11/05/2025
কেন বেশিরভাগ যুবকের পক্ষে পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুন ছেড়ে দেওয়া অসম্ভব?
আপনার প্রস্রাব করার ইচ্ছা জাগলে, কতক্ষণ আপনি প্রস্রাব আটকে রাখতে পারবেন? অথবা আপনার যদি ক্ষুধা লাগে, খাবার না খেয়ে কতক্ষণ থাকতে পারবেন?
যদি কারো প্রস্রাব করার ইচ্ছা জাগে কিন্তু সে যদি জোর করে প্রস্রাব আটকে রাখে, তবে তার প্রস্রাবের চাপ আরো বাড়তে থাকবে। ফলে এক পর্যায়ে তাকে বাধ্য হয়ে প্রস্রাব করতে হবে।
তেমনি কারো দেহে যদি যৌন চাহিদা সৃষ্টি হয় কিন্তু সে যদি জোর করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে, তবে পরবর্তীতে তার যৌন চাহিদা আরো বাড়তে থাকে। ফলে একপর্যায়ে তাকে যৌন চাহিদা পূরণ করতে হয়।
আবার, কারো ক্ষুধা লাগলে যদি খাবার না থাকে এবং খাদ্য উপার্জনের হালাল পথ না থাকে, তাহলে সে যেমন বাধ্য হয়েই চুরি, ছিনতাই অথবা ডাকাতি যেভাবেই হোক হারাম পথে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করে। খাবার সংগ্রহ করতে না পারলে ঘাস-পাতা খেয়ে হলেও ক্ষুধা মেটানোর চেষ্টা করে, দুর্ভিক্ষের সময় যেমনটা দেখা যায়।
তেমনি মানুষ যদি হালাল পথে যৌন চাহিদা পূরণের সুযোগ না পায়, তাহলে বাধ্য বেশিরভাগ মানুষ যৌন ক্ষুধা মেটানোর জন্য জন্য হারাম পথে যাবে।
বর্তমানে বিয়ে করা খুবই কঠিন। যার কারণে বর্তমান সময়ের অবিবাহিত বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে পর্নোগ্রাফি,হস্তমৈথুন অথবা ব্যভিচারের মাধ্যমে হারাম পথে তাদের যৌন চাহিদা পূরণ করছে।
ধর্ম প্রচারকগণ যুব সমাজকে পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর দিক, শাস্তি সম্পর্কে বুঝাচ্ছে। এসব জেনেও বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে হারাম পথ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না?
যতই এসবের ক্ষতিকর দিক ও শাস্তি সম্পর্কে বুঝানো হোক না কেন, বেশিরভাগ ছেলে মেয়ের পক্ষে হারাম পথ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব না।
কারণ মানুষের প্রস্রাবের চাপ বৃদ্ধি পেলে নিয়ন্ত্রণ করতে যখন প্রচন্ড কষ্ট হয়, তখন মানুষ বাধ্য হয়েই প্রস্রাব করে । আবার, খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য হালাল পথ না পেলে মানুষ যেমন বাধ্য হয়েই হারাম পথে খাদ্যের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে,
তেমনি যৌবন কালে মানুষের দেহে যৌন উত্তেজক হরমোন বেশি পরিমাণে থাকায় বারবার দেহে উত্তেজনা তৈরি হয়, যার ফলে যৌবনকালে যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রচন্ড কষ্ট হয়। যেহেতু যৌবন কালেই বেশিরভাগ ছেলে মেয়েকে বিবাহ থেকে দূরে রাখা হয়, তাই তারা হারাম পথে যায় ।
অর্থাৎ জোর করে যৌন চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা বেশিরভাগ মানুষের জন্যই কঠিন।
বেশিরভাগ অবিবাহিত যুবক কিছুদিন যৌন চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও, কয়েকদিন পর নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আবার হারাম পথে যায় ।
বর্তমান ফিতনার যুগে হারাম থেকে বাঁচার একমাত্র সমাধানে বিবাহ।
ধর্ম প্রচারক গণ যতই পর্নোগ্রাফি ও হস্তমৈথুনের ক্ষতিকর দিক, শাস্তি সম্পর্কে আলোচনা করুক না কেন, বিবাহ ছাড়া যুব সমাজের বেশিরভাগ ছেলে মেয়েকে হারাম থেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না।
হাদিসে বিবাহকে বলা হয়েছে দ্বীনের অর্ধেক। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামে বিবাহ যতটা গুরুত্বপূর্ণ, বর্তমান সময়ে বিবাহ প্রায় ততটাই কঠিন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে, ভবিষ্যতে বিবাহ আরও কঠিন হয়ে যাবে ।
আমাদের মনে রাখতে হবে "যে সমাজে বিবাহ যতটা কঠিন সে সমাজে ব্যভিচার ততটাই সহজ ".
বর্তমান সময়ে বিয়েকে কেন এত কঠিন করা হয়েছে?
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সামান্য একটা লোহার আংটির বিনিময়ে এক সাহাবীর বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন ।
কিন্তু বর্তমানে বিবাহ করতে গেলে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। যেমন: বিশাল আলোকসজ্জা, প্রচুর খাবারের আয়োজন, হাজার হাজার মানুষকে দাওয়াত দেওয়া ইত্যাদি। বিবাহ সম্পর্কিত মানুষের বানানো এসব অনর্থক নিয়ম নীতি বিবাহ কঠিন হওয়ার একটি কারণ।
বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে মেয়েদেরকে বেশিরভাগ অনর্থক এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় শেখানো হয়, সেগুলো বাস্তব জীবনে তাদের কোন কাজে লাগে না।
নাস্তিকরা এই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করে, শিক্ষা গ্রহণের সময়কাল বৃদ্ধি করে ছেলে-মেয়েদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময়কাল বৃদ্ধি করেছে। মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অর্ধেক সময় এসব অনর্থক এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয় শিখতেই চলে যায় । এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিবাহ করতে প্রায় সবারই বযস ৩০ বছর পার হয়ে যায়।
অথচ 18 থেকে 30 বছর বয়সেই মানুষের যৌন চাহিদা সর্বাধিক থাকে ।
নাস্তিকদের প্রধান উদ্দেশ্য যুব সমাজের চরিত্র ধ্বংস করা, তাদের উদ্দেশ্য পূরণের একটা মাধ্যম হল শিক্ষা ব্যবস্থা। বর্তমানে নাস্তিকদের উদ্দেশ্য অনেকটাই পূরণ হয়েছে।
যার কারণে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে হারাম সম্পর্ক, পর্নোগ্রাফি , হস্তমৈথুন এবং ব্যভিচারের মাধ্যমে নিজেদের যৌন চাহিদা পূরণ করছে।
এসব হারাম থেকে বাঁচার একমাত্র সমাধান বিবাহ।
পিতা মাতার উচিত তাদের সন্তানকে দ্রুত বিয়ে করানো। যদিও নাস্তিকরা বর্তমান সমাজে বাস্তবতা খুব কঠিন করেছে। তবুও পিতা মাতার চেষ্টা করা উচিত।
পিতা মাতার উচিত, ইসলামিক নিয়ম মেনে সাধারণভাবে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করা।
এই বিয়ের ব্যবস্থা সংসার করার জন্য অথবা সন্তান জন্মদানের জন্য নয় । এই বিবাহের প্রধান কারণ:
তারা যেন অশ্লীলতা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারে । ছেলে ছেলের বাড়িতে থেকে এবং মেয়ে মেয়ের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করুক। তারা গল্প করুক অথবা ঘোরাঘুরি করুক কিন্তু সেটা যেন হয় হালাল ভাবে, এজন্য বিয়ের ব্যবস্থা করা উচিত । পরবর্তীতে উপযুক্ত সময়ে তারা না হয় সংসার করা শুরু করবে।
পিতা মাতা যদি উপযুক্ত বয়সে সন্তানের বিয়ের ব্যবস্থা না করেন । তবে সন্তানরা জেনা - ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়বে । যার ফলে অনেক পিতা মাতাকে তাদের সন্তানদের গুনাহের কারণে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে ।
©️Copypost