25/09/2022
"একে একে সব লোকগুলো এসে আমার পাছায়
এলোপাতাড়ি আঙুল ঢুকাতে থাকলো।"
"দেশে হাঁস কালো, ধূসর রংয়ের ডিম দেওয়ায় দেশ ও বিদেশের অন্যান্য খবর আপাতত প্রকাশ করা হবেনা"- বলে জানিয়েছেন সংবাদ প্রকাশকেরা!
প্রকাশকেরা এটাও জানান যে, "আমাদের সকল প্রতিনিধি দেশের আনাচে কানাচে থাকা সকল হাঁসের কাছে পৌঁছাতে হিমসিম খাচ্ছে। তাছাড়া এই মুহূর্তে দেশ বিদেশের কোন খবরই আমাদের কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের ক্যামেরায় সোনার ডিম পাড়ার দৃশ্য ধরা পড়বেই, এবং আমরা তা মানুষকে দেখাতে সক্ষম হবো।"
ইতোমধ্যে কালো ডিম পাড়া হাঁস প্রতিবাদস্বরুপ ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়েছে এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সে আমাদের জানিয়েছে, "দেখুন, ডিম পাড়া একটা গোপনীয় দায়িত্ব। এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জার বিষয়। ক্যামেরা আমাদের পাছার পাশে তাক করা থাকে। এটার প্রতিবাদ হিসেবে ডিম না পাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
আমাদের প্রতিনিধির সাথে একজন পুরুষ হাঁস ক্যাম্পবেল খুবই রাগান্বিত হয়ে বলে, "এই সাংবাদিকদের জন্য আমি আমার বাচ্চার মায়ের পাশে যেতে পারছিনা কয়েকদিন ধরে। তাছাড়া, এদের ক্যামেরা আমার পাছার পাশেও লাগিয়ে রেখেছে। আমি বললাম, আমি ডিম পাড়িনা, তবু কে শোনে কার কথা! তাদের বিশ্বাস, পাছা থাকলেই ডিম পাড়া যায়! এদের জ্বালায় আমাদের সখ, আহ্লাদ সব শেষ হতে বসেছে। বউ বলেছে, এমন চলতে থাকলে সে তার বাপের বাড়ি সুন্দরবনে চলে যাবে। বলেন তো, বউ চলে গেলে বাচ্চাকাচ্চাদের কি হবে?"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী হাঁসের সাথে কথা বলে শোনা গেলো নির্যাতনের করুন কাহিনী! অসুস্থ হাঁসটি যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে বললো, "এটা চরম অমানবিক! কসাইরাও আমাদের সাথে এমন নির্যাতন করেনা! এটা না থামলে হাঁস জাতি ডিম না দেওয়ার কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে! সেদিন বাইরে থেকে এসে বাসায় অনেক লোক দেখলাম। সবাই যেন আমার দিকে আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে। মালিক এসে প্রথমে আমার পাছায় আঙুল ঢুকিয়ে ডিম আছে কিনা পরিক্ষা করলো। তারপর, একে একে সব লোকগুলো এসে আমার পাছায় এলোপাতাড়ি আঙুল ঢুকাতে থাকলো। একজন তো হাতের নখই কাটেনা! তার নখ আমার পাকস্থলীতে জখম করে গেছে! সেখান থেকেই পাছার যন্ত্রণায় নড়তে পারছিনা। ডিম পাড়া তো দুরের কথা হাগাও বন্ধ করে দিছি!"
হাঁসদের এক নেতা খাঁকি বলেন, "আমরা গোপনে সব হাঁসদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্দিষ্ট দিন থেকে একযোগে সারাদেশে ডিম পাড়া বন্ধ করে দেবো। মুখ বুঝে এ অন্যায় মেনে নেওয়া যায়না। এটা দেশের সকল হাঁসের অস্তিত্বের প্রশ্ন, ইজ্জতের প্রশ্ন। দিনের পর দিন আমাদের পাছায় আঙুল দেবে, তা হবেনা! এটার একটা বিহিত হওয়া দরকার।"
এ বিষয়ে সাংবাদিক নেতার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, "দেখুন দেশের জনগনের চাহিদাকেই আমরা প্রাধান্য দিয়ে থাকি। তারাও এমন খবর পেতে চায় আর আমরা দিতে। পরকিয়া, ধর্ষণ ও আজগুবি খবরগুলোই জনগন খায় বেশি। তাছাড়া, বেশিরভাগ পাবলিক শিরোনাম ছাড়া খবর পড়েনা। তারা যদি কমেন্টবক্সে এসে গালাগালি না করতে পারে, তাহলে আমরা বুঝে নিই আমাদের ব্যবসা লাটে উঠবে। তাই, তাদের জন্য চটকদার শিরোনাম বাছাই করি আমরা। কালো ও ধূসর ডিমের খবর জনগনের চাহিদার তুঙ্গে থাকায় খেলাধূলা, রাজনীতি, অর্থনীতি ও বিশ্বের সব খবর বাদ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। তবে, সাংবাদিক কর্তৃক হাঁস নির্যাতনের খবরের বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা। যদি এমন ঘটনা ঘটে, তবে জড়িতদের কঠিন শাস্তি প্রদান করা হবে। যে কেউ হাঁসের পাছায় নখ না কেটে আঙুল ঢুকাবে, তা হতে পারে না! তবে, আমাদের পাবলিক ইন্টারেস্টটাও বিবেচনা করে অনেক কিছু করতে হয়। বোঝেনইতো, সাংবাদিকরাও রক্ত, মাংসের মানুষ। তাদেরও তো কৌতুহল জাগে।"
কে, কখন পাড়বে সেই কাঙ্খিত ডিম? আর কার ক্যামেরায়ইবা ধরা দিবে সেই কাঙ্খিত দৃশ্য? জানতে চোখ রাখুন আমাদের সংবাদ প্রবাহে।
- নিজস্ব প্রতিনিধি।