27/07/2025
ওসির তৎপরতায় ২৪ দিনেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, আসামি গ্রেপ্তার
নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার ওসি তৎপরতায় ২৪ দিনেই হত্যা রহস্য উদঘাটন সহ একজনকে গ্ৰেফতার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিষয়টি সৈয়দপুর২৪কে নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন ।
হত্যাকারী শামীম বেগ কে চাঁদ নগর এলাকায় নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র জানায় , সৈয়দপুর শহরের চাঁদনগর এলাকায় একটি বাসা থেকে এক বৃদ্ধার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতপ্রাপ্ত শামসুন্নাহার বেগম (৭৫)রক্তাক্ত লাশ (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩ টার উদ্ধার করেন পুলিশ । বাসাটি সৈয়দপুর তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিলা বেগমের। নিহত বৃদ্ধা তার দূর সম্পর্কীয় বোন ও গৃহপরিচারিকা ছিলেন ।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার পরপর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় , মামলা ভদন্তকালে ঘটনার পর থেকেই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি পলাতক থাকায় তাকে শনাক্ত ও গ্রেফতারে তদন্ত টিম গুরুত্বারোপ করে। এ লক্ষ্যে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায় সিসি টিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিনে একটি সন্দেহভাজন ব্যাক্তি ঐ বাসার সামনে ঘোরাফেরা করছে। উক্ত অতির গতিবিধি, পোশাক এবং অবস্থান অভান্ত সন্দেহজনক মনে হয়। তদন্তে আরও উঠে আসে, উক্ত ব্যক্তি পূর্বে একটি হত্যা মামলায় যাবজীবন কারাদপ্রাপ্ত আসামি ছিল, যিনি ২০২০ সালে কারাভোগ শেষে মুক্তি পান। বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রযুক্তি সহায়তায় সন্দেহহাজন ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ তাকে শনাক্ত করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ তারিখ রাত ১২ টায় তার বাড়ি থেকে সন্দেহভাজন মোঃ শামীম বেগকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাটির প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে ০২ (দুই) দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করলে আসামিকে রিমান্ডে এনে এনে নিবিড়ভাবে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ জিজ্ঞাস করা হয়।জিজ্ঞাসাবাদে মোঃ শামীম বেগ, মুতা শামসুন নেহারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। অপরাধের সাথে অড়িত আসামী মোঃ শামীম বেগ কে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে তার দেয়া তথ্য মতে অত্র মামলার লুষ্ঠিত আলামঃ ০১(এক)টি ৩২ ইঞ্চি স্যামসাং এলইডি টিডি এবং একটি পুরাতন স্যামসাং ল্যাপটপ সৈয়দপুর থানাধীন। গোলাহাট বাজারের একটি দোকান থেকে আসামীর যনাজমতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা মোতাবেক উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মারুফ সৈয়দপুর২৪কে জানান,আসামী বিজ্ঞ আদালতে তার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য সম্মতি প্রদান করেছেন। স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি গ্রহনের কার্যক্র চলমান রয়েছে । এ নিয়ে মৃতার পরিবার ও স্থানীয় লোকজন হত্যায় প্রকৃত কারণ জানার পর পুলিশের প্রতি সন্তোষ্টি প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ফইম উদ্দিন সৈয়দপুর২৪কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, ঘটনার পর পর থেকেই সৈয়দপুর থানা পুলিশ কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে ঘটনার ২৪ দিনের মধ্যে মালামাল সহ হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশ।
উল্লেখ্য সৈয়দপুর থানায় (ওসি) ফইম উদ্দিন থানা যোগদানের পর পাল্টে যাচ্ছে সৈয়দপুর থানার চিত্র! তিনি যোগদান করেছেন,ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের ৫ ই আগস্ট এর পরবর্তী সময়ে । জুলাই আগস্ট এর পরবর্তী পরিস্থিতি ছিল বে-সামাল। আইন শৃঙ্খলা সামলাতে তেমন পুলিশ মাঠে দেখতে পাওয়া যায়নি। ভেঙ্গে পড়েছিল প্রশাসনিক কাঠামো। চরম অবনতিতে ছিল সৈয়দপুর থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বেড়ে গিয়েছিল ছিনতাই- রাহাজানি,চুরি,ডাকাতি, জমি সংক্রান্ত জের ধরে মারামারি হানা-হানি, এমনকি মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বা সামাল দিতে পারছিল না থানা পুলিশ। হতাশয় ভুগেছিল সৈয়দপুর উপজেলার সাধারণ মানুষ, এমনই পরিস্থিতিতে তিনি যোগদান করেন এ থানায়। যোগদানের পর থেকে অপরাধীকে শনাক্ত করতে শুরু করেন, ওসি ফইম উদ্দিন । তিনি সৈয়দপুর উপজেলার পরিস্হিতি স্বাভাবিক করতে প্রায় রাত্রে তিনি অভিযান পরিচালনা করেন। অপরাধ সৃষ্টিকারি মুল হোতা দের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করেন। পর্দার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়া ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের সুবিধা ভোগী যারা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে অবনতি কারীদের চিহ্নিত করা শুরু করেন ওসি। স্বস্তি ফিরে এসেছে সৈয়দপুর উপজেলার সাধারণ মানুষের। অপরদিকে সামন্য কিছু ঘটনা ছাড়া সৈয়দপুর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ কমেছে এমনটাই বলছে সাধারণ মানুষ।