গল্প লেখক Porshi

গল্প লেখক Porshi যারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন তারা সবাই পেইজটি কে ফলো দিয়ে পাশে থাকবে।

20/12/2023

ফলো করে পাশে থাকবে

 #আফিম_বড্ড_নেশালোপর্বঃ০২লেখিকাঃমাহযাবীন-ঠিক আছে খেয়ো না।এখানেই থাকতে চাইছো?গত রাতে আমার ঠোঁটের মায়ায় পড়ে গিয়েছো বোধহয়! ...
18/12/2023

#আফিম_বড্ড_নেশালো
পর্বঃ০২
লেখিকাঃমাহযাবীন

-ঠিক আছে খেয়ো না।এখানেই থাকতে চাইছো?গত রাতে আমার ঠোঁটের মায়ায় পড়ে গিয়েছো বোধহয়!
ঠোঁটে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে কথাগুলো বলতে বলতেই নাফিয়ার দিকে এগিয়ে যায় আফিম।আফিমকে নিজের কাছে আসতে দেখে নাফিয়া বলে ওঠে,
-খেয়ে নিচ্ছি আমি।
বলেই সোফায় বসে যেই খাবারে হাত দিতে যাবে ওমনি আফিম বলে ওঠে,
-ইডিয়ট!এট ফার্স্ট ব্রাশ ইউর টিথ এন্ড ওয়াশ ইউর হ্যান্ডস।
আফিমের কথায় ঠোঁট উল্টে ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হয় নাফিয়া।ওয়াশরুমে ঢুকেই সে মনে মনে বলে ওঠে,
"নিজের ফালতু কথায় আমার মাথা নষ্ট করে আবার নিজেই আমায় এভাবে অপমান করলো।কি ভাবে নিজেকে?কোনো মহাপুরুষ নাকি দুনিয়ার সবথেকে পরিষ্কার ব্যক্তি?হুহ্!"
হাত-মুখ ধুয়ে সোফায় বসে নিজের খাবার শেষ করে নিলো নাফিয়া।আড়চোখে নাফিয়ার কার্যকলাপ বেশ ভালোভাবেই পর্যবেক্ষণ করছে আফিম।খাওয়া শেষ হতেই নাফিয়া আর দেরি করতে চায় না।আড়চোখে একবার তাকায় আফিমের দিকে।আফিম বিছানায় বসে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু একটা করছে।গত রাত হতে এই পর্যন্ত আফিমের আচরণে নাফিয়া ওকে ঘৃণাই করে।তাই আফিমের সাথে কোনো কথা বলার বিন্দু পরিমাণ ইচ্ছে নেই নাফিয়ার।তাই সে আফিমকে কিছু না বলেই নিজের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে কক্ষ হতে বেরোতেই যাবে ওমনি আফিম বলে ওঠে,
-হেই মরন![Moron=বোকা/হাবা]
আফিমের এই ডাকে ভিষণ রেগে যায় নাফিয়া।সে রেগে আফিমের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে,
-আমার একটি সুন্দর নাম আছে,"নাফিয়া"।
-আচ্ছা তাই!তাহলে "মরন" বলে ডাকাতে তুমি সারা দিলে কেনো?এতে এটাই প্রমাণ হয় যে তুমি স্বীকার করেছো তুমি "মরন"।(বাঁকা হেসে বলে আফিম)
আফিমের কথায় যেমন রাগ হচ্ছে নাফিয়ার ঠিক তেমন নিজের বোকামোর জন্যেও।তাকে এই ডাকে সাড়া দিতে বলেছিলো কে!
নাফিয়া আর কিছু না বলে আবারও দরজার দিকে অগ্রসর হতেই আফিম বলে ওঠে,
-কথা শেষ হয়নি আমার।এক পাও আগাবার দুঃসাহস করবে না।
দাঁড়িয়ে যায় নাফিয়া।নিজের ভেতর ভিষণ ভয় অনুভব করছে সে।আফিম কি আদৌও তাকে যেতে দিবে?
-এদিকে এসো।(আফিম)
একরাশ ভয় নিয়ে আফিয়া ধীরে ধীরে এক পা এক পা এগিয়ে আফিমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
আফিম বলে ওঠে,
-যেতে দিচ্ছি বলে ভেবো না ছেড়ে দিচ্ছি।আফিম ইবনানকে থাপ্পড় মারার মতো ভয়ানক দুঃসাহস করেছো তুমি এবং এর ভয়ংকর পরিনতির জন্যে প্রস্তুত থেকো।(স্বাভাবিক ও শান্ত স্বরে কথাগুলো বললেও এর পেছনে আফিমের ভয়ংকর রাগ ঠিকই আঁচ করতে পারছে নাফিয়া।)
কথা শেষ হবার পরও নাফিয়াকে হাবলার মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আফিম বলে ওঠে,
-জাস্ট গেট লোস্ট ফ্রম মাই রুম,ইডিয়ট।
আফিমের উচ্চস্বর শুনে ভয়ে কেঁপে ওঠে নাফিয়া।সে আর এক মুহূর্তও দেরি না করে দ্রুত পদে আফিমের রুম ত্যাগ করে।

!!
বাড়িতে পৌঁছিয়ে দরজায় কড়া নাড়তে সময় লাগলে ও নাফিয়ার মা নয়না বেগমের দরজা খুলতে সময় লাগলো না।মেয়ের অপেক্ষায় যেনো সে দরজার ধারেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।নাফিয়াকে দেখে তিনি কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকে কিচ্ছুটি না বলেই মেয়ের গালে একটি চর বসিয়ে দেন।নাফিয়া এতে বিন্দু পরিমাণ অবাক নয়।সে গালে হাত দিয়ে মেঝেতে তাকিয়েই বলে ওঠে,
-স্যরি আম্মু।জানি সারা রাত অনেক টেনশন করেছ।কিন্তু কি করবো!রাতে ফোনে টাকা ছিলো না তাই তুবার বাসায় যাওয়ার আগে তোমাদের কেউকে জানাতে পারিনি আর ওখানে যেতেই আন্টির সে কি আপ্যায়ন!সব শেষে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।তোমাদের কারো কল রাতে ঘুমের জন্যে টের পাইনি তাই রিসিভ ও করতে পারিনি।সকালে ফোনে টাকা ঢুকিয়েই তোমাকে ম্যাসেজ করেছিলাম যে,আমি ঠিক আছি।
-তুবার ফোন ছিলো না?ওর বাসার অন্য কারো ফোনও কি ছিলো না?কোনোভাবেই আমাদের জানানো যেতো না?আমাদের এখানে এভাবে টেনশনে ডুবিয়ে রেখে তুই ওখানে শান্তিতে ঘুমোচ্ছিলি?(নয়না বেগমের চোখে জল এবং কন্ঠে একরাশ অভিমান)
-স্যরি মা!জানোই তো কত পরিশ্রম করতে হয় সারাটি দিন আমায়।ওদের বাসায় যেয়ে এতোটাই ক্লান্ত ছিলাম যে মাথায় কিচ্ছুটি আসেনি।ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।কাজটি সত্যিই অন্যায় করেছি। মাফ করে দেও।
নয়না বেগম উত্তরে কিছু না বলে চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের কক্ষের দিকে এগিয়ে যান।ভিষণ অভিমান জমেছে তার নিজের মেয়ের প্রতি।নাফিয়া বেশ বুঝতে পারছে তার মায়ের অভিমান অল্পতে কমবে না।সে বাসায় ঢুকে নিজের কক্ষে আসতেই দেখে তার ছোট বোন অবনী মুখ গোমড়া করে বসে আছে।বোরকা টা খুলে বিছানায় ফেলে আলমারি থেকে কাপড় বের করতে করতে অবনীকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
-কিরে দেখিস নাই আমি আসছি?
উত্তর না পেয়ে নাফিয়া আবারও বলে ওঠে,
-বাহ!বড় বোন যে গত রাতে বাড়ি ফেরেনি সে খবর আছে?
-এসেছ কেনো?যেখানে ছিলে সেখানেই থাকতে।
-আচ্ছা চলে যাবো।(মন খারাপের নাটক করে বলে ওঠে নাফিয়া)
অবনী নাফিয়ার কথা শুনে পেছন ফিরে তাকায় তার দিকে।অবনীর দিকে তাকাতেই নাফিয়া দেখে মেয়েটা কাঁদছে।নাফিয়া দ্রুত পদে বোনের কাছে যেয়ে বলে ওঠে,
-কাঁদছিস কেনো?
-তুমি জানো গত রাতে আমরা সবাই কতোটা চিন্তায় ভুগেছি!মা-বাবা,আমি সারা রাত ঘুমাইনি।বাবা তো চেয়েছিলেন সকালেই থানায় যাবেন আর আম্মু তো কেঁদে অস্থির। আমি তোমার সব ফ্রেন্ডদের কল দিয়েছি তাদের মধ্যে শুধু তুবা আপু এবং অরিন আপু কল ধরেনি।
-আচ্ছা স্যরি।
বলেই নিজের ছোট বোনকে বুকে জরিয়ে নেয় নাফিয়া এবং মনে মনে বলে ওঠে,
"ভাগ্যিস তুবা কল ধরেনি।"

!!
নাফিয়া নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পর পরই আফিমও রওয়ানা হয় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে।বাড়িতে পৌঁছিয়ে নিজের রুমের দিকে যাওয়ার সময় আফিমের মা সানিয়া বেগম তাকে দেখে বলে ওঠে,
-আফিম,সারা রাত কোথায় ছিলে?
-বাংলোতে মম।
-কেনো?
-এমনিই।
-এমনিই মানে কি?এভাবে না জানিয়ে হটাৎ বাংলোতে কেনো গেলে?
-ওহহো বউমা!আমার পোতাকে এতো প্রশ্ন কেনো করছো যেনো সে কোনো ক্রিমিনাল?(আফিমের দাদী)
-আম্মা ছোটবেলা থেকে ওকে এভাবেই আদর দিয়ে বাঁদর বানাচ্ছেন।
-খবরদার আমার পোতাকে নিয়ে একটিও বাজে বকবে না।যাও ওর জন্য খাবার প্রস্তুত করো।
সানিয়া বেগম শাশুড়ির আদেশে রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেলেন।মায়ের প্রশ্নের ভান্ডার থেকে রেহাই পেয়ে আফিম খুশিতে তার দাদীকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে,
-লাভ ইউউউউ।
-লাভ ইউ ঠু।(আলতো হেসে)
-তোমার শরীর কেমন এখন?
-মোটামোটি।তোর বাবা বললো আমার পরিচর্যা, দেখা-শোনার জন্যে একজন লোক রাখবে।
-বাহ!কোনো লোক ঠিক করেছে?
-এখন অব্দি না।
কথাটি শোনা মাত্র বাঁকা হাসে আফিম।কিছু একটা ভেবে সে তার দাদীর গালে চুমু বসিয়ে তার থেকে বিদায় নিয়ে নিজ কক্ষে প্রবেশ করে।তার মুঠোফোন টি বের করে তাতে একটি নাম্বার ডায়াল করে কানে ধরে,
-আসসালামু আলাইকুম স্যার।(ফোনের ওপাশের ব্যক্তি)
-তোমায় গত রাতে একজনের ডিটেইলস জেনে আমায় জানাতে বলেছিলাম!
-জ্বি স্যার।মোটামুটি জেনেছি কিন্তু পুরোপুরি সবটা এখনো জানতে পারিনি।
-ইউ পিপল আর সাচ্ আ লুজার!ডু ইউর ওয়ার্ক অন টাইম আদারওয়াইজ ইউ অল উইল লস ইউর জব।
-স্যরি স্যার।
-আই হেইট স্যরি!
-আজ রাতের মধ্যেই সব ডিটেইলস রেডি করে ফেলবো স্যার।
-ফাইন।মেয়েটি কি মধ্যবিত্ত?
-জ্বি স্যার।সেই সাথে তাদের একটি বড় ঋণ নেওয়া আছে।
-কিসের ঋণ?
-তা এখনো জানতে পারিনি স্যার।
কথা শোনা মাত্রই রাগ উঠে যায় আফিমের কিন্তু কোনো মতে সে রাগ চেপে বলে ওঠে,
-বাবা দাদীর জন্যে একজন কেয়ার টেকার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।আই হোপ ইউ নো,হোয়াট ইউ হেভ টু ডু নাও।
-জ্বি স্যার জানি।
ঠোঁটে বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে ফোনটি কেটে দেয় আফিম।

চলবে।

[সত্যি বলতে আমি আশা করিনি আমার গল্প এতো গুলো মানুষের পছন্দ হবে।আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।জানি না গল্প টা শেষ অব্দি সবার হৃদয়ে জায়গা করে রাখতে পারবে কি না তবে আমি চেষ্টায় কমতি রাখবো না।ধন্যবাদ আমার সকল পাঠকদের।]

 #আফিম_বড্ড_নেশা -এক রাতের দাম কত? কালো শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত এক সুদর্শন যুবক নাফিয়াকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলে ওঠে...
17/12/2023

#আফিম_বড্ড_নেশা

-এক রাতের দাম কত?
কালো শার্ট ও জিন্স প্যান্ট পরিহিত এক সুদর্শন যুবক নাফিয়াকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলে ওঠে।
খুব ঝড় হচ্ছে।পুরো রাস্তা জনমানবশূন্য।এই শূন্য রাস্তায় ঝড় উপেক্ষা করে নিজ বাড়ির পথে অগ্রসর হচ্ছে নাফিয়া।হটাৎ একটা কালো গাড়ি এসে থামে তার সামনে এবং গাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে একজন পুরুষ যাকে ল্যাম্পপোস্টের আলোতে দেখে সুদর্শনই মনে হচ্ছে। কিন্তু যুবকটির করা প্রশ্ন নাফিয়ার কানে আসতেই নাফিয়ার কান গরম হয়ে গেলো।কিন্তু এমন ফাঁকা রাস্তায় ছেলেটির সাথে কোনো ধরনের ঝামেলা করা টা নিজের জন্যই কবর খোদার সমান মনে হচ্ছে নাফিয়ার।তাই সে কন্ঠ স্বাভাবিক রেখে বলে ওঠে,
-আসসালামু আলাইকুম।আপনি আমাকে ভুল ভাবছেন।আমি এক রাতের জন্য কেনা কোনো পণ্য নই।
বলেই যেই নাফিয়া স্থান ত্যাগ করতে যায় ওমনি যুবকটি নাফিয়ার হাত ধরে ফেলে এবং বলে ওঠে,
-এতো রাতে হাইওয়েতে বোরকা পরিহিত কোনো ভালো মেয়ে রাস্তায় থাকে না।জীবনে এই প্রথম পতিতার সন্ধানে এলাম বলে আমায় বোকা ভাবছো?
-সীমা অতিক্রম করছেন আপনি।হাত ছাড়ুন আমার!
-পতিতা হয়েও এতো ভাব কেনো?বেশি টাকার অন্য কোনো কাস্টোমার আছে বলেই কি আমার সাথে আসতে এতো নকশা?
ব্যাস রাগের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে গেলো নাফিয়ার।ঠাস করে একটি চর বসিয়ে দিলো ছেলেটির গালে।কিন্তু চর বসিয়ে দেবার পর সে বুঝতে পারছে আসলে সে কত বড় ভুল করে বসেছে।ছেলেটি রক্ত চোক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে যেনো এখনই আস্তো চিবিয়ে খেয়ে নিবে।নাফিয়া নিজের ভয়কে লুকাবার চেষ্টায় বলে ওঠে,
-লজ্জা থাকলে এবার আমার হাত টা ছাড়ুন।
এ কথায় যুবক টির রাগ আরো বেড়ে গেলো।সে নাফিয়ার হাত আরো শক্ত করে ধরে নিজের গাড়ির দিকে হাঁটতে আরম্ভ করলো।এদিকে,নাফিয়া অনুভব করছে তার হাত টি বোধহয় ছিঁড়েই যাবে।সে যুবকটিকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু লাভ হলো না।যুবকটি নাফিয়াকে গাড়িতে বসিয়ে সাথে নিজেও বসে গাড়ি স্টার্ট দিতে বললো ড্রাইভারকে।নাফিয়া বারংবার বলে চলছে তাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু ছেলেটি কানে হেডফোন গুঁজে চোখ বুজে আছে।অনেকটা সময় ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করেও যখন লাভ হলো না এবং যুবকটিও চোখ বুজে আছে সেই সুযোগে নাফিয়া নিজের ব্যাগ থেকে ফোন বের করে ফোনের লক খুলতেই যাবে ওমনি ছেলেটি ছো মেরে নাফিয়ার হাত থেকে ফোনটি নিয়ে নেয়।এতে চমকে নাফিয়া যেই যুবকটির দিকে তাকায় যুবকটি বলে ওঠে,
-খবরদার!যদি কোনো চালাকি করার চেষ্টা করো তবে খুব খারাপ হবে।
যুবকটির রক্তবর্ণ চোখ দেখে ভয়ে চুপসে যায় নাফিয়া।স্থির বসে চোখের নোনাজল ফেলতে থাকে।সেদিকে যুবকটি কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে গাড়িতে হেলান দিয়ে বসে আবারও চোখবুঁজে নেয়।তাকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে সে চোখ বুজে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে চলছে।
কিছুটা সময় পার হতেই একটি দোতলা বাংলো বাড়ির সামনে এসে থামে গাড়িটি।জায়গাটি সম্পূর্ণ অচেনা নাফিয়ার।যুবকটি গাড়ি থেকে বেড়িয়ে নাফিয়ার সামনে এসে গাড়ির গেট খুলে নাফিয়ার হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির দিকে এগোতে থাকে।এদিকে নাফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বার বার তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করতে থাকে।কিন্তু যুবকটি যেনো কিছুই শুনছে না।
২য় তলার একটি বেড রুমে নাফিয়াকে এনে এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে দেয় যুবকটি।রাগান্বিত স্বরে চেচিয়ে যুবকটি বলে ওঠে,
-হাও ডেয়ার ইউ?হাও ডেয়ার ইউ টু স্লাপ আফিম ইবনান?ডু ইউ হেভ এনি আইডিয়া হু আই অ্যাম?ইউ হেভ টু পে ফর দিস স্লাপ!
-আমাকে মাফ করে দিন প্লিজ।আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।
-হাহ্।টুডে ইউ ডিড আ বিগেস্ট মিস্টেক ইন ইউর লাইফ।সো ইউ হেভ টু পে বেবজ!
বলেই নিজের শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে আফিম এগিয়ে যেতে থাকে নাফিয়ার কাছে।নাফিয়া একটু একটু করে পেছাতে থাকে।আফিম দেরি না করে বিছানার কাছে যেয়ে নাফিয়ার পা ধরে নিজের কাছে টেনে এনে নাফিয়ার উপর ভর দিয়ে শুয়ে পরে।নাফিয়া চিৎকার করে বলে ওঠে,
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন আমি পতিতা নই।
কিন্তু আফিম এসব কথা কানে না নিয়ে নাফিয়ার নেকাবটি ধরে টান দেয় ফলে তা খুলে যায় এবং আফিমের সামনে ফুটে ওঠে এক মায়াবী চেহারা।যা দেখেই তার দিকে দৃষ্টি আটকে গিয়েছে আফিমের।ভাসা ভাসা চোখ,লাভের উপরের দিকে যেমন শেইপ ঠিক তেমন শেপের ঠোঁট,খাঁড়া নাক,গোলগাল চেহারা সেই সাথে উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং।যেখানে আফিম ব্যস্ত নাফিয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেখানে নাফিয়া কেঁদেই চলছে।কান্নার মাঝে মাঝে নাফিয়া ঠোঁট কামড়ে ধরছে।নাফিয়ার ঠোঁটগুলো আফিমকে খুব করে টানছে।আফিম যেনো একটি ঘোরে চলে গিয়েছে।তার চোখের সামনে শুধু ঠোঁটটিই ভাসছে।ঠোঁট দুটো এই মুহূর্তে ছুঁতে না পারলে যেনো বড্ড ক্ষতি হয়ে যাবে আফিমের।আফিম কোনো কিছু না ভেবেই নাফিয়ার ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয়।প্রায় ৫ মিনিট অতিবাহিত হতেই নাফিয়ার ঠোঁট ছেড়ে মাথা উঠাতেই দেখতে পায় নাফিয়া অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।প্রায় সাথে সাথেই আফিম নাফিয়ার উপর থেকে উঠে পানির জগ এনে নাফিয়ার চোখ-মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।কিন্তু নাফিয়ার জ্ঞান ফেরে না।এতে বেশ ভয় পেয়ে যায় আফিম দ্রুত ডাক্তারকে ফোন করে আসতে বলার পর,সে নাফিয়ার পরিহিত বোরকা ও হিজাবটি খুলে নাফিয়াকে ঠিক করে বিছানায় শুইয়ে দেয়।আধ ঘন্টার একটু পরেই একজন মহিলা ডাক্তার এসে নাফিয়াকে এক্সামিন করে আফিমকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে,
-ভয়ের কিছু নেই।মেয়েটি হয়তো প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিল কোনো কিছুতে সেই সাথে হয়তো সকালের পর সারাদিনে কিছু খায়নি এবং পরিশ্রম করার ফলে দূর্বলতার জন্য অচেতন হয়েছে।সমস্যা নেই,জ্ঞান ফিরলে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার খেলে এবং রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
-ধন্যবাদ ডক্টর।
-ইট’স মাই ডিউটি মিঃআফিম।আজ তবে আসছি।
-ইয়াহ সিওর।
ডাক্তার বিদায় নিতেই আফিম নাফিয়ার কাছে যেয়ে বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নাফিয়ার দিকে।মেয়েটির চেহারায় যেমন মায়া আছে ঠিক তেমনই একটা বাচ্চা বাচ্চা ভাব যেনো সে একদম নিষ্পাপ।আফিম বেশ কিছুটা সময় নাফিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকার পর হটাৎ ওঠে দাঁড়িয়ে কোনো একটি ব্যক্তিকে কল করে বলে ওঠে,
-আই ওয়ান্ট এভরি সিঙ্গেল ডিটেইলস এবাউট দি গার্ল হু ইজ ইন মাই বেডরুম রাইট নাও।
বলেই ফোনটি কেটে দেয় আফিম।কিছুটা সময়ের মাঝেই ফ্রেশ হয়ে এসে নাফিয়ার পাশে শুয়ে পরে সে।চোখ বন্ধ করতেই কেনো যেনো তার অস্থির লাগছে, ঘুমেরও আসার নাম গন্ধ নেই।তার মন চাইছে তার পাশে শুয়ে থাকা নারীকে এক নজর দেখতে।অবাধ্য মনের বাধ্য হয়ে আফিম তার চোখজোড়া মেলে তাকায় সেই মায়াবী চেহারায়।

!!
ঘুম ভাঙতেই আস্তে আস্তে চোখজোড়া মেলে তাকায় নাফিয়া।শরীরে দূর্বলতা বেশ ভালোই অনুভব করছে সে।সকালে উঠেই কালেমা তায়েবা পড়াটা অভ্যেস তার।তাই কালেমা পড়ে উঠে বসতেই এক অপরিচিত রুমে নিজেকে আবিষ্কার করে সে।সাথে সাথেই তার মনে পড়ে যায় গত রাতের ঘটনা গুলো।চটজলদি সে একরাশ ভয় নিয়ে নিজের দিকে তাকায়।অতঃপর দেখে তার কাপড় ঠিকই আছে এবং শরীর কোনো পরিবর্তন বা ব্যথা নেই।এতে কিছু টা শান্ত হলো নাফিয়া এবং মনে মনে বলতে আরম্ভ করলো,
"জানোয়াররা তো মৃত দেহের লোভ ও নিয়ত্রণ করতে পারে না।আর এই জানোয়ার সামান্য আমার অজ্ঞান হওয়াতে আমায় ছেড়ে দিলো?"
ঠিক এমন সময় কক্ষে প্রবেশ করে আফিম।চেহারায় রাগী ভাব আর কন্ঠে বিরক্তি নিয়ে সে ডেকে ওঠে,
"মজনু"
নিচ থেকে আওয়াজ এলো,
"আইতাছি স্যার"
আর না দাঁড়িয়ে আফিম টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।জগিং এর ফলে সারা শরীর ঘর্মান্তক তার।
এতোটা সময় সব কিছুই নিরবে দেখে গেলো নাফিয়া।আফিম ওয়াশরুমে যেতেই সে মনে মনে বলে ওঠে,
"কি ভাব,অসহ্য"
কথাটি শেষ করতেই হটাৎ তার মনে পরে তার শরীরে তার বোরকা নেই।চটজলদি সে নিজের আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিজের বোরকা খুঁজতে আরম্ভ করে।বেশি বেগ পেতে হলো না তার।বেডের সামনের সোফাটাতেই তার বোরকা টা পরে আছে।নাফিয়া জলদি উঠে তার বোরকা টা পরে নেয়।ঠিক তখনি কক্ষের দরজায় টোকা পরার আওয়াজ হয়।নেকাব টা পরে নিয়ে নাফিয়া বলে ওঠে,
"আসতে পারেন"
-মেডাম আফনের খাওন।
-আমি খাবো না।নিয়ে যেতে পারেন।
-স্যারের ওর্ডার মেডাম।আফনের খাওনই লাগবো।আর ডাক্তার কইছে আফনের শরীর দূর্বল,ভালো ভালো খাইতে হইবো।
-ডাক্তার?
-জ্বে।কাল আফনের জ্ঞান যাওনের পর স্যার ডাক্তার ডাকছেলো।
-ওহ আচ্ছা।
কথাটি বলেই নাফিয়া ভাবতে আরম্ভ করলো,
"সামান্য অচেতন হওয়ায় সেই রাতে ডাক্তার ডেকেছিলো!কিন্তু কেনো?একটা দেহ লোভী জানোয়ারের দ্বারা এটা আমার কাম্য ছিলো না।"
-এইখানে খাওন রাখলাম মেডাম।
-বললাম তো খাবো না।নিয়ে যান খাবার।
কথাটি বলার পর পরই নাফিয়া একটি ভারী,গম্ভীর ও শান্ত কন্ঠস্বর শুনতে পেলো।
-এখানেই থাকতে চাইছো তবে?(আফিম)
চোখের ইশারা করতেই মজনু খাবার সোফার সামনের টেবিলে রেখে চলে যায়।
-কি বলতে চাইছেন?
-খাবার পুরোটা খেয়ে নিলে তোমায় ছেড়ে দেওয়া হবে নয়তো এখানেই থাকবে।
-আমার খাওয়া নিয়ে আপনাকে চিন্তা না করলেও হবে।
-শাট আপ ইউ মরন!দয়াকে চিন্তা ভাবছো কি করে?তোমার মতো মেয়ের জন্য আফিম ইবনান চিন্তিত হবে?আর ইউ আউট অফ ইউর মাইন্ড?(বেশ চেচিয়ে কথাগুলো বলে ওঠে আফিম)
ভয়ে ও অপমানবোধে নাফিয়ার চোখে জল চিকচিক করে ওঠে।যা আফিমের চোখে পরতেই আফিম সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নেয় এবং মনে মনে বলে ওঠে,
"ঔ মায়াবী চোখজোড়ায় জল বড্ড বেমানান!"
-আমি খাবো না আমায় যেতে দিন।
-ঠিক আছে খেয়ো না।

চলবে

#আফিম_বড্ড_নেশালো
পর্বঃ০১
লেখিকাঃমাহযাবীন

 #সবদোষ_তোমারবিয়ের পর যদি ছোট ছোট কারণে তুমি কষ্ট পাও, চোখের জল ফেলো তাহলে সবসময় যে তার জন্য তোমার শ্বশুর শাশুড়ি বা স্বা...
17/12/2023

#সবদোষ_তোমার

বিয়ের পর যদি ছোট ছোট কারণে তুমি কষ্ট পাও, চোখের জল ফেলো তাহলে সবসময় যে তার জন্য তোমার শ্বশুর শাশুড়ি বা স্বামী দায়ী হবে সেটা নয়। এগুলোর জন্য আসলে তুমি নিজেই দায়ী। এই যেমন ধরো,

তুমি যদি ভাবো তোমার বাড়ি তে তুমি যেভাবে থাকতে শ্বশুর বাড়িতেও সেই ভাবেই থাকবে, সবসময় তোমাকে অনেক গুরুত্ব দেওয়া হবে এটা তো তোমারই দোষ।
কেউ তো বলেনি শ্বশুর বাড়ি টা তোমার নিজের বাড়ি ।

তোমার করা ছোট ছোট ভুল গুলো কে যদি বড় করে দেখানো হয় আর তাতে যদি তুমি কষ্ট পাও তার দায় তো অন্য কেউ নেবে না।
তুমি বাড়ির বউ, তোমার ভুল করার কোনো অধিকার নেই সেটা তো তোমাকে বুঝতেই হবে ।

তোমার স্বামীর ভুল গুলো যেভাবে ঢাকা দেওয়া হয়, যদি ভাবো তোমার গুলো সেভাবেই ঢাকা দেওয়া হবে সেটাও তোমার দোষ।
সে তাদের নিজের ছেলে, এটা তোমার মনে রাখা দরকার ।

তোমার ননদ অনেক কাজ করে বলে তোমার শাশুড়ি মা যেমন দুঃখ করেন তুমি যদি ভেবে বসে থাকো তুমি অনেক কাজ করলে, তোমার জন্যেও করবেন সেটাও তোমার দোষ।
তুমি তো আর তাদের নিজের মেয়ে না।

তোমার শ্বশুর শাশুড়ি তোমাকে খারাপ কিছু বললেই যদি আশা করো তোমার স্বামী সেটার প্রতিবাদ করবে, সেটাও তোমার দোষ।
কারণ তুমি বাইরের মেয়ে, তোমার জন্যে নিজের বাবা মায়ের কাছে কেনই বা খারাপ হতে যাবে!

তুমি যদি শ্বশুর বাড়িতে আসার সময় বস্তা ভর্তি প্রত্যাশা নিয়ে আসো সেই সব দায় তো তোমার একার। কে বলেছিল এতো প্রত্যাশা রাখতে!

তুমি যদি ভাবো বিয়ে করে এসে নতুন বাড়ি নতুন বাবা মা পাবে, সেটা তোমার সবচেয়ে বড় দোষ।

মা বাবার যে কোনো বিকল্প হয় না আর শ্বশুর বাড়িটা কোনোদিন নিজের বাড়ি হয় না।
সেখানে শুধুই সব মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়া 🙂

*লেখক*গল্প লেখক Porshi

সারা রাত শ্রাবণীর(আমার গার্লফ্রেন্ড) সাথে কথা বলার পর শেষ রাতের দিকে একটু ঘুমিয়েছি। কিন্তু সকাল সকাল দাদী ডাকতে লাগলো।আম...
16/12/2023

সারা রাত শ্রাবণীর(আমার গার্লফ্রেন্ড) সাথে কথা বলার পর শেষ রাতের দিকে একটু ঘুমিয়েছি। কিন্তু সকাল সকাল দাদী ডাকতে লাগলো।আমি ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দাদীকে বললাম,
-- ঐ বুড়ি,, সমস্যা কি তোর?? এত সকাল সকাল ডাকছিস কেন?
দাদী মুখ বাকিয়ে বললো,
~এত বেলা পর্যন্ত ঘুমাস কেন? তোর তো বউ নাই যে সারারাত লুডু খেলেছিস তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারছিস না।

আমি দাদীকে বললাম,
-- দাদী তোমার বাবা যেন কি করতো??
দাদী চেহারাটা মলিন করে বললো,
~ আমার বাপ অন্যের জমি বর্গা দিতো। ইসসস বাপজান আমাদের নিয়ে ভোর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কি যে পরিশ্রম করতো

এইবার আমি দাদীকে বললাম,
~ বুড়ি,তোর বাপ ফকির ছিলো তাই তুই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠিস আর আমার বাপ বড়লোক তাই আমি ১২ টা বাজিয়ে ঘুম থেকে উঠবো। এখন আমার রুম থেকে যা, তা না হলে তোর সাথে লুডু খেলা শুরু করবো..

দাদী আমার কথা শুনে মুখ বাঁকিয়ে ভেংচি দিয়ে চলে গেলো....

ছোটবেলা থেকে আমি দাদীর কাছেই মানুষ হয়েছি। বাবা মা চাকরি করার কারণে আমায় তেমন সময় দিতে পারতো না। দাদী আমাকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে।

দাদীর সাথে আমার সম্পর্কটা টম আর জেরির মত। সারাক্ষণ আমরা একজন আরেকজনের পিছনে লেগে থাকি। আমার বন্ধু বান্ধব মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যায় আমার আর দাদীর ১৮+ কথা বার্তা শুনে।

রাতে দাদীর রুমে ঢুকে দেখি দাদী খাটটা পরিষ্কার করছে। এই খাটে দাদা থাকতো। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি দাদী এইখানে না ঘুমিয়ে নিচে ফ্লোরে ঘুমায়। আমি দাদীকে অনেক বলেছি,
হয় তুমি এই খাটে ঘুমাও না হয় অন্য খাটে। তুমি শুধু শুধু ফ্লোরে ঘুমাও কেন?

দাদী কিছু বলতো না শুধু মুচকি মুচকি হাসতো। তাই আজ দাদীকে খুব চেপে ধরলাম।
দাদীকে বললাম,
-- তোমাকে আজ বলতেই হবে তুমি খাটে ঘুমাও না কেন?

দাদী মুচকি হেসে বললো,
~ তোর দাদা খুব সৌখিন মানুষ ছিলো। তোর দাদা যতদিন বেঁচে ছিলো ততদিন এই খাটে আমার জায়গা হয় নি।
আমি বললাম,
-- দাদী, দাদা তো বেঁচে নেই তাহলে এখন খাটে ঘুমালে সমস্যা কি?
দাদী বললো,
~ তোর দাদা বেঁচে থাকতেই যেহেতু আমার খাটে জায়গা হয় নি তাহলে এখন আর খাটে শুয়ে মায়া বাড়াতে চাই না।

দাদীর কথা শুনে মনে হচ্ছিলো দাদীর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছে। তাই দুষ্টামি করে দাদীকে বললাম,
-- আচ্ছা বুড়ি, দাদা তো তোমাকে খাটেই জায়গা দিতো না তারপরেও তুমি ৩ সন্তানের মা হলে কিভাবে? এজন্যই তো বলি আমার ছোট চাচার চেহারার সাথে আমার ছোট দাদা রহিম মিয়ার এত মিল কেন। বুড়ি তুই তলে তলে টেম্পো চালাতি আর দাদা জানতে চাইলে তুই বলতি হরতাল...

দাদী আমার কথা শুনে রাগে জর্দার কৌটা আমার দিকে ছুড়ে মারলো। আর আমি হাসতে হাসতে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।
|
|

বেলা ১০ টা এখন পর্যন্ত দাদী আমায় ডাকতে আসলো না। আমার ২৫ বছর জীবনে এই প্রথম দাদী আমায় সকালে ডাকে নি। তারমানে দাদীর কিছু হয়েছে। শুয়ে থেকে আমি এইসব কি চিন্তা করছি। এক লাফে বিছানা থেকে উঠে দৌড়ে দাদীর রুমে গেলাম। রুমে গিয়ে দেখি দাদী কান্না করছে। আমি দাদীর কাছে গিয়ে বললাম,
-- দাদী কি হয়েছে তোমার? তুমি কাঁদছো কেন?
আমার কথা শুনে দাদী বললো,
~ কার জন্য আবার, আমার জামাইয়ের জন্য কাঁদি। ঐ বুইড়া জীবিত থাকার সময় আমায় শান্তি দেয় নি আর ম*রে গিয়েও আমায় শান্তি দিচ্ছে না।
আমি অবাক হয়ে দাদীকে বললাম,
-- দাদা আবার তোমায় কি করলো?
দাদী কাঁদতে কাঁদতে বললো,
~মাঝরাতে হঠাৎ করে আমার ঘুমটা ভেঙে যায়। মনে মনে ভাবলাম এইজীবনে তো কোনদিন তোর দাদার এই খাটে তে ঘুমালাম না। আজ না হয় একটু ঘুমায়। খাটে শুয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম জানি না। শেষ রাতের দিকে একটা স্বপ্ন দেখলাম। তোর দাদা এসে আমায় বলছে, "মা*গী ( আগের দিনে গ্রাম বাংলার মানুষ রেগে গিয়ে স্ত্রীকে এই নামে গা*লি দিতো) তোর এত বড় সাহস তুই আমার খাটে ঘুমিয়েছিস।" এই বলে তোর দাদা আমার পিছনে লা*থি মা*রে আর আমি সোজা খাট থেকে গড়িয়ে পড়ি। এখন আমার সারা শরীরে ব্যাথা...

আমি দাদীর কথা শুনে প্রচন্ড হাসতে লাগলাম আর দাদী বলতে লাগলো,
~আমি এই খাট আর আমার কাছে রাখবো না। তুই যেদিন বিয়ে করবি সেদিন তোকে এই খাট আমি উপহার হিসেবে দিয়ে দিবো..
|
|
তার বেশ কয়েকদিন পর আমার আর শ্রাবণীর বিয়ে হলো।
দাদীর ইচ্ছেতেই দাদার খাটের উপর আমাদের বাসর রাত হলো। শুনেছি বাসর রাত মানে মধুর রাত কিন্তু আমার বাসর রাত হয়েছিলো নিমপাতার চেয়েও তেতো।

খাটের উপর শ্রাবণী বসে ছিলো। আমি রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে খাটের উপর বসা মাত্র খাট ভেঙে নিচে পরে গেছি। অনেক পুরাতন খাট। গুনে খেয়ে সব শেষ করে দিয়েছে। এখন যদি সকালে লোকজন দেখে খাট ভাঙা তাহলে কি না কি ভাববে তাছাড়া দাদী কান্না করে পুরো এলাকার মানুষকে জানাবে।

সারারাত আমি আর শ্রাবণী খাট ঠিক করতে করতে কাটিয়ে দিলাম কিন্তু খাট আর ঠিক হলো না। খাট যখন ঠিক করছিলাম তখন শ্রাবণীর কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হচ্ছিলো। ওর কপালে লেগে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখে আমি আবার ওর প্রেমে পড়ে গেলাম। খুব ইচ্ছে করছিলো ওর কপালে আমার আঙুল ছুঁয়ে দিতে। কিন্তু এখন যদি ওকে স্পর্শ করি তাহলে ও আমার মাথা ফাটিয়ে ফেলবে। এমনিতেই ও রাগে লাল হয়ে আছে।
|
|

৩০ মিনিট ধরে দাদী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ডাকছে কিন্তু আমি লজ্জায় দরজা খুলতে পারছি না। খুলবো কি করে খাট তো ভাঙা ঠিক করতে পারি নি।।

অবশেষে দরজা খুললাম। দাদী রুমে ঢুকে খাট দেখে যখনি চিৎকার দিবে তখনি দাদীর মুখ চেপে ধরে বললাম,
-- দাদী, খাট দাদা ভেঙেছে। স্বপ্নে দাদা এসেছিলো। দাদা এসে দেখে আমি আর তোমার নাত বউ খাটে শুয়ে আছি। তখন আমাদের খাট থেকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয় আর রাগে নিজের খাট নিজে ভেঙে ফেলে।

দাদী আমার কথা শুনে অবাক হয়ে বললো,
~ বলেছিলাম না এই বুইড়া ম*রার পরেও আমার পিছন ছাড়ে নি। তুই তো বিশ্বাস করতি না এখন দেখলি তার প্রমাণ...

দাদী মনে হয় আমার কথা বিশ্বাস করেছে। আমি কোন রকমে লজ্জার হাত থেকে বাচলাম তাকিয়ে দেখি শ্রাবণী মাথা নিচু করে মুচকি মুচকি হাসছে...

দাদার_খাট
অদ্ভুত_জগৎ
©️

যারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন,তারা আইডি ফলো করে রাখুন।কথা দিলাম আইডির গল্পগুলা আপনাদের মনছুয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ

আইডি ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন:
👉 গল্প লেখক

ছবিটি ১৯৩৭ সালে চেলসি বনাম চার্লটনের ম্যাচের।ঘন কুয়াশার কারণে রেফারি মাঝপথে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।সবাই ড্রেসিং রুমে ...
03/08/2023

ছবিটি ১৯৩৭ সালে চেলসি বনাম চার্লটনের ম্যাচের।
ঘন কুয়াশার কারণে রেফারি মাঝপথে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন।
সবাই ড্রেসিং রুমে ফিরে যায়। গোলরক্ষক স্যাম বাট্রাম রয়ে যান গোল পাহারায়।কুয়াশা যত বাড়ছে-তার সতর্কতাও তত বেশি বাড়ছে। পেছনে মানুষের কোলাহলে তিনি শুনতে পাননি রেফারির খেলা সমাপ্তির বাঁশী । অনেকক্ষণ পর- মাঠের একজন নিরাপত্তা কর্মী এসে তাঁকে জানায় ম্যাচটি প্রায় পনের মিনিট আগেই শেষ হয়ে গেছে।
স্যাম বাট্রাম বলেন- না এটা হতে পারেনা। আমি বিশ্বাস করিনা। খেলা শেষ হয়ে গেলে বন্ধুরা অবশ্যই আমাকে বলতো। আমাকে মাঠে একা রেখে ওরা চলে যেতোনা। একজন মানুষও কি ছিলোনা-যে আমার খোঁজ করবে। এরপর,সত্যি যখন বুঝলেন-আসলেই খেলা শেষ হয়ে গেছে তখন,স্যাম গভীর এক দুঃখ পেলেন।খেলা শেষ হওয়ার জন্য না। বরং বন্ধুরা যে সত্যিই তাকে না জানিয়ে চলে গেছে সে জন্য। যাদের জন্য তিনিগোল পাহারায় দাঁড়িয়ে ছিলেন- তারা সবাই চলে গেলো। কেউ তার কথা একটিবার মনেও রাখলোনা।
জীবনটাও বুঝি এমনি একখেলার মাঠ। যেখানে সময় দিয়ে, সামর্থ্য দিয়ে যাদের জন্য ডিফেন্ড করে প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়ে সাপোর্ট করে- সামান্য কুয়াশার পরিস্থিতিতে তারাই এভাবে সব কিছু ভুলে চলে যায়।
বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন।
সংগৃহীত।

Address

Sylhet

Telephone

+8801797276058

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গল্প লেখক Porshi posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to গল্প লেখক Porshi:

Share