Jafor Ikbal

Jafor Ikbal Education | Soft Skills | Knowledge share | Motivation | Ethics
(1)

আমেনা সুলতানা। রাজবাড়ীর এক প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর থেকে অনার্স শেষ করতেই পরিবার বিয়ে দিয়ে...
22/06/2025

আমেনা সুলতানা। রাজবাড়ীর এক প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে। সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর থেকে অনার্স শেষ করতেই পরিবার বিয়ে দিয়ে দেয় তাকে। স্বপ্ন ছিল আরও পড়ার, পৃথিবী ঘুরে দেখার। কিন্তু বিয়ের পর সংসারের চাকা ঘুরছিল স্বামীর সীমিত আয়ের ছোট চাকরিতে। জীবন চলছিল, কিন্তু স্বপ্ন থেমে ছিল।

“মন চাইত বাইরে পড়তে যাই, নতুন কিছু শিখি, নিজেকে গড়ি। কিন্তু তখন মনে হতো, আমার সাধ্য নেই,”—বলছিলেন আমেনা। একসময় সাহস করে IELTS পরীক্ষা দেন। স্কোর খুব একটা ভালো আসেনি—৫.৫ থেকে ৬-এর মতো। চারপাশের মানুষজন বলেছিল, এই স্কোরে বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু আমেনা থেমে থাকেননি। আরও কয়েকবার চেষ্টা করেছেন। নানা বাধা এসেছে—অপমান, স্বপ্নভঙ্গ, ভিসা রিজেকশন—সবই পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

“আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন ছিল যেদিন USA ভিসার জন্য অনেক কষ্টে জমানো টাকা খরচ করে আবেদন করেও রিজেক্ট হয়েছিলাম। ভিসা অফিসার কিছু জিজ্ঞেসই করেননি। তখন মনে হচ্ছিল, আমি কি পারব না কখনোই?”
তবে এখানেই থেমে যাননি আমেনা। আবার বুক ভরে স্বপ্ন দেখেছেন। যুক্তরাজ্যের একটি রিসার্চ প্রোগ্রামে আবেদন করেন, ইন্টারভিউ দেন এবং অফার লেটার পান। স্বামীকেও পাশে পান। দুজনেই যুক্তরাজ্যের জন্য ভিসা আবেদন করেন। এবার আর হতাশ হতে হয়নি। মাত্র চার দিনের মাথায় ইন্টারভিউ ছাড়াই হাতে পান ভিসা।

“আমি বিশ্বাস করি, কখনো কখনো ভাগ্য দরজা খোলে, কিন্তু তার আগে অনেকগুলো বন্ধ দরজা পেরিয়ে যেতে হয়।” ভিসা পাওয়ার এক সপ্তাহ পরেই স্বামীও পান ভিসা। দুজন একসঙ্গে পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। সেখানে পৌঁছানোর কিছুদিনের মধ্যেই দুজনেই কাজ শুরু করেন, আমেনা পড়াশোনা শুরু করেন।

রাজবাড়ীর এক প্রান্ত থেকে উঠে আসা এই মেয়েটি এখন যুক্তরাজ্যে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, আর তার পাশে রয়েছেন সেই মানুষটি—যার হাত ধরে একদিন সংসার শুরু করেছিলেন

“আমার IELTS স্কোর ভালো ছিল না, আমার ফলাফল কোনো দিক থেকেই অসাধারণ ছিল না। আমি শুধু থেমে যাইনি। যেখানেই একটা দরজা বন্ধ হয়েছে, আমি অন্য দরজা খুঁজে বের করেছি।”
আজও আমেনা মনে করেন, তার যাত্রা কেবল শুরু। সময় লাগবে, কিন্তু তার জায়গা হবে আরও অনেক ওপরে। তার গল্প প্রমাণ করে, সাধ্য আর সুযোগের ব্যবধান সাহস দিয়ে পার হওয়া যায়।
আর এই সাহসী যাত্রায় সবসময় ছায়ার মতো পাশে ছিলেন তার জীবনসঙ্গী—তার স্বামী। আর পুরো স্বপ্নযাত্রায় সহযোগী হিসেবে ছিলো RSZ Education Service Limited.

কপিরাইটঃ পাবলিকিয়ান

19/06/2025

প্রকৌশলী ড্যানি মানু। সায়েন্স ফিকশনকে রূপ দিয়েছেন বাস্তবে!

২০১৬ সালে তিনি এমন একটি ইয়ারবাড তৈরি করেন, যা ৪০টি ভাষায় স্পিচ টু স্পিচ অনুবাদ করতে পারে, তাও ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই!

ধরুন আপনি জাপান বা প্যারিস গেছেন। কানে ড্যানির সেই ইয়ারবাড। সামনে কোনো জাপানি বা ফরাসি ব্যক্তি নিজস্ব ভাষায় কিছু বলছেন। আপনি তা শুনবেন ইংরেজিতে।

শুনতে খুব কমন মনে হলেও এতটা 'রিয়াল টাইম' স্পিচ টু স্পিচ অনুবাদ প্রযুক্তি ইতোপূর্বে দেখা যায়নি।

বেশ কয়েকজন ইনভেস্টরের দ্বারে ঘুরেছেন ড্যানি। সবাই প্রত্যাখান করেন তাঁর স্বপ্নকে। অবশেষে, জনমানুষের কাছ থেকে ক্রাউড-ফান্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। প্রায় ৫০ লাখ মার্কিন ডলার ফান্ড উঠে আসে। সেই অর্থ দিয়েই এই প্রযুক্তি বাজারে আনেন ড্যানি মানু।

কপিরাইটঃ বিজ্ঞানপ্রিয়

17/06/2025

টিস্যু পেপার
আমাদের বাসা বাড়িতে একবার হাত ধোয়ার পরে কয়টা টিস্যু ব্যবহার করি? আবার অফিসে বা রেস্তোরাঁয় কয়টা ব্যবহার করি? আমার চোখে দেখা অনেক মানুষকে দেখেছি দুই জায়গায় আমাদের আচরণ সম্পূর্ণ বিপরীত। এই জন্যই প্রবাদ তৈরি হয়েছে ব্যবহারে বংশের পরিচয় যা যথার্থই। কিন্তু অতি যথার্থ হইতো যদি এমন হতো- মানুষের কর্মই তার আচরণের পরিচায়ক।

16/06/2025

সবার আগে প্রত্যেক জেলা শহরে সর্বাধিক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ও আধুনিক হাসপাতাল বানানো জরুরী। প্রথমতঃ একজন রুগী যেকোন সময় ভর্তি হয়ে আধুনিক চিকিৎসা পেতে পারে। দ্বিতীয়তঃ এর ফলে কমে আসবে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা বেসরকারি ক্লিনিক এর প্রতি নির্ভরশীলতা।

আমার গত ১৫ বছরের সরকারী হাসপাতালে যাতায়াতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে একজন মুমূর্ষু রুগী একটা বেড পাওয়ার কতটা আকুতি, বিনা পয়সায় একটা ট্রলি পাওয়ার আকাংক্ষা, সময়মত নিখুঁত নার্সদের সেবা পাওয়া আর সময় ডাক্তারের নাগাল পাওয়া। সব মিলিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলো দিন দিন মানহীন হয়ে পড়েছে আনুপাতিক হারে। আমাদের দেশের রাস্তা ঘাট, বড় বড় প্রকল্প যেভাবে বর্ধিত হচ্ছে মেডিকেল সেক্টরে চোখে পড়ার মত উন্নয়ন দেখা যায় নাই বিগত বছরগুলোতে।

এখন আধুনিক ও প্রশস্ত হাসপাতাল সময়ের দাবী।

একজন বাবা তার আদরের ছেলে বা মেয়ের নামে যে অনুপাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করে বাংলাদেশের একটা সন্তান ছাড়া কোন সন্তান...
16/06/2025

একজন বাবা তার আদরের ছেলে বা মেয়ের নামে যে অনুপাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করে বাংলাদেশের একটা সন্তান ছাড়া কোন সন্তানকেই দেখিনি তার বাবার নামে কোন প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করতে।

ইহকাল পরকালে সকল বাবা ভাল থাকুক

গ্রামের মানুষ এখনও মেডিকেল ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশ্বাস করে না বা বিশ্বাস করলেও তাদের মধ্যে একধরনের জড়তা রয়েছে।...
14/06/2025

গ্রামের মানুষ এখনও মেডিকেল ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশ্বাস করে না বা বিশ্বাস করলেও তাদের মধ্যে একধরনের জড়তা রয়েছে। জিজ্ঞেস করলে বলে- আমাদের তো কবিরাজের কাছেই বহু আগে থেকে রোগ হয় তাহলে এখন ক্যান ভাল হবে না? আমি নিয়মিত অবাক হয়েছি এধরণের কথায়। কোনভাবেই বুঝাতে পারি না যে তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিল না এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাও অতটা উন্নত ছিল না এখনকার মত। তাই বছর ৩০ বা ৫০ আগে গ্রামের লোকজন শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারত না এবং তখন চিকিৎসা বিজ্ঞানও আধুনিক ছিল না। এখন মানুষ ঘরের কাছেই অন্ততঃ সর্বাধুনিক না হলেও আধুনিক চিকিৎসা নিতে পারছে। সেখানে নাই কোন যাতায়াতের বিড়ম্বনা। কিন্তু তাতেও তাদের আপত্তি।

এবার ঈদে বাড়িতে গিয়ে দেখি এক বাচ্চার হাত ভেঙ্গে গেছে তো আমি, আমার বউ বললাম রাজশাহী মেডিকেল এ নিয়ে যাওয়ার জন্য কিন্তু তারা কবিরাজের কাছেই যাবে। বলার কিছু পেলাম না, বলে মেডিকেল এ গেলে বাচ্চার ১ মাসের বেশি সময় লাগবে আবার কার নাকি ভাল হয় নাই ইত্যাদি। উদাহরণ দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করলাম- কবিরাজের চিকিৎসায় অনেকেই ভাল হয় এটা ঠিক কিন্তু তারা আন্দাজ করে হাড় ভাঙ্গার চিকিৎসা করে থাকে, অনেক সময় দেখা যায় হাড় জোড়া লেগেছে কিন্তু ডিফেক্ট রয়ে গেছে বা বাঁকা হয়ে জোড়া লাগছে ইত্যাদি। কিন্তু মেডিকেল ট্রিটমেন্ট এর ক্ষেত্রে সেটা হওয়ার চাঞ্চ নাই কারণ সেখানে এক্সরে বা এমআরআই করে ট্রিটমেন্ট করা হয়। তাহলে কেন আমরা কবিরাজ এর কাছে এখনো যাচ্ছি। এরপরও যেই লাউ সেই কদু, কে শুনে কার কথা?

তো এই হচ্ছে আমাদের সমাজ ও গ্রামের পরিবারের অবস্থা। প্রত্যেক পরিবারের শিক্ষিত লোকের কতটা অভাব তা এখান থেকেই প্রতীয়মান হয়।

--জফর ইকবাল

14/06/2025

গ্রামের সকালকে খুব মিস করছি

আজ রাজশাহী থেকে ২০কেজি আম কুরিয়ারে এসেছে। রিক্সা ভাড়া চুক্তি করতেছিলাম, বললাম ভাই এই ক্যারেটটা ১ম তলায় উঠায় দিতে হবে কিছ...
13/06/2025

আজ রাজশাহী থেকে ২০কেজি আম কুরিয়ারে এসেছে। রিক্সা ভাড়া চুক্তি করতেছিলাম, বললাম ভাই এই ক্যারেটটা ১ম তলায় উঠায় দিতে হবে কিছু টাকা বাড়ায় দিব। রিক্সাওয়ালা না করলো, আমি বললাম- ওকে আমি ম্যানেজ করে নিব। আসতে আসতে জিজ্ঞেস করলাম, ঘটনা কি বলেন তো? আমি তো আপনাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে চাইলাম আবার আমি আপনার রিক্সা দেখে রাখবো তারপরও আপনি রাজি হলেন না, কেন জানতে পারি? রিক্সাওয়ালা আমারে জিজ্ঞেস করলো, আপনার আমের দাম কত মামা? আমি বললাম ধরেন প্রায় দুই হাজার। তো এবার হিসাব দিতে শুরু করলো। আমার রিক্সার দাম প্রায় ১ লক্ষ টাকা । আমি বললাম- হুম মামা জানি তো, সেই জন্যই আমি আপনার রিক্সা দেখে রাখবো বলেছি। এবার রিক্সাওয়ালা বলে- হুম মামা, ধরেন আমি আপনার আম ১ তলায় উঠাতে গেলাম নীচে ফিরে এসে দেখলাম আপনি আমার রিক্সা নিয়ে হাওয়া, আপনি যে ফ্ল্যাটে আম নিবেন সেটা যে আপনার ফ্ল্যাট সেটা আমি কিভাবে বিশ্বাস করি বলেন?

আরো গভীরে বুঝতে চেষ্টা করলাম। মামা খুলে বলেন। শুনেন মামা- এভাবে আমার এক পরিচিত রিক্সাওয়ালাকে চুক্তি করে ২৫ কেজি চালের বস্তা নিয়ে ২য় তলায় উঠার কথা বলে এবং নীচে তার রিক্সা দেখে রাখবে বলে রিক্সার ভারা চুক্তি করে। এরপর চালের বস্তা ২য় তলায় উঠায় দিয়ে ফিরে এসে দেখে তার রিক্সা নাই ঐ লোকও নাই । এরপর ঐ ফ্ল্যাটের লোকজনকে বলে এই চালের বস্তাওয়ালা আমার রিক্সা নিয়ে পালায়ছে, ওরে ডাকেন। এরপর ঐ ফ্ল্যাটের লোক বলে আমরা তো কোন চালের বস্তা কাউরে নিয়ে আসতে বলি নাই, আমাদের ফ্ল্যাটের কেউ চালের বস্তাও অর্ডার করে নাই, আপনি ভুল করছেন কোথাও।

এই হচ্ছে ঘটনা মামা। চালের দাম ছিল হয় বড়জোর ১৬০০ টাকা কিন্তু রিক্সার দাম কত এবার আপনিই বলেন? এরপর থাইক্কা আর কারো এমন উপকার করি না মামা, আপনি কিছু মনে কইরেন না।

ঘটনা শুনে আমি নিয়মিত অবাক হলাম। মানুষ চুরি করার জন্য তার মেধাকে কতভাবে এপ্লাই করতে পারে? এই মেধাগুলো যদি আমরা ভাল কাজে ব্যবহার করতাম তাইলে আমাদের দেশ, সমাজ, অর্থনীতি কত বড় হইতো। ভাববার বিষয়।

গল্পটা থেকে অনেক শেখার আছে তাই শেয়ার করলাম।

--জাফর ইক্‌বাল

24/05/2025

অপরিকল্পিত নগরায়নঃ ঢাকার জনজীবনের জন্য অশনি সংকেত

ঢাকা, বাংলাদেশের প্রাণকেন্দ্র ও রাজধানী। মাত্র ৩০০ বর্গকিলোমিটারের এই ছোট্ট শহরে এখন প্রায় ৩ কোটির বেশি মানুষের বসবাস। দ্রুত নগরায়নের ফলে এই শহর দিনকে দিন একটি অসুস্থ, ভারসাম্যহীন ও জনদুর্ভোগপূর্ণ শহরে রূপ নিচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত আবাসন ব্যবস্থা।

বর্তমানে ঢাকায় আবাসনের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে অনেকেই নির্মাণ নীতিমালার তোয়াক্কা না করে যত্রতত্রভাবে ভবন নির্মাণ করছে। একটি ভবন আরেকটির এত কাছাকাছি তৈরি হয় যে, তাতে সূর্যের আলো ও প্রাকৃতিক বাতাস প্রবেশের ন্যূনতম সুযোগও থাকে না। অনেক জায়গায় দেখা যায়, জানালা খুললেও পাশের দালানের দেওয়াল ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি, মানসিক চাপ ও শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহ-
• আলো-বাতাসের অভাবঃ প্রাকৃতিক আলো-বাতাস না থাকায় ঘরে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ তৈরি হয়, যা শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ ও ছত্রাক সংক্রমণের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ায়।
• অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিঃ ভবনের মধ্যে প্রয়োজনীয় দূরত্ব না থাকায় একটিতে আগুন লাগলে অন্যটিতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
• জলাবদ্ধতা ও ড্রেনেজ সমস্যাঃ অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেয়, ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
• মানসিক অস্বস্তিঃ সীমিত স্থান, কোলাহল, গরম এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে দীর্ঘদিন বসবাস করলে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

একটি শহর তখনই বাসযোগ্য হয় যখন সেটি পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যকর এবং নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়। ঢাকা শহরে এ পরিস্থিতি তৈরি করতে হলে পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন-
• ভবন নির্মাণের আগে যথাযথ অনুমোদন ও নকশা যাচাই
• ভবনের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা
• জলাধার ও খোলা জায়গা সংরক্ষণ
• নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি
• সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর তদারকি

অপরিকল্পিত নগরায়ন ঢাকার ভবিষ্যৎকে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটি শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য নয়, দেশের অর্থনীতির জন্যও বিরাট হুমকি। এখনই সময় পরিকল্পিত নগর উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার। শহর নয়, গড়তে হবে বাসযোগ্য জীবনযাপন। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই ঢাকা পায়— সেই চেষ্টায় সকলের এগিয়ে আসা উচিত।

--জাফর ইক্‌বাল
তাংঃ ২৪০৫২০২৫

23/05/2025

বাংলাদেশের মানুষের যৌগিক মনোভাব ও আচরণগত উন্নয়নে উপযুক্ত শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে একটি যৌগিক জাতি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই যৌগিকতা মূলত সাংস্কৃতিক, ভাষাগত, ধর্মীয় ও আঞ্চলিক বৈচিত্র্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতির বহিঃপ্রকাশ। ফলে এদেশের মানুষের মনোভাব, আচরণ, জীবনধারা, মূল্যবোধ এবং সামাজিক চাহিদাগুলোতে একটি সম্মিলিত বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়। এই জাতির ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনায়, বিশেষ করে আচরণগত উন্নয়নে, যুগোপযোগী ও বহুমাত্রিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

যৌগিকতা ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশের মানুষ একদিকে যেমন ধর্মীয় অনুভূতিপ্রবণ, তেমনি আবার সমাজে পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতাও প্রবল। গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এখনও আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ, অপরদিকে শহরাঞ্চলে ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্যবাদের প্রবণতা বাড়ছে। এই বৈপরীত্যই যৌগিকতার পরিচয় দেয়। তবে যৌগিকতা কখনো কখনো দ্বিধাগ্রস্ততা, সিদ্ধান্তহীনতা ও পরস্পরবিরোধী আচরণেরও জন্ম দেয়।
এইরকম মানসিক কাঠামোয় আচরণগত পরিশীলন ও ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের জন্য শিক্ষার একটি সুসংহত রূপ অত্যন্ত জরুরি।

আচরণগত উন্নয়ন একটি জাতির সামাজিক স্থিতিশীলতা, নেতৃত্বের বিকাশ এবং নাগরিক দায়িত্ববোধ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিম্নোক্ত ধরনের শিক্ষার্জন জরুরি-
1. নৈতিক ও মানবিক শিক্ষাঃ শৈশবেই যদি ন্যায়-অন্যায়, দায়িত্ব ও কর্তব্যের মাঝে পার্থক্য শেখানো যায়, তাহলে ভবিষ্যতে একজন সুসংহত চিন্তাধারার নাগরিক তৈরি সম্ভব।
2. দায়িত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতা শিক্ষাঃ আচরণগত উন্নয়নের জন্য দায়িত্ববোধ শিক্ষা হওয়া উচিৎ সমাজকল্যাণভিত্তিক, যা শিশুর চিন্তা ও কর্মে দায়িত্বশীলতা গড়ে তোলে। এই শিক্ষা কর্মমুখী ও বাস্তব জীবনের সমস্যাভিত্তিক চর্চার মাধ্যমে প্রয়োগযোগ্য হওয়া উচিৎ।
3. সমাজমুখী শিক্ষাঃ মানুষের মধ্যে সহনশীলতা, সহযোগিতা ও দলগত মানসিকতা তৈরি করতে হবে। দলগত কাজের চর্চা এবং যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রশিক্ষণ শিক্ষার অংশ হতে হবে।
4. আন্তঃসাংস্কৃতিক শিক্ষাঃ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম, মত ও সংস্কৃতির সহাবস্থান রয়েছে। শিক্ষার মাধ্যমে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতা বাড়ানো গেলে সামগ্রিক জাতিগত ঐক্য আরও দৃঢ় হবে।
5. সৃজনশীল ও বিশ্লেষণমূলক শিক্ষাঃ ছাত্রদের কেবল মুখস্থ বিদ্যা নয়, বরং বিশ্লেষণ, প্রশ্ন করার মানসিকতা এবং নিজস্ব মত প্রকাশের চর্চা করতে দিতে হবে। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

পারিবারিক শিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো কেমন হওয়া উচিৎ? খুব সংক্ষেপে
পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিশুরা প্রথম শেখে পরিবার থেকেই। ফলে পরিবারে নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ব পালন ইত্যাদির চর্চা হলে শিশুর আচরণে তার প্রতিফলন পড়ে। প্রতিটি অভিভাবককে “আচরণের শিক্ষক” হিসেবে বিবেচনা করা উচিৎ। পরিবারের প্রত্যেকটি কাজে শিশুদের অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করা যাতে যেকোন কাজ দায়িত্বের সাথে সম্পূর্ণ করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। নিজের কাজ নিজে করা, কাজ নির্দৃষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার অভ্যাস গড়ে তোলা, দায়িত্বের কাজের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক থেকে বিরত রাখার মত মনোভাব তৈরি করা ইত্যাদি বিষয়গুলো পারিবারিক শিক্ষার মূল বিষয় হওয়া অত্যান্ত জরুরী।

প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো
• পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষার চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে
• শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা, নেতৃত্ব, শ্রেণিকক্ষে শৃঙ্খলা রক্ষা প্রভৃতি চর্চা যেতে পারে

বাংলাদেশের জনগণের এই যৌগিক বৈশিষ্ট্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট, যুগোপযোগী ও আচরণভিত্তিক শিক্ষার। পরিবার থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও যৌথ চেতনার শিক্ষা নিশ্চিত করলেই ভবিষ্যতে একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ, দায়িত্বশীল ও উন্নয়নমুখী জাতি গড়ে তোলা সম্ভব।

--জাফর ইক্‌বাল
তাংঃ ২৩০৫২০২৫

গাছ কাটা ও বন উজাড়: বাংলাদেশের পরিবেশ ও ভবিষ্যতের জন্য এক অশনিসংকেতবাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই দেশে প্রতি বর্গকিলো...
22/05/2025

গাছ কাটা ও বন উজাড়: বাংলাদেশের পরিবেশ ও ভবিষ্যতের জন্য এক অশনিসংকেত

বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এই দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে গড়ে প্রায় ১,২০০ জন মানুষ, যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উচ্চ। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আমাদের দেশের মানুষ যতটা সৌখিন, ততটা পরিবেশ সচেতন নয়। উন্নয়নের নামে গাছ কেটে রাস্তা নির্মাণ, বনভূমি দখল, বাড়িঘর নির্মাণে গাছের ব্যবহার, এমনকি আসবাবপত্র তৈরিতে সৌখিনতার বশে অতি মাত্রায় গাছ কাটার প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এর ফলে আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। গাছপালা বাষ্পীভবনের মাধ্যমে বাতাসে জলীয় বাষ্প ছাড়ে, যা বৃষ্টিপাতের জন্য মেঘ গঠনে সহায়তা করে। বনভূমি মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে, যা বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের উৎস হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও গাছপালা বায়ুপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে মেঘ বেশি সময় একটি এলাকায় অবস্থান করে ও বৃষ্টিপাত ঘটে। অধিক পরিমাণে গাছ নিধনের ফলে বৃষ্টিপাতের উপরে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে । যার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির উচ্চতাও ক্রমশ বাড়ছে। সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়া ও ভূগর্ভস্থ পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়া একটি অঞ্চলকে মরুভূমিতে পরিনত করতে পারে। এতে কৃষিখাত ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

গাছ নিধনের প্রভাবঃ
• গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে। গাছ কাটার ফলে কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের আশঙ্কা বাড়ে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও প্রকট হয়।
• বনাঞ্চল উজাড় হলে মাটির ধারণক্ষমতা কমে যায়, ফলে ভারী বৃষ্টিপাতের সময় ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়, যা প্রতি বছর পার্বত্য ও উত্তরাঞ্চলে দেখা যায়।
• বাংলাদেশের বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী তাদের আবাস হারাচ্ছে। বন উজাড়ের ফলে হাতি, হরিণ, বনবিড়ালসহ বহু প্রাণী বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
• গাছ কাটার ফলে ধূলিকণা ও তাপমাত্রা বেড়ে যায়, যা শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, এবং চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ায়। এছাড়া কৃষিজমি নষ্ট হওয়ায় খাদ্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

প্রতিরোধে করণীয়ঃ
• বিদ্যমান বন আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। অবৈধ গাছ কাটার বিরুদ্ধে জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• দুই এর অধিক গাছ কর্তনের জন্য স্থানীয় সরকার বা উপজেলা কার্যলয় থেকে অনুমতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। বানিজ্যিকভাবে গাছ, কাঠ বা গাছের সামগ্রী কেনা বেচার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করতে হবে।
• উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের সময় পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং বিকল্প পন্থা অনুসন্ধান করতে হবে।
• সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত করে একটি পরিবেশবান্ধব প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে।
• গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে মানুষকে গাছের গুরুত্ব বোঝাতে হবে। “একজন মানুষ, একটি গাছ” ধরনের সামাজিক উদ্যোগ চালু করা যেতে পারে।
• ফার্নিচার ও অন্যান্য কাজে কাঠের বিকল্প পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।

আমাদের বুঝতে হবে, উন্নয়ন মানেই শুধু রাস্তা, ভবন বা ফ্লাইওভার নয়; প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব। আজ যদি আমরা গাছ কাটাকে লাগাম না দিই, তাহলে আগামী প্রজন্মকে একটি বসবাসযোগ্য বাংলাদেশ দিয়ে যেতে পারবো না। পরিবেশ রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ না নিলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

ছবিঃ ইন্টারনেট

--জাফর ইক্‌বাল
তাংঃ ২২০৫২০২৫

পৃথিবী কতটা খালি পড়ে আছে দেখেন, গোটা নীল অংশে যতটা জনসংখ্যা আছে তার চেয়ে বেশি মানুষ বাস করে লাল অংশে।তথ্যঃ মানচিত্রের রহ...
21/05/2025

পৃথিবী কতটা খালি পড়ে আছে দেখেন, গোটা নীল অংশে যতটা জনসংখ্যা আছে তার চেয়ে বেশি মানুষ বাস করে লাল অংশে।

তথ্যঃ মানচিত্রের রহস্য

Address

Shahzadpur

Telephone

+8801833181416

Website

https://www.youtube.com/channel/UCexsK0yZPIVdvhHUVH7fO_w

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Jafor Ikbal posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Jafor Ikbal:

Share