25/02/2024
#সম্যক গুরুগণই রসূল part 2
কোন নবী যাতে তাঁর শেষাংশে রিসালাতের ভার অর্পণ করে রসূল রেখে যেতে দায়বদ্ধ থাকে। সেই লক্ষে প্রত্যেক নবীর কাছ থেকে রুহানী জগতে আল্লাহ এই মর্মে অঙ্গিকার নিয়েছিল যে, তোমার কাছে তোমার কিতাবের সমর্থক রূপে যখন রসূল আসবে তখন, তুমি তাকে বিশ্বাস করবে এবং অবশ্যই (রিসালাত দিয়ে) সাহায্য করবে। (ইমরান, ৮১ আয়াত)। প্রত্যেক নবী এই অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিল। আর তাই, এই আয়াতের অঙ্গিকার অনুসারেই প্রত্যক নবীর পরেই একজন রসূলের অস্তিত্ব আছে প্রমাণ হয়। যেহেতু নবী মোহাম্মদ (স.)ও একই অঙ্গিকারে আবদ্ধ (আহাযাব, ৭আয়াত)। নবী মোহাম্মদ (স.) যেহেতু নবী তাহলে ইমরানের ৮১ আয়াত অনুসারে প্রত্যেক নবীর পরই একজন রসূল থাকিলে সেই মোতাবেক নবী মোহাম্মদ (স.) এর পরে আরেকজন রসূল আছে, এটা প্রমাণ হয়, আর সেই রসূল কে, কী তার পরিচয়? এটাই আমরা জানব। নবী মোহাম্মদ (স.) যাকে রিসালাতের ভার অর্পণ করেছেন। তিনি হলেন রিসালাত প্রাপ্ত রসূল। তিনি কিন্তু নবী নহেন। তাঁর দায়িত্ব হচ্ছে নবী মোহাম্মদ (স.) এর রেখে যাওয়া পবিত্র কোরআন প্রচার করা। যেহেতু নবী মোহাম্মদ (স.) এর পর থেকে নবুয়ত শেষ কিন্তু রিসালাতের ধারা অব্যাহত থাকবে রোজ কিয়ামত পর্যন্ত। কারণ সার্বক্ষণিকভাবে ইবলিস সক্রিয় আছে। আর তাই ইবলিসকে প্রতিহত করার জন্য রসূল ব্যবস্থাকে অব্যাহত রাখা হয়েছে। এজন্য তাগুত ইবলিসকে বর্জন করে মানুষকে আল্লাহর ইবাদত করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য আল্লাহ রসূল পাঠায়। (নহল, ৩৬ আয়াত)। প্রত্যেক নবীর পর থেকেই রসূলের উপস্থিতি ইঙ্গিত পাওয়া যায় ইমরানের ৮১ আয়াতে। আর যদি কোনো অবস্থায় নবী মোহাম্মদ (স.) তার পরে কাউকে রেসালাতের ভার দিয়ে বিশ্বস্ত কোনো রসূলকে সাহায্য করে রসূল না রেখে যান, তাহলে তিনি ইমরানের ৮১ আয়াতের অঙ্গিকার ভঙ্গ করেছেন, প্রমাণ হয়। কিন্তু না, তিনি কোনো সময় অঙ্গিকার ভঙ্গ করেন নি, বরং তার উম্মতের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং সৎ কর্ম করেছে তাদের মধ্য থেকে বিশ্বস্ত একজনকে রসূল পদে স্থলাভিসিক্ত করেছেন। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, পৃথিবীতে যারা ইমান আনবে এবং সৎ কর্ম করবে তাদের মধ্যথেকে রসূল পদে স্থলাভিসিক্ত নির্ধারণ করা হয়। (নূর, ৫৫ আয়াত)। এই আয়াতে খলিফা শব্দ এসেছে, খলিফা শব্দের অর্থ স্থলাভিসিক্ত করা। (আরবি অভিধান পৃ. ১২৬৬)। এখানে উল্লেখ্য যে, রসূল পদে স্থলাভিসিক্ত করার প্রক্রিয়া হচ্ছে রিসালাতের ভার অর্পণ করার মাধ্যমে। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে রিসালাতের ভার অর্পণ করে থাকেন। (আন আম, ১২৪ আয়াত)। কাজেই দেখা যাচ্ছে, নবী মোহাম্মদ (স.), ইমরানের ৮১ আয়াতের অঙ্গীকার অনুসারে, নুরের ৫৫ আয়াত মোতাবেক ও আনামের ১২৪ আয়াতের প্রক্রিয়া অনুসারে, তাঁর বিশ্বস্ত সাহাবী হযরত আলী (রাঃ) এর উপর রিসালাতের ভার দিয়ে রসূল পদে স্থলাভিসিক্ত করে গেছেন। হযরত আলী রিসালাত প্রাপ্ত শুধু রসূল, তিনি কিন্তু নবী নয়। হযরত আলী তার শেষাংশে একই প্রক্রিয়ায় হযরত হাসান বসরী (র.) কাছে রিসালাতের ভার অর্পণ করেন। একই প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিক ভাবে রিসালাতের ভার অর্পনের মাধ্যমে রসূলের ধারা বর্তমান পর্যন্ত অব্যাহত আছে।