
23/07/2025
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভালোকে আমরা এসোশিয়েট করি কে কতোটুকু অনাচার মুখ বুজে সহ্য করে নিতে পারে তার উপর।
ঘরের বড় মেয়ে নীতা ভালো। কারণ তাকে ভালো টিউশন দেয়া হয়না তবুও সে ভালো রেজাল্ট এনে দেয়, তার খাওয়া নিয়ে বাছবিচার নেই, তাকে বাসি আলুভাজি দিয়ে ভাত খেতে দিলেও সে দোষ ধরেনা।
মেঝো মেয়ে রীতা ভালো না কারণ সে তার পছন্দ অপছন্দ সম্বন্ধে যথেষ্ট লাউড এবং সহজে সে তার নিজের জায়গা থেকে নড়ে না।
শাহেদ ভাই ভালো কারণ সে কখনো তার মায়ের বিপক্ষে কথা বলেনা এবং বউ এর বিপক্ষেও কথা বলেনা। দরজার ওপাশে বউয়ের আর এপাশে মায়ের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলের ভিকটিম হতে হতে শাহেদ ভাইয়ের দুইচোখই গর্তে ঢুকে গেছে কিন্তু যেহেতু শাহেদ ভাই ভালো, সে কিছুতেই এই সাইকেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না। অন্যদিকে শাফীন ভাই, যেকোনো ঝামেলায় আগে বিচার করেন বউ অথবা মা কার কথায় যুক্তি বেশি। দুইপক্ষের আলোচনা শুনার পর নিজের ক্যালকুলেশনকে প্রায়োরিটাইজ করে শাফীন ভাই নিজের দিকের স্টেটমেন্ট দিয়ে দেন এবং তাতেই অনড় থাকেন। এতে করে বউ বা মা যেকোনো একজন সবসময় প্রথমে অসন্তুষ্ট হলেও ইন দ্যা লং রান ফ্যামলিতে শাফীন ভাইয়ের জায়গাটা ফিক্সড থাকে৷ তবে এর প্রাইস পে করতে গিয়ে শাফীন ভাই কখনোই নিজে একজন শতভাগ ভালো ছেলে অথবা ভাল স্বামী হয়ে উঠতে পারেন না।
টুম্পা ভাবীর মতো ভালো মানুষ পৃথিবীতে দুইটা নাই। যখন তখন কোনো রকম ডিসক্লেইমার ছাড়া তার ঘরে গিয়ে হাজির হওয়া যায়। এমনকি বাচ্চাদের পরীক্ষার সময় ঘরভর্তি মেহমান থাকলেও টুম্পা ভাবী তার বাচ্চাদেরকেই ম্যানেজ করান মেহমানদের উপস্থিতি ইগনোর করে ১০০% মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করার জন্য। অথচ তিনি তো রূম্পা ভাবীর মতোও হতে পারতেন, যিনি কিনা আগে থেকে ইনফর্ম করে না আসলে একটু বিরক্তই হন! তার ভাষ্যমতে মেহমান আসার জন্য নাকি আগে থেকে প্রিপারেশন নেয়া লাগে!
ক্যাম্পাসের নাদিয়া আপু। কোনোভাবে যেদিন ওনার সাথে একসাথে ভার্সিটি যাওয়া যায় ভাড়াটা উনিই দিয়ে ছাড়েন! অথচ সাদিয়া আপু ডিরেক্ট বলে ফেলেন "এর আগেরবার আমি দিয়েছিলাম, এবার তুমি দাও।"
বন্ধু মাহীন একদম মাটির মানুষ। পরীক্ষার আগের দিন রাত তিনটায় কল দিলেও ভিডিও কলে বসে বসে সব কিছু বুঝায় দেয়। অন্যদিকে তানভীর, মুখের উপর বলে দিবে, "দোস্ত এখন যদি তোকে বুঝাইতে যাই আমার পরীক্ষাটা খারাপ হবে। তোর উচিৎ ছিলো আমাকে দুইদিন আগে নক দেয়া।"
মানুষের চোখে পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো প্রাণী হচ্ছে গাধা। তাকে পোষ মানানো সহজ, তাকে দিয়ে নিজের বোঝা টানানো সহজ। গাধা প্রশ্ন করতে জানেনা, ক্যালকুলেট করতে জানেনা। গাধা কখনো, কোনো পয়েন্টে গিয়ে ভাবেনা "আমি কেন দিনের পর দিন অন্যের বোঝা টেনে যাচ্ছি।"
গাধা একসময় ক্লান্ত হয়ে যায়। সেদিন সে ইনিয়েবিনিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করে তাকে দিয়ে আর সম্ভব হচ্ছেনা। তখন মানুষ সেই গাধাকে ডিসকার্ড করে অন্য গাধা খুঁজে নেয়৷ কারণ, গাধার মুখে প্রশ্ন বেমানান। যুক্তি অকাম্য। যেই মুহূর্তে গাধা বুঝতে পারে All along, he has been only support, গাধার নিজেকে দেয়ার জন্য কিছুই অবশিষ্ট থাকেনা।
অনাচার সহ্য করার মধ্যে কোনো ভালো নেই। কোনো সাহসিকতা নেই। একচেটিয়া সবার পোষ মেনে নেয়ার মধ্যে কোনো স্বকীয়তা নেই।
বয়স বাড়তে বাড়তে একদিন ঠিকই মাথায় হিট করে এসব। People pleasing is fun untill you realise people can, however, never be pleased.
তার চেয়ে বরং সিংহ হন, মানুষের চোখে রাগী ট্যাগ পাবেন, কিন্তু নিজের পারসোনাল একটা বাউন্ডারি তো থাকবে!
"ভালো" জিনিসটা আসলে বিশাল বড় একটা স্ক্যাম।
পৃথিবীতে যতো বেশি মানুষের কাছে আপনি ভালো, আপনি আসলে ততো ইজিলি কাস্টমাইজ্যাবল।
CP