16/02/2025
৪১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা
জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী (Muhammad Ataul Goni Osmani) (১৯১৮-১৯৮৪) তিনি এম এ জি ওসমানী (M A G Osmani) নামে পরিচিত। ওসমানীর জন্ম ১৯১৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে। তার পৈত্রিক বাড়ি সিলেট জেলার বালাগঞ্জ থানার (অধুনা ওসমানী নগর উপজেলা) দয়ামীরে। তার পিতা খান বাহাদুর মফিজুর রহমান, মাতা জোবেদা খাতুন। খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছেলে ওসমানী। ওসমানীর জন্মের প্রাক্কালে ১৯১৮ সালে খান বাহাদুর মফিজুর রহমান তৎকালীন আসামের সুনামগঞ্জ সদর মহকুমায় সাব-ডিভিশনাল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ৷ তাদের বসবাস ছিল সুনামগঞ্জ সদরেই। এখানেই জন্ম হয় ওসমানীর।
জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী বাংলাদেশের জন্ম-ইতিহাসের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত একটি নাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্বে, ১৯৩৯ সালে ৩ জুলাই তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চতুর্থ আরবান ইনফিনিটিতে যোগ দেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্ণেল পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গঠিত হয় মুজিব নগর সরকার। সরকার জেনারেল ওসমানী-কে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন চিরকুমার।
মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি ও চিরকুমার ওসমানীর ১৯৮৩ সালে অসুস্থ হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডনের সেন্ট বার্থলোমিজ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলে । প্রথম দিকে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও আস্তে আস্তে অবনতি হয়। চিরকুমার ওসমানী লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
২০ ফেব্রুয়ারি তার মরদেহ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। পরে সেখানে তার ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে মরদেহ সিলেট পৌঁছালে আলীয় মাদ্রাসা মাঠে ৩য় জানাজা শেষে শাহজালাল (রহ) দরগায় মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশের জন্ম-ইতিহাসের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত একটি নাম আতাউল গণি ওসমানী। মুক্তিযোদ্ধের প্রধান সেনাপতি এই মহাননেতার আজ ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। অত্যন্ত শ্রদ্ধা আর সম্মানের সাথে স্মরণ করছি তাঁর যাবতীয় কর্ম এবং দেশের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধ ও আত্নত্যাগকে। পরম করুণাময় আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউসের বাসিন্দা হিসেবে কবুল করে নিবেন, এটাই দোয়া।
লেখা- ইন্টারনেট অবলম্বনে