22/03/2025
ফেসবুকে রিলসের ইনকাম কমিয়ে দিয়েছে, এ নিয়ে চারদিকে প্রচুর হা-হুতাশ।
কিছু মানুষ আগে মাসে ১ কোটি টাকার উপরেও কামিয়েছে। এখন লাখ টাকাও কামাতে পারছে না।
কেউ বলছে খুব ভালো হয়েছে, আবর্জনায় ভরে গিয়েছিলো ফেসবুক আবার যারা শুধু এর আয়ের উপর নির্ভরশীল তাদের মাথায় হাত।
কেউ বলছে ঠিক হয়ে যাবে আবার কেউ বলছে ঠিক হবে না।
আমি ব্যাপারটা একটু লজিক দিয়ে বুঝাই, ভুল বললে শুধরে দিয়েন।
১. ফেসবুকের রিলস (Reels) ফিচারটি চালু হওয়ার পর, এটি টিকটক এবং ইউটিউব শর্টসের তুলনায় বেশ পিছিয়ে ছিল। টিকটক তার সহজ ইউজার ইন্টারফেস এবং শক্তিশালী অ্যালগরিদমের মাধ্যমে দ্রুত মার্কেট পেয়েছিলো। ইউটিউব শর্টসও তাদের বিশাল ইউজার বেসের কারণে দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পায়। আর ফেসবুক মার্কেট শেয়ার হারাতে থাকে।
তাই ফেসবুক এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং মার্কেট শেয়ার বাড়াতে রিলসে ইনকাম বাড়িয়ে দেয়। আর এতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
দেখবেন প্রচুর মানুষ দিনে ৭-৮ টা করে,যা মন চায় পোস্ট দিতো। এতে ফলোয়ারসও বাড়তো আর ইনকাম ও বাড়তো। সবাই খুব খুশি, ফেসবুকও খুশি।
ব্যাবসায় Pe*******on এর জন্য এই ফ্রি প্রথা সবাই কম বেশি করে। ফেসবুকও একই স্ট্র্যাটিজি নিয়েছিলো।
আর যখন দেখলো ওদের টার্গেট মোটামুটি ফিলাপ, তখন আস্তে করে কমিয়ে দিলো কারণ এভাবে চললে ওদের Business এর Unit Economics মিলবে না। ওদের ব্যাবসায় লাল বাতি জ্বলতো।
পাশাপাশি এতো ফালতু কন্টেন্টের কারণে কোয়ালিটি কাস্টমার হারাচ্ছিলো ফেসবুক।
২. ফেসবুক মূলত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করে। শুধু ভিউ হলে হবে না। আপনার টার্গেট অডিয়েন্স এর যদি buying capacity না থাকে এবং সে যদি Facebook Add থেকে পন্য না কিনে তাহলে আপনার ইনকাম শুন্য।
ব্যাপারটা আরেকটু গুছিয়ে বলি।
ফেসবুক এখন অ্যাড-রেভিনিউ শেয়ারিং মডেলের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যেখানে বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয়ের একটা অংশ ক্রিয়েটরদের দেওয়া হবে।
ভিডিও দেখার সময় দেখবেন অনেক সময় বিজ্ঞাপন আসে। আপনার দর্শক যদি আপনার কন্টেন্ট আসা বিজ্ঞাপন দেখে পণ্য না কিনে, তাহলে বিজ্ঞাপন দাতার ব্যাবসা হবে না । আর ব্যাবসা না হলে,তারা ফেসবুকে টাকা ঢালবে না আর ফেসবুক টাকা না পেলে তারাও আপনাকে টাকা দিবে না। Simple Logic.
৩. ফেসবুক এখন চায়, ক্রিয়েটররা “স্টারস,” সাবস্ক্রিপশন, ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ, ইন-স্ট্রিম অ্যাডস ইত্যাদির মাধ্যমে ইনকাম করুক। সরাসরি ইনসেনটিভ কমিয়ে তারা এইসব নতুন আয়-উৎসগুলোকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করছে।
৪.ফেসবুক AI-ভিত্তিক কনটেন্ট ডিসকভারি সিস্টেমে বিনিয়োগ করছে, যেখানে কনটেন্ট ভাইরাল হতে টাকা ইনসেনটিভের দরকার নেই। তারা মনে করে, ভালো কনটেন্ট অটোমেটিক্যালি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে, তাই বেশি টাকা খরচ করার দরকার নেই।
এজন্য শুধু ফেসবুকের ভিডিও থেকে আয়ের উপর নির্ভর করা মনে হয় না sustainable কোনো Solution.
Probable Solution :
১. শুধুমাত্র ভিউসের পেছনে না দৌড়িয়ে ভালো মানের কন্টেন্ট বানানোর দিকে এবং নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এর দিকে নজর দেয়া উচিৎ। তাহলে ভালো ব্র্যান্ড আপনার কাছে আসবে। আর পাশাপাশি ফেসবুকও আপনার ইনকাম আস্তে আস্তে বাড়িয়ে দিবে।
২. ফেসবুক এখন লং-ফর্ম কনটেন্ট (৩+ মিনিটের ভিডিও) বেশি প্রোমোট করছে কারণ এতে বিজ্ঞাপন বসানো যায়। তাই বলে হাবিজাবি কন্টেন্ট বানালে কিন্তু ব্র্যান্ড সেই ভিডিওতে Ad Run করবে না।
৩. পার্সোনালিটি এর সাথে যায় এমন ব্র্যান্ডের সাথে কোলাবেরশন করতে পারেন।
৪.ফেসবুক এখন ক্রিয়েটরদের সাবস্ক্রিপশন ফিচার ব্যবহার করতে উৎসাহিত করছে। তাই মানুষের কাজে আসে এমন কিছু এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট দিন। তাহলে মানুষ টাকা দিয়ে আপনাকে সাবস্ক্রাইব করবে। আপনি মানুষকে ভ্যালু দিন তারা তার মূল্য দিবে।
৫. শুধু মিলিয়ন মিলিয়ন ফলোয়ার্স থাকলে হবে না। কে বা কারা আপনাকে ফলো করছে, তাদের কোয়ালিটির উপর নজর দিন।
👉সংগৃহীত