12/07/2025
মিডফোর্ডের রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে প্রাণ হারানো সোহাগ মূলত যুবদলের রাজনীতিই করতেন। ঢাকা–৭ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি নেতা ইসহাক সরকারের কর্মী ছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের পতনের পর ইসহাক সোহাগকে দিয়ে চকবাজার এলাকায় মাসিক ৬ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। হঠাৎ তিনি সিদ্ধান্ত নেন– চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ করবেন। অর্থাৎ মাসিক ১২ লাখ টাকা করে চাঁদা তুলবেন ওই এলাকা থেকে।
এই কাজের জন্য সোহাগকে তার খুব সম্ভব যোগ্য মনে হয় না। তিনি দায়িত্ব দেন আরেক চ্যালা মহিনকে। সোহাগ তখন ওই এলাকার অপর এক বিএনপি নেতা হামিদের গ্রুপে ভেড়ার চেষ্টা করেন। এই ব্যাপারটিই সহ্য করতে পারেননি ইসহাক। তিনি সোহাগকে দুনিয়া থেকে সরানোর মহান(!) দায়িত্বটি অর্পণ করেন মহিন এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের। অর্থাৎ মহিনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সোহাগের কোনো শত্রুতা ছিল না, জাস্ট নেতার আদেশ। [তথ্যসূত্র : দৈনিক যুগান্তর]
মহিন এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা সোহাগকে দুনিয়া থেকে সরানোর জন্য এত ভয়াবহ পদ্ধতি অবলম্বন করল কেন, তা নিয়ে অপরাধবিজ্ঞানীদের বিস্তর গবেষণা করবার সুযোগ আছে। তারা এমন নির্মম পথ বেছে নিলো একজন মানুষকে শেষ করতে, যা ইতোপূর্বে আর কখনও দেখা যায়নি। এমনকি মৃতদেহের ওপর উঠে উল্লাস করবার মতো নিষ্ঠুর দৃশ্যও বহুদিন পর দেখলাম আমরা। ওই সময় ওদের মস্তিষ্কে কী ক্রিয়া করছিল, তা নিয়েও গবেষণা হওয়া জরুরি।
সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ছিল নিহত সোহাগের ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়েগুলোর কান্না। বড়ো মেয়েটা সেই নির্মম ভিডিও থেমে থেমে দেখছিল আর বিলাপ করছিল, 'আহারে! আমার পাখি বাবাটাকে এত কষ্ট দিয়ে মারল কেন ওরা?' পৃথিবীর যেকোনো সন্তানের জন্যই বাবা-মায়ের মৃত্যু কষ্টকর। কিন্তু এ কেমন নির্মমতম মৃত্যু! বিএনপির ভাইদের মনোজগতে এই দৃশ্য দেখার পর কি ভাবনার উদয় হয়েছে জানি না। ভাই! আপনারা নিজেরাই তো নিজেদের হাতে নিরাপদ নন, আমাদের কি নিরাপত্তা দেবেন?
'একটি নির্মমতার আখ্যান'/ লাবিব আহসান