20/09/2024
শাতিমে রাসূলের বিধান: কোন মুসলিম যদি বিধান কার্যকর করে তবে তাকে তিরস্কার করা যাবে না।
শাতিমে রাসূলের বিধান হচ্ছে মৃত্যুদন্ড। সাধারনভাবে এটি বাস্তবায়ন করেন মুসলিম রাষ্ট্র। যিনি ইমাম আছেন তার নির্দেশে বাস্তবায়িত হবে। তবে কোন মুসলিম যদি বিধান কার্যকর করে তবে তাকে তিরস্কার করা যাবে না।
কুরআন হাদীসের কোথাও নেই যে- শাতিমে রাসূলকে কেও হত্যা করলে তার কোন গুনাহ, অপরাধ হবে বা সে হত্যা করতে পারবে না। বরং আমরা এর বিপরীতটাই দেখতে পাই।
দলীলঃ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, জনৈক অন্ধ লোকের একটি ‘উম্মু ওয়ালাদ’ ক্রীতদাসী ছিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে গালি দিত এবং তার সম্পর্কে মন্দ কথা বলতো। …… গতরাতে সে আপনাকে গালাগালি শুরু করে এবং আপনার সম্পর্কে অপমানজনক কথা বললে আমি তখন একটি ধারালো ছুরি নিয়ে তার পেটে স্থাপন করে তাতে চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করে ফেলি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাকো, তার রক্ত বৃথা গেলো (অর্থাৎ দাসীকে হত্যা করার জন্য হত্যাকারীর কোন বিচার নেই)।
আবু দাউদ ৪৩৬১/সহিহ। আর হাদীসটি শুধু হদ নয় বরং তা হারবি হত্যারও দলীল। হাদীসটি সম্পর্কে দেখুন- ইবনে তাইমিয়্যা (রহিঃ) এর- আস সারিমুল মাসলুল/২৮৬।
যারা বলেন এই হুকুম কেবল মাত্র মুসলিমদের ইমামই বাস্তবায়ন করবেন তারা একটি বড় ভূল করেন। শাতিমে রাসূলকে মুরতাদ বলা হলেও সে কোন সাধারন মুরতাদ নয় বরং এটা একটি এক্সট্রিম কেস ও হারবি কাফের। এই কেসে কাবার গিলাফ ধরে থাকা অবস্থায়ও হত্যা করা হয়েছে যেখানে সাধারনভাবে রক্তপাত অবৈধ।
আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
‘এক ব্যক্তি এসে সংবাদ দিল যে, ইবনে খাতাল কাবা ঘরের গিলাফ ধরে ঝুলছে। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, তোমরা তাকে হত্যা করো।’ (মুয়াত্তা মালেক, হা/৯৪৬; সহীহ বুখারী, হা/৪২৪৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০৯৫৫, শামায়েলে তিরমিজি ৮৪,৮৫/সহিহ)।
ইবনে তাইমিয়্যা (রহিঃ) শাতিমদেরকে ‘হারবি’ উল্লেখ করে বলেন- ‘দাসী হত্যার হাদীসটি হদ ও হারবি হত্যা উভয় শিরোনামেই আলোচনা করা হয়। আর হারবিদেরকে যেকেউ হত্যা করে ফেলবার অনুমতি রয়েছে।’ (আস সারিমুল মাসলুল/২৮৬, নোটঃ হারবি শব্দের অর্থ যুদ্ধরত কাফির। যেমনটা শাতিমদের হাদীসগুলো ইমামগন কিতাবুল জিহাদ, মাগাযী ইত্যাদি অধ্যায়ে সংরক্ষন করেছেন।)
আর একান্তই যদি আপনাদের দাবী এক মিনিটের জন্য সত্য বলে ধরেও নেই, তবুও আপনারা তাদের বিরোধীতা করতে পারেন না। কারণ এখন তাদের বৈধ ইমাম রয়েছে। ইমাম তার অনুগত সকলের জন্য এই বিধান কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তারা কাটাতারের বেড়া বিশ্বাস করে না যে প্রতিটি দেশে দেশে ইমাম লাগবে। শ্রদ্ধেয় ইমাম আমভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, মুফতিগণ ফাতাওয়া দিয়েছেন আর উম্মতের জন্য সেগুলোই যথেষ্ট। তারা তাদের ইমামের নির্দেশেই শাতিমদের পাওনা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এমন ব্যক্তি সম্পর্কে বলেছেন তার রক্তের কোন মূল্য নেই।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যারা ইমামের নির্দেশ শর্ত করছেন তাদেরকে বলতে চাই- আপনারা যাদেরকে মুসলিমদের ইমামের স্থলে শর্ত করছেন তারা তো তাগুত ও মুরতাদ জালিম শাসক। তাই তাদেরকে শর্ত করার প্রশ্নই আসে না।