার দেবেন।

তারিখ—রাঙ্গামাটি,
২৪শে এপ্রিল, ১৯৭২ সন ।

জয় বাংলা
মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা
গণ পরিষদ সদস্য
পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
এবং
আহ্বাবায়ক,
পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি।

10/11/2024

মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা

জন্ম: ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯
মৃত্যু : ১০ নভেম্বর ১৯৮৩

সংসদ থেকে জুমক্ষেতে, গেরিলার পদধ্বনি দিয়ে যে মহান নেতা আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের তেরো ভাষাভাষী চৌদ্দটি জনগোষ্ঠীকে জুম্ম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে যিনি ঐক্যবদ্ধ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শান্তিবাহিনীর। সে মহান নেতার ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

তার জীবন ও সংগ্রাম থেকে আমাদের প্রজন্ম শিক্ষা নেয়, সাহস পায়। চলুন, তার রেখে যাওয়া লক্ষ্য ও আদর্শ অনুসরণ করে একতাবদ্ধ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করি।

শ্রদ্ধাঞ্জলি মহান নেতা এম এন লারমার প্রতি।

15/09/2024

মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা

জন্ম: ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯
মৃত্যু : ১০ নভেম্বর ১৯৮৩

প্রতিটি জুম্ম জনগনের হৃদয়ে শান্তি, সাম্য ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠা যার আদর্শ, সে হচ্ছে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা। মানবেন্দ্র লারমা ছিলেন নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামের একজন বীরসেনা।

মাদলের গানে এম.এন.লারমা “মুক্তির গান”

মুক্তির গান শুনিয়েছিলে,
নিপীড়িত মানুষের চোখে এঁকেছিলে তুমি সাম্যের স্বপ্ন।

পাহাড়ে জ্বেলেছিলে চেতনা মশাল,
অধিকার বুঝে নেবার প্রতিজ্ঞায়।
লড়াইয়ের পথ তুমি দেখিয়েছিলে, জীবনবোধের এক ঘোষণায়-

তাই মিছিলে ধ্বনিত আজও মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা

জানাই তোমায় লাল সালাম (৪)
🎵
কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতার কথা,
অকপটে বলেছিলে সংসদে রাজপথে।
নারীদের সমস্ত বঞ্চনা গাঁথা,
বুকে ধরেছিলে লড়াইয়ের শপথে।

পাহাড়ে জ্বেলেছিলে চেতনা মশাল
অধিকার বুঝে নেবার প্রতিজ্ঞায়,

লড়াইয়ের পথ তুমি দেখিয়েছিলে, জীবনবোধের এক ঘোষণায়-

তাই মিছিলে ধ্বনিত আজও মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা

জানাই তোমায় লাল সালাম (৪)
🎵
শোষিত মানুষের ব্যারিকেড করেছিলে, মুক্তির লাল পতাকা হাতে নিয়ে।
বিপ্লবী স্বপ্ন বুনে দিয়েছিলে, জুমক্ষেতে গেরিলা পদধ্বনি দিয়ে।

পাহাড়ে জ্বেলেছিলে চেতনা মশাল
অধিকার বুঝে নেবার প্রতিজ্ঞায়,
লড়াইয়ের পথ তুমি দেখিয়েছিলে, জীবনবোধের এক
ঘোষণায়-

তাই মিছিলে ধ্বনিত আজও মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা

জানাই তোমায় লাল সালাম

Address

Kachalong
Rangamati
4500

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Voice of Kachalong posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share