
16/06/2025
ওযীফাতুল মুমিন কিতাবটি সম্পর্কে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক (দামাত বারাকাতুহুম) সাহেব-এর অভিমত-
মাওলানা আবরারুয যামান ইবনে হযরত পাহাড়পুরী রহ. এর কিতাব 'ওযীফাতুল মুমিন' দেখে খুশি হলাম। এ কিতাব পাঠ করার দ্বারা সমাজে প্রচলিত ওযীফা সংক্রান্ত কিছু ভুল ধারণার সংশোধন হতে থাকবে ইনশাআল্লাহু তাআলা। যেমন,
এক: ওযীফাকে শুধু নফলের মাঝে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া।
অথচ সবচে বড় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওযীফা তো হল ফরয আমলগুলো আদায় করা এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। দ্বীনের সকল শাখায় যেসব ফরয আমল বান্দার ওপর আরোপ করা হয়েছে, সময়মতো সেগুলো পালন করা, এ হল ফরয ওযীফা। যা গুরুত্বের সাথে পালন করা সবার ওপর ফরয।
দুই: ওযীফাকে দুআ ও যিকিরের মাঝে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া।
অথচ সকাল-সন্ধ্যার মাসনূন ও দুআ যিকিরের মতো সকাল সন্ধ্যার নফল নামাযও ওযীফার অন্তর্ভুক্ত। ইশরাক, চাশত, আওয়াবীন, তাহাজ্জুদ মুমিনের ওযীফার অন্তর্ভুক্ত। একইভাবে নফল রোযাও ওযীফার অন্তর্ভুক্ত। যেমন সোমবার, বৃহস্পতিবারের রোযা, আইয়ামে বীয, আশূরা ও আরাফার দিনের রোযাসহ আরও কিছু নফল রোযাও নফল ওযীফার অন্তর্ভুক্ত।
তিন: গায়রে মাসূর ও গায়রে মাসনূন ওযীফা ও আমলকে মাসূর ও মাসনূন ওযীফা ও আমল থেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা।
এও একটি ভুল কর্মপদ্ধতি। 'ওযীফাতুল মুমিন' এর সংকলনই এ উদ্দেশ্যে হয়েছে যে, মানুষ যেন মাসূর ও মাসনূন দুআ ও আমলকে প্রাধান্য দেয়। এর নূর ও বারাকাতে তার জীবন নূরানী ও বরকতময় হয়ে যায়।
চার: ওযীফা সংক্রান্ত 'মুনকার' ও 'মাউযূ' বর্ণনা মানুষের মাঝে প্রচার করা।
পাঁচ: ওযীফার শব্দসমূহের সঠিক উচ্চারণ শেখার বিষয়ে উদাসীনতা প্রদর্শন।
কিতাবটিতে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন এবং এর উসলূব ও আন্দায এমন হয়েছে, যেন তা از دل خيزد بر دل ريزد (আয দিল খেযাদ বার দিল রেযাদ) এর একটি উদাহরণ। হৃদয়ের গভীর থেকে নির্গত কথা হৃদয়কে স্পর্শ করে। এ কিতাবের মাধ্যমে ওযীফা আদায় করা হলে আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ হৃদয়ের উপস্থিতি, চিন্তাভাবনা, আল্লাহমুখিতা ও একাগ্রতার সাথে ওযীফা আদায় সম্ভব হবে।