নেতা

নেতা Love Is Open To All

02/05/2025
29/04/2025

শেখ হাসিনার দুর্নীতির রেকর্ড নেই, রাশিয়ান দূতাবাসের পর এবার ইউনুসের মিথ্যা প্রোপাগান্ডার জবাব দিলো স্বয়ং বিদ্যুৎ বিভাগের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অনুসন্ধানী কমিটি

আদানির সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের চুক্তিতে দুর্নীতি পায়নি স্বয়ং বিদ্যুৎ বিভাগঃ

ইউনুস ক্ষমতা দখলের পর বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ বিধান ২০১৫ বাতিল করে। অভিযোগ ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার বিনা দরপত্রে চুক্তির মাধ্যমে বিপুল দুর্নীতি করেছে। এমনকি, দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়টিও চুক্তিতে উপেক্ষিত বলে সমালোচনা ওঠে।

প্রথম আলো, বিবিসি বাংলা, ডেইলি স্টারসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই নিয়মিত ফরমায়েশি প্রতিবেদন ও কলাম ছেপে দাবি করা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় করা এই চুক্তিতে নানা অসামঞ্জস্য এবং দুর্নীতি হয়েছে, চুক্তিটি দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, এখানে ভারতকে অন্যায্য সুবিধা দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার… ইত্যাদি। চুক্তি নিয়ে নানারকম ভিত্তিহীন বক্তব্য ও মিথ্যাচার করা হয়েছিল গণমাধ্যমে, যা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে।

ড. ইউনূসের ক্ষমতায় বসার পর নানা মহলের আলোচনার মধ্যে বিষয়টি আদালতে গড়ালে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠনসহ ৩ দফা নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় আদানির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তির সব নথি ও প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

আইনের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে এমন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে উচ্চ আদালতে। এছাড়া এই চুক্তির ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতিরও তথ্য পাওয়া যায়নি। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চের নির্দেশনা অনুসারেই প্রতিবেদনটি দাখিল করে বিদ্যুৎ বিভাগ। (আদানির সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের চুক্তিতে দুর্নীতি বা অনিয়ম ঘটেনি: হাইকোর্ট; বিডিডাইজেস্ট, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫)

এছাড়াও ইউনুসের প্রোপাগান্ডা সেল জননেত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ আনে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ববি হাজ্জাজ আবেদনকারী হয়ে রিটটি করেছেন। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ মঙ্গলবার রিটটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। (রূপপুর প্রকল্পে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত চেয়ে রিট, প্রথম আলো, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪)

এরপর রুশ দুতাবাস সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির দাবিটি ভুয়া বলে একটি বিবৃতি দেয়ঃ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ (আরএনপিপি) প্রকল্পে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটম। বুধবার (১১ সে‌প্টেম্বর) রোসাট‌মের বরাত দি‌য়ে ঢাকার রাশিয়ান দূতাবাসের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দা‌বি করা হ‌য়েছে।

এতে বলা হয়, যারা রূপপুর এনপিপিতে দুর্নীতি বিষয়ে ভুয়া খবর লিখে ছড়িয়ে দেয়, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটিকে কলঙ্কিত করতে চায় এবং মস্কো ও ঢাকার মধ্যে স্থিতিশীল সম্পর্ককে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। (রূপপুর প্রকল্পকে ঘিরে মস্কো ও ঢাকার সম্পর্ক নষ্টের চেষ্টা হচ্ছে: রাশিয়ার বিবৃতি ; বাংলা ট্রিবিউন, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪)

এভাবেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হাজারও মিথ্যা অভিযোগ রটানো হয়েছে। কিন্তু দিনশেষে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে,শুধু মাত্র শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের জন্যে নিবেদিত সৎ নিষ্ঠাবান ও দুর্নীতি বিমুখ অন্যায়ের সাথে আপোষহীন একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন।

15/04/2025

অনিরাপদ বাংলাদেশ!
স্বামীর মাথায় #অস্ত্র ঠেকিয়ে স্ত্রীকে #ধর্ষণের হুমকি, জীবন নিয়ে শঙ্কা

বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বাণী---- প্রিয় দেশবাসী,শুভ ...
14/04/2025

বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বাণী
----

প্রিয় দেশবাসী,
শুভ নববর্ষ। বাংলা পঞ্জিকায় বৈশাখের প্রথম দিনের সূচনার মধ্য দিয়ে নতুন বঙ্গাব্দের যাত্রা শুরু হয়, যা পহেলা বৈশাখ হিসেবে স্বীকৃত। সবাইকে বাংলা নববর্ষের (১৪৩২) শুভেচ্ছা।

পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ। ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেয় নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। নববর্ষই বাঙালি জাতিকে একত্র করে তার স্বাতন্ত্র্য জীবনবোধে, স্বকীয় সংস্কৃতিতে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র সব পরিচয়ের সমষ্টি নিয়ে চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐকতানে আজ সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি জীর্ণ আর পুরাতনকে পেছনে ফেলে নতুন বছরে প্রবেশ করতে। পুরোনো বছরের শেষ দুইদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন বাংলাদেশের আদিবাসীরাও বৈচিত্রপূর্ণ উৎসবের মধ্য দিয়ে নবজীবনের, নববর্ষের স্ফূরণ ঘটায়। তাদেরকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

প্রিয় দেশবাসী,
আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আছে পহেলা বৈশাখ। আবহমান কাল ধরে প্রবাহমান যে সাংস্কৃতিক ধারা, তা বহুবিচিত্র প্রভাব ও প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও দেশের মাটির আপন পরিবেশে লালিত ও পরিপুষ্ট। এ দিনটি বাংলাদেশের সকল নাগরিকের গৌরব ও সমৃদ্ধির উত্তরাধিকার। ধর্ম ও জাতিভেদ থাকা সত্ত্বেও সাংস্কৃতিক জাতিসত্তার স্মারক এই দিনটিকে আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করে বাংলাদেশের মানুষেরা। এটাই আমাদের চিরায়ত ঐক্য ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন।

প্রিয় বাংলাদেশ,
স্বাধীনতার পর নব উদ্যমে নববর্ষ উদযাপন করা হয়।দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালির সংস্কৃতির ধারাকে ধূলিসাৎ করে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সংস্কৃতির মাঝে সুকৌশলে রাজনৈতিক বিষ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বিপরীতে বাঙালিও চুপ করে বসে থাকেনি, চালিয়ে গেছে অবিরাম সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে প্রতিবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়; ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেসকো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়ে আমাদের গোরবান্বিত করে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সরকারই চাকরিজীবীদের জন্য ঈদ-পূজার উৎসব ভাতার ন্যায় ‘বৈশাখী ভাতা’ চালু করে।

প্রিয় সংগ্রামী জনতা,
আজ বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা বাঙালির সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিতে তৎপর। এর আগেও যখনই স্বাধীনতার মূল্যবোধ বিরোধী শক্তির প্রতিভূরা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছিল তখনই তারা বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উপর আক্রমণ চালিয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধের তৎপরতাসহ এর নামও পরিবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু বাঙালি জাতি তা মেনে নেয়নি। মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করার দুঃসাহস করেছে। বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারা এইসব অপতৎপরতা চলাচ্ছে, তারা জাতির শত্রু, সংস্কৃতির শত্রু, দেশের শত্রু। দেশের জনগণ তাদের এই পাঁয়তারা সফল হতে দেবে না।

পহেলা বৈশাখে দেশ ও জাতির মঙ্গলে জনগণের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত দেশপ্রেম জাগ্রত হোক, খুলে যাক সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। স্বাধীনতাবিরোধী, বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিরোধী অপশক্তিকে হটিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। সমাগত বাংলা নববর্ষের এই শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক যা কিছু অসুস্থ, অসুন্দর, অপসংস্কৃতি; তা বর্জন করে সুস্থ-সুন্দর সংস্কৃতি ও সৃজনশীল জীবন যাপন করি। বাংলা নববর্ষে এই হোক আমাদের প্রত্যাশা।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
আঁধার কেটে ভোর হোক।

Free PALESTINE
13/04/2025

Free PALESTINE

গাজায় হা'ম'লা জোরদার করার ঘোষণা ইসরায়েলের

10/03/2025
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি  এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাণী-...
07/03/2025

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাণী
----

৭ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে এক অবিস্মরণীয় ও অলঙ্ঘনীয় দিন। ৭ মার্চের চেতনা অবিনশ্বর। আমাদের মহান নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান বর্তমানে শহিদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে বজ্রকণ্ঠে একটি মহাকাব্য রচনা করেছিলেন। সেই মহাকাব্য ধারণ করেছিল হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতির মুক্তির বার্তা। ঐ দিনই বাঙালি জাতির মহানায়ক দ্বিধাহীন চিত্তে ঘোষণা দিয়েছিলেন, 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। বঙ্গবন্ধুর দরাজ কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল বাঙালির হৃদয় থেকে হৃদয়ে অনুরণিত শব্দমালা। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় সমগ্র বাঙালি জাতিকে একসূত্রে গাঁথা সেই মহাকাব্যের শ্রেষ্ঠ পংক্তি, 'আর দাবায় রাখতে পারবা না'। সুতরাং ৭ মার্চকে সামনে রেখে এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধায় প্রথমেই স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদ, দু'লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোন এবং অগণিত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে- যাঁদের মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। পূর্ব বাংলার মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় এবং পৃথিবীর মানচিত্রে তাঁদের জন্য একটি স্বাধীন ভূখণ্ড প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির পিতা শেখ মুজিব পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছর লড়াই-সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন এবং সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একমাত্র তিনিই ছিলেন হাজার বছরের শোষিত-বঞ্চিত বাঙালিদের মধ্যে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু, পাকিস্তানিরা আওয়ামী লীগের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ না করে নানা টালবাহানা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনের অমর বাণী। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই অমর বাণী প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধাকে প্রেরণা জুগিয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীর বাঙালিদের অবশ্যম্ভাবী বিজয়কে উৎকীর্ণ করেন তাঁর ভাষণের শেষ দু'টি শব্দে- 'জয় বাংলা' স্লোগানে।

রাজনীতির কালজয়ী মহাকবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই ভাষণের মাধ্যমে দেশের শাসনভার জনগণের হাতেই তুলে দেন; ক্ষমতাকে কি করে নিয়ন্ত্রিতভাবে সকলের কল্যাণে ব্যবহার করতে হয় তাও বুঝিয়ে দেন। শিখিয়ে দেন আত্মরক্ষামূলক কিংবা প্রতিরোধক সমরনীতি, যুদ্ধকালীন সরকার ব্যবস্থা এবং অর্থনীতি। সেই মর্মস্পর্শী বজ্রনিনাদ ৭ কোটি বাঙালির হৃদয়কে বিদ্যুৎ গতিতে আবিষ্ট করেছিল। একটি ব্রিটিশ পত্রিকা বঙ্গবন্ধু ভবনকে ১০-ডাউনিং স্ট্রিটের সঙ্গে তুলনা করেছিল। ৭ মার্চের ভাষণ শুনে ঢাকায় রাষ্ট্রপতির বাসভবনে বাঙালি বাবুর্চি ইয়াহিয়া খানের জন্য রান্না বন্ধ করে দিয়েছিল। ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের প্রতিটি মানুষ ইয়াহিয়ার শাসনকে অগ্রাহ্য করে শেখ মুজিবের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল। সেই রাতে পাকিস্তানি শাসক তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলার দামাল ছেলেরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে নয় মাস যুদ্ধ করে পাকিস্তানিদের বাংলার মাটিতে পরাস্ত করে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে।

বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন এবং তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত করেন। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের পরাজিত শত্রুদের এদেশীয় দোসররা পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়। তারা ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে এবং 'জয় বাংলা' শ্লোগানও নিষিদ্ধ করে। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু মুজিবের নাম মুছে দিতে উদ্যত হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর খুনি মোস্তাক-জিয়ার আনীত দায়মুক্তি অধ্যাদেশ বাতিল করে এবং জাতির পিতার খুনিদের বিচার শুরু করে। পরবর্তীতে আমরা ২০০৯ সাল থেকে পরপর চার দফা সরকার গঠন করে জাতির পিতার আদর্শে দেশের সার্বিক উন্নয়নে আত্মত্মনিয়োগ করি। জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করি, ফলে জাতি গ্লানিমুক্ত হয়। আমরা সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ প্রণয়ন করে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদের পঞ্চম তফশিলে অন্তর্ভুক্ত করি। ২০১৩ সালে Jacob F. Field প্রকাশিত ২৫০০ বছরের বিশ্বসেরা যুদ্ধকালীন ভাষণের সংকলন 'We Shall Fight on the Beaches. The Speeches That Inspired History'-এ এই ভাষণ অন্যতম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। জাতিসংঘের ইউনেস্কো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ ভাষণকে 'বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। শুধু তাই নয়, ইউনেস্কো মনে করে এ ভাষণটির মাধ্যমে জাতির পিতা প্রকারান্তরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ-এর বিশ্বস্বীকৃতি আজ বাঙালি জাতির জন্য এক বিরল সম্মান ও গৌরবের স্মারক। আমাদের হাইকোর্টের রায়ের উপর ভিত্তি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ 'জয় বাংলা'-কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

আজ অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস বাহিনীও দেশবিরোধী ও স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিপুষ্ট গোষ্ঠীকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ জোগাচ্ছে। এই অপশক্তির প্রতিভূই অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক জোরপূর্বক দখলদার ইউনূস গং। অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এই অশুভ শক্তি রাষ্ট্রের সকল পর্যায় থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর। কোনো কোনো জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাতিল করে তার পরিবর্তে কুখ্যাত রাজাকারের নাম বসিয়েছে। এমনকি ৭ মার্চসহ ঐতিহাসিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ অন্যান্য জাতীয় দিবসসমূহ রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দিয়েছে। 'জয় বাংলা'-কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রদত্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে দিয়েছে। এই অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জনসমূহকে ধূলিসাৎ করার অপতৎপরতায় লিপ্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এই দেশবিরোধী ও গনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে গণশক্তির জাগরণ আশু প্রয়োজন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত সেই গণশক্তিকে রুখার সাধ্য কারো নাই। উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমূলে এদের বিনাশই একমাত্র সমাধান। আমি বিশ্বাস করি 'জয় বাংলা' স্লোগান এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ মার্চের ভাষণ যুগে-যুগে বাঙালিদের বিশ্বের বুকে আত্মমর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে চলতে এবং মা-মাতৃভভূমির তরে লড়াই-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ৬ মার্চ ২০২৫

#৭মার্চ #অগ্নিঝরামার্চ #বঙ্গবন্ধু #শেখমুজিব #বাংলাদেশ #উত্তালমার্চ #স্বাধীনতারমাস #মার্চ১৯৭১

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিবৃতি----- বিবৃতিতে...
22/02/2025

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিবৃতি
-----

বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাসহ বিশ্বের সকল ভাষাভাষী ও সংস্কৃতির মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। বাঙালি জাতির মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই একটি অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের ভিত রচিত হয়েছিল। ১৯৫২ সালের এ দিনে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা'র মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণোৎসর্গ করেছিলেন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালাম, রফিকউদ্দিন আহমদ, শফিউর রহমানসহ আরও অনেকে। আমি বাংলাসহ বিশ্বের সকল ভাষা-শহিদগণের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সেই সঙ্গে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল ভাষাসংগ্রামী, যাঁদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ এবং সংগ্রামের বিনিময়ে আমাদের মা, মাটি ও মানুষের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।
১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ বাঙালির গৌরবময় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস যুগে যুগে আমাদের জাতীয় জীবনে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। জাতির পিতা ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেছেন। ১৯৪৭ সালের ২৭ নভেম্বর করাচিতে অনুষ্ঠিত শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকায় এ খবর পৌছা মাত্রই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খাজা নাজিমুদ্দিনের বাসভবনের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে। এর কিছুদিন পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র শেখ মুজিব তাঁর সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলাকে গণপরিষদের ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এক সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবটি প্রত্যাখান করে খাজা নাজিমুদ্দিন আইন পরিষদে ঘোষণা দেয়, পূর্ব বাংলার জনগণকে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নিতে হবে। কিন্তু নাজিমুদ্দিনের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিস ও অন্যান্য দলের সমন্বয়ে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১১ মার্চের ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে শেখ মুজিবসহ অনেক ভাষাসৈনিক সচিবালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার হন এবং ১৫ মার্চ মুক্তি পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জিন্নাহ ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে উর্দুর পক্ষে বক্তব্য রাখে এবং ২৪শে মার্চ কার্জন হলে আয়োজিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বলে ঘোষণা দিলে ছাত্ররা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে।

ভাষা আন্দোলনকে জাতীয় আন্দোলনে রূপদান করতে শেখ মুজিব দেশব্যাপী সফরসূচি তৈরি করে ব্যাপক প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন এবং সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার হন এবং ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবার গ্রেফতার হয়ে জুলাই মাসে মুক্তি পান। এরপর তিনি ১৯৪৯ সালের ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হয়ে ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান শেখ মুজিব ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ থেকেও ভাষাসৈনিক ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন এবং আন্দোলনকে বেগবান করতে নানা পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ তিনজন দূত মারফত খবর পাঠান- ২১ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতাল ডাকতে হবে। 'রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রতিষ্ঠা' ও রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে শেখ মুজিব আমরণ অনশন ঘোষণা করলে ১৬ ফেব্রুয়ারি কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলে স্থানান্তরিত করে।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পূর্ব-বাংলা ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের জন্য নির্ধারিত ছিল। শেখ মুজিবের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী ঐদিন সারাদেশে সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে এবং সেখানে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে কতগুলো তাজা প্রাণ নিমেষেই ঝরে পড়ে, অনেকে আহত হন, অনেকে গ্রেফতার হন। ২২ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালিত হয়।
১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠন করে, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়, প্রথম ২১শে ফেব্রুয়ারি-কে শহিদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, এই দিনে সরকারি ছুটি ঘোষনা করে এবং শহিদ মিনার তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করে। দুর্ভাগ্য, ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর সামরিক শাসন জারির ফলে সেই আকাঙ্ক্ষাগুলো আর পূরণ হয়নি।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা সকল দাপ্তরিক কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করেন। জাতিসংঘের ২৯তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা দিয়ে আমাদের মাতৃভাষাকে বিশ্ব সভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে কানাডা প্রবাসী রফিক এবং ছালাম নামে দু'জন বাংলাদেশী কয়েকজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য মিলে 'মাতৃভাষা সংরক্ষণ কমিটি' গঠন করে। ২১ ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' উদ্‌যাপনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব প্রেরণ করে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ ও তাদের মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করেছিলাম। ২০১৭ সাল থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বইসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করে আসছিলাম।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আদর্শকে ধারণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদা রাজনীতি করে আসছে এবং রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। আর এজন্যই বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছিল। দারিদ্র্য ৪১শতাংশ থেকে কমে ১৮.৭ শতাংশে এবং অতিদারিদ্র‍্য ২৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছিল। বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত ছিল। অথচ সেই বাংলাদেশ আজ কোথায়? আইএমএফের ঋণের কিস্তি পাওয়ার জন্য শর্ত পূরণ করতে পারে না। খুনি ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের ৬ মাসে অসংখ্য শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, ৭১ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে। কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়ে গেছে। কোনো কর্মসংস্থান নেই। আওয়ামী লীগের সময়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য যে সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা চালু ছিল তা একের পর এক বাতিল করা হচ্ছে। বছরের ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পাঠ্যপুস্তক হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। কবে নাগাদ পাঠ্যপুস্তক দিতে পারবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না শিক্ষা উপদেষ্টা। এই অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের নিকট শিক্ষার কোনো গুরুত্ব নেই। যারা শিক্ষার গুরুত্ব দেয় না, তারা নিশ্চিতভাবে ভাষার মর্যাদাও রক্ষা করতে জানে না। অন্যদিকে মানুষের বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার ও মুক্ত চিন্তা করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিনিধিরা ও তাদের দোসররা সংবাদমাধ্যমগুলোর অফিসে অফিসে গিয়ে হুমকি-ধমকি ও সংবাদ প্রকাশের প্রেসক্রিপশন দিয়ে আসছে। অথচ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের অবারিত দ্বার উন্মুক্ত করেছিলাম। আজ এই ফ্যাসিবাদী শক্তি ও জঙ্গিগোষ্ঠী সকল উন্মুক্ত দ্বার বন্ধ করে দেশের জনগণকে অবরুদ্ধ দশার মধ্যে নিপতিত করছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারেই তলানিতে। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। যেখানে চিন্তার স্বাধীনতা নেই, যেখানে মানবতা বিপন্ন সেখানে ভাষার উৎকর্ষ সাধিত হবে এ ধরনের চিন্তা বাতুলতা মাত্র। এই ফ্যাসিবাদী রাক্ষসগোষ্ঠীর হাতে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। আমাদের মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষাসহ সবকিছুই আজ ক্ষত-বিক্ষত ও বিপর্যস্ত। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মানুষের উপর দমন-পীড়ন চালিয়ে কোনো দানবীয় শক্তি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই রাক্ষসদের করালগ্রাস থেকে আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করব এবং ভবিষ্যতে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণ করব, ইনশাল্লাহ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
তারিখ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

14/02/2025

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত ক্যারিশম্যাটিক, দৃঢ়চেতা ও মানবিক নেতা। তিনি ছিলেন বাংলার আপামর মানুষের ভালোবাসার প্রতীক, যিনি সারাজীবন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন।

তার ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র:

অত্যন্ত সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: রাজনীতির নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যেও কখনও আপস করেননি।

খুবই আবেগপ্রবণ ও ভালোবাসায় ভরা: সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টে কেঁদে ফেলতেন, আবার মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা দেখাতেন।

অসাধারণ বক্তা: তার ভাষণ মানুষের হৃদয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিত, বিশেষ করে ৭ই মার্চের ভাষণ ইতিহাসে অমর।

বন্ধুবৎসল ও পরিবারপ্রেমী: পরিবারকে খুব ভালোবাসতেন, বিশেষ করে শিশুদের প্রতি তার ছিল দুর্বলতা।

তার জীবনসংগ্রাম:

ভাষা আন্দোলন (১৯৫২): বাঙালির ভাষার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন।

ছয় দফা আন্দোলন (১৯৬৬): বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির রূপরেখা দিয়েছিলেন।

গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯): এর ফলে তিনি হয়ে ওঠেন 'বঙ্গবন্ধু'।

নির্বাচন ও স্বাধীনতা (১৯৭০-১৯৭১): পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি রচনা করেন।

১৫ আগস্ট ১৯৭৫: এক নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পরিবারের সঙ্গে নৃশংসভাবে নিহত হন।

তিনি ছিলেন জাতির পিতা, যার স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়া। তার জীবন-সংগ্রাম আর আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়।

Address

Satkhira
9413

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when নেতা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to নেতা:

Share