ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি 🌙 Welcome to 📿Islamic History & Culture📿 It's a rich Page of Islamic heritage and culture with us!

 🇧🇩2024
10/08/2024

🇧🇩2024

এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছেনঃ “যারা পরকালে দোযখ থেকে মুক্তি এবং জান্নাত লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত করেন, তারা শিরক করেন। তাদের ইব...
09/06/2024

এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছেনঃ “যারা পরকালে দোযখ থেকে মুক্তি এবং জান্নাত লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদত করেন, তারা শিরক করেন। তাদের ইবাদত বরবাদ হবে।” কুরআন-হাদীসের আলোকে লেখকের বক্তব্য কতটুকু ঠিক?....................
উত্তরঃ
এরূপ কোন কথা কুরআন-হাদীসে পাওয়া যায় না। বরং কুরআনুল কারীমে মহান রাব্বুল ‘আলামীন জান্নাতের নিয়ামতের কথা বর্ণনা করেছেন, তারপর জান্নাত পাওয়ার জন্য আমল করতে আদেশ দিয়েছেন। যেমন সূরা সাফফাতে ইরশাদ হচ্ছে- “নিশ্চয় ইহা (জান্নাত পাওয়া) মহা সাফল্য, এরূপ সাফল্যের জন্য আমলকারীদের আমল করা উচিত।”

এ ছাড়া হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত মু’আয রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন, তরজমাঃ “আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লামকে বললাম- হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এরূপ কিছু আমলের কথা বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।” রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন, “নিশ্চয় তুমি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেছ। ইহা ঐ ব্যক্তির জন্য সহজ- যার জন্য আল্লাহ পাক সহজ করে দেন। এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বললেন- আল্লাহকে এক বলে স্বীকার করবে। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না এবং নামায কায়ম করবে। যাকাত আদায় করবে। রামাযানের রোযা রাখবে এবং হজ্জ করবে।”

অত্র হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম জান্নাত পাওয়ার ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য আমল বলে দিলেন। যদি জান্নাত পাওয়ার উদ্দেশ্যে এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে ইবাদত করলে শিরক হতো, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম মু’আযকে রাযি. অবশ্যই বলে দিতেন যে, তুমি জান্নাত পাওয়ার এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে ইবাদত করো না। কেননা, এটা শিরক।
যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম একথা বলেননি, তাই এই হাদীসই এবং এ ধরণের আরও অনেক হাদীস উক্ত লেখকের কথা ভিত্তিহীন প্রমাণ করে। তবে একথা বলা যেতে পারে যে, প্রতিটি মু’মিন জান্নাত ও জাহান্নামের উর্ধ্বে ওঠে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ইবাদত করতে পারলে সেটা ইখলাসের অনেক উঁচু স্তর হবে। কেননা, আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জন হয়ে গেলে জান্নাতও হাসিল হবে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ হবে। অবশ্য সর্ব অবস্থায় আল্লাহর দরবারে জান্নাতের কামনা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য দু’আ করতে হবে। এটা রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম নির্দেশ। রামাযানে যে দু’টি কাজ বেশী বেশী করার জন্য রাসূলুল্লাহ পরামর্শ দিয়েছেন। এ দু’টিই হল- জান্নাতের জন্য দু’আ এবং জাহান্নাম থেকে পরিত্রানের জন্য দু’আ করা।

[সূরা সাফফাত, ৬০-৬১ # মা‘আরিফুল কুরআন, ৭/৪৩৩ # মিশকাত শরীফ, ১/১৪]

#সংগ্রহিত

প্রশ্ন ও উত্তরঃ_______________প্রশ্নঃযদি কারও বিয়েতে বাবা এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে দেয়া স্বর্নের পরিমান এক/দেড় ভড়ির মত হয় বা ...
06/06/2024

প্রশ্ন ও উত্তরঃ
______
_____
____
প্রশ্নঃ
যদি কারও বিয়েতে বাবা এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে দেয়া স্বর্নের পরিমান এক/দেড় ভড়ির মত হয় বা এর চাইতেও বেশি। জানামতে রুপার নেসাব পরিমান না। ক্যাশ আছে মোহরানার বিশ হাজার টাকা, হজ্জ এর উদ্দেশ্যে। এছাড়া মেয়ের আর কোনো সামর্থ্য নেই, ইচ্ছা হলেও কুরবানী করার মত টাকাটা পারছেই না জোগাড় করতে। এক্ষেত্রে কুরবানী না করতে পারলে কি গুনাহ হবে? এক্ষেত্রে তার করনীয় কী?

উত্তরঃ
স্বর্ণের বাজারমূল্য এবং হজ্জের জন্য জমানো বিশ হাজার টাকা মিলিয়ে যদি রূপার নেসাব পরিমাণ হয়ে যায়, তাহলে উক্ত মহিলার উপর কুরবানী করা আবশ্যক। কুরবানীর জন্য গরু জবাই করা আবশ্যক নয়, বরং বকরী, ভেড়া দেয়া দিয়েও কুরবানী করা যায়।

لا بد من اعتبار الغنى، وهو ان يكون فى ملكه مائتا درهم او عشرين دينارا ا وشئ تبلغ قيمته ذلك سوى مسكنه وما يأثث به وكسوته وخادمه وفرسه وسلاحه وما لا يستغنى عنه وهو نصاب صدقة الفطر (بدائع الصنائع-4/196، رد المحتار-9/453، الفتاوى الهندية-5/292)

وأما شرائط الوجوب: منها اليسار، وهو ما يتعلق به وجوب صدقة الفطر…… والمسر فى ظاهر الرواية: من له مأتا درهم أو عشرون دينارا أو شيء يبلغ ذلك سوى مسكنه ومتاع مسكنه ومركوبه وخادمه فى حاجته التى لا يستغنى عنها (الفتاوى الهندية-5/292، جديد-5/336-337، المحيط البرهانى-8/455، رقم-10776، الفتاوى الهندية-17/405، رقم-27649)

فى الدر المختار–وَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا دُونَ الْآخَرِ تَعَيَّنَ مَا يَبْلُغُ بِهِ، وَلَوْ بَلَغَ بِأَحَدِهِمَا نِصَابًا وَخُمُسًا وَبِالْآخَرِ أَقَلَّ قَوَّمَهُ بِالْأَنْفَعِ لِلْفَقِيرِ (رد المحتار، كتاب الزكاة، باب زكاة المال-3/229، وكذا فى الهداية-1/196، وكذا فى الهندية-1/179، وكذا فى التاتارخانية-2/237، وكذا فى المبسوط للسرخسى-2/191)

_collected

𝚀𝚞𝚎𝚜𝚝𝚒𝚘𝚗 𝚊𝚗𝚍 𝙰𝚗𝚜𝚠𝚎𝚛⬇️..................একজন হিন্দু ভদ্রলোক দুইজন মুসলমানের সামনে ‘আমি অমুক, স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে ইসলাম ধর্ম...
05/06/2024

𝚀𝚞𝚎𝚜𝚝𝚒𝚘𝚗 𝚊𝚗𝚍 𝙰𝚗𝚜𝚠𝚎𝚛⬇️..................

একজন হিন্দু ভদ্রলোক দুইজন মুসলমানের সামনে ‘আমি অমুক, স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম’ বলে কালেমা পাঠ করলো। এরপর সে একটি ইসলামী নাম গ্রহণ করলো। লোকটি পরে ঐ দুই স্বাক্ষীর সামনে একজন মুসলমান বিধবাকে দেনমোহর উল্লেখ পূর্বক বিবাহের প্রস্তাব দিলো এবং মেয়েটি তা কবুল করলো। সামাজিক ও পারিবারিক কারণে বিষয়টি মেয়েটির অল্প সংখ্যক আত্মীয় স্বজন ছাড়া আর কাউকে জানানো হলো না। উল্লেখ্য, ঐ নওমুসলিম যথারীতি তার স্ত্রীর ভরণপোষণ দেয় এবং স্ত্রীর সাথে সন্তোষজনক যোগাযোগ রাখে।

এখন প্রশ্ন হলো, উল্লেখিত প্রক্রিয়ায় লোকটির ইসলাম ধর্ম গ্রহণ এবং মুসলিম নারীকে বিবাহ উভয়টি শরী‘আতসম্মত হয়েছে কিনা? যদি না হয়ে থাকে তাহলে কী উপায়ে তা করতে হবে?
উত্তরঃ

ক.
কারো প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য মানুষের সামনে বা কাউকে সাক্ষী রেখে কালিমা পড়া জরুরী নয়। তবে দুনিয়ায় তার উপর ইসলামী আইন কানুন চালু করার জন্য মুসলমানদের সাক্ষী রেখে কালিমা পড়া জরুরী। প্রশ্নে উল্লেখিত সূরতে যেহেতু সে দুইজন মুসলমানের সামনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের লক্ষ্যে কালিমা পাঠ করেছে তাই তার ইসলাম গ্রহণ সঠিক হয়েছে। এখন সে মুসলমান বিবেচিত হবে। তার জন্য ইসলাম গ্রহণের পর থেকে ইসলামের জরুরী বিষয়গুলো জানা ও মানা ফরয হয়ে গেছে।
.........

খ.
উক্ত ব্যক্তি যেহেতু প্রকাশ্যভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে, তাই তার জন্য বিবাহের যাবতীয় শর্ত বজায় রেখে যেকোনো মুসলমান নারীকে বিবাহ করা বৈধ হবে। অতএব, প্রশ্নোক্ত বিবাহও শুদ্ধ হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্য পার্থিব এ জীবনকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদর্শ মোতাবেক পরিচালিত করে পরকালে মুক্তির যোগ্য হওয়া। কাজেই মুসলমান নারীর সাথে নিয়মিত ঘর-সংসার করার সাথে সাথে শরী‘আতের অন্যান্য হুকুম আহকাম মেনে চলার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। এমন যেন না হয় যে, ইসলাম গ্রহণ করা হয়েছে শুধু মুসলিম নারীকে বিবাহ করার জন্যই। আল্লাহ না করুন এমন হয়ে থাকলে, এই ইসলাম পরকালের কোনো কাজে আসবে না।

{প্রমাণ: সূরা নিসা: ৯৪, বাকারা: ১১২, সূরা নূর:৩২} {বুখারী হাদীস নং-১২৮, মুসলিম হাদীস নং- ১৭৩১, রদ্দুল মুহতার: ১/২২১, ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/২৬৭}

—সংগ্রহিত

উত্তরঃসর্বত্র হাযির-নাযির হওয়া যেমন আল্লাহ তা‘আলার বৈশিষ্ট তদ্রুপ আলিমুল গায়েব হওয়ার আল্লাহর বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা‘আলা ছা...
05/06/2024

উত্তরঃ

সর্বত্র হাযির-নাযির হওয়া যেমন আল্লাহ তা‘আলার বৈশিষ্ট তদ্রুপ আলিমুল গায়েব হওয়ার আল্লাহর বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্য কাউকে নিজ ক্ষমতা বলে আলিমুল গায়েব ও হাযির নাযির বিশ্বাস করা শিরকী কাজ। যে কেউ এরূপ আকীদা রাখবে সে ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। তার পিছনে নামায পড়া জায়িয হবে না। তার বিবাহ বন্ধনও ঠিক থাকবে না। নতুনভাবে কালিমা পড়ে ঈমান এনে তওবা করে বিবাহ দুহরিয়ে নিতে হবে।......
আর যদি আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত বলে হাযির-নাযির কিংবা আলিমুল গায়েব মনে করে তা হলে সেটা তার মনগড়া মত এবং আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতি মিথ্যা অপবাদ হবে। কেননা,আল্লাহ পাক কোথাও একথা বলেননি যে, তিনি স্বীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাযির-নাযির কিংবা আলিমুল গায়েব বানিয়েছের; তেমনি রাসূলও কখনো দাবী করেননি যে তিনি হাযির-নাযির বা আলিমুল গায়েব ছিলেন। উপরন্তু খোদ নবী জীবনে এমন বহু ঘটনা রয়েছে যাদ্বারা এ কথা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, তিনি নির্দিষ্ট ওহীর বাইরে অন্য কোন গায়েব জানতেন না এবং তিনি হাযির নাযিরও ছিলেন না।......
হযরত আয়িশা রা.-এর প্রতি মুনাফিকদের মিথ্যা অপবাদ ও বীরে মাঊনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রিয় সাহাবীদের শাহাদতের ঘটনা, ইয়াহুদীদের পক্ষ থেকে বিষ মিশ্রিত খানা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর খাওয়া সহ অসংখ্য ঘটনা এর জলন্ত প্রমাণ। কোন কোন জাহেল কুরআন মাজীদের দুএকটা শব্দের মনগড়া ব্যাখ্যা করে এ গোমরাহ মতবাদ প্রমাণ করতে চায় যা স্বয়ং কুরআন মাজীদের অসংখ্য আয়াতের স্পষ্ট ভাষ্যের পরিপন্থী হওয়ায় তাদের মুর্খতাকেই দিবালোকের ন্যায় প্রমাণ করে দেয়।.........
সুতরাং আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা রাসূল সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়াসাল্লাম আলিমুল গায়েব বা হাযির-নাযির এমতটি নিছক গোমরাহী আকীদাগত মারাত্মক ধরনের বিদআত। এ মত পোষণকারী কাফের হবে না বটে, তবে নিশ্চিত ফাসিক এবং গোমরাহ। এমন লোকের ইমামতী মাকরূহে তাহরীমী। বিনা উযরে তার উকতেদা করাও মাকরূহে তাহরীমী। মসজিদ কমিটির উচিত এমন ইমামকে উক্ত আকীদা হতে তাওবা না করলে অব্যাহতি দিয়ে মুত্তাকী পরহেযগার আলেমকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়।

_collected

 #ঐতিহাসিক_বাবরি_মসজিদ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বাবরি মসজিদ ছিল উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত একটি মসজিদ, যা আনুমানিক ১৫২৮-...
08/02/2024

#ঐতিহাসিক_বাবরি_মসজিদ
এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বাবরি মসজিদ ছিল উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় অবস্থিত একটি মসজিদ, যা আনুমানিক ১৫২৮-২৯ খ্রিষ্টাব্দে (৯৩৫ হিজরি) মুঘল সম্রাট বাবরের নির্দেশে মীর বাকি কর্তৃক নির্মিত হয়।

মসজিদটি রামকোট নামে পরিচিত একটি পাহাড়ে অবস্থিত ছিল এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অংশ দাবি করেছিল যে মুঘলরা মসজিদটি নির্মাণের জন্য রামের (রাম জন্মভূমি) চিহ্নিতকারী একটি কাঠামো ধ্বংস করেছিল। কিন্তু বিরোধী মুসলিমরা তা অস্বীকার করে।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর লালকৃষ্ণ আডবাণীর রথযাত্রায় উন্মত্ত করসেবকরা মসজিদ ভেঙে দেয়।

এই ধ্বংস স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল এবং ধর্মনিরপেক্ষ জাতি হিসাবে প্রজাতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল।
বাবরি মসজিদ-অযোধ্যা বিতর্ক কয়েক দশক ধরে একটি আবেগপূর্ণ বিষয় এবং হিন্দু ও মুসলিম ধর্মীয় গোষ্ঠীর সাথে জড়িত বেশ কয়েকটি আইনি মামলায় জড়িয়ে পড়েছে।

এখানে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি সম্পর্কিত ঘটনার কালপঞ্জি রয়েছে। ১৫২৪ বাবরের সেনাপতি মীর বাকি মসজিদটি নির্মাণ করেন। ১৮৫৯ ব্রিটিশ প্রশাসক উপাসনালয়গুলিকে আলাদা করার জন্য বেড়া তৈরি করেন, ভিতরের কোর্টটি মুসলমানদের দ্বারা এবং বাইরের কোর্ট হিন্দুদের দ্বারা ব্যবহার করা হয়। ১৮৮৫ মহন্ত রঘুবরদাসের জনম আস্থান মামলা, একটি চবুতরের উপরে একটি মন্দির নির্মাণের অনুমতি চেয়েছিল, অস্বীকার এবং বরখাস্ত ১৯৩৪ শাহজাহানপুরে গরু জবাইয়ের খবরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ফলে মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু পরবর্তীতে এটি মেরামত করা হয় ১৯৪৪ ওয়াকফ কমিশনার বাবর সুন্নি হওয়ায় জমিটিকে সুন্নিদের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করেন। ১৯৪৯ মসজিদের ভিতরে রাম মূর্তি প্রদর্শিত, মুসলমানদের অভিযোগ এবং মামলা দায়ের। হিন্দুরা পাল্টা মামলা দায়ের করে, সরকারকে এটিকে বিতর্কিত ঘোষণা করতে এবং এর গেটে তালা দেওয়ার জন্য নেতৃত্ব দেয়।

১৯৫০-৫৯ হিন্দু পুরোহিতরা পরবর্তী নয় বছরে অনেকগুলি মামলা দায়ের করে এবং কাঠামোর ভিতরে মূর্তি স্থাপনের দাবিতে এবং নির্মোহী আখড়া ১৯৫৯ সালে সাইটের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের দাবিতে একটি মামলা দায়ের করে। ১৯৬৪ "হিন্দু স্বার্থ" রক্ষার জন্য VHP গঠিত হয়েছিল ১৯৮৪ ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ নির্বাচন কংগ্রেসকে ব্যাপক বিজয় এনে দেয়। বিজেপিকে দুটি লোকসভা আসনে হ্রাস করে ১৯৮৪ হিন্দু সংগঠনগুলি ভগবান রামের জন্মস্থান "মুক্ত" করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে এবং তাঁর সম্মানে একটি মন্দির তৈরি করে।

১৯৮৬ বিতর্কিত মসজিদের গেট খুলে দেওয়া হয় যাতে হিন্দুদের সেখানে উপাসনা করার অনুমতি দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করেছে। ১৯৮৯ ভিএইচপি প্রচারণা বাড়ায়, বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জমিতে একটি রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করে।
১৯৮৯ ভি.পি. সিং সরকার বিজেপি এবং সিপিআই(এম)-এর বাইরের সমর্থনে শপথ নিল। এর পরেই, ভি.পি. ওবিসি কোটা নিয়ে মন্ডল কমিশনের রিপোর্ট কার্যকর করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ১৯৯০ এল.কে. ২৫ সেপ্টেম্বর সোমনাথে আডবাণীর "রথযাত্রা" শুরু হয় ১৯৯০ অক্টোবর ২৩, লালু প্রসাদ যাদব আডবাণীকে গ্রেপ্তার করে এবং সমষ্টিপুরে তার "রথযাত্রা" বন্ধ করে দেয়। ১৯৯০ পুলিশ ভিএইচপি কর সেবকদের উপর গুলি করে যারা আদেশ অমান্য করে এবং বিতর্কিত এলাকায় মার্চ করে। ১০ নভেম্বর, ভি.পি. সিং আস্থা ভোট হারান, এবং পদত্যাগ করেন। এরপরই কংগ্রেসের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিচ্ছেন চন্দ্র শেখর। ১৯৯০-৯১ বিজেপি চারটি রাজ্যে জিতেছে: এমপি, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, ইউপি।

১৯৯২ কর সেবকরা মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে, সিএম কল্যাণ সিং আডবাণী, উমা ভারতী এবং এম.এম. জোশী চার্জশিট করেছেন। ১৯৯২ প্রধানমন্ত্রী পি.ভি. নরসিমা রাও বিজেপি সমর্থকদের দ্বারা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রেক্ষিতে চারটি বিজেপি সরকারকে বরখাস্ত করেছেন। ১৯৯২ লিবারহান কমিশন ধ্বংসের তদন্তের জন্য গঠিত হয়। ১৯৯২-৯৩ বোম্বেতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয় এবং তারপরে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে কয়েকশ লোক নিহত হয়। ২০০২ PM A.B. বাজপেয়ী তার অফিসে একটি সেল স্থাপন করেন এবং শত্রুঘ্ন সিংকে হিন্দু ও মুসলমানদের সাথে কথা বলে সমাধানের জন্য নিযুক্ত করেন।

২০০২ গোধরা ট্রেন হামলার পর গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। ২০০৩ এএসআই আদালতের নির্দেশে একটি সমীক্ষা শুরু করে যাতে ওই স্থানে রাম মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কিনা। এটি একটি মন্দিরের প্রমাণ খুঁজে পায় কিন্তু মুসলমানরা এই সন্ধানের বিষয়ে বিতর্ক করে। ২০০৪ একটি ইউপি আদালত ধ্বংসের ক্ষেত্রে তার অভিযুক্ত ভূমিকা থেকে আডবাণীকে অব্যাহতি দেওয়ার পূর্বের আদেশটি ফিরিয়ে দেয়। ২০০৫ পাঁচজন সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয় যখন তারা একটি বিস্ফোরক-ভর্তি জিপে কমপ্লেক্সের দেয়ালে একটি গর্ত উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ২০০৯ গঠিত হওয়ার ১৭ বছর পর, লিবারহান কমিশন তার রিপোর্ট পেশ করে।
২০১০ এলাহাবাদ হাইকোর্টের নিয়ম, সাইটটি বিভক্ত করে এবং মুসলিম, হিন্দু এবং নির্মোহী আখড়াকে এক-তৃতীয়াংশ প্রদান করে। মসজিদের জায়গাটি হিন্দুদের দেওয়া হয়। ২০১১ সুপ্রিম কোর্ট হিন্দু ও মুসলিম গোষ্ঠীর আপিলের পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে ২০১৪ বিজেপির নরেন্দ্র মোদী ৩৩৬ টি আসন জিতে কেন্দ্রে এনডিএ জোটকে ক্ষমতায় নিয়ে যায়। ২০১৭ সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে আদবানি এবং অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা যাবে না এবং পুনরুজ্জীবিত করা উচিত। ২০১৭ এপ্রিল ১৯, সুপ্রিম কোর্ট তার রায় ঘোষণা করে, বিজেপি নেতাদের অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং লখনউয়ের ট্রায়াল কোর্টকে দুই বছরের মধ্যে শুনানি শেষ করতে বলে।

২০১৭ RSS প্রধান মোহন ভাগবত ঘোষণা করেছেন যে বিতর্কিত স্থানে শুধুমাত্র রাম মন্দির তৈরি করা হবে, সুপ্রিম কোর্টের শুনানির আগে ২০১৮;অসংখ্য দেওয়ানী মামলায় একাধিক পক্ষের শুনানির পর, সুপ্রিম কোর্ট একটি উপযুক্ত বেঞ্চের সামনে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বিষয়টি শুনানির নির্দেশ দেয়। যদিও এটি একটি তারিখ নির্দিষ্ট করেনি। জানুয়ারী ২০১৯ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ মামলার জন্য পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করেন। মার্চ ২০১৯ সুপ্রিম কোর্ট 8 মার্চ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির জন্য বিচারক (অব.) এফএমআই কালিফুল্লার নেতৃত্বে একটি মধ্যস্থতা প্যানেল নিয়োগ করে। আগস্ট ২০১৯ মধ্যস্থতা প্যানেল একটি বন্ধুত্বপূর্ণ মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়। ৬ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হবে। অক্টোবর ২০১৯, ৪০ দিনের জন্য প্রতিদিনের ভিত্তিতে মামলার শুনানির পর, আদালত ১৫ অক্টোবর তার আদেশ সংরক্ষণ করে।

নভেম্বর ২০১৯ অযোধ্যায় ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমির মালিকানা রাম লল্লার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মন্দির তৈরির জন্য তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্র স্থাপন করা একটি ট্রাস্টকে জমি দেওয়া হবে। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য পাঁচ একর বিকল্প জমি দেওয়া হবে, শনিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মত রায় দিয়েছে।

প্রিয় পাঠক, ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ এর নির্মম ইতিহাস কে সবার মাঝে সেয়ার করুন
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি র সঙ্গে থাকুন।

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৮ (শেষ পর্ব) ৭। মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার ওপর ঈমানমৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার ওপর ঈমান আনার ...
03/02/2024

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৮ (শেষ পর্ব)

৭। মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার ওপর ঈমান

মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার ওপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, আমাদের বর্তমান জীবন পরীক্ষার নিমিত্ত। মৃত্যুর পর মহান আল্লাহ আমাদেরকে পুনরায় জীবিত করে এ জীবনের সকল বিষয়ের হিসাব নিবেন। মৃত্যুর পর একটি রয়েছে কবরে সাময়িক ফলভোগের বরযখী যিন্দেগী, আর পরবর্তীতে কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পর আসবে পরকালীন আসল যিন্দেগী। পূর্ণাঙ্গ হিসাব-কিতাবের পর বান্দার জন্যে নির্ণীত হবে বেহেশত বা দোযখের সেই অনন্ত যিন্দেগী।

কিয়ামতের পূর্বেই মুনকার-নাকীরের প্রশ্নোত্তরের পর কবরের ভিতরে নেককারদের জন্যে শান্তি ও আরামের ব্যবস্থা করা হয় এবং বদকারদের জন্যে আযাব শুরু হয়ে যায়।

কবর দ্বারা উদ্দেশ্য, আলমে বরযখ অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাতের যিন্দেগীর মধ্যবর্তী যিন্দেগী। সকল মানুষ ইনতিকালের পর সেখানেই পৌঁছে যায়, তাই তাকে কবর দেয়া হোক বা না-ই হোক। যেমন-অনেককে বাঘ বা কোন হিংস্র প্রাণী খেয়ে ফেলে, কতেককে আগুনে জ্বালানো হয়, তারাও সেখানে উপস্থিত হয়। কবর বলে মূলত এ জগতকেই বোঝানো হয়। নেক লোকদের জন্যে কবর জান্নাত বা বেহেশতের একটা অংশ হয়ে যায়। তারা সেখানে আরামের সাথে অবস্থান করতে থাকে। মৃত ব্যক্তির জন্যে দু‘আ করলে বা কিছু সদকা করলে, সে তা পেয়ে খুশি হয় এবং তাতে তার বড়ই উপকার হয়।

উল্লেখ্য, ঈমানে মুফাসসালের এ অংশটি ভিন্ন কোন বিষয় নয়, বরং ৫নং বিষয় অর্থাৎ কিয়ামতের ওপর ঈমান আনারই একটি স্তর; কিন্তু বিষয়টি জটিল ও সূক্ষ্ম হওয়ায় ভালভাবে বোঝানোর লক্ষ্যে আলাদা ধারার মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ হলো সহীহ ঈমানের সাতটি আরকান এবং তার কিছুটা ব্যাখ্যা ও তাফসীর। যে কোন ব্যক্তি এসব কথার সবগুলোকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করবে, মুখে স্বীকার করবে এবং এগুলোর দাবী অনুযায়ী আমলে সালিহা করবে, কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে তাকে বলা হবে পরিপূর্ণ মু‘মিন ও মুসলিম। আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদা যে, তাকে দুনিয়াতে, বরযখে ও আখিরাতে ইজ্জত ও শান্তির সাথে রাখবেন এবং তাকে সকল প্রকার আযাব-গযব ও কষ্ট-পেরেশানি থেকে হিফাযত করবেন। কিয়ামতের দিন দোযখ থেকে হিফাযত করে তাকে আল্লাহর পূর্ণ সন্তুষ্টির সংবাদসহ মহাসুখের আবাস ও আনন্দের জান্নাত দান করবেন।

আর যে ব্যক্তি উল্লেখিত কথাগুলোর সবগুলো মনে-প্রাণে বিশ্বাস তো করে, কিন্তু অলসতা বা গাফলতির কারণে কথাগুলোর দাবির ওপর আমল করে না বা আংশিকভাবে আমল করে, তাকে শরী‘আতের দৃষ্টিতে ফাসিক বা গুনাহগার মু‘মিন বলা হয়। তার গুনাহসমূহকে আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছা করলে মাফ করতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে তাকে আযাব ও দিতে পারেন। তবে সে ব্যক্তি তার ঈমানের বদৌলতে অবশ্যই জান্নাতে যাবে; সরাসরিও যেতে পারে, অথবা তার অপরাধের শাস্তি ভোগ করার পরে জান্নাতে যেতে পারে।

কিন্তু যে ব্যক্তি উক্ত বিষয়সমূহকে অবিশ্বাস করবে, অথবা এগুলো থেকে মাত্র কোন একটি বিষয়কে অবিশ্বাস করবে কিংবা তাতে সন্দেহ পোষণ করবে, অথবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করবে, কিংবা এগুলোর মধ্যে কোন দোষ বের করবে, তার ঈমান থাকবে না। বরং সে কাফের বলে গণ্য হবে। আর যদি পূর্ব থেকে মুসলমান থেকে থাকে, তারপরে তার থেকে এ ধরনের অপরাধ প্রকাশ পায়, তাহলে তাকে মুরতাদ (দ্বীন ত্যাগকারী) বলা হবে, যদিও সে মুসলমান হওয়ার দাবি করে এবং যদিও সে পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামা‘আতের সাথে পড়ে, মাথায় টুপি ও মুখে দাঁড়ি রাখে রাখে বা হজ্ব-উমরা পালন করে। এসব আমল পরকালে তার কোন কাজে আসবে না। কারণ এ কাজগুলো নেক আমল। আর কেউ নেক আমল করলেই সে মু‘মিন গণ্য হয় না। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর যামানায় অনেক মুনাফিক অর্থাৎ নিকৃষ্ট কাফির ছিল, তারা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে সকল নেক কাজে অংশ গ্রহণ করতো। এমনকি জিহাদেও শরীক হতো। তারপরও তারা মু‘মিন বলে গণ্য হয়নি।

বস্তুত ঈমান ভিন্ন জিনিস এবং আমল ভিন্ন জিনিস। সহীহ ঈমানের সাথে আমল দুনিয়া ও আখিরাতের ফায়দা পৌঁছায়। আর আমল ব্যতীত শুধু ঈমানও ফায়দা দেয় না। কারণ, এমন ঈমানদার, যার নিকট নেক আমল নেই, সেও কোন এক সময় জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিন্তু ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল দুনিয়াতে কিছু ফায়দা পৌঁছালেও যেমন, তার সুনাম হয় বা ব্যবসা বৃদ্ধি পায়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে ইত্যাদি, কিন্তু আখিরাতে ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল কোনই কাজে আসবে না।

এ সকল বিষয় স্পষ্টভাবে জানা থাকা জরুরী। যাতে ফিতনা-ফাসাদের যুগে ঈমান রক্ষা করা সহজ হয়। হাদীস-শরীফে আছে, ফিতনার যামানায় অনেক মানুষ সকালে মু‘মিন থাকবে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। [সূত্র : তিরমিযী শরীফ খণ্ড-২, পৃষ্ঠা ৪৩, মুসলিম শরীফ খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭৫]

অর্থাৎ লোকেরা ইলমে দ্বীন শিখবে না, হক্কানী উলামায়ে কিরামের সাথে সম্পর্ক রাখবে না; অপরদিকে বদদ্বীনীর সয়লাব ব্যাপকভাবে প্রবাহিত হবে। এমনকি দ্বীনের নামে কুফর ও শিরকের প্রচার করা হবে; তখন মানুষ না বুঝে কুফরকে দ্বীন মনে করে গ্রহণ করে কাফির হয়ে যাবে। [আল্লাহ তা‘আলা সকলকে হিফাযত করুন।]

এখন দেখতে হবে, এসব সহীহ আক্বীদা ও বিশ্বাস মুসলমানগণ কতটুকু ধরে রেখেছে এবং কতটুকুর মধ্যে পরিবর্তন সাধন করে সহীহ আক্বীদাকে বিগড়ে ফেলেছে। এ পর্যায়ে মুসলিম সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত আকীদাসমূহ বর্ণনার আশা রাখি। তবে তার পূর্বে ঈমানের বিবরণ আরো সবিস্তারে উপলব্ধির জন্যে ঈমানের ৭৭ শাখার বর্ণনা করা হচ্ছে।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি র সাথে থাকুন,
লাইক, কমেন্টস এবং সবার মাঝে সেয়ার করুন।

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৭৬. তাকদীরের ওপর ঈমানতাকদীরের ওপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, মনে-প্রাণে অটল বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সমগ্র...
01/02/2024

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৭

৬. তাকদীরের ওপর ঈমান

তাকদীরের ওপর ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, মনে-প্রাণে অটল বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সমগ্র বিশ্বজগতে ভালো বা মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা‘আলা পূর্ব হতেই জানেন,
লাউহে মাহফুযে তা লিখে রেখেছেন এবং তিনি যেমন জানেন তেমনই হয়, তার মধ্যে কোন ব্যতিক্রম হয় না।

আল্লাহই সবকিছুর সৃষ্টি কর্তা। তার ক্ষমতা সর্বব্যাপী । তার ক্ষমতা ছিন্ন করে বের হতে পারে, এমন কেউ নেই। তিনি সর্বজ্ঞ, আদি-অন্ত সবকিছুই তিনি সঠিকভাবে জানেন।

মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা ভাল-মন্দ বুঝবার এবং কাজ করার ক্ষমতা দান করেছেন এবং ইচ্ছাশক্তিও দান করেছেন। তার দ্বারা নিজ ক্ষমতায়, নিজ ইচ্ছায় সে পাপ ও পুণ্যের কাজ করে। পাপ কাজ করলে আল্লাহ তা‘আলা অসন্তুষ্ট হন এবং পুণ্যের কাজ করলে সন্তুষ্ট হন।
কাজ করা ভিন্ন কথা, আর সৃষ্টি করা ভিন্ন কথা। সৃষ্টি তো সবকিছুই আল্লাহ তা‘আলা করেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করার ক্ষমতা আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে দান করেছেন।

মানুষ জীবনভর যতই ভাল বা মন্দ থাকুক না কেন, যে অবস্থায় তার ইনতিকাল হবে, সে হিসেবে শান্তি বা শাস্তি পাবে। যেমন, এক ব্যক্তি সারাজীবন মু‘মিন ছিল, কিন্তু মউতের পূর্বে ইচ্ছা পূর্বক কুফরী বা শিরকী কথা বললো বা ঈমান বিরোধী কাজ করলো, তাহলে সে কাফির সাব্যস্ত হবে।

সুতরাং, দিলের মধ্যে আল্লাহর রহমতের আশা ও গযবের ভয় রাখা জরুরী। আল্লাহ তা‘আলা মানুষের অসাধ্য কোন হুকুম করেননি। যা কিছু আদেশ করেছেন বা নিষেধ করেছেন, সবই বান্দার আয়ত্তে ও ইখতিয়ারে।

আল্লাহ তা‘আলার ওপর কোন কিছু করা ওয়াজিব নয়। তিনি যা কিছু দান করেন, সবই তাঁর রহমত এবং মেহেরবানী মাত্র। তাঁর ওপর কারো কোনরূপ দাবি বা হুকুম কিংবা কর্তৃত্ব চলে না। ছোট হতে ছোট গুনাহের কারণে তিনি শাস্তি দিতে পারেন এবং বড় থেকে বড় পাপও তিনি মার্জনা করতে পারেন। সবই তাঁর ইচ্ছাধীন। তিনি কাউকে দোযখে দিলে, সেটাই ইনসাফ এবং কাউকে জান্নাতে প্রবেশ করালে, সেটা তার রহমত। আপত্তি করার অধিকার কারো নেই।

প্রিয় পাঠক অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সাথে থাকুন।
লাইক কমেন্ট এবং সেয়ার করুন।

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৬৫. কিয়ামত দিবসের ওপর ঈমানকিয়ামত দিবসের ওপর ঈমান আনার অর্থ-কুরআন ও হাদীসে কিয়ামতের যতগুলো নিদর্শন ...
31/01/2024

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৬

৫. কিয়ামত দিবসের ওপর ঈমান

কিয়ামত দিবসের ওপর ঈমান আনার অর্থ-কুরআন ও হাদীসে কিয়ামতের যতগুলো নিদর্শন বর্ণিত হয়েছে, তা নিশ্চয়ই ঘটবে-দৃঢ়ভাবে এ কথা বিশ্বাস করা। যেমন- বিশ্বাস করা যে, ইমাম মাহদী রহ. আবির্ভূত হবেন। তিনি অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণতার সাথে বাদশাহী করবেন। ‘কানা দাজ্জাল’ অনেক অনেক ফিতনা-ফাসাদ করবে, তাকে খতম করার জন্য হযরত ঈসা আ. আসমান থেকে অবতীর্ণ হবেন এবং তাকে বধ করবেন। ‘ইয়াজুজ মা’জুজ’ অতিশক্তিশালী পথভ্রষ্ট শ্রেণীর মানুষ। তারা দুনিয়াতে ফিতনা-ফাসাদ ছড়িয়ে দেবে। অতঃপর আল্লাহর গযবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। ‘দাব্বাতুল আরদ’ নামে এক আশ্চর্য জানোয়ার পৃথিবীতে জাহির হবে এবং মানুষের সাথে কথা বলবে।

কিয়ামতের পূর্বে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবে, তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে এবং কুরআন শরীফ উঠে যাবে। এ ধরনের আরো অনেক ঘটনা ঘটবে। তারপরে কিছুদিনের মধ্যে সমস্ত মু‘মিনগণ মারা যাবেন এবং সমস্ত দুনিয়া কাফিরদের দ্বারা ভরে যাবে।আর তাদের উপর কিয়ামত কায়িম হবে।

সারকথা, কিয়ামতের সকল নিদর্শন যখন পূর্ণ হবে, তখন আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইসরাফীল আ. শিঙ্গায় ফুঁক দিবেন । তাতে কতিপয় জিনিস ব্যতীত সব ধ্বংস হয়ে যাবে, আসমান চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, সমস্ত জীবজন্তু মরে যাবে, যারা পূর্বে মারা গেছে, তাদের রুহ বেঁহুশ হয়ে যাবে। অনেক দিন এ অবস্থায় অতিবাহিত হবে। আল্লাহর নির্দেশে তারপর আবার-শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। তাতে সমস্ত আলেম আবার জীবিত হয়ে উঠবে এবং কেয়ামতের ময়দানে সকলে একত্রিত হবে।

কিয়ামতের দিন সূর্য অতি নিকটে চলে আসবে। ফলে মানুষের খুব কষ্ট হবে। কষ্ট দূর করার জন্য লোকেরা হযরত আদম আ. থেকে শুরু করে বড় বড় নবীগণের আ. নিকট সুপারিশের জন্য যাবে। কিন্তু কেউ সুপারিশ করার সাহস পাবে না। অবশেষে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শাফাআতে হিসাব-নিকাশ শুরু হবে।

মীযানের মাধ্যমে নেকী-বদীর হিসাব হবে। অনেকে বিনা হিসেবেই বেহেশতে চলে যাবে, আবার অনেককে বিনা হিসেবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। হিসাবের পর নেককারদের ডান হাতে এবং বদকারদের বাম হাতে আমলনামা দেয়া হবে।

সেদিন জাহান্নামের উপরে অবস্থিত পুলসিরাতের উপর দিয়ে সকলকে পার হতে হবে। নেককার লোকেরা তা দ্রুত পার হয়ে যাবেন, কিন্তু বদকার লোকেরা পার হওয়ার সময় পুলসিরাতের নিচে অবস্থিত দোযখের মধ্যে পড়ে যাবে।

সেই কঠিন দিনে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতদেরকে হাউজে কাউসারের শরবত পান করাবেন। তা এমন তৃপ্তিকর হবে, যা পান করার পর পিপাসার নামমাত্র থাকবে না। জাহান্নামের মাঝে ভয়ানক অগ্নিকুণ্ডসহ বিভিন্ন রকম শাস্তির উপকরণ মহান আল্লাহ পূর্ব হতেই সৃষ্টি করে রেখেছেন। যার মধ্যে বিন্দুমাত্র ঈমান আছে, সে যত বড় পাপী হোক না কেন, স্বীয় পাপের শাস্তি ভোগ করবে, অতঃপর নবীগণের আ. কিংবা অন্যদের সুপারিশে দোযখ হতে মুক্তি লাভ করে কোন এক সময় বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর যারা কুফরী করেছে, বা শিরকী করেছে, তারা যদি দুনিয়াতে অনেক ভাল কাজও করে থাকে, তথাপি তারা কখনো কিছুতেই দোযখ হতে মুক্তি পাবে না। দোযখীদের কখনো মৃত্যুও আসবে না। তারা চিরকাল শাস্তিই ভোগ করতে থাকবে এবং তাদের কোন আশা-আকাঙ্খা পূর্ণ হবে না।

দোযখের ন্যায় বেহেশতকেও আল্লাহ তা‘আলা পূর্ব হতে সৃষ্টি করে রেখেছেন। সেখানে নেক লোকদের জন্যে অগণিত ও অকল্পনীয় শান্তির সামগ্রী ও নেয়ামত মওজুদ আছে। যে একবার বেহেশতে যাবে, তার আর কোন ভয় বা ভাবনা থাকবে না। এবং কোনদিন তাকে বেহেশত থেকে বের হতে হবে না। বরং চিরকাল সেখানে জীবিত অবস্থায় থেকে সুখ-শান্তি ভোগ করতে থাকবে।

বেহেশতের সকল নেয়ামতের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলার দীদার বা দর্শন লাভ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট নেয়ামত। যদিও দুনিয়াতে জাগ্রত অবস্থায় চর্ম চোখে কেউ আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু মু‘মিনগণ বেহেশতের মধ্যে আল্লাহর দীদার লাভে ধন্য হবেন। বেহেশতের মধ্যে বাগ-বাগিচা, বালাখানা, হুর-গিলমান, বিভিন্ন রকম নহর ও নানারকম অকল্পনীয় সুস্বাদু খাদ্যসামগ্রী সর্বদা মওজুদ থাকবে। জান্নাতীদের দিলের কোন নেয়ামত ভোগ করার ইচ্ছা হওয়ার সাথে সাথে তা পূর্ণ হবে।

দুনিয়াতে কাউকে নিশ্চিতভাবে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা যায় না। অবশ্য কুরআন-হাদীসে যাদের নাম নিয়ে জান্নাতী বা জাহান্নামী বলা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে বলা যাবে। তবে কারোর ভাল আমল বা ভাল আখলাক দেখে তাকে ভাল মনে করা উচিত।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি র সাথে থাকুন,
লাইক কমেন্ট এবং সেয়ার করুন।

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৫৪. নবী-রাসূল আ. এর ওপর ঈমাননবী-রাসূল আ.- এর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তা‘আল...
30/01/2024

ঈমান ও আক্বীদাহ পর্ব-০৫

৪. নবী-রাসূল আ. এর ওপর ঈমান

নবী-রাসূল আ.- এর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হিদায়াতের জন্যে এবং তাদেরকে সঠিক পথ দেখাবার জন্য স্বীয় বান্দাদের মধ্যে হতে বাছাই করে বহুসংখ্যক পয়গাম্বর অর্থাৎ নবী-রাসূল আ. মনোনীত করে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। যাতে করে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করে দুনিয়াতে কামিয়াব হতে পারে এবং পরকালে দোযখ থেকে মুক্তি লাভ করে বেহেশত হাসিল করতে পারে।

পয়গাম্বরগণ সকলেই মাসুম বা নিষ্পাপ। তাঁরা কোন প্রকার পাপ করেন না। নবীগণ মানুষ। তাঁরা খোদা নন। খোদার পুত্র নন। খোদার রূপান্তর (অবতার) নন। বরং তাঁরা হলেন আল্লাহর প্রতিনিধি। নবীগণ আল্লাহর বাণী হুবহু পৌঁছে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের সঠিক সংখ্যা কুরআন শরীফ বা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীস শরীফে বর্ণনা করেন নি। কাজেই নিশ্চিতভাবে তাঁদের সঠিক সংখ্যা কেউ বলতে পারে না। এ কথা যদি ও প্রসিদ্ধ যে, এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বর দুনিয়াতে এসেছেন কিন্তু কোন সহীহ হাদীস দ্বারা তা প্রমাণিত নয়। শুধু এতটুকু বলা যায় যে, বহুসংখ্যক পয়গাম্বর দুনিয়াতে এসেছেন।

আল্লাহ তা‘আলার হুকুমে তাঁদের দ্বারা অনেক অসাধারণ ও অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ঐ সব ঘটনাকে মু‘জিযা বলে। নবীগণের মু‘জিযাসমূহ বিশ্বাস করাও ঈমানের অঙ্গ।

পয়গাম্বরগণের আ. মধ্যে সর্বপ্রথম দুনিয়াতে আগমন করেছেন হযরত আদম আ. এবং সর্বশেষ অথচ সর্বপ্রধান এবং সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছেন আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা আহমদ মুজতাবা সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর পরে অন্য কেউ দুনিয়াতে নবী বা রাসূল হিসেবে আগমন করেননি এবং করবেনও না। হযরত ঈসা আ. কিয়ামতের পূর্বে যদিও আগমন করবেন, কিন্তু তিনি তো পূর্বেই নবী ছিলেন। নতুন নবী হিসেবে তিনি আগমন করবেন না।

আমদের নবী খাতামুন নাবিয়্যীন বা শেষনবী। তাঁর পরে নতুনভাবে আর কোন নবী আসবেন না; তারপর আসল বা ছায়া কোনরূপ নবীই নাই। বরং তাঁর আগমনের মাধ্যমে নবুওয়াতের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের নবীর নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবীতে যত জিন বা ইনসান ছিল, আছে বা সৃষ্টি হবে, সকলের জন্যেই তিনি নবী। সুতরাং কিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত পৃথিবীতে একমাত্র তাঁরই হুকুম এবং তরীকা সকলের মুক্তি ও নাজাতের জন্যে অদ্বিতীয় পথ হিসেবে বহাল থাকবে। অন্য কোন ধর্ম, তরীকা বা ইজম এর অনুসরণ কাউকে আল্লাহর দরবারে কামিয়াব করতে পারবে না। আমাদের নবীর পরে অন্য কেউ নবী হয়েছেন বা নবী হবেন বলে বিশ্বাস করলে তার ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। তেমনিভাবে কেউ নতুন নবী হওয়ার দাবি করলে বা তার অনুসরণ করলে, সেও কাফির বলে গণ্য হবে।

হযরত ঈসা আ. এখনও আসমানে জীবিত আছেন। তাঁকে জীবিত অবস্থায় আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন, ইহা সত্য। কুরআন হাদীসে প্রমাণিত। তাই ইহা বিশ্বাস করতে হবে, অন্যথায় ঈমান থাকবে না, তিনি কিয়ামতের পূর্বে আসমান থেকে জমিনে অবতরণ করবেন। আমাদের নবীর অনুসারী হয়ে। হযরত ঈসা আ.- এর ব্যাপারে পুত্রবাদ ও কর্তৃত্বদের বিশ্বাস কুফরী।

দুনিয়াতে যত পয়গাম্বর এসেছেন, সকলেই আমাদের মাননীয় ও ভক্তির পাত্র। তাঁরা সকলেই আল্লাহর হুকুম প্রচার করেছেন। তাঁদের মধ্যে পরস্পরে কোন বিরোধ ছিল না। সকলেই পরস্পর ভাই ভাই ছিলেন। হ্যাঁ, আল্লাহ তা‘আলা অবশ্য হিকমতের কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হুকুম জারি করেছেন। আর এই সামান্য বিভিন্নতাও শুধু আমলের ব্যাপারে, ঈমান আকীদার ব্যাপারে নয়। আকীদাসমূহ আদি হতে অন্ত পর্যন্ত চিরকাল এক। আক্বীদার মধ্যে কোন প্রকার রদবদল বা পরিবর্তন হয়নি, আর হবেও না কখনো। পয়গাম্বরগণ সকলেই কামিল ছিলেন। কেও নাকিস বা অসম্পূর্ণ ছিলেন না। অবশ্য তাঁদের মধ্যে কারো মর্যাদা ছিল বেশি, কারো মর্যাদা ছিল তুলনামূলকভাবে কম। সকল নবী নিজ নিজ কবরে জীবিত আছেন। এজন্য নবীগণকে ‘হায়াতুন্নবী’ বলা হয়।

উল্লেখ্য যে, আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্তবা সর্বাপেক্ষা বেশি। তাই বলে নবীগণের মধ্যে তুলনা করে একজনকে বড় এবং একজনকে হেয় বা ছোট করে দেখানো বা বর্ণনা করা নিষেধ।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম-এর সমস্ত কথা মেনে নেয়া জরুরী। তাঁর একটি কথাও অবিশ্বাস করলে বা সে সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করলে কিংবা তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করলে বা দোষ বের করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়।

ঈমানের জন্যে আমাদের নবীর সশরীরে জাগ্রত অবস্থায় মি‘রাজ ভ্রমণের কথা বিশ্বাস করাও জরুরী। যে মি‘রাজ বিশ্বাস করে না, সে বেদ্বীন। তার ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে।

সাহাবীর পরিচিতিঃ-
যেসব মুসলমান আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে স্বচক্ষে দেখেছেন, এবং ঈমানের হালতে ইনতিকাল করেছেন, তাঁদেরকে ‘সাহাবী’ বলা হয়।

সাহাবীগণের অনেক ফযীলতের কথা কুরআন ও হাদীসে এসেছে। সমস্ত সাহাবী রা. গণের সাথে মুহাব্বত রাখা ও তাঁদের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা পোষণ করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

তাঁদের কাউকে মন্দ বলা আমদের জন্যে সম্পূর্ণরূপে নিষেধ। সাহাবীগণ যদিও মাসুম বা নিষ্পাপ নন, কিন্তু তাঁরা মাগফূর বা ক্ষমাপ্রাপ্ত। সুতরাং, পরবর্তী লোকদের জন্য তাঁদের সমালোচনা করার কোন অধিকার নেই। তাঁরা সমালোচনার ঊর্ধ্বে।

তাঁরা সকলেই আদিল অর্থাৎ নির্ভরযোগ্য সত্যবাদী এবং সত্যের মাপকাঠি। তাঁদের দোষ চর্চা করা হারাম এবং ঈমান বিধ্বংসী কাজ। ‘আকীদাতুত তাহাবী’ কিতাবে উল্লেখ আছে, ‘সাহাবীগণের প্রতি মুহাব্বত-ভক্তি রাখা দ্বীনদারী ও ঈমানদারী এবং দ্বীনের ও ঈমানের পূর্ণতা। আর তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা বা তাদের বিরূপ সমালোচনা করা কুফরী, মুনাফেকী এবং শরী‘আতের সীমার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সমস্ত সাহাবীগণের মাঝে চারজন সর্বপ্রধান। তাঁদের মধ্যে প্রথম হচ্ছেন, হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা., তিনিই প্রথম খলীফা বরহক এবং তিনি সমস্ত উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর ফারুক রা., তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান গণী রা. এবং চতুর্থ খলীফা হযরত আলী রা.। সকল সাহাবায়ে কিরামের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার চির সন্তুষ্টির সুসংবাদ দিয়েছেন। বিশেষ করে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দশজন সাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন। এই দশজনকে আশারায়ে মুবাশশারা (সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজন) বলা হয়। তাঁরা হলেন- ১. হযরত আবু বকর রা., ২. হযরত ওমর ফারুক রা., ৩। হযরত উসমান রা. ৪. হযরত আলী রা., ৫. হযরত তালহা রা., ৬. হযরত যুবায়ের রা. ৭. হযরত আবদুর রহমান ইবনে আওফ রা., ৮. হযরত সা‘দ ইবনে আবী ওয়াককাস রা., ৯. হযরত সাঈদ ইবনে যায়েদ রা., ১০. হযরত আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ রা.।

নবী আ. এর বিবি ও আওলাদ সম্বন্ধে আক্বীদাঃ-
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিবি ও আহল-আওলাদগণের রা. বিশেষভাবে তাযীম করা উম্মতের ওপর ওয়াজিব। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আওলাদগণের মধ্যে হযরত ফাতিমা রা. এবং বিবিগণের মধ্যে হযরত খাদীজা ও আয়িশা রা. এর মর্যাদা সবচেয়ে বেশি।

ওলী-বুযুর্গদের সম্বন্ধে আক্বীদাঃ-
ওলী-বুযুর্গদের কারামত সত্য। কিন্তু ওলী-বুযুর্গগণ যত বড়ই হোন না কেন, তাঁরা নবী রাসূল আ. তো দূরের কথা, একজন সাধারণ সাহাবীর সমতুল্যও হতে পারেন না। অবশ্য হক্কানী পীর-মাশায়িখ ও উলামায়ে কিরাম যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওয়ারিশ এবং দ্বীনের ধারক বাহক সুতরাং, তাঁদের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা রাখা, তাঁদের সঙ্গ লাভ করা এবং তাদের প্রতি বিদ্বেষ না রাখা সকল মুসলমানের জন্য জরুরী। দ্বীনের খাদিম হিসেবে তাঁদেরকে হেয় করা, কিংবা গালি দেয়া কুফরী কাজ। মানুষ যতই খোদার পেয়ারা হোক, হুঁশ-জ্ঞান থাকতে শরী‘আতের হুকুম-আহকামের পাবন্দী অবশ্যই তাকে করতে হবে। নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত কখনো মাফ হবে না। তেমনিভাবে মদ খাওয়া, গান-বাদ্য করা, পরস্ত্রী দর্শন বা স্পর্শ করা কখনো তার জন্যে জায়িয হবে না। হারাম বস্তুসমূহ হারামই থাকবে এবং হারাম কাজ করে বা ফরয বন্দেগী ছেড়ে দিয়ে কেউ কখনো আল্লাহর ওলী হতে পারে না।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি র সাথে থাকুন
লাইক ফলো সেয়ার করুন।

Address

Rangpur
5620

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি:

Share