Md. Khalilur Rahman Khadimany

Md. Khalilur Rahman Khadimany ইসলামিক আলোচনা ও বিষয়ভিত্তিক পোষ্ট দ?

19/09/2023

লামাযহাবী বক্তা তারিক বিন সুলাইমান ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে বিতর্ক করে ধরা খেলো।
সবশেষে সে আরবি অনুবাদ না পেরে ফোন কেটে পালালো। 😀😁

হিজবুত তাওহীদের ভ্রান্ত মতবাদ ও তার সমাধান পর্ব - ০১হিজবুত তাওহীদের একটি বই যেটার নাম হল 'আকিদা'এই বইয়ের ১৯ নম্বর পৃষ্ঠ...
06/10/2022

হিজবুত তাওহীদের ভ্রান্ত মতবাদ ও তার সমাধান পর্ব - ০১

হিজবুত তাওহীদের একটি বই যেটার নাম হল 'আকিদা'
এই বইয়ের ১৯ নম্বর পৃষ্ঠার মধ্যে তারা মারাত্মক একটি কথা উল্লেখ করেছেন। কথাটি হল

রাসূল ﷺ এখনো 'রাহমাতুল্লিল আলামিন' হন নি।

(নিচের ছবিতে বইয়ের পাতার স্ক্রিনশট দেওয়া আছে)

এবার জানা যাক কুরআন ও হাদিসের আলোকে উপরোক্ত ভ্রান্ত মতবাদের সমাধান।

০১. মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ

অর্থ, হে নবী; আমি আপনাকে একমাত্র ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ (উভয় জাহানের রহমত) করেই পাঠিয়েছি।
(সূরাঃ আম্বিয়া আয়াত: ১০৭)

আয়াতের ব্যাখ্যা:

এই আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ, মুহাম্মদ ইবনে আহমদ আল কুরতুবী রহঃ বলেন-
قَالَ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ مُحَمَّدٌ ﷺ رَحْمَةً لِجَمِيعِ النَّاسِ

অর্থাৎ হযরত সাঈদ ইবনে যুবাইর হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মাদ সা. সমস্ত মানুষের জন্য রহমত স্বরুপ ছিলেন।
(তাফসীরে কুরতুবী খন্ড ১১ পৃ:৩০৫)

০২. অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন বলেন,

لَقَدْ جاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ ما عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَؤُفٌ رَحِيمٌ

অর্থাৎ তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে এমন একজন রাসূল এসেছেন; যিনি, তোমাদের দুঃখ কষ্ট তাঁর কাছে কষ্টদায়ক মনে হয়। সে হচ্ছে তোমাদের খুবই হিতাকাংখী। মোমেনদের প্রতি বড়ই ¯স্নেহশীল ও (রহমত) করুনাময়।
(সুরা তাওবা আয়াত ন:১০৭)

৩. হাদিসে পাকের মধ্যে উল্লেখ রয়েছে

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى بَعَثَنِي رَحْمَة للعالمينَ وهُدىً لِلْعَالِمِينَ وَأَمَرَنِي رَبِّي عَزَّ وَجَلَّ بِمَحْقِ الْمَعَازِفِ وَالْمَزَامِيرِ وَالْأَوْثَانِ وَالصُّلُبِ وَأَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ وَحَلَفَ رَبِّي عزَّ وجلَّ: بعِزَّتي لَا يشربُ عبدٌ منْ عَبِيدِي جرعة خَمْرٍ إِلَّا سَقَيْتُهُ مِنَ الصَّدِيدِ مِثْلَهَا وَلَا يَتْرُكُهَا مِنْ مَخَافَتِي إِلَّا سَقَيْتُهُ مِنْ حِيَاضِ الْقُدس . رَوَاهُ أَحْمد

আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা আমাকে সমগ্র দুনিয়াবাসীর জন্য রহমত এবং পথ-প্রদর্শক হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আমার সে মহান প্রভু আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন- সকল প্রকার বাদ্যযন্ত্র, দেব-দেবীর মূর্তি ও শূলি ক্রুশ এবং জাহিলী যুগের রসম-রেওয়াজ মূলোৎপাটন করার। আর আমার মহান প্রতিপালক তাঁর ক্ষমতার কসম করে বলেছেনঃ আমার যে কোনো বান্দা এক ঢোক মদ পান করবে, আমি তাকে অবশ্যই অনুরূপ জাহান্নামীদের পুঁজ পান করাব। আর যে ব্যক্তি আমার ভয়ে ভীত হয়ে তা পান করা বর্জন করবে, আমি নিশ্চয় তাকে আমার কূপ থেকে (জান্নাতের সুপেয়) পান করাব।
(আহমাদ ২২৩০৭, মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৭৮০৩)

আরেকটা হাদিস শরীফ

عن أبي هريرة قَال قِيلَ يا رَسُولَ اللهِ ادْعُ على المُشْرِكِينَ قالَ إنِّي لَمْ أُبْعَثْ لَعّانًا وإنَّما بُعِثْتُ رَحْمَةً

অর্থাৎ হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবি স. কে বলা হলো হে আল্লাহর রসুল! আপনি মুশরিকদের ব্যাপারে বদ দোয়া করুন।নবি স. বললেন আমি অভিশাপকারী হিসেবে দুনিয়াতে আসিনি, এসেছি রহমত স্বরুপ।
(সহীহ মুসলিম হাদিস-২৫৯৯)

প্রিয় পাঠক,
এবার আপনারা কোরআন হাদিসের তথ্য দেখে অবশ্যই নিজেরাই বলতে পারবেন যে, হিজবুত তাওহীদ কত বড় গোমরাহের একটি দল। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক।

জুম'য়ার বয়ান পর্ব -০৪(সফর মাসের চতুর্থ জুম'য়া)বিষয়: দুরুদ শরীফ কেন, কি দ্বারা এবং কখন পড়বো...মোঃ খলিলুর রহমান খাদিম...
23/09/2022

জুম'য়ার বয়ান পর্ব -০৪
(সফর মাসের চতুর্থ জুম'য়া)
বিষয়: দুরুদ শরীফ কেন, কি দ্বারা এবং কখন পড়বো...

মোঃ খলিলুর রহমান খাদিমানী

👉 দুরুদ শরীফ কেন পড়ব???

১. আল্লাহ তা'য়ালার হুকুম

কোরআন কারিমে ইরশাদ হয়েছে...

إِنَّ ٱللَّهَ وَمَلَٰٓئِكَتَهُۥ يُصَلُّونَ عَلَى ٱلنَّبِيِّ ۚ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ صَلُّواْ عَلَيۡهِ وَسَلِّمُواْ تَسۡلِيمًا

"আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন, তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং যথাযথ শ্রদ্ধাভরে সালাম জানাও।"(সূরা আহযাব আয়াত ৫৬)

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারী আবুল আলিয়া থেকে কথা বুখারী তে নকল করেছেন

قال أبو الْعَالِيَةِ: صلاَةُ اللَّهِ: ثَنَاؤُهُ عليه عِنْدَ الْمَلاَئِكَةِ، وَصَلاَةُ الْمَلاَئِكَةِ: الدُّعَاءُ
(أورده البخاري، معلقاً، ( ৪/১৮০২)

২. দুরুদ শরীফে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়

فَٱذۡكُرُونِيٓ أَذۡكُرۡكُمۡ وَٱشۡكُرُواْ لِي وَلَا تَكۡفُرُونِ

"কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব এবং আমার শোকর করতে থাক, না-শোকরী করো না।"(সূরা বাকারা আয়াত ১৫২)

আল্লাহ যেভাবে স্মরণ করেন সে ব্যাপারে আরেকটি হাদিস

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلاَ ذَكَرْتُهُ فِي مَلاَ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু' হাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৪০৫)

৩. দুরুদ ও সালামের জবাব রাসূল ﷺ নিজেই দিয়ে থাকেন

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَىَّ إِلاَّ رَدَّ اللَّهُ عَلَىَّ رُوحِي حَتَّى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ আমার উপর সালাম পেশ করলে আল্লাহ আমার ‘রূহ’ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের জবাব দেই।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২০৪১)

আরেকটি হাদিস

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْأَنْبِيَاءُ أَحْيَاءٌ فِي قُبُورِهِمْ يُصَلُّون

'হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত,
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নবীগণ তাদের কবরে জীবিত। তারা সেখানে নামায পড়েন।
(মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৪২৫)

আরেকটি হাদিস

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ قُبُورًا وَلاَ تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا وَصَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ تَبْلُغُنِي حَيْثُ كُنْتُمْ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে ক্ববরস্থানে পরিণত করো না এবং আমার ক্ববরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করো না। তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ করো। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌছানো হবে।
(সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ২০৪২)

৪. যারা দুরুদ পড়ে না তাদের জন্য অভিশাপ রয়েছে

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তার নাক ভূলুন্ঠিত হোক যার কাছে আমার নাম উল্লেখিত হল, কিন্ত সে আমার উপর দরূদ পাঠ করেনি। ভুলুন্ঠিত হোক তার নাক যার নিকট রমযান মাস এলো অথচ তার গুনাহ্‌ মাফ হয়ে যাওয়ার পূর্বেই তা পার হয়ে গেল। আর ভূলুন্ঠিত হোক তার নাক যার নিকট তার বাবা-মা বৃদ্ধে উপনিত হলো, কিন্ত তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করায়নি (সে তাদের সঙ্গে ভাল আচরণ করে জান্নাত অর্জন করেনি)
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৪৫)

৫. পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কৃপণ এর পরিচয়

عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ خَرَجْتُ ذَاتَ يَوْمٍ فَأَتَيْتُ رَسُوْلَ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَبْخَلَ النَّاسِ قَالُوْا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ مَنْ ذُكِرَت عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ فَذَلِكَ أَبْخَلَ النَّاسِ

আবূ যার (রাঃ) বলেন,
একদা আমি বের হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তিনি বললেন, তোমাদেরকে কি বলে দেব না, সবচেয়ে বড় বখীল কে?’’ সকলে বলল, ’অবশ্যই হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ’’যার নিকট আমার নাম উল্লেখ করা হল, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ পড়ল না, সেই হল সব চাইতে বড় বখীল।
(সহীহ তারগীব ১৬৮৪)

৬. দুরুদ শরীফ যারা পড়েনা তারা জান্নাতের রাস্তা ভুলে যায়

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَنْ نَسِيَ الصَّلاةَ عَلَيَّ خَطِئَ طَرِيقَ الْجَنَّةِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর দরূদ পড়তে ভুল করল, সে আসলে বেহেশ্তের পথ ভুল করল।”
(ইবনে মাজাহ ৯০৮, ত্বাবারানী ১২৬৪৮, সহীহ তারগীব ১৬৮২ )

৭. নবীজি ﷺ কে ভালোবাসা মুমিনের পরিচয়

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ প্রকৃত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষন না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৫)

এ প্রসঙ্গক্রমে কাদ্বী আয়াদ্ব (রহ:) এর কথা

قال القاضي عياض: «ومن علامات محبة النبي صلى الله عليه وسلم، كثرة ذكره له، فمن أحب شيئًا أكثر من ذكره»

الشفا (শিফা শরীফ - ৫৭২/২)

৮. যারা বেশি করে দুরুদ শরীফ পাঠ করে তাদের সাথী নবীজি ﷺ হবেন

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَىَّ صَلاَةً ‏"‏ ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি বেশি পরিমাণে দরূদ পাঠ করেছে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৪৮৪)

৯. দুরুদ শরীফ পড়ার গুরুত্বপূর্ণ ফদ্বিলত

عَنْ أَنَسُ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ، وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيئَاتٍ، وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ»

আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন, তাঁর দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তাঁর জন্য দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হবে।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১২৯৭)

আরেকটি হাদিস

أنَّ رسولَ اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم جاء ذاتَ يومٍ والسُّرورُ يُرَى في وجهِه فقالوا: يا رسولَ اللهِ إنَّا لنرَى السُّرورَ في وجهِك فقال: إنَّه أتاني الملَكُ فقال: يا محمَّدُ أمَّا يُرضيكَ أنَّ ربَّك عزَّ وجلَّ يقولُ: إنَّه لا يصلِّي عليك أحدٌ من أمَّتِك إلَّا صلَّيْتُ عليه عشرًا ولا يُسلِّمُ عليك أحدٌ من أمَّتِك إلَّا سلَّمتُ عليه عشرًا؟ قال: بلى.
الراوي : أبو طلحة الأنصاري زيد بن سهل، المصدر : الترغيب والترهيب

১০. দোয়া কবুল হয় দুরুদ শরীফের মাধ্যমে

عَن فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَدْعُو فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ عَجِلَ هَذَا ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ أَوْ لِغَيْرِهِ ‏"‏ إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِتَحْمِيدِ اللَّهِ وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ ثُمَّ لِيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لِيَدْعُ بَعْدُ بِمَا شَاءَ ‏"‏ ‏.‏

ফাযালাহ্‌ ইবনু ‘উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
এক লোককে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নামাযের মাঝে দু’আ করতে শুনলেন, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর সে দরূদ পড়েনি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ ব্যক্তিটি তাড়াহুড়া করেছে। তারপর তিনি তাকে ডাকলেন এবং তাকে বা অপর কাউকে বললেনঃ তোমাদের কেউ নামায আদায় করলে সে যেন আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান করে, তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর দরূদ পাঠ করে, তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দু’আ করে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৭৭)

আরেকটি হাদিস

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ إِنَّ الدُّعَاءَ مَوْقُوفٌ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ لاَ يَصْعَدُ مِنْهُ شَيْءٌ حَتَّى تُصَلِّيَ عَلَى نَبِيِّكَ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, দু’আ আকাশ যমিনের মধ্যবর্তী স্থানে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে, তোমার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি যতক্ষণ তুমি দুরূদ পাঠ না কর ততক্ষণ তার কিছুই উপরে উঠে না।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৪৮৬)

১১. দুরুদ শরীফ এর আমলের মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়

عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَ ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ ‏"‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أُبَىٌّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِي فَقَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ النِّصْفَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلاَتِي كُلَّهَا ‏.‏ قَالَ ‏"‏ إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ ‏.‏

উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাতের দুই-তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে দাঁড়িয়ে বলতেনঃ হে মানবগণ! তোমরা আল্লাহ্‌ তা’আলাকে স্মরণ কর, তোমরা আল্লাহ্‌ তা’আলাকে স্মরণ কর। কম্পন সৃষ্টিকারী প্রথম শিঙ্গাধ্বনি এসে পড়েছে এবং এর পরপর আসবে পরবর্তী শিঙ্গাধ্বনি। মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে, মৃত্যু তার ভয়াবহতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছে। উবাই (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তো খুব অধিক হারে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করি। আপনার প্রতি দরুদ পাঠের জন্য আমি আমার সময়ের কতটুকু খরচ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইছা কর। আমি বললাম, এক-চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়ে অধিক পরিমাণে পাঠ করতে পারলে এতে তোমারই মঙ্গল হবে। আমি বললাম, তাহলে আমি কি অর্ধেক সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ চাও, যদি এর চেয়েও বাড়াতে পারো সেটা তোমার জন্যই কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে দুই-তৃতীয়াংশ সময় দরুদ পাঠ করবো? তিনি বললেন, তুমি যতক্ষণ ইচ্ছা কর, তবে এর চেয়েও বাড়াতে পারলে তোমারই ভাল। আমি বললাম, তাহলে আমার পুরো সময়টাই আপনার দরুদ পাঠে কাটিয়ে দিব? তিনি বললেনঃ তোমার চিন্তা ও কষ্টের জন্য তা যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৪৫৭)

১২. জুমা'য়ার দিনে দুরুদ পড়ার ফদ্বিলত

عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، فِيهِ خُلِقَ آدَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ، وَفِيهِ قُبِضَ، وَفِيهِ النَّفْخَةُ، وَفِيهِ الصَّعْقَةُ، فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلَاةِ، فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ»
قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ، وَقَدْ أَرَمْتَ أَيْ يَقُولُونَ قَدْ بَلِيتَ؟ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ»

আওস ইব্‌ন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের সকল দিনের মধ্যে পরমোৎকৃষ্ট দিন হল জুমু’আর দিন, সে দিন আদম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিল, সে দিনই তাঁর ওফাত হয়, সে দিনই দ্বিতীয় বার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে এবং সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। অতএব, তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পড়। কেননা, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কিভাবে আমাদের দরূদ আপনার কাছে পেশ করা হবে। যেহেতু আপনি (এক সময়) ওফাত পেয়ে যাবেন অর্থাৎ তাঁরা বললেন, আপনার দেহ মাটির সাথে মিশে যাবে। তিনি বললেন, নিশ্চিয় আল্লাহ তা’আলা যমীনের জন্য নবীগণের দেহ গ্রাস করা হারাম করে দিয়েছেন।
(সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ১৩৭৪)

১৩. যারা দুরুদ পড়ে না তারা বিপদগ্রস্ত

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا لَمْ يَذْكُرُوا اللَّهَ فِيهِ وَلَمْ يُصَلُّوا عَلَى نَبِيِّهِمْ إِلاَّ كَانَ عَلَيْهِمْ تِرَةً فَإِنْ شَاءَ عَذَّبَهُمْ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُمْ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে সমস্ত লোক কোন দরবারে বসেছে অথচ তারা আল্লাহ তা‘আলার যিক্‌র করেনি এবং তাদের নাবীর প্রতি দরূদও পড়েনি, তারা বিপদগ্রস্ত ও আশাহত হবে। আল্লাহ তা‘আলা চাইলে তাদেরকে শাস্তিও দিতে পারেন কিংবা মাফও করতে পারেন।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮০)

👉 পরিচিত একটি দুরুদ

১৪. হাদীস শরীফে বর্ণিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দুরুদ শরীফ
(এছাড়া আরও অনেক দুরুদ শরীফ রয়েছে, যার যেটা পছন্দ সেটা দিয়ে আমল করতে পারেন)

عَنْ سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ فَقَالَ أَلاَ أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُهَا مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ بَلَى، فَأَهْدِهَا لِي‏.‏ فَقَالَ سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ الصَّلاَةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ‏.‏ قَالَ ‏ "‏ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ‏"‏‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরুদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (‘আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (‘আঃ) এবং ইবরাহীম (‘আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৩৭০)

👉 যখন দুরুদ শরীফ পড়া বেশি উত্তম।

১৫. মোয়াজ্জিন সাহেব যখন আজান শেষ করবেন...

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلاَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ ‏"‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্‌র ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ তোমরা যখন মুওয়ায্‌যিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ্‌ প্রার্থনা কর। কেননা, ‘ওয়াসীলাহ্‌’ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওয়াসীলাহ্‌ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফা’আত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৩৫)

১৬. মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার সময়

عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ، ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَقُولُ ‏"‏ بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ‏"‏ ‏.‏ وَإِذَا خَرَجَ قَالَ ‏"‏ بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ ‏"‏ ‏.‏

ফাতিমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে প্রবেশকালে বলতেনঃ “আল্লাহর নামে (প্রবেশ) এবং আল্লাহর রসূলকে সালাম। হে আল্লাহ ! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার দয়ার দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন”। তিনি (মসজিদ থেকে) বের হওয়ার সময় বলতেনঃ “আল্লাহর নামে (প্রস্থান) এবং সালাম আল্লাহর রসূলকে। হে আল্লাহ! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার অনুগ্রহের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন।”
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৭৭১)

আল্লাহ পাক আমাদেরকে দরুদ শরীফের মত পবিত্র আমল নিয়মিত করার তৌফিক দান করুক।
আমিন।

জুম'য়ার আলোচনা(সফর মাসের তৃতীয় জুম'য়া)বিষয়: জিকির করার গুরুত্ব ও ফদ্বিলত।মোঃ খলিলুর রহমান খাদিমানী ।ভূমিকা:-تعريف ال...
16/09/2022

জুম'য়ার আলোচনা
(সফর মাসের তৃতীয় জুম'য়া)
বিষয়: জিকির করার গুরুত্ব ও ফদ্বিলত।

মোঃ খলিলুর রহমান খাদিমানী ।

ভূমিকা:-

تعريف الذكر

الذكر هو لفظ عربية ، معناها اللغة هو التذكر. في اصطلاح الشريعة ، الذكر هو ذكر الله بعبادته في كل حال.

জিকিরের পরিচয়

জিকির শব্দটি আরবি, এর শাব্দিক অর্থ স্মরণ করা, পরিভাষা ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করা কে জিকির বলে।

তবে সর্বশ্রেষ্ঠ একটি জিকির রয়েছে তা হল, রাসূল ﷺ এর হাদিস

قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، رضى الله عنهما يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ أَفْضَلُ الذِّكْرِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ الْحَمْدُ لِلَّهِ ‏"‏ ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি : “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” অতি উত্তম যিক্‌র এবং “আলাহামদু লিল্লাহ্‌” অধিক উত্তম দু‘আ।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৮৩)

জিকির প্রসঙ্গে কোরআন শরীফে আল্লাহ তা'আলা বলেন....

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوا اللّٰہَ ذِکۡرًا کَثِیۡرًا ۙ وَّسَبِّحُوۡہُ بُکۡرَۃً وَّاَصِیۡلًا

"হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।"
(আহ্‌যাব আয়াত- ৪১.৪২)

উপরে উল্লেখিত প্রসঙ্গে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত...

١. یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا لَقِیۡتُمۡ فِئَۃً فَاثۡبُتُوۡا وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

"হে মুমিনগণ, যখন তোমরা কোন দলের মুখোমুখি হও, তখন অবিচল থাক, আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফল হও।"
(সূরা আনফাল আয়াত ৪৫)

٢. وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّ خِیۡفَۃً وَّ دُوۡنَ الۡجَهۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ وَ لَا تَکُنۡ مِّنَ الۡغٰفِلِیۡنَ

"আর তুমি নিজ মনে আপন রবকে স্মরণ কর সকাল-সন্ধ্যায় অনুনয়-বিনয় ও ভীতি সহকারে এবং অনুচ্চ স্বরে। আর গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।"
(সূরা আরাফ আয়াত ২০৫)

٣. وَٱلذَّٰكِرِينَ ٱللَّهَ كَثِيرًا وَٱلذَّٰكِرَٰتِ أَعَدَّ ٱللَّهُ لَهُم مَّغۡفِرَةً وَأَجۡرًا عَظِيمًا

"আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী নারী- আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।"
(সূরা আহযাব এর ৩৫ নং আয়াতের কিছু অংশ)

কোরআন ও হাদিসের আলোকে জিকিরের গুরুত্ব ও ফদ্বিলত
(মূল আলোচনা)

আল্লাহ তায়ালা বলেন...

١. ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِ ۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ

"তারাই ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমেই দিলের সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করা যায়।"

٢. وَ لَذِکۡرُ اللّٰهِ اَکۡبَرُ ؕ وَ اللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ

"আর আল্লাহর স্মরণই তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর।"
(সূরা আনকাবুত ৪৫ নং আয়াতের কিছু অংশ)

হাদিসের আলোকে জিকিরের কয়েকটি ফদ্বিলত...

٣. عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، رضى الله عنه أَنَّ رَجُلاً، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ شَرَائِعَ الإِسْلاَمِ قَدْ كَثُرَتْ عَلَىَّ فَأَخْبِرْنِي بِشَيْءٍ أَتَشَبَّثُ بِهِ ‏.‏ قَالَ ‏ "‏ لاَ يَزَالُ لِسَانُكَ رَطْبًا مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ ‏"‏ ‏.‏

আবদুল্লাহ্ ইবনু বুস্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
এ লোক বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার জন্য ইসলামের শারী‘আতের বিষয়াদি অতিরিক্ত হয়ে গেছে। সুতরাং আমাকে এমন একটি বিষয় জানান, যা আমি শক্তভাবে আঁকড়ে থাকতে পারি। তিনি বললেনঃ সর্বদা তোমার জিহ্বা যেন আল্লাহ তা‘আলার যিকিরের দ্বারা সিক্ত থাকে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৫)

٤. عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ أَىُّ الْعِبَادِ أَفْضَلُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ ‏"‏ الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتُ ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمِنَ الْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ لَوْ ضَرَبَ بِسَيْفِهِ فِي الْكُفَّارِ وَالْمُشْرِكِينَ حَتَّى يَنْكَسِرَ وَيَخْتَضِبَ دَمًا لَكَانَ الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا أَفْضَلَ مِنْهُ دَرَجَةً ‏"‏ ‏.‏

আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে প্রশ্ন করা হল, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্‌ তা‘আলার নিকট বান্দাদের মধ্যে কে মর্যাদায় সর্বোত্তম হবে? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলার অধিক পরিমাণে যিকিরকারীগণ। রাবী বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আল্লাহ্‌ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদকারীর চেয়েও অধিক মর্যাদাশালী? তিনি বললেনঃ যদি কেউ নিজের তলোয়ার দিয়ে কাফির ও মুশরিকদের উপর এমনভাবে আঘাত হানে যে, তা ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় এবং নিজেও রক্তাক্ত হয়ে যায়, তবে অধিক পরিমাণে আল্লাহ্‌ তা‘আলার যিকিরকারী বান্দাগণ মর্যাদায় তার চেয়েও উত্তম।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৬)

٥. عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيكِكُمْ وَأَرْفَعِهَا فِي دَرَجَاتِكُمْ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذَّهَبِ وَالْوَرِقِ وَخَيْرٌ لَكُمْ مِنْ أَنْ تَلْقَوْا عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا بَلَى ‏.‏ قَالَ ‏"‏ ذِكْرُ اللَّهِ تَعَالَى ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رضى الله عنه مَا شَيْءٌ أَنْجَى مِنْ عَذَابِ اللَّهِ مِنْ ذِكْرِ اللَّهِ ‏.‏

আবুদ্‌ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে কি তোমাদের অধিক উত্তম কাজ প্রসঙ্গে জানাব না, যা তোমাদের মনিবের নিকট সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের সম্মানের দিক হতে সবচেয়ে উঁচু, স্বর্ণ ও রৌপ্য দান-খাইরাত করার চেয়েও বেশি ভাল এবং তোমাদের শত্রুর মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে তাদেরকে তোমাদের সংহার করা ও তোমাদেরকে তাদের সংহার করার চাইতেও ভাল? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলার যিক্‌র। মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার শাস্তি হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলার যিক্‌রের তুলনায় অগ্রগণ্য কোন জিনিস নেই।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৩৭৭)

٦. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسِيرُ فِي طَرِيقِ مَكَّةَ فَمَرَّ عَلَى جَبَلٍ يُقَالُ لَهُ جُمْدَانُ فَقَالَ ‏"‏ سِيرُوا هَذَا جُمْدَانُ سَبَقَ الْمُفَرِّدُونَ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا وَمَا الْمُفَرِّدُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ الذَّاكِرُونَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتُ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার পথে চলতে থাকেন। অতঃপর ‘জুমদন’ নামে একটি পর্বতের কাছে গেলেন। এরপর তিনি বললেন, তোমরা এ জমদান পর্বতে সফর করো। ‘মুফার্রিদ’গণ অগ্রগামী হয়েছে। মানুষেরা প্রশ্ন করল, ‘মুফার্রিদ’ কারা! হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)? তিনি বললেন, বেশি বেশি আল্লাহর যিকিরে নিয়োজিত পুরুষ ও নারী।
(সহিহ মুসলিম হাদিস নং ৬৭০১)

٧. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ سَبَقَ الْمُفْرِدُونَ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا وَمَا الْمُفْرِدُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ الْمُسْتَهْتَرُونَ فِي ذِكْرِ اللَّهِ يَضَعُ الذِّكْرُ عَنْهُمْ أَثْقَالَهُمْ فَيَأْتُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِفَافًا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হালকা-পাতলা লোকেরা অগ্রগামী হয়ে গেছে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! হালকা-পাতলা লোক কারা? তিনি বলেনঃ যে সকল লোক আল্লাহ্‌ তা’আলার স্মরণে নিমগ্ন থাকে এবং আল্লাহ্‌র যিকির (স্মরণ) তাদের (পাপের) ভারী বোঝাটি তাদের হতে সরিয়ে ফেলে। ফলে কিয়ামাতের দিন তারা আল্লাহ্‌ তা’আলার সম্মুখে হালকা বোঝা নিয়েই হাযির হবে।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯৬)

٨. عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ تَعَالَى مِنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيلَ وَلأَنْ أَقْعُدَ مَعَ قَوْمٍ يَذْكُرُونَ اللَّهَ مِنْ صَلاَةِ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أُعْتِقَ أَرْبَعَةً ‏"‏ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা ফাজ্‌রের সলাত হতে শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত মহান আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। এ কাজ আমার নিকট ইসমাঈলের (আঃ)-এর বংশের দাসী আযাদ করার চেয়ে অধিক প্রিয়। আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা ‘আসরের সলাত হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। আমার নিকট এ কাজ চারটি দাসী আযাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয়।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬৬৭)

٩. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لله مَلاَئِكَةً يَطُوفُونَ فِي الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللهَ تَنَادَوْا هَلُمُّوا إِلٰى حَاجَتِكُمْ قَالَ فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِمْ إِلٰى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالَ فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ مِنْهُمْ مَا يَقُوْلُ عِبَادِي قَالُوا يَقُوْلُونَ يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ قَالَ فَيَقُوْلُ هَلْ رَأَوْنِي قَالَ فَيَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ مَا رَأَوْكَ قَالَ فَيَقُوْلُ وَكَيْفَ لَوْ رَأَوْنِي قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيدًا وَتَحْمِيدًا وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحًا قَالَ يَقُوْلُ فَمَا يَسْأَلُونِي قَالَ يَسْأَلُونَكَ الْجَنَّةَ قَالَ يَقُوْلُ وَهَلْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُ فَكَيْفَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ أَنَّهُمْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ عَلَيْهَا حِرْصًا وَأَشَدَّ لَهَا طَلَبًا وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً قَالَ فَمِمَّ يَتَعَوَّذُونَ قَالَ يَقُوْلُونَ مِنْ النَّارِ قَالَ يَقُوْلُ وَهَلْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لاَ وَاللهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُ فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا قَالَ يَقُوْلُونَ لَوْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَارًا وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً قَالَ فَيَقُوْلُ فَأُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ قَالَ يَقُوْلُ مَلَكٌ مِنْ الْمَلاَئِكَةِ فِيهِمْ فُلاَنٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إِنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ قَالَ هُمْ الْجُلَسَاءُ لاَ يَشْقٰى بِهِمْ جَلِيسُهُمْ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র একদল ফেরেশতা আছেন, যাঁরা আল্লাহ্‌র যিক্‌রে রত লোকদের খোঁজে পথে পথে ঘুরে বেড়ান। যখন তাঁরা কোথাও আল্লাহ্‌র যিক্‌রে রত লোকদের দেখতে পান, তখন ফেরেশতারা পরস্পরকে ডাক দিয়ে বলেন, তোমারা আপন আপন কাজ করার জন্য এগিয়ে এসো। তখন তাঁরা তাঁদের ডানাগুলো দিয়ে সেই লোকদের ঢেকে ফেলেন নিকটবর্তী আকাশ পর্যন্ত। তখন তাঁদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন (যদিও ফেরেশতাদের চেয়ে তিনিই অধিক জানেন) আমার বান্দারা কী বলছে? তখন তাঁরা বলে, তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, তারা আপনার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিচ্ছে, তারা আপনার গুণগান করছে এবং তারা আপনার মাহাত্ম্য প্রকাশ করছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক, আপনার শপথ! তারা আপনাকে দেখেনি। তিনি বলবেন, আচ্ছা, তবে যদি তারা আমাকে দেখত? তাঁরা বলবেন, যদি তারা আপনাকে দেখত, তবে তারা আরও অধিক পরিমাণে আপনার ‘ইবাদাত করত, আরো অধিক আপনার মাহাত্ম্য ঘোষণা করত, আরো অধিক পরিমানে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করত। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহ্‌ বলবেন, তারা আমার কাছে কি চায়? তাঁরা বলবে, তারা আপনার কাছে জান্নাত চায়। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে? ফেরেশতারা বলবেন, না। আপনার সত্তার কসম! হে রব! তারা তা দেখেনি। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, যদি তারা দেখত তবে তারা কী করত? তাঁরা বলবে, যদি তারা তা দেখত তাহলে তারা জান্নাতের আরো অধিক লোভ করত, আরো বেশি চাইত এবং এর জন্য আরো বেশি বেশি আকৃষ্ট হত। আল্লাহ্‌ তা’’আলা জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি থেকে আল্লাহ্‌র আশ্রয় চায়? ফেরেশতাগণ বলবেন, জাহান্নাম থেকে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? তাঁরা জবাব দেবে, আল্লাহ্‌র কসম! হে প্রতিপালক! তারা জাহান্নাম দেখেনি। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, যদি তারা তা দেখত তখন তাদের কী হত? তাঁরা বলবে, যদি তারা তা দেখত, তাহলে তারা তাত্থেকে দ্রুত পালিয়ে যেত এবং একে অত্যন্ত বেশি ভয় করত। তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা বলবেন, আমি তোমাদের সাক্ষী রাখছি, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম। তখন ফেরেশতাদের একজন বলবে, তাঁদের মধ্যে অমুক ব্যক্তি আছে, যে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং সে কোন প্রয়োজনে এসেছে। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলবেন, তারা এমন উপবেশনকারী যাদের মাজলিসে উপবেশনকারী বিমুখ হয় না।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪০৮)

١٠. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا قَالَ عَبْدٌ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ قَطُّ مُخْلِصًا إِلاَّ فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ السَّمَاءِ حَتَّى تُفْضِيَ إِلَى الْعَرْشِ مَا اجْتَنَبَ الْكَبَائِرَ ‏"‏ ‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন বান্দা সততার সাথে “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” বললে তার জন্য আকাশের দ্বারগুলো খোলা হয়। ফলে উক্ত কালিমাহ আরশে আজীম পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যতক্ষণ সে কবীরাহ গুনাহ ত্যাগ করে”।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯০)

١١. عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رضى الله عنهما قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَنِ الْقَائِلُ كَذَا وَكَذَا ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ عَجِبْتُ لَهَا فُتِحَتْ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ عُمَرَ مَا تَرَكْتُهُنَّ مُنْذُ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে নামায পড়ছিলাম। সে সময় সমাগত লোকদের মাঝে হতে এক লোক বলল, “আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহ তা’আলার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি”। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এই এই কথা কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মাঝে এক লোক বলল, আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ এ দু’আয় আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আমি এ কথা শুনার পর থেকে কখনো তা পাঠ করা পরিহার করিনি।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৫৯২)

١٢. عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ تَامَّةٍ تَامَّةٍ تَامَّةٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ ‏.‏ قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ أَبِي ظِلاَلٍ فَقَالَ هُوَ مُقَارِبُ الْحَدِيثِ ‏.‏ قَالَ مُحَمَّدٌ وَاسْمُهُ هِلاَلٌ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামা’আতে আদায় করে, তারপর সূর্য উঠা পর্যন্ত বসে বসে আল্লাহ তা’আলার যিকর করে, তারপর দুই রাক’আত নামায আদায় করে- তার জন্য একটি হাজ্জ ও একটি উমরার সাওয়াব রয়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ণ, পূর্ণ, পূর্ণ (হাজ্জ ও উমরার সাওয়াব)।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৫৮৬)

١٣. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ‏.‏ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ‏"‏‏.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে দিন আল্লাহ্‌র (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দিবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, ৪. সে দু’ ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহ্‌র জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহ্‌র জন্য, ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহবান জানায়, কিন্তু সে এ বলে প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’, ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর যিক্‌র করে, ফলে তার দু’ চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৬০)

١٤. عَنْ أَبِي مُوسٰى قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَثَلُ الَّذِي يَذْكُرُ رَبَّه“ وَالَّذِي لاَ يَذْكُرُ رَبَّه“ مَثَلُ الْحَيِّ وَالْمَيِّتِ.

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে তার প্রতিপালকের যিক্‌র করে, আর যে যিক্‌র করে না, তাদের উপমা হলো জীবিত ও মৃত ব্যক্তি।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪০৭)

١٥. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلاَ ذَكَرْتُهُ فِي مَلاَ خَيْرٍ مِنْهُمْ وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَيَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ ঘোষণা করেন, আমি সে রকমই, যে রকম বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি বান্দার সঙ্গে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে; আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে জন-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে যাই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু' হাত এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।
(সহিহ বুখারী হাদিস নং ৭৪০৫)

١٦. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَأَبِي، سَعِيدٍ يَشْهَدَانِ بِهِ عَلَى النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ مَا جَلَسَ قَوْمٌ مَجْلِسًا يَذْكُرُونَ اللَّهَ فِيهِ إِلاَّ حَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ وَتَغَشَّتْهُمُ الرَّحْمَةُ وَتَنَزَّلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ وَذَكَرَهُمُ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তারা উভয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি বলেছেনঃ লোকজন কোন মজলিসে সমবেত হয়ে আল্লাহর যিকিরে রত হলে ফেরেশতাগণ তাদের বেষ্টন করে রাখেন, আল্লাহর রহমত তাদের ঢেকে নেয়, তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হতে থাকে এবং আল্লাহ তাঁর ফেরেশতাগণের সামনে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৭৯১)

١٧. عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ أَنَا مَعَ عَبْدِي إِذَا هُوَ ذَكَرَنِي وَتَحَرَّكَتْ بِي شَفَتَاهُ ‏"‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন আমার যিকির করে এবং আমার যিকিরে তার দু’ ঠোঁট নড়াচড়া করে তখন আমি তার সঙ্গে থাকি।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩৭৯২)

١٨. قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ أَلاَ إِنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلاَّ ذِكْرَ اللَّهِ وَمَا وَالاَهُ وَعَالِمًا أَوْ مُتَعَلِّمًا ‏"‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : দুনিয়া ও তার মাঝের সকলকিছুই অভিশপ্ত, কিন্তু আল্লাহ্‌ তা’আলার যিকির ও তার সাথে সংগতিপূর্ণ অন্যান্য আমল, আলিম ও ইলম অন্বেষণকারী এর ব্যতিক্রম।
(জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৩২২)

পরিশেষে, আল্লাহপাক আমাদেরকে তৌফিক দান করুক, যাতে অযথা সময় নষ্ট না করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার জিকিরের মাধ্যমে সময় কাটাতে পারি।
আমিন।

Address

Zakigonj, Sylhet
Sylhet

Telephone

+8801749579168

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Md. Khalilur Rahman Khadimany posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Md. Khalilur Rahman Khadimany:

Share

Category