
08/07/2025
মিশরের কিংবদন্তি ফেরাউন তুতানখামেনের কবর এক সময় ছিল ভয়ের প্রতীক। যারা ওই কবরের ভেতর ঢুকত, তারা একের পর এক অদ্ভুতভাবে মারা যেত। তখন সবাই ভাবত এটা "ফ্যারাও-এর অভিশাপ"। পরে বিজ্ঞানীরা বুঝলেন, আসলে কবরের ভেতরে থাকা অ্যাসপারজিলাস ফ্ল্যাভাস (Aspergillus flavus) নামের একধরনের ছত্রাকের কারণে এসব মৃত্যু হতে পারে। এই ছত্রাকের স্পোর (spore) বাতাসে ভেসে ফুসফুসে গিয়ে মারাত্মক ইনফেকশন করে, যেটাকে বলে অ্যাসপারজিলোসিস – এটা বিশেষ করে ইমিউন দুর্বল মানুষের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এই “অভিশপ্ত” ছত্রাকই এখন বিজ্ঞানীদের চোখে জীবনরক্ষাকারী! ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, এই ছত্রাকের ভেতরে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলা থেকে তৈরি করা যায় একধরনের শক্তিশালী পেপটাইড, যার নাম অ্যাসপেরিজাইমিসিন (Asperigimycin)। এই পেপটাইডটি দেহকোষের প্রোটিন তৈরির যন্ত্র, অর্থাৎ রাইবোজোমে তৈরি হয়। পরে এটাকে শরীরের ভেতরে বিশেষভাবে পরিবর্তন (মডিফাই) করা হয় যেন এটা আরও সক্রিয় ও কার্যকর হয়। এইভাবে তৈরি হওয়া পেপটাইড শরীরে ঢুকে ক্যান্সার কোষের সঙ্গে যুদ্ধ করে, বিশেষ করে রক্তের ক্যান্সার (লিউকেমিয়া)-এর বিরুদ্ধে।
তবে ব্যাপারটা সহজ না। এই ওষুধ আলাদা করতে গেলে লাগে জটিল এক রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেটাতে লিপিডেশনের মাধ্যমে পেপটাইডের গঠন বদলে ফেলা হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই জটিলতা সত্ত্বেও এর মধ্যে এমন বায়ো-অ্যাকটিভ পাওয়ার আছে যেটা ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। অনেক বিষাক্ত ফাঙ্গাসেই হয়তো লুকিয়ে আছে এরকম ওষুধ তৈরির সম্ভাবনা, যা আমরা এখনো আবিষ্কার করতে পারি নাই।
Tasnimul Islam
Team Science Bee