27/06/2025
সিলেটের মদনমোহন কলেজের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী সময়মতো ফরম ফিলাপ করতে পারেন নি৷
পরে তার দুলাভাই কার মাধ্যমে যেন ফরম ফিলাপ করে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রবেশপত্র এনে দেন।
সে আজ পরীক্ষা দিতে আসে সিলেট সরকারি কলেজে।
সেখানে আসার পরে যখন সিটে বসে, তখনই হয় সমস্যা। একই রোলের ২ শিক্ষার্থী।
পরে হলের দায়িত্বরত শিক্ষককরা তার প্রবেশপত্র স্ক্যান করলে ধরা পড়ে এটা জাল বলে।
তখন তাকে আটক করে কলেজ প্রশাসনের অধীনে আনা হয়।
এক ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে গিয়ে তাকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।
সেটা শুনেই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
এর আগে সে বলেছিল তার দুলাভাই তাকে এই প্রবেশপত্র এনে দিয়েছেন কার মাধ্যমে।
আর দুর্ভাগ্যবশত আজ সকালেই তার দুলাভাই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তার জ্ঞান নেই।
এটা ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে বারবার বললেও তিনি কোনো দয়া দেখান নি বরং নিজের কাছে থাকা আইন প্রয়োগ করেছেন।
ওই সময় নাকি ওই শিক্ষার্থীর বোন ম্যাজিস্ট্রেটের পায়েও ধরেছেন, তবুও রক্ষা হয়নি।
সরকারি কলেজের আমার পরিচিত এক শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, মেয়েটি আসলেই মদনমোহন কলেজের শিক্ষার্থী এবং সে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
এই প্রতারণাটা ওই কলেজেরই কোনো কর্মচারী করতে পারে বলে তার অভিমত।
কিন্তু, মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ স্যার স্বীকার করতেই চাইছেন না ওই শিক্ষার্থী তাদের বলে।
এদিকে সিলেট শিক্ষাবোর্ডের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা আমাকে জানান যে, এভাবে কোনোপ্রকার তদন্ত ছাড়াই এতবড় শাস্তি দেওয়া উচিত হয়নি।
তদন্ত করে যে তাকে এই জাল প্রবেশপত্র দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল।
এমনকি সরকারি কলেজ থেকে শিক্ষাবোর্ডেও এব্যাপারে জানানো হয়নি। তারা পত্রিকায় দেখে জানতে পারছেন।
এখন আসি ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্যতে, তিনি জানান যে পাবলিক পরীক্ষার ৩ ধারায় এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
একটু মানবিক দিক বিবেচনা করা কি যেতো না বা তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া যেতো না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যেটি পেয়েছি, সেটার ওপর শাস্তি দিয়েছি।
শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান স্যার জানালেন, আমাদের কাছে বিষয়টি আসলে আমরা ভেবে দেখতাম।
কিন্তু, ১৪৪ ধারা জারী এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আইন অনুসারে শাস্তি দিতে পারেন বা ব্যবস্থা নিতে পারেন।
তবে আমাদেরকে প্রথমে জানানো হয়নি।
এখন আসি মূলকথায়- আমরা শিক্ষিত হচ্ছি, প্রভাব খাটাচ্ছি, কোনো দায়ভার যাতে নিজের ওপর না আসে, সেটার জন্য অন্যের উপর হওয়া অমানবিকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছি।
মেয়েটি এখন এক অমানিশা অন্ধকারে পড়ে গেল।
এভাবেই প্রতারিত হয়ে হাজারো মানুষ বিপদে পড়ছে আর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে আসল অপরাধীরা।
লেখাটি সংগৃহীত