15/10/2025
“ঘটনার পেছনের সত্যটা জানলে অনেকের মুখ বন্ধ হয়ে যেত…” 🔥
রিপন মিয়া নামটা হঠাৎ করে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, ATN নিউজ একটা রিপোর্ট করেছে, আর সবাই যেন তাকে অপরাধী বানিয়ে ফেলেছে! কিন্তু কেউ কি জানার চেষ্টা করেছে, ঘটনার পেছনে আসল ঘটনা কী?
আজকাল আমাদের সমাজে একটা অদ্ভুত প্রবণতা তৈরি হয়েছে, কারও ব্যক্তিগত, পারিবারিক সমস্যা চোখে পড়লেই আমরা নিজেরাই “বিচারক” বনে যাই। যে মানুষটার পাশে দাঁড়ানোর কথা, তাকেই আমরা দোষী বানাতে এক সেকেন্ডও দেরি করি না। আর যেই সাংবাদিকরা সমাজকে সচেতন করার কথা, তারাই আজ ভিউ বাড়ানোর জন্য মানুষের সম্মান বিক্রি করে দিচ্ছে!
রিপন মিয়া ব্যারিস্টার না, বিসিএস ক্যাডার না, না কোনো বড়লোক, সে একজন সাধারণ গ্রামীণ মানুষ, নিজের মতো করে জীবন চালাচ্ছে। আর বাংলাদেশে এমন পরিবার খুব কম আছে যেখানে বিয়ের পর কোনো না কোনো পারিবারিক ঝামেলা তৈরি হয়নি। ৯৯% পরিবারেই মা-বউ ইস্যু, ভুল বোঝাবুঝি, ঝগড়া বা দূরত্ব তৈরি হয়। এটা আমাদের সমাজের বাস্তবতা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই বিষয়টা কি জাতীয় নিউজ হওয়া উচিত ছিল? দেশে কত শিক্ষিত, তথাকথিত ভদ্রলোক আছে যারা নিজের বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে অফিসে বসে চা খাচ্ছে, তাদের নিয়ে কেন রিপোর্ট হয় না?
নাকি তাদের নিউজ করলে ভিউ আসে না?
তাদের নাম বিক্রি হয় না, তাই?
আমাদের সমাজে একটা কথা খুব সত্য, যারা নিজেদের পারিবারিক ঝামেলা নিয়ে মিডিয়ায় মুখ খোলে, তাদের ভেতরে আসলে ভালোবাসা নয়, বরং দূরত্ব ও হিংসা কাজ করে। রিপন মিয়ার বাবা-মাও হয়তো কোন না কোন পারিবারিক ক্রাইসিসে আছেন। কিন্তু তারা যা করলেন, সেটা যেন সরাসরি ছেলের মানহানি করে দেওয়া। নিজের সন্তানকে প্রকাশ্যে ছোট করা মানে নিজের লজ্জাকেও প্রকাশ্যে নিয়ে আসা।
দুনিয়ার কোন বাবা-মা চান না যে তাদের সন্তান খারাপ থাকুক। তাহলে কেন এরা এমন করলেন? হয়তো মানসিক আঘাত, হয়তো অভিমান, হয়তো অন্য কারও প্ররোচনা।
কিন্তু একজন বাবা-মা যখন ছেলেকে নিয়ে টেলিভিশনে অভিযোগ করেন, তখন বুঝে নিতে হয়, গল্পটা অনেক গভীর, অনেক জটিল।
এখন সাংবাদিকতার কথা বলি। আমাদের দেশে কিছু সাংবাদিক আছে যারা আসলেই “সাংঘাতিক”! তাদের কাছে মানুষের সম্মান, পরিবার, আবেগ কিছুই গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্ব একটাই - TRP আর ভিউ। তারা জানে, রিপন মিয়ার নাম দিয়ে একটা খবর বানালে লোকজন ক্লিক করবে, শেয়ার করবে, গালাগালি দেবে - আর সেখানেই তাদের “কন্টেন্ট সফল”! এটা কি সাংবাদিকতা? না এটা ব্যবসা?
ক্রিকেটার নাসুমের ঘটনাটা মনে আছে? সেখানেও একই রকম নোংরামি হয়েছিল। একটা মিথ্যা গল্প বানিয়ে কেমনভাবে তার চরিত্র নিয়ে খেলা করেছিল কিছু মিডিয়া! আজ রিপন মিয়ার ক্ষেত্রেও সেই একই কাহিনী পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
একটু ভেবে দেখেন, যদি সব মানুষ এত ভালো হতো, তাহলে আজ বৃদ্ধাশ্রম বলে কিছু থাকতো না! তাহলে সাংবাদিকদেরও মানুষের দুঃখ বিক্রি করে নিউজ বানাতে হতো না!
তাই ভাই, পরের বার কোনো নিউজ দেখেই কারও সম্পর্কে মতামত দেবেন না। প্রথমে বুঝে নিন ঘটনার পেছনে ঘটনা কী। কারণ মিথ্যা শব্দ যত সহজে ছড়ায়, সত্য ততটাই চুপচাপ থাকে।
আজ যদি আপনার জীবনেও এমন ভুল বোঝাবুঝি হয়, তাহলে আপনি বুঝবেন, মিডিয়া যেভাবে কারও চরিত্র হত্যা করে, সেটা কতটা কষ্টের।
তাই আমি বলবো, কাউকে না জেনে, না বুঝে দোষারোপ করবেন না। কারণ একদিন সেই দোষারোপের আগুন আপনার কাছেও ফিরে আসতে পারে।
✍️Ajminur Oarish✨