26/03/2025
                                            রোজা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা আত্মশুদ্ধি, সংযম ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। রোজার বরকত ও ফজিলত অনেক, যা ব্যক্তি, সমাজ ও আখিরাতের দিক থেকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিচে রোজার কিছু বরকত আলোচনা করা হলো—  
 # # # ১. **আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া বৃদ্ধি**  
রোজা মানুষকে সংযমী করে এবং প্রবৃত্তির উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে শেখায়। এটি আল্লাহভীতি ও খোদাভীতির (তাকওয়া) অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ বলেন:  
**"হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।"**  
—(সুরা বাকারা: ১৮৩)  
 # # # ২. **গুনাহ মোচনের সুযোগ**  
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:  
**"যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।"**  
—(সহিহ বুখারি: ৩৮)  
 # # # ৩. **দোয়া কবুল হয়**  
রমজান মাসে রোজাদারের দোয়া বিশেষভাবে কবুল হয়। হাদিসে এসেছে:  
**"রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় প্রত্যাখ্যাত হয় না।"**  
—(তিরমিজি: ২৫২৫)  
 # # # ৪. **জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়**  
হাদিসে এসেছে:  
**"রমজান শুরু হলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।"**  
—(সহিহ বুখারি: ১৮৯৯)  
 # # # ৫. **দেহ ও মনের সুস্থতা**  
রোজা দেহের জন্যও অনেক উপকারী। এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং মানসিক প্রশান্তি আনে।  
 # # # ৬. **সামাজিক সংহতি ও দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতি**  
রোজা ধনী-গরিবের ব্যবধান কমায় এবং গরিবের কষ্ট অনুভব করতে শেখায়, ফলে দান-সদকার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।  
 # # # ৭. **শাফায়াত লাভের সুযোগ**  
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:  
**"রোজা ও কুরআন কিয়ামতের দিন মুমিনের জন্য সুপারিশ করবে।"**  
—(মুসলিম: ৮০৫)  
 # # # ৮. **রায়ান নামক বিশেষ দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ**  
নবী (সা.) বলেছেন:  
**"জান্নাতে একটি দরজা আছে, যার নাম রায়ান। কিয়ামতের দিন কেবল রোজাদাররা এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে।"**  
—(সহিহ বুখারি: ১৮৯৬)  
 # # # ৯. **আখিরাতের বড় প্রতিদান**  
আল্লাহ বলেন:  
**"রোজা আমার জন্য, আর এর প্রতিদান আমি নিজেই দেব।"**  
—(সহিহ বুখারি: ১৯০৪)  
 # # # উপসংহার  
রোজা আত্মশুদ্ধি, গুনাহ মোচন, জান্নাতের পথ সুগম করা, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা, সামাজিক সংহতি এবং আখিরাতের মুক্তির এক মহৎ উপায়। তাই রমজানের রোজা যথাযথভাবে রাখা ও ইবাদতে মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।