22/03/2025
কথা হচ্ছিলো এক ফিলিস্তিনি বোনের সাথে।
‘বোন হাযাযাহ, তুমি বেজোড় রাতগুলি কীভাবে কাটাও?’
: বেজোড় রাত মানে?
: রমাদানের শেষ রাতগুলির ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তারিখ কীভাবে উদযাপন কর? জেগে থাকো? কী কী ইবাদত করো?
: তুমি আমাকে হাসিয়ে ছাড়লে, অথচ আমি অনেকদিন যাবৎ হাসতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমাদের কাছে পুরো রমাদানটাই ক্বদর অন্বেষণের রাত হিসেবে কাটে। রমাদান আমাদের জীবনে আসে এক অসাধারণ ভালোলাগা, ভালোবাসা নিয়ে। যে কারণে আমরা শুরুর দিন থেকেই রাতের ঘুম পরিত্যাগ করি।
আমরা দিনে কিছু ঘন্টা ঘুমিয়ে নিই, ইফতারির পর হালকা বিশ্রাম নিই, অধিক ক্লান্তি এলে দু’চোখ বুজে একটু ঝিমিয়ে নেই। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে তারাবিহ আদায় করি। কুরআন তিলওয়াতে নিমগ্ন হই। অস্থির লাগলে রবের সাথে খানিক সিজদায় আলাপন সেরে নিই।
তারপর শীঘ্রই তাহাজ্জুদের সময় চলে আসে। তাহাজ্জুদে আমরা তারাবির থেকেও অধিক সময় ব্যয়ের চেষ্টা করি এবং আমাদের সিজদার জায়গাগুলি না ভিজলে অন্তর আনন্দিত হয় না।
এরপর হালকা কিছু খেয়ে নিই। কারণ বেশি খেতে সময়ের প্রয়োজন বেশি, অথচ শেষরাত এক মহা মূল্যবান সময়। তাই একদমই সময় নষ্ট করতে মন চায় না। খাওয়া শেষ হলে ফের কুরআনে ডুবে যাই, এভাবেই ফজর নিকটে চলে আসে। আর আফসোস করি, হায়, যদি রাত আরেকটু দীর্ঘ হতো!
কে জানে আজকের পর আগামীকাল রাত আর পাব কি না? শত্রুর কামান আমাকে বিধ্বস্ত করে দিলে আজকের রাতই শেষ রাত। ইতোপূর্বে আমি রমাদানের শুরুর দিন চার ভাইকে জান্নাতে যেতে দেখেছি। একটি বোন ছিল, পঞ্চম রমাদানে বুলেট এসে তাকেও জান্নাতে নিয়ে গেলো। এখন আমি আর আমার মা প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকি কখন আমার ভাইদের সাথে মিলিত হবো।
কিছুদিন আগে বোনটির সাথে ফের কথা হলো।
: বোন হাযাযাহ তুমি কেমন আছ?
: আলহামদুলিল্লাহ, অনেক বেশি ভালো আছি। একটি সুসংবাদ আছে। আমার মাতা ভাইদের সাথে মসজিদুল আকসার রক্তাক্ত প্রহরে মিলিত হয়েছে।
◇◇◇
পরিস্থিতি মানুষকে ভাবতে শেখায়। ঈমানদারদের ঈমানকে শাণিত করে। রমাদান চলে যাচ্ছে। কিছুদিন ধরে ভীষণ এক মনঃকষ্ট কুরে কুরে খাচ্ছে। অন্তর ছটফট করছে এটা ভেবে যে রমাদানের অর্ধেকের বেশি চলেই গেছে! অথচ ইবাদত, দুয়া, আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়া কতটা এখনও বাকি! যদি আজ থেকেই ক্বদর অন্বেষন শুরু করতে পারতাম তবে বাকি রমাদান দারুণ উদযাপিত হতো হয়তো। তাই তো এবারের ক্বদর বোন হাযাযাহ’র মতো কাটাতে চাই…।
▪︎ সময় ম্যানেজমেন্ট ▪︎
○ ইফতারির পর সালাত, মাসনুন আমল