23/09/2024
গর্বের সেনাবাহিনী?
গতকালের ছোট্ট একটি ঘটনা বলি।
সেনাসদস্যের বয়ানে ওঠে আসা এক করুণ বাস্তবতা!
'আমাদের ক্যাম্প থেকে গতকাল দুপুর ২:০০ ঘটিকায়
একটি টহল বের হয়েছিল। আমিও সেই টহলের সাথী ছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই কোন টহল যখন বাইরে যায় তিন থেকে চার ঘন্টা তারা বাহিরে অবস্থান করে। সেই প্রেক্ষিতে আমরাও বেশ কিছু সময় অবস্থান করি। এহেন অবস্থায় আসরের নামাজের সময় হয়। আমরা আমাদের কমান্ডারকে নামাজের কথা বললে তিনি প্রথমে একটু মন খারাপ করেন। নারাজ হোন। তারপর পাঁচ মিনিট সময় বেঁধে দেন আসরের নামাজ আদায় করতে! আমরা নামাজ পড়ে আসলে পরবর্তীতেও কার্যক্রম চলমান থাকে।
এখানে উল্লেখ্য যে, গত কালকের কার্যক্রম ছিল এমন... আমাদের হিন্দু ভাইদের প্রত্যেকটা মন্দিরে গিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যাপারে সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের আশ্বস্ত করা। সেই সুবাদে প্রায় বারোটা মন্দিরে আমরা গিয়েছি। ইতোমধ্যে যখন মাগরিবের নামাজের সময় হয়ে যায় তখন আমরা আমাদের স্যারকে মাগরিবের নামাজের জন্য আবারো অনুরোধ করি। এবং একটু সময় দিতে বলি। এখানেই মূল ঘটনার শুরু। তিনি বলেন; 'এখন কোনো নামাজের দরকার নাই। ক্যাম্পে গিয়ে কাযা পড়ে নেবে।' আমরা বললাম, স্যার কাযা পড়ার কোন অপশন নাই।
দেশে এমন কোনো যুদ্ধ বাঁধে নাই যার কারণে নামাজ কাজা পড়তে হবে। তার উত্তরে তিনি আমাদেরকে বলেন; 'তোমরা কি সব হাজী সাহেব হয়ে গেছো নাকি?' যাই হোক অনেক অনুনয় বিনুনয় করার পরেও তিনি আমাদেরকে মাগরিবের নামাজের সময় দিলেন না। আমরা গাড়িতে বসেই পড়ে নিলাম। রাস্তায় আসার সময় তিনি খুব রাগান্বিত অবস্থায় ছিলেন। ক্যাম্পের কাছাকাছি যখন এসে পড়েছি তখন একজন সাধারণ মানুষ সাইকেল নিয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলেন। দেখতে একদমই সাধারণ মানুষ।
স্যার লোকটাকে কলারে ধরে উরাধুরা থাপ্পর শুরু করলেন। সে লোক বারবার বলছেন যে, আমারে মাফ করে দেন। যদিও সে কোন অন্যায় করে নাই। তবু মাফ চাচ্ছে। তদুপরি মাফ তো সে পায়ই'নি। উল্টো পেল কিছু থাপ্পড় আর লাত্থি।
আচ্ছা এবার আপনারাই বলুন তো, এই দেশে ফোনে কথা বলতে বলতে পথচলা কি কোন অপরাধ? আমি বিরোধিতা করি। কিন্তু আমাকে চুপ থাকতে বলা হলো। এক পর্যায়ে বলেই ফেললাম, যে কয়টা থাপ্পড় এই লোকটাকে দেওয়া হয়েছে/যে না যারা দিয়েছে প্রত্যেকটা আঘাতের হিসাব ক্বেয়ামতের ময়দানে তাঁদের থেকে নেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
তখন দেখা যাবে কার পাওয়ার কতো। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় যখন ক্যাম্পে প্রবেশ করলাম, একজন সার্জেন্ট আমাদেরকে বলছিলেন যে, ডিউটি টাইমে কোন নামাজ হবে না। সিনিয়র যা বলবে শুধু তা'ই মানবে। সিনিয়রের কথা মানা তোমাদের জন্য ফরয।
হ্যা ভাই এইভাবেই বলছে। আমার তো মাথায় রক্ত উঠে গেছে। নিজেকে খুব কষ্টে কন্ট্রোল করলাম। এইভাবে আর কতো?
সাইফুল ইসলাম ©️©️©️