14/02/2025
১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। কিন্তু এদিনে ১৯৮৩ সালে ঢাকায় ঝরেছিল শিক্ষার্থীদের রক্ত। এ জন্য অনেকে এ দিনটিকে ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকেন।
১৯৮৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন, কালক্রমে যেটি গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। তখনকার ১১টি প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল, ছাত্রবন্দীদের মুক্তি ও দমননীতি বন্ধ এবং গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেয়। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী স্লোগানে এদিন নেমে আসেন রাজপথে।
সেদিন শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে হাইকোর্ট এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। উত্তেজনার একপর্যায়ে ছাত্রনেতারা ব্যারিকেডের কাঁটাতারের ওপরে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শুরু করেন। তখন কোনো উসকানি ছাড়াই গরম পানি ছিটাতে শুরু করে পুলিশ। এরপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। তা করতে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে গুলি শুরু করে পুলিশ। এতে প্রথমেই গুলিবিদ্ধ হন জয়নাল। আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে গেলে পুলিশ বেয়নেট দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করে। ওইদিনই শিশু একাডেমিতে যোগ দিতে আসা দীপালী নামের এক শিশু গুলিতে নিহত হয়। পুলিশের দীপালীর মরদেহ গুম করে ফেলে। তাছাড়া যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় আরো অনেককেই গুম করা হয় বলে স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
এর পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কাঞ্চন নামে একজন। একে একে আরো দশ টি শহীদের খবর পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যেনো বেগবান না হয় সেজন্য স্বৈরাচার শাসকের বিরুদ্ধে আরও অনেক লাশ গুম করে ফেলার অভিযোগ ওঠে।
তখন ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস হিসেবে এখনকার মতো পালন করা হতো না। ১৯৮৩ সালের সেই দিনটি ছিল এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একটি চরম মুহূর্ত।সেদিন থেকে দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে বলা হয়।