20/02/2025
আল্লাহ সুবহান'আল্লাহ কুরআন এ পুরুষদের মিলিয়েছেন পাহাড় বা পর্বতের এর সাথে। এবং নারীদের মিলিয়েছেন পানির সাথে।
⛰️ পাহাড় অনেক শক্ত হয়, নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে না। আল্লাহ পৃথিবীতে পাহাড় সৃষ্টি করেছেন স্থিতি রক্ষা করার জন্যে। পুরুষকে আল্লাহ ইমাম ঘোষণা করেছেন। তাদের চিন্তাভাবনা খুবই গঠনমূলক। নিজেদের উন্নত চরিত্রের অধিকারী করা, সেই সাথে পরিবার ও সমাজ গঠন করা তাদেরই দায়িত্ব। তাদের উপর দায়িত্ব রেখেছে, মাহরাম সকল নারীর মানসিক এবং শারীরিক সুরক্ষার। পারিবারিক সমতা রক্ষা করা। সম্পর্কের সীমানা নির্ধারণ করা।
🌿 পিতা মাতা হিসেবে আজ যে ছেলে বাচ্চাকে আমরা কিছুই করতে দিই না, এই বলে যে সব ধরনের ঘরের কাজ মেয়েদের। যে নিজের হাতে এক গ্লাস পানি খেতে পারে না, নিজের খুদা, ভালোলাগা, ইচ্ছা, অনুভূতি কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আমরা নির্দ্ধিধায় বলে যাই, আমার ছেলেটা এখনো ছোট, কিছুই পারে না। তার মধ্যে কনফিডেন্স এর অভাব।
এইভাবে কি ইমাম তৈরি করা যায় !? যাকে আল্লাহ পাহাড়ের সাথে মিলিয়েছেন, সে কি হঠাৎ করেই দায়িত্ববান হয়ে যাবে? তার চিন্তাভাবনা কি সহজেই বদলে যাবে?
🌿 যে ছেলে বাচ্চাকে আজ আমরা সঠিকভাবে গড়তে পারছি না। পরিণত বয়সে যখন সে তার নিজের পরিবারের দায়িত্ব নেবার মত যোগ্য হচ্ছে না, সন্তান ও স্ত্রীর সার্বিক দায়িত্ব নিতে জানবে না, এর দায় তো আমাদের উপরও বর্তায়।
🏖️ অপরদিকে মেয়েদের আল্লাহ পানির সাথে মিলিয়েছেন। পানির কনাগুলো বিক্ষিপ্ত, মেয়েদের চিন্তা ভাবনাও বিক্ষিপ্ত। সেই সাথে পানির ধারণ ক্ষমতাও অনেক। পুরো অন্য এক জগৎ পানির নিচে, যার নিয়ন্ত্রণ মানুষের ক্ষমতার বাইরে।
ইমোশনালি শক্তিশালী করে তুলতে পারলে এই বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনা নিজের আয়ত্তে আনতে সক্ষম হবে। মেয়েরা ইচ্ছে করলে নিজের মধ্যে অনেককিছুই ধারণ করে নিতে পারে। এবং এর মাধ্যমে সে নিজেকে উর্বর করে নিতে পারে।
ধৈর্য একটি মহৎ গুণ। নারী পুরুষ সবার জন্যেই। তবে নারীরা একে ধারণ করতে পারে পুরুষের চেয়ে বেশি। মেনে নেয়া এবং মানিয়ে নেবার প্রবণতা মেয়েদের বেশি।
বুঝায় যায়, নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা কখনও হয় না। দুজনের ভুমিকা দুই জায়গায়। কিন্তু আমরা যদি সমতা বিধানে চলতে চাই, আমরা তখন নিজের অস্তিত্বের বিপরীতে চলতে থাকি। যা আমাদের জন্যই ফলপ্রসূ হয় না।
🌿 পাহাড়ের গা ঘেঁষে যখন পানি সমধারায় প্রবাহিত হয়, তখন পাহাড়ের কিছু ক্ষয় হয়, কিন্তু তা মসৃণ হয়। কর্কট পূর্ণ নয়। পুরুষের জীবনেও এই পরিবর্তন হয়, যখন সে এমন নারীর সান্নিধ্য পায়।
কিন্তু আমরা অন্যের মেয়ের উপর অনেক দায়িত্ব দিয়ে থাকি। আমাদের হাতে বিগড়ে যাওয়া আমাদের সন্তান সে শুধরে নিবে। যেখানে আমাদের নিজের দায়িত্ব রয়েছে।
🌿 অন্য পরিবার থেকে সংসার করতে যে মেয়েটি আসবে, সে মেয়েটিও একটি ইমাম চাইবে তার পরিবারের জন্যে। তাকে যদি সেই ইমাম বানিয়ে নিতে হয়, তবে নিজের সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে তার অনেক বেগ পেতে হয়।
পুরুষ পরিবারের অনুশাসন, সীমানা নির্ধারণ করে দিবে। এবং নারী তাঁর সেই অনুশাসনে সন্তান গড়ে তুলবে।
আমার বাবা আমার দাদীর হাতে গড়া,আমার ভাই আমার মায়ের হাতে গড়া, আমার স্বামী আমার শাশুড়ির হাতে গড়া, আমার শ্বশুড় তার মায়ের হাতে গড়া। কিন্তু আমার ছেলে তো আমার হাতে গড়া।
আমিও কেন আহত হয়ে, শুধুমাত্র আমার জন্যেই ছেলে গড়ে তুলবো? আমার তো সেই ইমাম গড়ে তোলা উচিত যে সব মাহরাম নারীদের সর্বোপরি সুরক্ষা দিবে। পরিবার ও সমাজ গঠনে দায়িত্ব নিবে।
আমাদের চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন এবং ছেলে গঠনে মনোযোগী হওয়া আমাদের অবস্থার পরিবর্তন করবে। বাস্তবে, ছেলে সন্তান গড়ে তোলা বেশ কঠিন।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন।
©️ Saima Sharmin