BD WAVE

BD WAVE 'BD WAVE' বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

 #৪৯৪০"আচ্ছা সাজাল ভাই, পাকিস্তান আউর বাংলাদেশ আলাগ কিউ হুয়া?? হামারা লোগ তো বাংলাদেশ কো বহুত আচ্ছে জানতে আউর আপ লোগও তো...
08/05/2025

#৪৯৪০

"আচ্ছা সাজাল ভাই, পাকিস্তান আউর বাংলাদেশ আলাগ কিউ হুয়া?? হামারা লোগ তো বাংলাদেশ কো বহুত আচ্ছে জানতে আউর আপ লোগও তো পাকিস্তান সে সাথ কোই দুশমানী নাহি কিয়ে। তো হাম আলাগ হুই থি ক্যায়সে?? ইন্ডিয়া বাংলাদেশ কো পাকিস্তান সে কাব্জা কার লিয়া??"

বালতিত ফোর্ট থেকে নামছিলাম, আমার গাইড এহসান প্রশ্ন করলো।

এহসান পাকিস্তানের জেন যির অংশ, বয়স মাত্র তেইশ। পাকিস্তানী ছেলেরা জলদি জলদি বিয়ে করে ফেলে, সেও করেছে, মাত্র বিশ বছর বয়সে সে বিয়ে করে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব-ইসলামাবাদ-সিন্ধুতে প্রায় ৮০% বিয়েই হয় প্রেম করে, এহসানেরও তাই, ওর "বেগাম" ওর চেয়ে তিন বছরের ছোট। এখানে পচিশ পেরোনোর আগেই বেশিরভাগ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়, আর খাইবার প্রদেশ-গিলগিত বালতিস্তানে অধিকাংশ মেয়েদের বিয়ে হয় পনেরো থেকে বিশের মধ্যেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওখানেও বেশিরভাগ প্রেমের বিয়েই, গিলগিত বালতিস্তানে তো প্রায় ৯০% প্রেমের বিয়ে বলে এখানকার লোকজন মনে করে। যেহেতু পাকিস্তানী ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিনেইজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিয়ে করে, তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নিজেদের প্রথম প্রেমকেই বিয়েতে রুপ দিতে পারে। আমার কাছে এটা একটা ইম্পর্ট্যান্ট ব্যাপার, প্রথম প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার যে মেন্টাল ট্রমা, এইটা একটা মানুষকে ম্যাচিউর হতে সাহায্য করে এইটা যেমন ঠিক, আবার জীবনের একটা অন্য মাত্রার অনন্য সুখ থেকেও তাকে বঞ্চিত করে।

এহসান খুবই ভাল ড্রাইভ করে, পপুলার ট্যুরিস্ট স্পট থেকে অফ বিট স্পট সবই তার চেনা৷ কিন্তু আর দশজন জেন যির মত তারও একটা সমস্যা, সে রাজনীতি বোঝে না আর ইতিহাসের তো কিছুই জানে না। এজন্যই সে আমাকে প্রশ্নটা এভাবে করলো।

যাদের বয়স পচিশের কম, এদের পলিটিক্যাল এজুকেশান নিয়ে আমার অন্তত ১২ বছরের কাজ আছে। বাংলাদেশে থাকতে উর্দু বুঝতাম না, এখানে কয়েকদিন থেকেই বুঝতে তো পারি, খানিকটা বলাও শিখে গেছি।

তো এই জেনযি গাইডকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, এহসান, ডু ইউ নৌ ওয়াট ওয়াজ দ্যা আইডিয়া অফ পাকিস্তান ডিউরিং ইটস ফরমেশন??

এহসান বললো, মুসলিমকে লিয়ে এক মুলক হোগা, রোটি কাপড়ে আউর মাকান মিলেঙ্গে আসান ম্যায়, ইনসাফ হোগা, ইয়েহি তো পাকিস্তান কে আইডিয়া থে।

"আসলে পাকিস্তান যে সময়টা হয়, ঐ সময়টা ছিল এরকম, শেষ খিলাফত-উসমানী খিলাফত ভেঙ্গে গেছে৷ মিডল ইস্টের রাজা বাদশারা কেউ খিলাফতের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মুসলমানরা খিলাফত আন্দোলন করলো, কোন লাভ হল না। এরপর তারা দেখলো, মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র বানানো ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করা অসম্ভব হয়ে গেছে। আল্লামা ইকবাল স্বপ্ন দেখলেন, নবীজী মদীনায় যে হক্বের শাসন কায়েম করেছেন, মুসলমানরা দক্ষিণ এশিয়াতে নিজেদের আবাসভুমি তৈরি করে তেমন শাসন কায়েম করবে। তখন আল্লামা ইকবাল পাকিস্তানের আইডিয়াটা তৈরি করেন। পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক পিতা হলেন আল্লামা ইকবাল-আশরাফ আলী থানভী আর রাজনৈতিক ফাউন্ডিং ফাদার হচ্ছেন চারজন মানুষ।
১)নবাব সলিমুল্লাহ
২)মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ
৩)শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক
৪)হুসাইন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
-ক্বায়েদ এ আযম মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ??" এহসান জিজ্ঞেস করলো।
-হ্যা।
-বাকি লোগ কা নাম তো হাম নাহি জানতে। ও কউন হ্যায়??
-জাস্ট মেইক আ গুগল সার্চ-টাইপ-লাহোর রেজলিউশান।
-ওকে।

একটু পর উইকিপিডিয়া ঘুরে এসে এহসান বললো, ইয়ে শেরে বাংলা কো তো হাম নাহি জানতে থে।
আমি বললাম, নো প্রবলেম।
আল্লামা ইকবাল মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর মাথায় ভালোমতই ঢুকিয়েছিলেন, মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র না করলে ব্রিটিশরা চলে যাবার পর এখানে মুসলমানদের পক্ষে বাস করাই সম্ভব হবে না। তার এই আইডিয়াকে ফলো করে চৌধুরী রহমত আলী নামের কেম্ব্রিজ গ্র‍্যাজুয়েট। পাকিস্তান নামটাও তারই দেয়া।

এখন ঝামেলাটা কোথায় লাগসে দেখো, ইকবাল পাকিস্তান বলতে বুঝেছেন আজকের যে পাকিস্তান+ইন্ডিয়ান পাঞ্জাব+মুম্বাই, এটাকে। ওদিকে, রহমত আলী ব্যাপারটাকে অনেক ডিটেইলে নিয়ে গেছেন। তিনি এর সাথে আফগানিস্তান আর কাশ্মীরকে যোগ করেছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার অন্যান্য যে জায়গাগুলোতে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে, সেসব জায়গাতেও মুসলিম রাষ্ট্র তৈরি হবে। যেমন হায়দ্রাবাদ, বাংলাদেশ, মালাবার-কেরালা, এসব জায়গাতেও মুসলিম রাষ্ট্র হবে এবং সেগুলো পাকিস্তানের অধীনে থাকবে। প্রথমে মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ নিজেই এটার সাথে একমত ছিলেন না। পরবর্তীতে আল্লামা ইকবালের প্রভাবেই জিন্নাহ মুসলিমদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র তৈরিতে একমত হন। এর সাথে যুক্ত হন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার অন্যান্য অংশের মুসলিম নেতারা। ১৯৪০ সালে শেরে বাংলা লাহোরে বলেছিলেন, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো নিয়ে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে।

তো, এরপরই মূলত পাকিস্তান আন্দোলন দানা বাধে। মজার ব্যাপার হল, এই আন্দোলন সবচেয়ে জোরদার হয়ে ওঠে বাংলায়। মূলত বাংলার মুসলমানদের সাথে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের মুসলমানদের প্রানপন চেষ্টাতেই গড়ে ওঠে পাকিস্তান আন্দোলন এবং জিন্নাহ হয়ে ওঠেন কায়েদ এ আযম। তার আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দুজন নেতা ছিলেন শেরে বাংলা আর সোহরাওয়ার্দী, দুজনেই বাংলার। এমনকি পাকিস্তান যে রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে জন্ম নেয়, সেই মুসলিম লীগের জন্মও ঢাকায়, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ। খাজা নাজিমউদ্দিন যিনি জিন্নাহর পরে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল এবং প্রাইম মিনিস্টারও ছিলেন, তিনিও ছিলেন ঢাকার নবাব পরিবারের লোক।
তো বুঝতেই পারতেসো, পাকিস্তান তৈরিতে বাংলাদেশের মানুষের একটা বিরাট ভুমিকা ছিল।
-আচ্ছা!! ইয়ে তো হামে কাভি টেক্সটবুক ম্যায় পাড়হি নাহি!!
-টেক্সটবুকে তো আমাদের সেইটাই পড়ানো হয়, যা সরকার আমাদের পড়াতে চায়।
-হা, ইমরান খান নে ভি তো ও কেহতি থি!!
-তুমি ইমরান খানকে পছন্দ করো??
-হা ইয়াহা জো ইয়াং জেনারেশন হ্যায় ও তো ম্যাক্সিমাম ইমরান খান কো হি পাসান্দ কারতি হ্যায়।
-তো আসল কথায় আসি, কিভাবে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে গেল, এইটা দেখাই তোমাকে।

বাংলাদেশ আসলে পাকিস্তান হওয়ার উদ্দেশ্যটা ছিল পশ্চিমের মুসলমানদের চেয়ে একটু অন্যরকম।

বাংলাদেশের মুসলমান কয়েকটা ব্যাপার নিয়ে মারাত্মক কিছু চ্যালেঞ্জ ফেস করছিলো যেটা পশ্চিমের চেয়ে ইউনিক।

আমাদের ভাষা বদলে দেয়া হয়, আমাদের সমস্ত জমি কেড়ে নেয়া হয়। আমাদের ফসল ও জমি ধ্বংস করে আমাদেরকে নিঃস্ব বানানো হয়। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে আমাদেরকে সরকারী চাকরির অনুপযুক্ত করা হয়। ফলে প্রশাসন চলে যায় পুরোপুরি হিন্দুদের দখলে। এই পুরো সময়টা মুসলমান ছিল সংখ্যালঘু। এরপর সংখ্যায় বাড়ার পর মুসলমান দেখে সংখ্যায় তারা অনেক কিন্তু তারা নিঃশেষিত।

এটা নিয়ে শোষক হিন্দু জমিদার-মহাজন-পুলিশ-আমলাদের সাথে বাংলার মুসলমান ব্রিটিশ আমলে অনেক লড়েছে।

পাকিস্তান যখন সৃষ্টি হয় তখন বাংলাদেশের মুসলমানদের প্রধান নেতা শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দী। তারা দুজনেই বেশি ফোকাসড ছিলেন আজকের বাংলাদেশ, পশ্চিম বঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম নিয়ে এক স্বাধীন দেশ তৈরি নিয়ে, যেখানে মুসলিম-হিন্দুর অনুপাত হবে ৫ঃ৩।

এই নতুন রাষ্ট্র কিন্তু লাহোর প্রস্তাব মেনেই হচ্ছিল। এতে পাকিস্তান পাকিস্তানের জায়গায় থাকতো, আর বাংলাদেশ বাংলাদেশের জায়গায়।

কিন্তু জিন্নাহ সাহেব দেখলেন, পূর্ব বাংলার কোন কলকারখানা থাকবে না, থাকবে না শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এবং পুজিপতি, থাকবে না কোন প্রতিরক্ষা বাহিনী। এই অবস্থায়, যদি ইন্ডিয়া বাংলায় কোন সামরিক অভিযান চালায়, পাকিস্তানের কিচ্ছু করার থাকবে না।

এই বাস্তবতার মুখে পাকিস্তানে যোগ দেয় বাংলাদেশ। এর ফলে আরও এক সমস্যার জন্ম নেয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ সম্পদ নিয়ে কোলকাতায় চলে যায় হিন্দু জমিদার-মহাজনরা। বাংলাদেশ হারায় আসাম, মেঘালয়ের ওপর তার অধিকার। আরাকান ছিল বাংলার সাথে জড়িত এক জনপদ৷ নানান ডামাডোলে আরাকানও পারে না পাকিস্তানে যোগ দিতে। ওদিকে, বাংলার মুসলমানের পাচশো বছরের গৌরবে ভাস্বর মুর্শিদাবাদ, লাখনৌতি, মালদহ আমরা হারিয়ে ফেলি, হারিয়ে ফেলি আমাদেরই পয়সায় তৈরি কোলকাতা।

কিন্তু তবু, বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানী পরিচয়কে ভালোবেসেই পাকিস্তান গড়েছিল এই আশায় যে এখানে গড়া হবে এক সুন্দর রাষ্ট্র।

কিন্তু পাকিস্তান হবার পর কিন্তু নেতারা সার্বজনীনতার বদলে আঞ্চলিকতার দিকে গেলেন। প্রত্যেকেরই চিন্তা যার যার নির্বাচনী অঞ্চল ও যার যার নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের দিকে। আর বিংশ শতকের ট্রেন্ডও এটাই ছিল, ভাষাভিত্তিক/অঞ্চলভিত্তিক জাতীয়তাবাদ। এই জাতীয়তাবাদকে পশ্চিমে ব্যবহার করলেন ভুট্টো-পূর্বে মুজিব।

১৯৬৫ সালের ইন্দো-পাক যুদ্ধ হলো। পাকিস্তানের জন্য ভীষন বীরত্ব দেখালো বাঙ্গালরা, মেজর জিয়াউর রহমানের অসীম বীরত্বে রক্ষা পেল লাহোরসহ সমগ্র উত্তর পাকিস্তান।

কিন্তু বাঙ্গাল-পাঞ্জাবী দ্বন্দ রাজনীতিতে বাড়তেই থাকলো। দুই হাজার কিলোমিটার দুরের দুই জমিন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে একসাথে ধরে রাখার মত যে কয়জন নেতা ছিলেন, ততদিনে তারাও আর জীবিত নেই। ৬৫ পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান আর ইন্ডিয়া পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতায় নামে, পাকিস্তান চেষ্টা করছিল ইন্ডিয়ার উত্তর-পূর্বের সেভেন সিস্টার বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার, আর ইন্ডিয়া চেষ্টা করছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে। তারপরও আসলে বাংলাদেশ আলাদা হত না, যদি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফল মেনে নিত ইয়াহিয়া খান। ইয়াহিয়া খান ইন্ডিয়ার পাতা ফাদে পা দিয়ে ঢাকায় ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে যে রক্তাক্ত অপারেশন সার্চলাইট চালায় তাতে বহু পুলিশ-ছাত্র ও সাধারন মানুষের মৃত্যু ঘটে।

দেখতে ছোটখাট হলেও বাংলাদেশের মানুষ কারো আধিপত্য মেনে নিতে চায় না। জোর করে তাদের কথা শোনানো খুবই কঠিন। এর মধ্যে, ইয়াহিয়ার কাছে শেখ মুজিব আত্মসমর্পণ করায় ঢাকার নেতৃত্ব চলে যায় তাজউদ্দীন আহমেদের কাছে, যে ছিল ইন্ডিয়াপন্থী। ফলে বন্ধ হয়ে যায় সমঝোতার সব রাস্তা। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী-বিহারী মুহাজির বনাম আওয়ামী লীগ-বাঙ্গালী সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা সংগঠিত আকারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রুপ নেয়। এই যুদ্ধ তারাই সংগঠিত করেন, যারা মাত্র ৬ বছর আগে জান বাজি রেখে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন পাকিস্তানের হয়ে। তাই এটাকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ানদের যুদ্ধ আকারে দেখার সুযোগও নেই। এই যুদ্ধ ছিল আমাদের নিজেদের হিসাব নিকাশের ব্যাপার।

তারপর, ৯ মাস চলে গেল। বাঙ্গালের হাতে মরলো পাকিস্তানী, পাকিস্তানীর হাতে মরলো বাঙ্গাল, বিংশ শতাব্দীর আরো অনেক জাতীয়তাবাদী যুদ্ধের মতই বইলো রক্তের নদী, লাভবান হল ইন্ডিয়া। বাংলাদেশ নামকাওয়াস্তে স্বাধীন হলো বটে, কিন্তু নিয়ন্ত্রন চলে গেলো ইন্ডিয়ানদের হাতে। ভুট্টো পরে নবীজীর দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের কাছে একাত্তরের জন্য মাফ চেয়েছিল বটে, কিন্তু ধনুক থেকে বেরিয়ে যাওয়া তীর কি আর ধনুকে ফেরে??

বাংলাদেশ তার মাটি, পানি, হাওয়া আর মানুষ, সব মিলিয়েই অনেক আলাদা ছিল পাকিস্তান থেকে, একমাত্র বাধনটা ছিল ইসলামের। ওটা পাঞ্জাবীরাও মানে নাই, তাই বাঙ্গালরাও মানে নাই। তাই আমরা আলাদা হয়ে যেতে বাধ্য হলাম।

-আমাদের বইতে তো পড়ায় কিছু গাদ্দারের কারনে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম থেকে আলাদা হয়ে গেছিলো। এর বেশি আমরা তেমন কিছু জানতেও চাই না আসলে। বাংলাদেশের সাথে এত যুদ্ধ না করে এক থাকলেই বরং এখন ভাল হত। আচ্ছা, পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার কব্জায় চলে গেল না??-এহসান বললো।

-আসলে প্রথমদিকে ইন্ডিয়া সত্যিকার ভাবেই আধিপত্য বিস্তার করে বাংলাদেশের ওপর। বাংলাদেশ সত্যিকারের স্বাধীনতা পায় ১৯৭৫ সালে। স্বৈরশাসক মুজিব নিহত হয় সেনাঅভ্যুত্থানে, এরপর পালটা অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালায় ইন্ডিয়া, শেষপর্যন্ত সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর "নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার!! বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!!" স্লোগানে ইন্ডিয়ান কব্জা থেকে বেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর আমরা আর পিছু হটি নি, সামনে এগিয়ে গেছি।
আজ পঞ্চাশ বছর হয়ে গেছে, আমরা এই আযাদী টিকিয়ে রাখার জন্য লড়ছি। আমরা মার খেয়েছি, আমরা না খেয়ে থেকেছি, কিন্তু কারো গোলামীকে মেনে নেই নি। এই যে দেখো জুলাইয়ে কত মানুষ জীবন দিলো খালি হাতে রাইফেলের সামনে দাঁড়িয়ে, কাশ্মীর বা গা/যা ছাড়া এই দৃশ্য তুমি কোথায় পাবে?? শুধু বাংলাদেশে পাবে। আমার দেশের পাহাড় তো তোমাদের মত এত উচু না, কিন্তু যেখানে মানুষের সীনায় জমা হওয়া আযাদীর আকাঙ্ক্ষা হিমালয় ছাড়িয়ে গিয়ে আসমানে ডানা মেলে, সেটাকে বাংলাদেশ বলে।

এহসান অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।

££££

এসব আলাপ করতে করতে হোটেলে ফিরে খেয়াল হল, রেস্টুরেন্টে বিল দিতে ভুলে গেছি, আর কেউ আমাদের কাছে বিল চায়ও নি।

কি এক ঝামেলা, আবার ১০ কিলো ড্রাইভ!! ওদিকে বিকেলে যেতে হবে ঈগল'স নেস্ট, করিমাবাদের একেবারে উল্টাদিকে।

একটা কাজ অবশ্য করা যায়, বিকেলে করিমাবাদে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখে সন্ধ্যার পর বিলটা দিয়ে আসা যায়। বিল বেশি হবার কথা না।

ঈগল'স নেস্ট এক অনিন্দ্য সুন্দর জায়গা। হুনজা ভ্যালির একেবারে মাথায় অবস্থিত, প্রায় ৯ হাজার ফুট ওপরের এই জায়গাটা থেকে খুব কাছের মনে হয় রাকাপোশি রেঞ্জের সমস্ত পর্বত, আর পেছনে দেখা যায় উলতার সার, হুনজা, বুবলিমোতিনসহ সব কয়টা বড় চুড়া।

ঈগল'স নেস্টে অনেকগুলো হোটেল আছে, আছে কার পার্কিং, কিছু দোকান যেখানে হুনজার বিভিন্ন স্থানীয় কুটির শিল্প কিনতে পাওয়া যায়। পাহাড়ের ভাজে ভাজে সাজানো প্রায় হাজার পাচেক সাদা চেরি আর গোলাপি এপ্রিকটের বাগান পেরিয়ে এখানে পৌছুতে হয়, গাড়ি ছাড়া কাজটা খুবই কঠিন।

ঈগলস নেস্টে যখন পৌছুলাম, সুয্যি মামা তখন ডুবো ডুবো ভাবে নেমে যাচ্ছে রাকাপোশি আর উলতারের মাঝে, তার রঙ হয়েছে অনেকটা ক্রিম বয়েল করা ডিমের কুসুমের মত।

একটা উচু রকের ওপরে উঠলাম আমরা দুজন। আমাদের চারপাশে বহু জাতির মানুষ, চায়না, জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাঞ্জাবী, সিন্ধী, পাশতুন, বালতি, হুনজাঈ, তুর্কী, ইরানী, ফ্রেঞ্চ, ব্রিট, ডাচ!! কত কত রঙের মানুষ, যেন জমিনে ফুটে উঠেছে সন্ধ্যাকাশে রোদের রঙতুলির বর্নিল আচড়। স্প্যান্তিকের সোনালী দেয়াল লাল হয়ে জ্বলছিল। উলতারের খয়েরী ধুসর গায়ে দেখা দিচ্ছিলো একই লালিমার ছাপ, আর দিরানের বরফে মোড়া মাথায় সূর্য বসিয়েছিল যেমন খুশি তেমন আকোর ক্যানভাস।

আস্তে আস্তে নিকশ কালো নিস্তব্ধতা নামলো সন্ধ্যার পাহাড়ে। দূরে কোত্থেকে যেন ভেসে এলো আযানের সুর। পাখিরা নীড়ে ফিরছিল দলে দলে, এখানে ওখানে উকি দিচ্ছিল দুয়েকটা তারা।

তারপর, স্প্যান্তিক পর্বতের পেছন দিয়ে রুপসী এক নববধু উকি দিল। পূব আসমানে ভায়োলিনের সুরের মত মোলায়েম রোশনী ছড়িয়ে দেখা দিল পূর্নিমার চাঁদ, আজ চতুর্দশী।

সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে আমাদের গাড়িটা নামছিল ঈগল'স নেস্টের নিচে।

মাহরুখ এক রমনীকে পাশে রেখেই আমি তৈরি হতে থাকলাম, জ্যোৎস্নাস্নানে রুপালী রজনী জেগে কাটাবো বলে। যদি ঘুমিয়ে যাই, চাঁদ কি তবে অভিমান করবে??

লেখক: মোহাম্মদ সজল।

❝যখন আমরা স্ট্রাইক করবো সেটা পুরো বিশ্ব টের পাবে। ভারতের মিডিয়ায় ঘোষণা দিতে হবেনা❞- ডিজি আইএসপিআর
08/05/2025

❝যখন আমরা স্ট্রাইক করবো সেটা পুরো বিশ্ব টের পাবে।
ভারতের মিডিয়ায় ঘোষণা দিতে হবেনা❞

- ডিজি আইএসপিআর

এই বেদুইন রক্ষা করেছিলেন আমেরিকান সাম্রাজ্যকে— পেট্রোডলার চুক্তির মাধ্যমেভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র ...
07/05/2025

এই বেদুইন রক্ষা করেছিলেন আমেরিকান সাম্রাজ্যকে— পেট্রোডলার চুক্তির মাধ্যমে

ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র ১৬৮ বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধঋণে নিমজ্জিত ছিল, ফলে ১৯৭১ সালে দেশটির মোট ঋণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৯৮ বিলিয়ন ডলার। সে সময় মার্কিন জিডিপি ছিল ১.২ ট্রিলিয়ন ডলার।

এই সংকটময় মুহূর্তে, সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান।
তিনি এমন একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যা ইতিহাসে ‘পেট্রোডলার চুক্তি’ নামে পরিচিত।
এর ফলে সৌদি তেল শুধুমাত্র মার্কিন ডলারে বিক্রি হওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়—যা ডলারকে বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সিতে পরিণত করে এবং এতে ডলারের মান কার্যত সীমাহীন হয়ে যায়।

চুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র আল-সউদ শাসনব্যবস্থাকে সামরিক ও রাজনৈতিকভাবে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এই সমঝোতা আমেরিকান সাম্রাজ্যের আর্থিক ভিত্তিকে নতুন করে স্থিতিশীলতা দেয় এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে তার আধিপত্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

তখন সৌদি বেদুইন বাদশা কর্তৃক পেট্রো-ডলার চুক্তি না করলে আজ বিশ্বের অবস্থা কিংবা ফিলিস্তিনের অবস্থা কিংবা মুসলমানদের অবস্থা ভিন্ন হতে পারতো!

Collected

ব্রেকিংঃ-🔥🔥পাকিস্তানে হামলা করতে গিয়ে ভারতের ৫ যুদ্ধ বিমান ধংস। এইমাত্র, Rafale সহ ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথা নিশ...
07/05/2025

ব্রেকিংঃ-🔥🔥
পাকিস্তানে হামলা করতে গিয়ে ভারতের ৫ যুদ্ধ বিমান ধংস। এইমাত্র, Rafale সহ ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথা নিশ্চিত করেছেন ডিজি আইএসপিআর।

Address

24/7
Sylhet
3183

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when BD WAVE posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to BD WAVE:

Share