আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক

আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক International Relations

17/07/2025

ঐতিহাসিক শহীদি আযানের ৯৪ বছর
--

১৮৪৬ সালে অভিশপ্ত বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মাত্র ৭৫ লাখ রুপির বিনিময়ে মুসলিমদের ভূমিগোটা কাশ্মীর ভূখণ্ডকে আরেক অভিশপ্ত ডোগরা রাজা গুলাব সিং এর কাছে বিক্রি করে দেয়।

ভূমির প্রকৃত মালিক মুসলিমদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করে অভিশপ্ত জাতি বৃটিশরা তাদেরই আরেক গোলাম হিন্দু জমিদারদের হাতে মুসলিমদের ভূখণ্ড বিক্রি করে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই গোটা ভূখণ্ডে অশান্তির দাবানল জ্বলে ওঠে।

এমনই উত্তাল সময়ে কাশ্মীরের উধমপুর জেলায় একজন ব্যবসায়ী ইসলাম গ্রহণ করলে হিন্দুরা তাঁর সম্পত্তি জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে তাঁর হিন্দু ভাইকে দিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে তিনি মামলা করেন। কিন্তু হিন্দু বিচারক তাঁকে শর্ত দিয়ে বসে- পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরে না আসলে তিনি আর নিজের জমির মালিক থাকবেন না।

১৯৩১ সালের এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখ। কাশ্মীরের মুসলমানরা ঈদুল ফিতরের নামায আদায় করেন। নামাজের ইমামতি করেন মুফতি মুহাম্মদ ইসহাক। নামাযের পর তিনি তাঁর খুতবায় মুসা আলাইহিস সালাম ও অত্যাচারী অহংকারী শাসক ফেরাউনের ঘটনা সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের কয়েকটি আয়াত তিলাওয়াত করে এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। ধারণা করা হয় তিনি ঐ নওমুসলিম ব্যবসায়ীর জমি হারানোর ঘটনাকে ইঙ্গিত করে ফেরাউনের অত্যাচারের উদাহরণ টানেন।

ঘটনাস্থলে পুলিশের ডি আই জি চৌধুরী রামচাঁদ ও সাব-ইন্সপেক্টর বাবু খেমচাঁদ ডিউটিতে ছিল। মুফতি ইসহাক খুতবায় ফেরাউনকে নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী শাসক বললে তৎকালীন ফেরাউন হরি সিং এর গোলাম ঐ পুলিশ কর্মকর্তাদের গায়ে লাগে।
এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ফেরাউন রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের উস্কানি দেওয়ার অজুহাতে ইমাম মুফতি ইসহাককে ঈদের নামাজ ও পরবর্তী জুমার নামাজেও খুতবা না দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

মুসলমানদের ধর্মপালনে হিন্দু শাসকের এমন ন্যাক্কারজনক হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দেন ‘ইয়ং মুসলিমস এসোসিয়েশন’ দলের নেতা মীর হোসাইন বখশ। সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকা উত্তাল হয়ে ওঠে। লাখ লাখ মুসলমান ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাজপথে নেমে আসেন।

বিক্ষোভ সমাবেশের এক পর্যায়ে মুসলমানরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে রণবীর পেনাল কোডের ২৯৬ নং ধারা অনুযায়ী মুসলমানদের ধর্ম পালনে হস্তক্ষেপের জন্য হিন্দু পরিদর্শকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু হিন্দু ম্যাজিস্ট্রেট “খুতবা জুমুআর নামাজের অংশ নয়” এমন উদ্ভট যুক্তিতে মামলা খারিজ করে দেয়।
ওদিকে আদালত প্রাঙ্গণে উগ্র হিন্দুরা স্লোগান দিতে থাকে, "খেম চাঁদ কি জয়", "হিন্দু ধর্ম কি জয়"!

মুসলমানরা এই পক্ষপাতিত্বমূলক রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ-সমাবেশ করতে থাকে। অন্য দিকে রাজা হরি সিংয়ের গুণ্ডাবাহিনী ও হিন্দুরা মুসলমানদের সমাবেশে চোরাগুপ্তা হামলা চালাতে থাকে।

এমন উত্তাল পরিস্থিতিতে আগুনে ঢালে কিছু উগ্র হিন্দু যুবক। ১৯৩১ সালের ২০শে জুন শ্রীনগরের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার একটি টয়লেটে কিছু উগ্র হিন্দু যুবক পবিত্র কুরআনের পাতা ছিঁড়ে পৈশাচিক উল্লাসে ফেটে পড়ে।
শ্রীনগরের এ ঘটনার পর গোটা কাশ্মীর উপত্যকায় মুসলমানদের আন্দোলন আরো তীব্রতর হতে থাকে।

কিংবদন্তী আব্দুল কাদির খান
----------------------

“আমার ভাইয়েরা! সময় এসেছে সকল অত্যাচার ও বর্বরতার অবসান ঘটানোর। আমাদের কোনো ফেরাউনি অপশক্তির ছায়া থাকা উচিত নয়। তারা কখনোই আপনাদের শান্ত করার জন্য কুরআন অবমাননার বিচার করবে না। নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে লড়া ছাড়া আমাদের সামনে দ্বিতীয় আর কোনো পথ খোলা নেই। ওদের মেশিনগান আছে, আমাদের নেই। তাতে কি? আমাদের কাছে ইট আর পাথর তো আছে। তাই দিয়েই লড়ে যাব।”

আবদুল কাদির। সোয়াত উপত্যকা থেকে আসা আবদুল ক্বাদির খান নামের এ যুবক চাকরি করতেন পেশোয়ারে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের মেজর বাটের অধীনে। তিনি তার নিয়োগকর্তার সাথে শ্রীনগরে এসেছিলেন গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে। নাসিমবাগের একটি হাউস বোটে অবস্থান করছিলেন।

কুরআন শরীফ ছেঁড়ার ঘটনার পর থেকেই সমগ্র কাশ্মীরে প্রতিদিনই চলছিলো বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। আব্দুল কাদিরও তখন বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগদান করছিলেন। কুরআনের অবমাননা সইতে পেরে আব্দুল কাদির শ্রীনগরে খানকায়ে মাওলা মসজিদের প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে দাঁড়িয়ে এক আগুনঝরা ভাষণ দেন। সেই ভাষণেই তিনি উপরোল্লিখিত কথাগুলো বলেন।

সভায় ছদ্মবেশে থাকা ডোগরা প্রশাসনের গোয়েন্দারা তার এই বক্তব্য রেকর্ড করে নেয়। গভীর রাতে তিনি নাসিমবাগে ফিরে আসেন। তখন তাকে গেস্টাপো (গোপন পুলিশ) অনুসরণ করে। পরদিন ২৫শে জুন তার নিয়োগকর্তার হাউস-বোট থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ডোগরা প্রশাসন রণবীর পেনাল কোডের ১২৪ ও ১৫৩ ধারার অধীনে তাঁর ওপর রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনে।

আবদুল কাদিরের গ্রেফতারের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মুসলমানরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তীব্র জনস্রোতের ফলে পেশোয়ার পর্যন্ত যাতায়াত ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। ৪ জুলাই শ্রীনগরের দায়রা জজ আদালতে তার বিচার শুরু হয়। জুলাইয়ের ৪, ৬, ৭ এবং ৯ তারিখে চারটি তার মামলার শুনানি চলাকালীন এই বিচারের সাক্ষী হওয়ার জন্য কয়েক হাজার মুসলমান আদালতের প্রাঙ্গণে সমবেত হতেন।

শহীদি আযান
-------------------------

১৩ই জুলাই রবিবার আবদুল কাদির খানের মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল শ্রীনগর কেন্দ্রীয় কারাগারে। সকাল থেকেই কয়েক হাজার কাশ্মীরি মুসলমান আবদুল কাদিরের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

ম্যাজিস্ট্রেটকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সবধরনের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেইট পুলিশ সুপার, একজন ইন্সপেক্টর, ২ জন সাব ইন্সপেক্টর, ৫ জন হেড কনস্টেবল এবং ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে বিচারস্থলে আসেন।
এই বাহিনীর মধ্যে ২২ জন পুলিশ রাইফেল আর বাকিরা হ্যান্ডকাফ নিয়ে আসেন। আর ইন্সপেক্টরদের হাতে রিভলভার ছিল। এছাড়া কারাগারের ১১৯ পুলিশ সদস্য ডান্ডা এবং ১৯ জন পুলিশ রাইফেলে সজ্জিত ছিল।

কয়েক হাজার মুসল্লি কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে জড়ো হন। দায়রা জজ আদালতে প্রবেশের পর তারা কম্পাউন্ডে প্রবেশের অনুমতি চান।
এক হিসেব অনুযায়ী চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ এই বিচারে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মামলার শুনানি শুরু হওয়ার আগেই প্রায় দুই শতাধিক লোকের একটি দল কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে জেল গার্ড লাইনের বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে ।

হিন্দু ডোগরা পুলিশদের নিরাপত্তায় হিন্দু বিচারক জেলগেটে আসলে “ইসলাম জিন্দাবাদ, আবদুল ক্বাদির জিন্দাবাদ, আমাদের রায়বেরেলির ভাইকে মুক্তি দাও, রাওয়ালপিন্ডির ভাইকে মুক্তি দাও, আমাদের ভাইকে মুক্তি দাও-আমাদের বন্দি কর” স্লোগানে স্লোগানে জেলগেট মুখরিত করে তোলেন উপস্থিত প্রতিবাদকারীরা।

বেলা পৌনে ১ টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে জোহরের নামাজ আদায় করার জন্য কাতারে দাঁড়ান মুসলমানরা। আযান দেয়ার জন্য সামনে এগিয়ে আসেন আবদুল খালিক শোরা নামের এক যুবক। তার মুখ থেকে “আল্লাহু আকবার” আওয়াজ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে কেঁপে ওঠে উপস্থিত ডোগরা রাজার কর্মকর্তারা।

হিন্দু গভর্নর ত্রিলোক চাঁদ পুলিশকে গুলি চালাতে নির্দেশ দেয়। আযানের প্রথম বাক্য শেষ না হতেই পুলিশ গুলি চালায় আবদুল খালেক শোরার ওপর। শাহাদাতের কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এগিয়ে আসেন আকবর দার নামের আরেক যুবক। আযানের পরের লাইন উচ্চারণের সাথে সাথে আবারো পুলিশ গুলি চালায়। লুটিয়ে পড়েন তিনিও।

এভাবে উসমান মিসদার, আমীর উদ্দিন মাকায়ী, মুহাম্মাদ সুলতান খান - একে একে ২২ জন এগিয়ে আসেন আযান শেষ করতে। প্রত্যেককেই গুলি করে শহীদ করে দেয় হিন্দু ডোগরা পুলিশ।

আযান শেষ হতেই ইট-পাথর ছুঁড়ে পুলিশকে থামানোর চেষ্টা করে দিশেহারা কাশ্মীরি মুসলমানরা। প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ শেষ হলে শহীদানের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার হন প্রায় শতাধিক।

এ ঘটনার জন্য গঠিত তদন্ত কমিশন জানায়, সেদিন মুসলমানদের ওপর ১৮০ রাউন্ড গুলি চালায় হিন্দু পুলিশ। ১৯৩১ সালের ২৮ জুলাই ভারতীয় মিডিয়া দ্য হিন্দু, ডেইলি ট্রিবিউন ২২ জন মুসলমানের শাহাদাতের ঘটনাকে 'অত্যন্ত ভয়াবহ ছিল' বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।

শহীদদের জানাজা
--------------------
১৫ জুলাই ২২ জন শহীদের লাশ শ্রীনগরের 'খানকায়ে মাওলা মসজিদ' প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। এখানেই শহীদানের জানাযা হয়। শ্রীনগরে খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দীর মাজারের কবরস্থানে শহীদদের দাফন করা হয়। জায়গাটির নতুন নাম রাখা হয় 'মাযার-ই শুহাদা' বা শহীদদের কবরস্থান।

'ইয়াং মেন'স মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন' এর তৎকালীন নেতা চৌধুরী গোলাম আব্বাস খান তার আত্মজীবনীতে দিনটিকে স্মরণ করতে গিয়ে লিখেন-
'সেদিন আকাশ হঠাৎ ভয়ানক কালো মেঘে ছেয়ে যায়। মিছিলটি জামিয়া মসজিদে পৌঁছানোর সাথে সাথে শহরটি এক অস্বাভাবিক ধূলিঝড় প্রত্যক্ষ করে। সেদিন সরকার সামরিক আইন জারি করে এবং সেনাবাহিনীর কাছে শহর' হস্তান্তর করে।

সেদিনই কাশ্মীরের স্বাধীনতার বীজ অঙ্কুরিত হয়
---------------------
জ্যোতি ভূষণ দাস গুপ্ত তার 'জম্মু ও কাশ্মীর' বইয়ে লিখেছে-
আধুনিক কাশ্মীরের "স্বাধীনতা আন্দোলন" এর জন্ম হয় মূলত ১৯৩১ সালের ঐ ১৩ জুলাইতেই।

কাশ্মীরের সেক্যুলার রাজনীতিবিদ প্রেম নাথ বাজাজ লিখেছেন-
"ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিকভাবে ১৩ জুলাই ১৯৩১ ছিল সমসাময়িক কাশ্মীরের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিন থেকেই প্রকাশ্যে শুরু হয় কাশ্মীরের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম"।

কাদির খানের কী হয়েছিল?
--------------------------

কাদিরকে বলা মেজর বাটের কথাগুলো অনুপ্রাণিত করেছিল বলে মনে হয়- 'তোমার প্রভুকে গিয়ে বলো কাশ্মীরকে এই অত্যাচারী শাসন থেকে মুক্ত করতে।' তাই তো লাখো কাশ্মীরীর দোয়া শ্রদ্ধা নিয়ে নীরবেই নিজের রবের কাছে চলে গেলেন।

কথিত রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা দাবি তুলে আব্দুল কাদিরের ফাঁসির রায় দেয় অভিশপ্ত ডোগরা ডোগরা প্রশাসনের হিন্দু বিচারক। ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার পর আবদুল কাদিরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কোথায় তাঁকে দাফন করা হয়েছিল কেউ জানে না।
নাম না জানা অনেক বীরের আত্মত্যাগ কাশ্মীরের স্বাধীনতার ইতিহাসের পাতায় পাতায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

শহীদদের আত্মত্যাগ আজও চির ভাস্বর
----------------------
মুসলমানদের অব্যাহত জুলুম, কুরআন অবমাননা ও একজন মুসলিম ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেওয়া ২২জন মুসলিম যুবকের শাহাদাত কাশ্মীরের রক্তাক্ত ইতিহাসকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে। কাশ্মীরী মুসলিম যুবকদের এই কুরবানি ফেরাউনি শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তাবৎ বিশ্বের পরাধীন জাতিগুলোর জন্য জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।

১৯৩১ সালের এ ঘটনার পর থেকে ১৩ জুলাইকে কাশ্মীরে শহীদ দিবস হিসেবে স্মরণ করা হতো। পাকিস্তানেও দিনটি কাশ্মীর শহীদ দিবস হিসেবে আজও পালিত হয়।

২০১৯ সালে ভারত কাশ্মীরে এই দিনটিতে থাকা সরকারি ছুটি বাতিল করে। ভারত এই দিনটিকে কাশ্মীরের ইতিহাস থেকে বিলুপ্ত করতে নানা অপকৌশলে লিপ্ত হয়। কিন্তু অত্যাচারী ফেরাউনরা জানে না- রক্তে লেখা ইতিহাস কখনো কলমের কালি দিয়ে মোছা যায় না।

--
সৌজন্যে: ভুলে যাওয়া ইতিহাস: জানতে হবে আবার

ইসরাহেল চলে আমেরিকার শক্তিতে এবং আমেরিকা চলে ই-হুদি-দের বুদ্ধিতে। আমেরিকা কোন যুদ্ধে জড়াবে, কখন কোথায় হামলা করবে এসব আমে...
22/06/2025

ইসরাহেল চলে আমেরিকার শক্তিতে এবং আমেরিকা চলে ই-হুদি-দের বুদ্ধিতে। আমেরিকা কোন যুদ্ধে জড়াবে, কখন কোথায় হামলা করবে এসব আমেরিকান সিনেটর ঠিক করে না এসব আসলে তেলআবিব থেকেই পূর্বনির্ধারিত। হোয়াইট হাউজের মসনদে ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকান যেই বসুক না কেনো ইসরাহেল নীতিতে সবই এক।। কারণ যতোদিন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাহেল নামক একটা অবৈধ বিষফোঁড়া দেশ থাকবে ততোদিন পর্যন্ত আমেরিকা তার পরাশক্তিতেও অটল থাকবে। সুতরাং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থেই আমেরিকা পরোক্ষ বা ছায়াশক্তি হিসেবে বারংবার অবৈধ রাষ্ট্রকে রক্ষা করে যাবে এটাই হোয়াইট হাউজের নীতি। আমেরিকানরা হলো ই-হুদি-দের হাতের খেলার পুতুল।

আমেরিকা আবিষ্কারের পর নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, নিউজার্সি, ক্যালিফোর্নিয়াসহ আরো অনেক শহরে প্রথমদিকে ইহুদিরা বসতি আস্থাপন করতে থাকে। তখন থেকেই ওখানকার ব্যাংক,বাজার,শিক্ষাক্ষেত্র, অর্থনীতি সবকিছু কন্ট্রোল করতে শুরু করে। আর বর্তমানের আমেরিকার সব মেগা প্রজেক্ট থেকে বড় বড় কোম্পানীর মালিকানা,শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক, মেটা,গুগল,মাইক্রোসফট, অ্যামাজন,কোকাকোলা, মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সবই জায়োনিষ্টদের কাছে জিম্মি এবং ওরাই কেবল এসবের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক ও চালিকাশক্তি। এর মানে দাড়ায় আমেরিকা না চাইলেও ইসরাহেলের পক্ষে যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

আকাশের দুই মাস্টার: প্রকৃতি আর প্রকৌশলের অবিশ্বাস্য মিলভাবুন তো, আকাশপথের দুই অধিপতি একসঙ্গে উড়ছে! একদিকে পেরেগ্রিন ফ্যা...
22/06/2025

আকাশের দুই মাস্টার: প্রকৃতি আর প্রকৌশলের অবিশ্বাস্য মিল

ভাবুন তো, আকাশপথের দুই অধিপতি একসঙ্গে উড়ছে! একদিকে পেরেগ্রিন ফ্যালকন, প্রকৃতির দ্রুততম শিকারি, অন্যদিকে F-22 বা B-2 স্টিলথ জেট, আধুনিক সামরিক প্রকৌশলের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। অথচ, এত ভিন্ন উৎস থেকে জন্ম নিয়েও দুটির ওড়ার ভঙ্গিমায় রয়েছে চমকপ্রদ মিল।

পেরেগ্রিন ফ্যালকন নিঃশব্দে ছুটে যায়, ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে। তার পানির ফোঁটার মতো আকৃতি বাতাস ভেদ করে যায় নিখুঁতভাবে। আর স্টিলথ জেট? শত্রুর চোখ ফাঁকি দিতে এর গঠন কোণাকৃতির, যেন রাডার তরঙ্গ প্রতিফলিত না হয়। কিন্তু এই আকৃতিও তাকে দেয় অতুলনীয় গতি।

ফ্যালকনের পালক এমনভাবে তৈরি যে, ডাইভের সময় বাতাসে আওয়াজ প্রায় থাকে না। এদিকে স্টিলথ বিমানে ব্যবহৃত হয় রাডার তরঙ্গ-শোষণকারী আবরণ ও তাপ নিয়ন্ত্রণকারী ডিজাইন, যা কমিয়ে দেয় শব্দ ও তাপের অস্তিত্ব- দুটোই আক্রমণ করে প্রায় অদৃশ্য হয়ে।

শিকারের মুহূর্তে ফ্যালকন ডানার কোণ সামান্য বদলে আনে ভারসাম্য, নিয়ন্ত্রণ আর নিখুঁত আঘাত। তেমনি স্টিলথ বিমানে থাকে fly-by-wire সিস্টেম, যা তাকে দেয় সুপাসসনিক স্পিডেও স্থির থাকার গুণ।

এই অসাধারণ সাদৃশ্য আমাদের শেখায়- সবচেয়ে নিখুঁত প্রকৌশলও কখনো কখনো প্রকৃতির কাছ থেকেই শেখা যায়। আকাশের বুকে বিবর্তন ও উদ্ভাবন যেন মুখোমুখি, আবার সহযাত্রী। একদিকে প্রকৃতি, অন্যদিকে মানববুদ্ধি- উভয়ের সম্মিলনে তৈরি হয় এমন কিছু, যা শুধু ওড়েই না, অনুপ্রেরণাও জাগায়।

সব সিদ্ধান্ত নিয়েও ইরানে হামলার ব্যাপারে ইউএসএ সম্ভবত কয়েকটা ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় আছে৷ পুর্ন  ঐক্যমত সম্ভবত নাই। ১. ...
22/06/2025

সব সিদ্ধান্ত নিয়েও ইরানে হামলার ব্যাপারে ইউএসএ সম্ভবত কয়েকটা ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় আছে৷ পুর্ন ঐক্যমত সম্ভবত নাই।

১. ইউএসএ'র জেনারেলরা সম্ভবত সবাই একমত না।

২. ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে যারা আছে তারাও সবাই একমত না। কারন মিডটার্ম ইলেকশন সামলাতে হবে। যেকোনো ফেইলিউর নির্বাচনে বড় ধাক্কার কারণ হতে পারে।

৩. ৩০,০০০ পাউন্ডের একাধিক বোমাও যদি পাহাড়ের গভীরে থাকা ইরানের সবকয়টা পারমাণবিক স্থাপনা কার্যকর ভাবে ধ্বংস করতে না পারে সেক্ষেত্রে এইটা ইউএসএর জন্য অনেক বড় ডিজএডভান্টেজ। কারণ প্রায় একই ধরনের নন নিউক্লিয়ার বোমা চীন ও রাশিয়ার কাছে আছে। তোরাবোরা পাহাড়ে টন কে টন বোমা বর্ষন করেও ২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি ক্ষতি কর‍তে সক্ষম হয় নাই।

৪. গত কয়েকদিনে ব্যাপাক ধরপাকড়ের কারনে ইরানে মোসাদ নেটওয়ার্ক কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। তাই এখন বড়সড় বোমা হামলার পর সব পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব হলেও সম্ভবত ইরানের এই রেজিম বিরোধীরা কার্যকর অভ্যুত্থান ঘটানোর মতো প্রস্তুত না।

আর এই ধরনের মিশন সফল করতে হলে মিনিমাম কয়েক হাজার ডেল্টা ফোর্স গ্রীন বেরেট কমান্ডোদের ইরানের পার্বত্য ভূপ্রকৃতিতে ক্ল্যান্ডেস্টাইন মিশনে নামাতে হবে। রেজিম উল্টে দেয়ার এই প্ল্যান ব্যাকফায়ার করলে পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হওয়া সত্যেও ক্ল্যান্ডেস্টাইন মিশনে অংশ নেয়াদের নিরাপদে বের করে নিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হবে।

সোমালিয়ার চেয়েও দশগুণ খারাপ পরিস্থিতিতে পরতে হতে পারে। পাকিস্তান হয়তো কিছুটা ভিতরে ঢুকে এদের বের হয়ে আসার রুট করে দিবে হবে কিন্তু ঐ পর্যন্ত আসতে হবে ওদের নিজেদের সামর্থ্যে। ক্ষয়ক্ষতি আর সব তালগোল পাকায়ে গেলে অনেক বড় বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রকে। যা জেনারেলরা সবাই একমত না।

৫. হরমুজ প্রণালী, দুবাই সিটি এবং আশেপাশের ইউএস বেজ একটা বড় চিন্তার বিষয়। এধরণের একটা হামলা হলে ইরানের মিসাইল এবং পারমাণবিক প্রকল্পের সব সক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু ইরানের লং রেঞ্জ হেভী আর্টিলারি রকেট আর্টিলারি এবং ভাংগারি নেভী এবং শর্ট রেঞ্জ মিসাইল আর্সেনাল যা থাকবে তা দুবাই এবং হরমুজ প্রণালীতে ব্যাপক থ্রেট তৈরি করতে সক্ষম।

ইরানি নেভী ব্রাউন ওয়াটার নেভী। তারা আর কিছু না হোক মাইনপ্ল্যান্ট করতে সক্ষম। এতোক্ষণে তাদের লোড নিয়ে সারফেসে ও সাব সারফেসে অবস্থান নেয়ার কথা। এসব ধ্বংসের সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে কিন্তু তা একযোগে নিউট্রালাইজড করার মতো রিসোর্স এখনো এসে হয় পৌঁছে নাই বা পৌছলেও তা নিস্ক্রিয় করতে হলে কিছু সময় লাগবে। ঐ সময়টা ক্রিয়িক্যাল। ইউএস বেজ ও দুবাইয়ের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে তারা ঐ সময়ে সক্ষম।

৬. এন্ড অফ দ্যা ডে ইরানে ৩ মাস একটানা বোমাবর্ষণ করলেও ভূপ্রকৃতির কারণে ইরান দখলে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। কেউ তা করতেও যাবে না। ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত নতুন রেজিম আসলেও ইরানিরা লম্বা সময় গৃহযুদ্ধে পরবে এবং ঐ সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ চালাতে ইরান সক্ষম যা সেন্ট্রাল এশিয়া পাকিস্তান সহ মধ্যপ্রাচ্যের একটা বড় এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

এতোকিছু সামাল দিতে পারবে কিনা এবং সামাল দিতে পারলে তা কতদিনে এবং কতো রিসোর্স খরচ শেষে হবে সেইটা কেউ জানে না। আমেরিকানদের সেইটা একটা বড় ব্যাপার।

৭. ইরানে এধরণের হামলা হলে নেক্সট প্রিএম্পটিভ স্ট্রাইক পৃথিবীতে আমেরিকার বিরুদ্ধে হবে। এই ধাক্কা সামাল দিতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সামরিক অভ্যুত্থান এমনকি ফেডারেশন কলাপ্স করার মতো বিষয় ঘটতে পারে ভবিষ্যতে।

© সমরাঙ্গন

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাঁর সমস্ত ক্ষমতা বিপ্লবী গার্ডের ‘সুপ্রিম হাউস’ - এর কাছে হস্তান্তর করেছেন। ...
21/06/2025

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি তাঁর সমস্ত ক্ষমতা বিপ্লবী গার্ডের ‘সুপ্রিম হাউস’ - এর কাছে হস্তান্তর করেছেন। যারা বুঝতে পারছেন না এর মানে কী নিচে বিস্তারিতভাবে বলা হলো:

প্রথমত: এটি কোনো প্রশাসনিক দায়িত্ব হস্তান্তর নয়। এটি পূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তর। যার অর্থ হলো এখন বিপ্লবী গার্ড চাইলে পারমাণবিক সিদ্ধান্ত নিতে বা বড় ধরনের সামরিক হামলা চালাতে পারবে সর্বোচ্চ নেতার অনুমতি বা ধর্মীয় ফতোয়া ছাড়াই। এটি ইরানি শাসনব্যবস্থায় একটি বড় কৌশলগত পরিবর্তন।

দ্বিতীয়ত: এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের ‘খামেনি-পরবর্তী’ সময়ের জন্য প্রস্তুতির দিকে আলোকপাত করে। অর্থাৎ, যদি হঠাৎ করে খামেনির মৃত্যু বা হত্যা ঘটে তাহলে দেশ অচল হবে না। বিপ্লবী গার্ড নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেবে। ফলে কোনো ক্ষমতার শূন্যতা বা বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না।

তৃতীয়ত: এর মানে হলো ইরান বর্তমানে “আধ্যাত্মিক সমর্থিত সামরিক শাসন” - এর মধ্যে প্রবেশ করছে। মানে অন্তত ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান এই যুদ্ধে। বিপ্লবী গার্ড এখন শুধু নিরাপত্তা ও সেনা বাহিনী নয়। তারা আপাতত শাসনক্ষমতার ভারও গ্রহণ করছে। এর ফলে ইসরায়েল, পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহ বা পারমাণবিক কর্মসূচি ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আরও কঠোর এবং আপসবিমুখ।

চতুর্থত: এই পদক্ষেপটি আপদকালীন সময়ের চাপের মধ্যে নেওয়া হয়েছে। মানে এটি স্পষ্ট যে সর্বোচ্চ নেতার জীবনের প্রতি সত্যিকারের হুমকি রয়েছে। তিনি এখন অতি সতর্ক৷ এটা সম্ভাব্য ‘সংস্কারপন্থীদের’ ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করতেও হতে পারে। যারা মূলত পশ্চিমা ব্যাকড।

পঞ্চমত: বর্হিবিশ্বের (বিশেষত ইসরায়েল ও আমেরিকার) প্রতি স্পষ্ট বার্তা - “গাইড” বা সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যা করলেও ইরানের গতি থেমে থাকবে না। বরং সবচেয়ে কঠোরপন্থী শক্তির হাতে ক্ষমতা চলে যাবে।

ষষ্ঠত: এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ইরানের যেকোনো সামরিক অভিযানের তাৎক্ষণিকতা, তৎপরতা আর শুধু প্রতিক্রিয়া হবে না। বরং এটি একটি পূর্ব পরিকল্পিত নীতির অংশ হয়ে উঠবে।

সপ্তমত: এখন ইরান একেবারে একটি “আধ্যাত্মিক-মাধ্যমে পরিচালিত সামরিক রাষ্ট্র”, যেখানে শাসকদের পোশাক খাকি, আবায়া নয় - অন্তত যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

মূল বিষয় হলো, ইরান ঝড়ের আগে নিজের কার্ডগুলো নতুনভাবে সাজাচ্ছে। গোটা অঞ্চলকে এই ঘটনার তাৎপর্য গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে। কারণ এর মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়ার দাবার বোর্ডে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

☢️ ইরান কি পারমাণবিক শক্তিধর (Atomic Power) হয়ে গেছে? বিস্তারিত বিশ্লেষণ:🔍 ইরান পারমাণবিক শক্তিধর কি না? সংক্ষেপে উত্তর:...
18/06/2025

☢️ ইরান কি পারমাণবিক শক্তিধর (Atomic Power) হয়ে গেছে? বিস্তারিত বিশ্লেষণ:

🔍 ইরান পারমাণবিক শক্তিধর কি না? সংক্ষেপে উত্তর:

👉 ইরান এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র নয়, তবে তার পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি ও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা দেখে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ইরান এখন "ব্রেকআউট ক্যাপাবিলিটি"-র কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ, চাইলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে।

🏗️ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ইতিহাস

১. 🏛️ শুরু (১৯৭০-এর দশক):

ইরান প্রথম পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে ১৯৭০-এর দশকে শাহ রেজা পাহলভির শাসনামলে, পশ্চিমাদের সহায়তায় (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি)।

২. 🛑 ইসলামিক বিপ্লবের পর থেমে যায়:

১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর কর্মসূচি কিছুটা ধীর হয়, কিন্তু পরে আবার গোপনে শুরু হয়।

৩. 🚨 ২০০০-এর দশকে উত্তেজনা বৃদ্ধি:

২০০۲ সালে ইরানের নাতানজ (Natanz) ও আরাক (Arak) পারমাণবিক স্থাপনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়।

এরপর আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) এবং পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।

⚛️ ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও "বোমা বানানোর পথ"

পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামকে ৯০% পর্যন্ত সমৃদ্ধ (enriched) করতে হয়।

IAEA-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান ৬০% পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা কেবল শান্তিপূর্ণ কাজে নয়, বরং অস্ত্র তৈরির জন্যও অত্যন্ত বিপজ্জনক সিগনাল।

🤝 Joint Comprehensive Plan of Action (JCPOA) – ২০১৫ সালের চুক্তি

ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে এই চুক্তি হয়, যেখানে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করতে রাজি হয়, বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়।

কিন্তু:

২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে বের করে আনে।

এরপর ইরান আবার সীমা অতিক্রম করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে শুরু করে।

🛰️ পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা ও ইসরায়েলের দাবি

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে।

মোসাদ একাধিকবার ইরানের বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় সাইবার হামলা চালিয়েছে (যেমন: স্টাক্সনেট ভাইরাস)।

🌍 আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

পক্ষ অবস্থান

🇺🇸 যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে পারমাণবিক শক্তিধর হতে দিতে চায় না। সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দিচ্ছে।
🇮🇱 ইসরায়েল ইরানকে “অস্তিত্বের হুমকি” বলে মনে করে। যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
🇷🇺 রাশিয়া আংশিকভাবে ইরানের পাশে।
🇨🇳 চীন কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী।
🌐 IAEA ইরানের উপর নজরদারি রাখছে, তবে ইরান সব জায়গায় নজরদারি দিতে রাজি নয়।

📌 বর্তমান বাস্তবতা (২০২5 পর্যন্ত হালনাগাদ)

ইরানের কাছে এমন পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আছে, যা দিয়ে একাধিক পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যেতে পারে, যদি তারা চায়।

তবে ইরান সরকার বলছে:
"আমাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। আমরা ইসলামি আইন অনুযায়ী পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করব না।"

⚖️ বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে:

ইরান “থ্রেশোল্ড নিউক্লিয়ার স্টেট” – অর্থাৎ, এখনো অস্ত্র নেই, তবে চাইলে বানাতে খুব কম সময় লাগবে (ব্রেকআউট টাইম: ২–৩ মাস)।

এটি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার জন্য চরম উদ্বেগের কারণ।

✅ সারাংশ:

প্রশ্ন উত্তর

ইরানের পারমাণবিক চুল্লি আছে? হ্যাঁ
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করছে? হ্যাঁ, ৬০% পর্যন্ত
পারমাণবিক বোমা আছে? আনুষ্ঠানিকভাবে না, তবে সক্ষমতা কাছাকাছি
পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে? না
অস্ত্র তৈরি করলে কত সময় লাগবে? ২–৩ মাস (বিশেষজ্ঞ মতে)

ইচ্ছা করলে আমি ইরান বনাম উত্তর কোরিয়া বা ইসরায়েল পারমাণবিক শক্তির তুলনাও দিতে পারি। বললে সাথে সাথে বানিয়ে দেব।

🕵️‍♂️ মোসাদ (Mossad) কী?মোসাদ ইসরায়েলের প্রধান বাহ্যিক গোয়েন্দা সংস্থা (Foreign Intelligence Service)।ফুল ফর্ম: HaMossad...
18/06/2025

🕵️‍♂️ মোসাদ (Mossad) কী?

মোসাদ ইসরায়েলের প্রধান বাহ্যিক গোয়েন্দা সংস্থা (Foreign Intelligence Service)।
ফুল ফর্ম: HaMossad leModiʿin uleTafkidim Meyuḥadim (Hebrew)
বাংলা অর্থ: “গোয়েন্দা ও বিশেষ কার্যক্রমের জন্য প্রতিষ্ঠান”

🧠 মোসাদের প্রধান কাজ কী?

1. বাহ্যিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা

বিশ্বের যেকোনো দেশে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হুমকি রয়েছে কি না, তা আগেভাগে জানার চেষ্টা।

2. সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান

হামাস, হিজবুল্লাহ, ইসলামিক জিহাদ, আল-কায়েদা, ইরান, সিরিয়ার বিরুদ্ধে গোপন অভিযান চালানো।

3. টার্গেট কিলিং (Targeted Assassination)

ইসরায়েলের জন্য হুমকি মনে করলে শীর্ষ ব্যক্তিকে গুপ্তহত্যা করার জন্য কুখ্যাত।

4. বিপথগামী ইসরায়েলি নাগরিক বা গুপ্তচরদের উদ্ধারে অভিযান।

5. ইসরায়েলের পারমাণবিক নিরাপত্তা রক্ষা করা ও তথ্য গোপন রাখা।

6. বিদেশে গুপ্তচর নিয়োগ ও পরিচালনা।

🌍 আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মোসাদের ভূমিকা

ক্ষেত্র ভূমিকা

🎯 টার্গেট কিলিং ১৯৭২ মিউনিখ অলিম্পিকে ইসরায়েলি অ্যাথলেট হত্যা মামলার প্রতিশোধে “অপারেশন র‍্যাথ অফ গড” চালিয়ে মোসাদ ইউরোপ জুড়ে হামলার সঙ্গে জড়িতদের হত্যা করে।
🧬 পারমাণবিক তথ্য সংগ্রহ ইরান, সিরিয়া বা ইরাকের পারমাণবিক প্রকল্পে হামলা বা তথ্য চুরি করে। ২০১৮ সালে তেহরান থেকে ইরানের নিউক্লিয়ার আর্কাইভ চুরি করে আনে।
🕳️ গুপ্তচর ও অনুপ্রবেশ বিভিন্ন দেশে যেমন লেবানন, সিরিয়া, সুদান, তুরস্ক, মিশর, এমনকি পশ্চিমা দেশেও অনুপ্রবেশ করে।
🧬 উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার সাইবার অস্ত্র (যেমন স্টাক্সনেট ভাইরাস) ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক প্ল্যান্ট ধ্বংস করেছে।
🕯️ উদ্ধার মিশন “অপারেশন এনটেবি” (১৯৭৬)– উগান্ডায় বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইসরায়েলি বন্দিদের উদ্ধার করে।

🔐 মোসাদের গোপনীয়তা

মোসাদের সদস্য সংখ্যা, বাজেট, অনেক কর্মকাণ্ড গোপন রাখা হয়।

সংস্থার প্রধানের পরিচয় কিছু সময় গোপন থাকে।

বিশ্বের অন্যতম গোপন ও দক্ষ গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে স্বীকৃত।

⚠️ সমালোচনা ও বিতর্ক

বিভিন্ন দেশে আইন ভঙ্গ করে গুপ্তহত্যা, অপহরণ, হ্যাকিং চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

কখনো নিরপরাধ ব্যক্তি ভুল টার্গেট হয়ে পড়ে – যেমন নরওয়ে ও দুবাইতে কিছু ভুল অভিযানের উদাহরণ আছে।

মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘ এসব কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে।

📌 সংক্ষেপে বলা যায়:

মোসাদ হলো ইসরায়েলের সবচেয়ে গোপন এবং ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা।

এটি শুধু তথ্য সংগ্রহ নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় গুপ্তচর ও প্রতিহিংসামূলক হত্যাকাণ্ডের জন্যও পরিচিত।

একদিকে এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, অন্যদিকে বিশ্বে আইনি ও মানবিক বিতর্ক সৃষ্টি করে।

চানলে মোসাদ বনাম সিআইএ (CIA) বা IRGC গোয়েন্দা শাখার তুলনাও দিতে পারি। বলবেন?

🇮🇱 IDF (Israel Defense Forces) কী? বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:🛡️ IDF – এর পূর্ণরূপ ও পরিচয়IDF মানে হলো Israel Def...
18/06/2025

🇮🇱 IDF (Israel Defense Forces) কী? বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো:

🛡️ IDF – এর পূর্ণরূপ ও পরিচয়

IDF মানে হলো Israel Defense Forces।
হিব্রু ভাষায়: צבא ההגנה לישראל‎ (Tzva HaHagana LeYisra'el)
বাংলায় অর্থ: ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

IDF হলো ইসরায়েলের সরকারি সামরিক বাহিনী, যা দেশের স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী নিয়ে গঠিত। এটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর গঠিত হয়।

🏗️ IDF-এর গঠন ও শাখা

IDF প্রধানত তিনটি শাখায় বিভক্ত:

1. 🪖 Ground Forces (স্থল বাহিনী)

সেনা, ট্যাঙ্ক, গোলন্দাজ, বিশেষ বাহিনী ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

2. ✈️ Air Force (বিমান বাহিনী)

যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ইত্যাদি পরিচালনা করে।

3. 🚢 Navy (নৌ বাহিনী)

সাবমেরিন, যুদ্ধজাহাজ এবং উপকূল রক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

🧭 IDF-এর দায়িত্ব ও কাজ

1. ইসরায়েলকে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ হুমকি থেকে রক্ষা করা।

2. সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করা – বিশেষ করে ফিলিস্তিনের হামাস, হিজবুল্লাহ, ইসলামিক জিহাদ ইত্যাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।

3. গোপন ও সুনির্দিষ্ট অভিযানে অংশগ্রহণ – যেমনঃ গাজা স্ট্রাইপ বা সিরিয়াতে টার্গেটেড হামলা।

4. সীমান্ত সুরক্ষা ও গোয়েন্দা তৎপরতা।

5. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও সহায়তা প্রদান।

🧠 IDF-এর কিছু বিশেষ শাখা

শাখা কাজ

Unit 8200 সাইবার গোয়েন্দা ও নজরদারি
Sayeret Matkal গোপন বিশেষ বাহিনী (কম্যান্ডো)
Mossad ও Shin Bet যদিও IDF-এর অংশ নয়, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে

⚖️ আইনী কাঠামো ও বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা

ইসরায়েলে পুরুষদের জন্য ২.৫ বছর এবং নারীদের জন্য ২ বছর বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা।

১৮ বছর হলেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয় (যদিও কিছু ছাড় রয়েছে)।

⚠️ আন্তর্জাতিক বিতর্ক ও সমালোচনা

ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান, বিশেষ করে গাজায় বোমা হামলা এবং বসতি ধ্বংস করার জন্য IDF সমালোচিত।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, যেমন শিশুরা আহত হওয়া, হাসপাতাল ও স্কুলে হামলা।

অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা IDF-এর কিছু কর্মকাণ্ডকে “অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ” বা “মানবাধিকার লঙ্ঘন” বলে নিন্দা করে।

📊 IDF ও প্রযুক্তি

IDF বিশ্বের অন্যতম উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর সেনাবাহিনী।

ড্রোন, সাইবার অস্ত্র, আয়রন ডোম (Iron Dome) – ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

বিশ্বের বড় সামরিক প্রযুক্তি রপ্তানিকারক ইসরায়েলের অস্ত্র কারখানা ও উদ্ভাবন IDF দ্বারা পরিচালিত বা তত্ত্বাবধান করা হয়।

📌 সংক্ষেপে বললে:

IDF ইসরায়েলের সামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড।

এটি শুধুমাত্র একটি বাহিনী নয়, বরং জাতীয় ঐক্য, প্রযুক্তি, গোয়েন্দা ও রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বিশ্বে এটি সবচেয়ে সক্রিয় ও আলোচিত বাহিনীগুলোর একটি।

প্রয়োজনে আমি IDF বনাম IRGC (ইরান) তুলনাও করে দিতে পারি। আগ্রহ থাকলে বলবেন।

🛡️ IRGC (Islamic Revolutionary Guard Corps) কী?IRGC (ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস) হলো ইরানের একটি সামরিক সংগঠন, যা ...
18/06/2025

🛡️ IRGC (Islamic Revolutionary Guard Corps) কী?

IRGC (ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস) হলো ইরানের একটি সামরিক সংগঠন, যা ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা তথা সুপ্রিম লিডার–এর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এটি ইরানের সরকার ও সেনাবাহিনীর বাইরে একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে কাজ করে।

📜 IRGC গঠনের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম

1. ইসলামিক বিপ্লব রক্ষা করা – ইরানের ইসলামিক বিপ্লবের আদর্শ রক্ষা ও প্রচারই এর মূল উদ্দেশ্য।

2. সামরিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রম – IRGC-এর নিজস্ব স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী রয়েছে। তারা দেশের ভিতরে ও বাইরের 'শত্রু'র বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে।

3. বাহিরে প্রভাব বিস্তার – লেবাননের হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার আসাদ সরকার, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী এবং ইরাকের শিয়া মিলিশিয়াদের IRGC সমর্থন দিয়ে থাকে।

4. সাইবার যুদ্ধ ও তথ্য নিয়ন্ত্রণ – তারা ইরানের ডিজিটাল পরিসরেও নজরদারি চালায় এবং প্রোপাগান্ডা ছড়ায়।

5. অর্থনৈতিক প্রভাব – তারা বহু শিল্প-কারখানা, তেল-গ্যাস, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক পরিচালনা করে।

⚠️ IRGC আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত কেন?

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সৌদি আরব IRGC-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

তারা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বাড়াতে সহিংস গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইরান বিরোধী প্রতিবাদ দমনে IRGC বড় ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে তাদের বাসিজ মিলিশিয়া বাহিনী ব্যবহার করে।

🔍 IRGC বনাম ইরানের নিয়মিত সেনাবাহিনী (আর্তেশ)

বিষয় IRGC আর্তেশ (Regular Army)

নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম লিডার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
আদর্শ ইসলামিক বিপ্লব রক্ষা জাতীয় প্রতিরক্ষা
বাহিনী নিজস্ব সেনা, নৌ ও বিমান পৃথক সেনা, নৌ ও বিমান
বিদেশে ভূমিকা মধ্যপ্রাচ্যে অভিযান সীমিত বা অনুপস্থিত

📌 সংক্ষেপে বলা যায়:

IRGC ইরানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে একটি ছায়া সরকার বা বিপ্লবী নিরাপত্তা বলয় হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু সামরিক বাহিনী নয়, বরং একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয় প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান।

নিচে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ (2025 সালের যুদ্ধ) এর মূল কারণসমূহ বাংলায় বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হলো:⚔️ ১....
18/06/2025

নিচে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ (2025 সালের যুদ্ধ) এর মূল কারণসমূহ বাংলায় বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হলো:

⚔️ ১. ঐতিহাসিক শত্রুতা (1979 সাল থেকে)

১৯৭৯ সালের ইরান প্রবলেমিক বিপ্লবের পর ইসরায়েল-ইরানের সম্পর্ক একেবারে শীতল হয়ে যায়। ইসলামিক রিপাবলিক ক্ষমতায় আসার পর ইরান ‘ইসরায়েল’কে একটি অবৈধ রাষ্ট্র হিসেবে অভিহিত করে, বাজারে ইসরায়েলের ধ্বংসের ডাক দেয় ।

ইসরায়েল এসব বক্তব্য ও কার্যকলাপকে “অস্তিত্বহানির” সংকট হিসেবে বিবেচনা করে ।

🌐 ২. পারোক্ষ যুদ্ধ ও প্রক্সি সংঘাত

ইরান তার প্রতি-ইসরায়েল অঞ্চলে (প্রোক্সি) গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে একটি "axis of resistance" গড়ে তোলে — যেমন হেজবোল্লাহ (লেবানন), হামাস (প্যালেস্টাইন), হুথিস (ইয়েমেন) ।

ইসরায়েল প্রতিকারের পর্যায়ে সাইবার আক্রমণ, গুপ্তচরবৃত্তি ও লক্ষ্যভিত্তিক হামলা চালিয়ে থাকে ।

🔬 ৩. ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি

২০১৫ সালের JCPOA পারমাণবিক চুক্তির পর ইরান কিছু সীমিত নিষেধাজ্ঞা মেনে নিলও, তবে ২০১৮-এ ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তি ছাড়ার পর ইরান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গবেষণা শুরু করে ।

ইসরায়েল এই কর্মসূচিকে "আত্মহত্যামূলক" বলে দাবী করে এবং বিষয়টিকে অস্তিত্ব-সঙ্কটে পরিণত ভাবে ।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করে যে ইরান এখনও অস্ত্র তৈরি করার সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি ।

🛡️ ৪. ইসরায়েলের প্রি-এম্পটিভি স্ট্রাইক নীতি

ইসরায়েল বারবার ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক চার্চে গুপ্ত হামলা চালায়, এতে ২০২৪ সালের এপ্রিল–১ হামলায় তেহরান-ভিত্তিক ‘কনসুলেট’ এবং ইরানি জেনারেলদের হত্যা সহ উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যভিত্তিক হামলা ছিল ।

এসব হামলাকে "Operation Rising Lion" নামে ডাকা হয়—এতে ন্যাটাঞ্জ ও ইসহাফানসহ পারমাণবিক সুবিধা ও সামরিক নেতৃত্ব লক্ষ্যবদ্ধ আক্রমণ চালানো হয় ।

💥 ৫. ইরানের খেসারতি হামলা এবং পারমাণবিক ইন্টেলিজেন্সের টানাপোড়েন

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান ২০২৪ সালের অক্টোবর ও ২০২৫ সালের এপ্রিল–জুনে ইসরায়েলের দিকে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন স্রোত ছুঁড়ে ।

ইসরায়েল দ্রুত কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাল্টা আক্রমণ ও গোপন অভিযানে জবাব দেয় ।

🎯 ৬. রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট

ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানকে "Mr Security" হিসেবে চিত্রিত করে ভীতি ও নিরাপত্তা আশঙ্কা উস্কে জাতীয় ঐক্য গড়েছেন ।

আমেরিকাও ভিন্ন দৃষ্টিকোণ নিয়ে ইরানের পারমাণবিক দূরীকরণে আগ্রহী; তবে ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত গোপনে হামলা চালানো তাদেরকে বিভক্ত করেছে ।

🗺️ ৭. মধ্যপ্রাচ্য জ্বালাময় প্রেক্ষাপট

২০২৩-২০২৫ সালে হামাসের গাজা হামলা ও লেবাননে হেজবোল্লাহ ও অন্যান্য গোষ্ঠীর দিকে ইরান সমর্থন বাড়ায় ।

রিমোট অঞ্চলগুলোতে ইরান-সমর্থিত হুথি গোষ্ঠীর হামলার মাধ্যমে অঞ্চল রণনীতিতে ইরান কোনো সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়াই জড়িত হয় ।

⚠️ ৮. স্থানীয় অস্থিতিশীলতা এবং তেল-সাম্রাজ্যিক প্রভাব

যুদ্ধের তীব্রতা এবং তেল প্রবাহে প্রভাব আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করছে ।

🔚 উপসংহার

মূল চ্যালেঞ্জ: পারমাণবিক ক্ষমতা + দীর্ঘদিনের শত্রুতা + নিজস্ব নিরাপত্তা নীতি + রাজনৈতিক ভূমিকায় উত্তাপ।

পরবর্তী ধাপ: আরও বড় আকারের সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক ইচ্ছাশক্তি অকালেই জরুরি।

জনস্বার্থ: উভয়পক্ষকেই জনদুর্ভোগ, অর্থনৈতিক ক্ষতি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

🔥আমেরিকা এখন ভয়াবহ এক অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখোমুখি-গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন লস অ্যাঞ্জেলেসে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়ের জন্...
09/06/2025

🔥আমেরিকা এখন ভয়াবহ এক অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখোমুখি-

গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন লস অ্যাঞ্জেলেসে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়ের জন্য ICE-কে নির্দেশ দেয়। পুলিশ ও ফেডারেল বাহিনী হঠাৎ করে সশস্ত্র গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামে, দোকান, রেস্টুরেন্ট ও কর্মস্থলে হানা দিয়ে শতাধিক অভিবাসীকে ধরে নিয়ে যায়। এই ধরপাকড়ের ধরন ছিল এতটাই ভয়াবহ ও নাটকীয়, যেন হলিউড সিনেমার দৃশ্য। এতে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

🔵 লস অ্যাঞ্জেলেসের অধিকাংশ বাসিন্দাই মেক্সিকো ও ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আগত অভিবাসী। তাই এই অভিযান জনসংখ্যার এক বিশাল অংশকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হওয়ায় ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয়। শহর জুড়ে শুরু হয় বিশাল বিক্ষোভ, যা দ্রুতই সহিংস রূপ নেয়- মলোটভ বোমা, আগুনে পুড়া গাড়ি, রকেট ইত্যাদি দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে।

🟠 ট্রাম্প এই পরিস্থিতিকে আরো উসকে দেন- তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের অনুমতি ছাড়াই পুরনো “Title 10” আইন ব্যবহার করে ২০০০ জন ন্যাশনাল গার্ড পাঠান। এরপর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ঘোষণা করেন যে প্রয়োজন হলে মেরিন সেনাও নামানো হবে, যারা মূলত যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য প্রশিক্ষিত। এর ফলে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সাংবিধানিক দ্বন্দ্ব প্রকট হয়।

🟣 ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র এই সামরিক হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেন, একে "রাজনৈতিক স্টান্ট" ও "অপ্রয়োজনীয় উস্কানি" বলে অভিহিত করেন। তারা আশঙ্কা করছেন, এই পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘর্ষ এবং জনগণের বিশ্বাসের অবক্ষয়ে রূপ নিতে পারে, যা সত্যিকারের গৃহযুদ্ধে গড়াতে পারে।

🔵 প্রসঙ্গত, ক্যালিফোর্নিয়া শুধুমাত্র একটি রাজ্য নয়- এটি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, যার জিডিপি $4.1 ট্রিলিয়ন (২০২৪)। এটি প্রযুক্তি, কৃষি, ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে রয়েছে গুগল, অ্যাপল, মেটা, এনভিডিয়া ও ওপেনএআই-এর মত বিশ্বখ্যাত কোম্পানির সদর দপ্তর।

🔴এমন একটি শক্তিশালী রাজ্যে সামরিক হস্তক্ষেপ শুধু অভিবাসন ইস্যু নয়, বরং এটি আমেরিকার ফেডারেল কাঠামো, গণতন্ত্র এবং রাষ্ট্রের ঐক্যের উপর সরাসরি আঘাত। এই সংকট প্রমাণ করছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইনের দোহাই দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করছে, এবং এতে আমেরিকার ভবিষ্যৎ ঐক্য হুমকির মুখে পড়েছে।

Address

Savar

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share