13/06/2023
আমরা কেন নির্বাচনে গেলাম?
এডভোকেট মনির হোসাইন - Adv Monir Hossain
যাদের রাজনৈতিক নূন্যতম জ্ঞানবিদ্যা আছে তারাও বুঝে আমাদের নির্বাচনে যাওয়া এবং বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাকি দুই সিটির নির্বাচন বর্জন অত্যন্ত চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত। তবু্ও আমাদের কিছু হিংসুটে ভাইরা এমন প্রশ্ন তোলায় স্পষ্ট জবাব দিচ্ছি।
(১) আমরা নির্বাচনে যাওয়ার আগে স্পষ্ট করেই বলেছি এই নির্বাচন স্থানীয় নির্বাচন। আমরা এখানে অংশগ্রহণ করেছি আন্দোলনের অংশ হিসেবেই।এবং আমরা সিইসিকে বলেছি এই অংশগ্রহণ তাদের পরিক্ষা করার অংশ।আমরা স্পষ্ট বলেছি এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে আমরা জাতীয় নির্বাচনে যাবো না।
(২)আমরা নির্বাচনের প্রতিটি সভা,পথসভা সহ সব যায়গায় আওয়ামী লীগের জুলুম,চাঁদাবাজী,সন্ত্রাসী, দুর্নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষকে বার্তা দিয়েছি।তাদেরকে ঐকবদ্ধ করে ভোটের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার আহবান করেছি।যা ছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐকবদ্ধ করা।এটাই আমাদের আন্দোলনের অংশ।
(৩)আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমাদের নেতাকর্মীদের মাঠে ময়দানে প্রশিক্ষণ দিয়েছি,তাদেরকে জনগণের সাথে মিলেমিশে আগামীর দেশ বিনির্মাণ করার বার্তা দিতে বলেছি।আমরা এককভাবে কাউকে গোল দিতে সুযোগ দেইনি।তাদের সামনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উপস্থিত হয়েছি।তাদের ঘুম হারাম করেছি।নিজেদের সামনের আন্দোলন সংগ্রামের জন্য সুসংগঠিত করেছি।যা আমাদের দলীয় নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে আমরা মেরুদণ্ডহীন নই প্রমাণ রাখে।
(৪)আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে নির্লজ্জ সিইসির চেহারা বিশ্ব দরবারে আবারো স্পষ্ট করেছি।আমরা ঘরে বসে না থেকে ভোটচোরদের রুখে দেওয়ার লড়াই করেছি।আমরা রক্ত দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার আদায় করতে জনগণের সাথে থেকেছি।আজ নির্লজ্জ সরকার ও সিইসি বলতে পারবে না যে'তাদের অধীনে কোন সুষ্ঠু ভোট হতে পারে।এই নির্লজ্জ বেহায়া সিইসি সুষ্ঠু দাবি করলেও আমরা বিশ্ব দরবারে তাদের নির্লজ্জ চেহারা প্রকাশ করে দিয়েছি।যা তারা সামনেই হাড়েহাড়ে টের পাবে।ইনশাআল্লাহ।
আমাদের এমন সুশৃঙ্খল সাংগঠনিক পলিসি হওয়ার পরও আপনার এমন প্রশ্ন বিদ্বেষ ছাড়া কিছুই না।
(৫) অথচ! যারা ফেসবুকে হায় হুতাশ করে।ফেসবুকে এসে গরম বক্তব্য দেয়।তাদের সরকারের বিরুদ্ধে ভূমিকা কি?তারা এখনো জনগণকে ঐকবদ্ধ করে এই ফ্যাসিবাদ পতনের কোন রূপরেখা দিয়েছে?নাকি তাদের ঈদ এখনো শেষ হয়নি?নাকি আমরা বুঝে নিবো তারা জনগণের ম্যান্ডেট চায় না।তারা বিদেশী প্রভুদের ইশারায় ক্ষমতায় গিয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে দেশ বিক্রির পায়তারা করছে?তারা নির্বাচন বর্জন করে জনগণের কাছে কোন স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে?জনগণের ঘাড় থেকে এই জগদ্দল পাথর নামানোর কি উদ্যোগ তারা নিয়েছে?উত্তর খুজলে দেখবেন কিছুই না।সুযোগসন্ধানীরা আবারো ইসলামপন্থীদের রক্তের উপর অথবা বিদেশী প্রভুদের মদদ পেয়ে ক্ষমতা যেতে মরিয়া।
(৬) যারা আমাদের এতোদিন দালাল বলেছেন।যারা বলেছেন আমাদের মেয়র এমনিই বানিয়ে দিবে।যারা বলেছেন আমাদের আঁতাত হয়েছে।আজ দলের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় ব্যাক্তির রক্ত ঝরিয়ে প্রমান করতে হয়েছে ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস দালালীর ইতিহাস না।এই ইতিহাস মনে রাখবেন।আমরা কাউকে কটাক্ষ করবো না।উলটো দালাল বলবো না।শুধু রবের দরবারে ফরিয়াদ যারা আমাদের মিথ্যা তোহমত দিয়েছে তাদের কপালে দালালীর মোহর না মেরে দুনিয়া থেকে তাদের নিওনা রব।
(*) সর্বশেষ আকুল আবেদন। আমরা একে অপরকে ঘায়েল করা বন্ধ করি।আমাদের দূরত্ব ওদের ক্ষমতার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করবে।আজ যদি আমরা বাচার জন্য লড়াই করি ঐকবদ্ধ ভাবে কেউ মরবো না।আর যদি বেচে থাকার জন্য বিচ্ছিন্ন হই কেউ বাঁচবো না।
আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিবাদের পতন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাই।