16/09/2022
জুম'য়ার আলোচনা
(সফর মাসের তৃতীয় জুম'য়া)
বিষয়: জিকির করার গুরুত্ব ও ফদ্বিলত।
মোঃ খলিলুর রহমান খাদিমানী ।
ভূমিকা:-
تعريف الذكر
الذكر هو لفظ عربية ، معناها اللغة هو التذكر. في اصطلاح الشريعة ، الذكر هو ذكر الله بعبادته في كل حال.
জিকিরের পরিচয়
জিকির শব্দটি আরবি, এর শাব্দিক অর্থ স্মরণ করা, পরিভাষা ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা কে জিকির বলে।
তবে সর্বশ্রেষ্ঠ একটি জিকির রয়েছে তা হল, রাসূল ﷺ এর হাদিস
قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، رضى الله عنهما يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " أَفْضَلُ الذِّكْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ الْحَمْدُ لِلَّهِ " .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি : “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” অতি উত্তম যিক্র এবং “আলাহামদু লিল্লাহ্” অধিক উত্তম দু‘আ।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮৩)
জিকির প্রসঙ্গে কোরআন শরীফে আল্লাহ তা'আলা বলেন....
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوا اللّٰہَ ذِکۡرًا کَثِیۡرًا ۙ وَّسَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّاَصِیۡلًا
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।"
(আহ্যাব আয়াত- ৪১.৪২)
উপরে উল্লেখিত প্রসঙ্গে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত...
١. یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ فِئَۃً فَاثۡبُتُوۡا وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ
"হে মুমিনগণ, যখন তোমরা কোন দলের মুখোমুখি হও, তখন অবিচল থাক, আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফল হও।"
(সূরা আনফাল আয়াত ৪৫)
٢. وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّ خِیۡفَۃً وَّ دُوۡنَ الۡجَهۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ وَ لَا تَکُنۡ مِّنَ الۡغٰفِلِیۡنَ
"আর তুমি নিজ মনে আপন রবকে স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায় অনুনয়-বিনয় ও ভীতি সহকারে এবং অনুচ্চ স্বরে। আর গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।"
(সূরা আরাফ আয়াত ২০৫)
٣. وَٱلذَّٰكِرِينَ ٱللَّهَ كَثِيرًا وَٱلذَّٰكِرَٰتِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغۡفِرَةً وَأَجۡرًا عَظِيمًا
"আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারী- আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।"
(সূরা আহযাব এর ৩৫ নং আয়াতের কিছু অংশ)
কোরআন ও হাদিসের আলোকে জিকিরের গুরুত্ব ও ফদ্বিলত
(মূল আলোচনা)
আল্লাহ তায়ালা বলেন...
١. ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ
"তারাই ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই দিলের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়।"
٢. وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ
"আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।"
(সূরা আনকাবুত ৪৫ নং আয়াতের কিছু অংশ)
হাদিসের আলোকে জিকিরের কয়েকটি ফদ্বিলত...
٣. عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، رضى الله عنه أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ شَرَائِعَ الإِسْلاَمِ قَدْ كَثُرَتْ عَلَىَّ فَأَخْبِرْنِي بِشَيْءٍ أَتَشَبَّثُ بِهِ . قَالَ " لاَ يَزَالُ لِسَانُكَ رَطْبًا مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ " .
আবদুল্লাহ্ ইবনু বুস্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
এ লোক বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমার জন্য ইসলামের শারী‘আতের বিষয়াদি অতিরিক্ত হয়ে গেছে। সুতরাং আমাকে এমন একটি বিষয় জানান, যা আমি শক্তভাবে আঁকড়ে থাকতে পারি। তিনি বললেনঃ সর্বদা তোমার জিহ্বা যেন আল্লাহ তা‘আলার যিকিরের দ্বারা সিক্ত থাকে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৫)
٤. عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ أَىُّ الْعِبَادِ أَفْضَلُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ " الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتُ " . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمِنَ الْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَ " لَوْ ضَرَبَ بِسَيْفِهِ فِي الْكُفَّارِ وَالْمُشْرِكِينَ حَتَّى يَنْكَسِرَ وَيَخْتَضِبَ دَمًا لَكَانَ الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا أَفْضَلَ مِنْهُ دَرَجَةً " .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করা হল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট বান্দাদের মধ্যে কে মর্যাদায় সর্বোত্তম হবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলার অধিক পরিমাণে যিকিরকারীগণ। রাবী বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আল্লাহ্ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদকারীর চেয়েও অধিক মর্যাদাশালী? তিনি বললেনঃ যদি কেউ নিজের তলোয়ার দিয়ে কাফির ও মুশরিকদের উপর এমনভাবে আঘাত হানে যে, তা ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় এবং নিজেও রক্তাক্ত হয়ে যায়, তবে অধিক পরিমাণে আল্লাহ্ তা‘আলার যিকিরকারী বান্দাগণ মর্যাদায় তার চেয়েও উত্তম।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৬)
٥. عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيكِكُمْ وَأَرْفَعِهَا فِي دَرَجَاتِكُمْ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذَّهَبِ وَالْوَرِقِ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ أَنْ تَلْقَوْا عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ " . قَالُوا بَلَى . قَالَ " ذِكْرُ اللَّهِ تَعَالَى " . فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رضى الله عنه مَا شَيْءٌ أَنْجَى مِنْ عَذَابِ اللَّهِ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ .
আবুদ্ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে কি তোমাদের অধিক উত্তম কাজ প্রসঙ্গে জানাব না, যা তোমাদের মনিবের নিকট সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের সম্মানের দিক হতে সবচেয়ে উঁচু, স্বর্ণ ও রৌপ্য দান-খাইরাত করার চেয়েও বেশি ভাল এবং তোমাদের শত্রুর মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে তাদেরকে তোমাদের সংহার করা ও তোমাদেরকে তাদের সংহার করার চাইতেও ভাল? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলার যিক্র। মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলার যিক্রের তুলনায় অগ্রগণ্য কোন জিনিস নেই।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৭)
٦. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسِيرُ فِي طَرِيقِ مَكَّةَ فَمَرَّ عَلَى جَبَلٍ يُقَالُ لَهُ جُمْدَانُ فَقَالَ " سِيرُوا هَذَا جُمْدَانُ سَبَقَ الْمُفَرِّدُونَ " . قَالُوا وَمَا الْمُفَرِّدُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتُ " .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার পথে চলতে থাকেন। অতঃপর ‘জুমদন’ নামে একটি পর্বতের কাছে গেলেন। এরপর তিনি বললেন, তোমরা এ জমদান পর্বতে সফর করো। ‘মুফার্রিদ’গণ অগ্রগামী হয়েছে। মানুষেরা প্রশ্ন করল, ‘মুফার্রিদ’ কারা! হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি বললেন, বেশি বেশি আল্লাহর যিকিরে নিয়োজিত পুরুষ ও নারী।
(সহিহ মুসলিম হাদিস নং ৬৭০১)
٧. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " سَبَقَ الْمُفْرِدُونَ " . قَالُوا وَمَا الْمُفْرِدُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " الْمُسْتَهْتَرُونَ فِي ذِكْرِ اللَّهِ يَضَعُ الذِّكْرُ عَنْهُمْ أَثْقَالَهُمْ فَيَأْتُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِفَافًا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হালকা-পাতলা লোকেরা অগ্রগামী হয়ে গেছে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! হালকা-পাতলা লোক কারা? তিনি বলেনঃ যে সকল লোক আল্লাহ্ তা’আলার স্মরণে নিমগ্ন থাকে এবং আল্লাহ্র যিকির (স্মরণ) তাদের (পাপের) ভারী বোঝাটি তাদের হতে সরিয়ে ফেলে। ফলে কিয়ামাতের দিন তারা আল্লাহ্ তা’আলার সম্মুখে হালকা বোঝা নিয়েই হাযির হবে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯৬)
٨. عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَعَالَى مِنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ وَلأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ مِنْ صَلاَةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً " .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা ফাজ্রের সলাত হতে শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত মহান আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। এ কাজ আমার নিকট ইসমাঈলের (আঃ)-এর বংশের দাসী আযাদ করার চেয়ে অধিক প্রিয়। আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা ‘আসরের সলাত হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। আমার নিকট এ কাজ চারটি দাসী আযাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয়।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬৬৭)
٩. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لله مَلاَئِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللهَ تَنَادَوْا هَلُمُّوا إِلٰى حَاجَتِكُمْ قَالَ فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِمْ إِلٰى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالَ فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ مِنْهُمْ مَا يَقُوْلُ عِبَادِي قَالُوا يَقُوْلُونَ يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ قَالَ فَيَقُوْلُ هَلْ رَأَوْنِي قَالَ فَيَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ مَا رَأَوْكَ قَالَ فَيَقُوْلُ وَكَيْفَ لَوْ رَأَوْنِي قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيدًا وَتَحْمِيدًا وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحًا قَالَ يَقُوْلُ فَمَا يَسْأَلُونِي قَالَ يَسْأَلُونَكَ الْجَنَّةَ قَالَ يَقُوْلُ وَهَلْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُ فَكَيْفَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ عَلَيْهَا حِرْصًا وَأَشَدَّ لَهَا طَلَبًا وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً قَالَ فَمِمَّ يَتَعَوَّذُونَ قَالَ يَقُوْلُونَ مِنْ النَّارِ قَالَ يَقُوْلُ وَهَلْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُ فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَارًا وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً قَالَ فَيَقُوْلُ فَأُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ قَالَ يَقُوْلُ مَلَكٌ مِنْ الْمَلاَئِكَةِ فِيهِمْ فُلاَنٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إِنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ قَالَ هُمْ الْجُلَسَاءُ لاَ يَشْقٰى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আল্লাহ্র একদল ফেরেশতা আছেন, যাঁরা আল্লাহ্র যিক্রে রত লোকদের খোঁজে পথে পথে ঘুরে বেড়ান। যখন তাঁরা কোথাও আল্লাহ্র যিক্রে রত লোকদের দেখতে পান, তখন ফেরেশতারা পরস্পরকে ডাক দিয়ে বলেন, তোমারা আপন আপন কাজ করার জন্য এগিয়ে এসো। তখন তাঁরা তাঁদের ডানাগুলো দিয়ে সেই লোকদের ঢেকে ফেলেন নিকটবর্তী আকাশ পর্যন্ত। তখন তাঁদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন (যদিও ফেরেশতাদের চেয়ে তিনিই অধিক জানেন) আমার বান্দারা কী বলছে? তখন তাঁরা বলে, তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, তারা আপনার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিচ্ছে, তারা আপনার গুণগান করছে এবং তারা আপনার মাহাত্ম্য প্রকাশ করছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক, আপনার শপথ! তারা আপনাকে দেখেনি। তিনি বলবেন, আচ্ছা, তবে যদি তারা আমাকে দেখত? তাঁরা বলবেন, যদি তারা আপনাকে দেখত, তবে তারা আরও অধিক পরিমাণে আপনার ‘ইবাদাত করত, আরো অধিক আপনার মাহাত্ম্য ঘোষণা করত, আরো অধিক পরিমানে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করত। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ্ বলবেন, তারা আমার কাছে কি চায়? তাঁরা বলবে, তারা আপনার কাছে জান্নাত চায়। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে? ফেরেশতারা বলবেন, না। আপনার সত্তার কসম! হে রব! তারা তা দেখেনি। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, যদি তারা দেখত তবে তারা কী করত? তাঁরা বলবে, যদি তারা তা দেখত তাহলে তারা জান্নাতের আরো অধিক লোভ করত, আরো বেশি চাইত এবং এর জন্য আরো বেশি বেশি আকৃষ্ট হত। আল্লাহ্ তা’’আলা জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চায়? ফেরেশতাগণ বলবেন, জাহান্নাম থেকে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? তাঁরা জবাব দেবে, আল্লাহ্র কসম! হে প্রতিপালক! তারা জাহান্নাম দেখেনি। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, যদি তারা তা দেখত তখন তাদের কী হত? তাঁরা বলবে, যদি তারা তা দেখত, তাহলে তারা তাত্থেকে দ্রুত পালিয়ে যেত এবং একে অত্যন্ত বেশি ভয় করত। তখন আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, আমি তোমাদের সাক্ষী রাখছি, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম। তখন ফেরেশতাদের একজন বলবে, তাঁদের মধ্যে অমুক ব্যক্তি আছে, যে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং সে কোন প্রয়োজনে এসেছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, তারা এমন উপবেশনকারী যাদের মাজলিসে উপবেশনকারী বিমুখ হয় না।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪০৮)
١٠. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا قَالَ عَبْدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ قَطُّ مُخْلِصًا إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ حَتَّى تُفْضِيَ إِلَى الْعَرْشِ مَا اجْتَنَبَ الْكَبَائِرَ "
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা সততার সাথে “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” বললে তার জন্য আকাশের দ্বারগুলো খোলা হয়। ফলে উক্ত কালিমাহ আরশে আজীম পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যতক্ষণ সে কবীরাহ গুনাহ ত্যাগ করে”।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯০)
١١. عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رضى الله عنهما قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ الْقَائِلُ كَذَا وَكَذَا " . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " عَجِبْتُ لَهَا فُتِحَتْ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ " . قَالَ ابْنُ عُمَرَ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে নামায পড়ছিলাম। সে সময় সমাগত লোকদের মাঝে হতে এক লোক বলল, “আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহ তা’আলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি”। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এই এই কথা কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মাঝে এক লোক বলল, আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ এ দু’আয় আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আমি এ কথা শুনার পর থেকে কখনো তা পাঠ করা পরিহার করিনি।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯২)
١٢. عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ " . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ أَبِي ظِلاَلٍ فَقَالَ هُوَ مُقَارِبُ الْحَدِيثِ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَاسْمُهُ هِلاَلٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামা’আতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তা’আলার যিকর করে, তারপর দুই রাক’আত নামায আদায় করে- তার জন্য একটি হাজ্জ ও একটি উমরার সাওয়াব রয়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হাজ্জ ও উমরার সাওয়াব)।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৫৮৬)
١٣. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ. وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে দিন আল্লাহ্র (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, ৪. সে দু’ ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহ্র জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহ্র জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিক্র করে, ফলে তার দু’ চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৬০)
١٤. عَنْ أَبِي مُوسٰى قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّه“ وَالَّذِي لاَ يَذْكُرُ رَبَّه“ مَثَلُ الْحَيِّ وَالْمَيِّتِ.
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে তার প্রতিপালকের যিক্র করে, আর যে যিক্র করে না, তাদের উপমা হলো জীবিত ও মৃত ব্যক্তি।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪০৭)
١٥. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلاَ ذَكَرْتُهُ فِي مَلاَ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু' হাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
(সহিহ বুখারী হাদিস নং ৭৪০৫)
١٦. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَأَبِي، سَعِيدٍ يَشْهَدَانِ بِهِ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا يَذْكُرُونَ اللَّهَ فِيهِ إِلاَّ حَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَتَغَشَّتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَتَنَزَّلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ " .
আবূ হুরায়রাহ ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তারা উভয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি বলেছেনঃ লোকজন কোন মজলিসে সমবেত হয়ে আল্লাহর যিকিরে রত হলে ফেরেশতাগণ তাদের বেষ্টন করে রাখেন, আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে নেয়, তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হতে থাকে এবং আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাগণের সামনে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৭৯১)
١٧. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ أَنَا مَعَ عَبْدِي إِذَا هُوَ ذَكَرَنِي وَتَحَرَّكَتْ بِي شَفَتَاهُ "
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন আমার যিকির করে এবং আমার যিকিরে তার দু’ ঠোঁট নড়াচড়া করে তখন আমি তার সঙ্গে থাকি।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৭৯২)
١٨. قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " أَلاَ إِنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلاَّ ذِكْرَ اللَّهِ وَمَا وَالاَهُ وَعَالِمًا أَوْ مُتَعَلِّمًا " .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : দুনিয়া ও তার মাঝের সকলকিছুই অভিশপ্ত, কিন্তু আল্লাহ্ তা’আলার যিকির ও তার সাথে সংগতিপূর্ণ অন্যান্য আমল, আলিম ও ইলম অন্বেষণকারী এর ব্যতিক্রম।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৩২২)
পরিশেষে, আল্লাহপাক আমাদেরকে তৌফিক দান করুক, যাতে অযথা সময় নষ্ট না করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার জিকিরের মাধ্যমে সময় কাটাতে পারি।
আমিন।