07/03/2025
এক বোনের লিখা পোস্টটাই কিছুক্ষণ আগে পড়ছিলাম।পড়া শেষ করে টের পেলাম আমার চোখে অটো পানি....পড়ছে!বোনদের উদ্দেশ্যে বলি পোস্টটা বড় হলেও একটু সময় নিয়ে অবশ্যই পড়ুন , বৃথা যাবে না আপুরা ইনশাআল্লাহ।পর্দা ও তওবা করার আগেই মালাকুল মউত যদি চলে আসে তাহলে কি হতে পারে ভাবুন একবার, ভাবুন তো আপুরা?একটু সময় নিয়ে প্লিজ পোস্টটি পড়ুন,এটা আমার অনুরোধ। আল্লাহ যেন সকল বোনদের সঠিক বুঝ আর হেদায়েত দেন।♥
(Copypaste)
নীল রঙের জোশ শাড়িটা কিনেছিলাম, এটা পরেই নতুন কাভার পিকচার দিব বলে। ইউটিউবে এত মেকাপ টিউটোরিয়াল দেখতে দেখতে এখন এক্সপার্ট হয়ে গেছি সাজগোজে, বেশি সাজলামও না, পিকসআর্টে একটু ইফেক্ট দেয়াতেই ছবিটা অনেক এট্রাক্টিভ হয়ে গেল... Yeah, Now I'm looking so beautiful yeppiee...
ক্যাপশন - happiness is a perfect picture
Your photo is uploading
ছবিটা আপলোড হওয়ার পরই মা খেতে ডাকলো.. ছবিটার কথা ভাবতে ভাবতেই ওয়াশরুমে গেলাম মেকাপ তুলে ফ্রেশ হতে। সুন্দর করে সাজলে আয়না দেখেও ভাল্লাগে, এখন কষ্টের কাজ হলো এই সুন্দর মেকাপটা স্পঞ্জ দিয়ে তোলা! এই কাজটাই কষ্টের ও বিরক্তিকর।
এক ফোটা ক্লিঞ্জার বিউটি স্পঞ্জে লাগানোর সময়ই একজন ফেরেশতার মত কেউ আমার সামনে দাঁড়ালো!
কে এই লোক? জ্বীন নাকি? নাকি.........
নাহ, মাত্র ১৯বছর বয়স আমার! কি ভাবছি আমি এসব?
ধুর, ভুল দেখছি নাকি?
আরে এই লোক বলে কি আবার আমাকে?
- 'এই খবিশ দেহের মধ্যে থাকা খবিশ রুহ, বের হ, তৈরি হয়ে যা ভয়ানক শাস্তির জন্য, উত্তপ্ত পানির জন্য, কাটাযুক্ত বিষাক্ত বস্তুর জন্য, সব ভয়ানক শাস্তির জন্য'
আমাকে এটা কেন বলা হলো? আমি কি এখন মরব?
আশ্চর্য আমি কথা বলতে পারছি না ! আমার জবান বন্ধ, আরে আমাকে তওবা করতে দিচ্ছে না কেন?
আমার ভেতর থেকে আমাকে যেন টেনে ফেলা হচ্ছে !
মৃত্যু সুনিশ্চিত জেনে তওবা করলে তওবা গৃহীত হয়না মনে পড়ছে আবছা আবছা! ফিরাউন মারা যাওয়ার সময় আল্লাহকেই রব্ব হিসেবে স্বীকার করেছিল তার তওবা ছিল একদম মৃত্যুরই সময়ে.. কিন্তু তার এই তওবা আল্লাহ কবুল করেন নি!
নানু কুরআন পড়ার সময় শুনেছিলাম! আমার কপালে কি তাহলে ফিরআউনের মত তওবা নেই?
কি করব এখন? ভেবেছিলাম মৃত্যুর আগে তওবা করে নিব, জীবনে কত রকম গুনাহ করে এই ১৯বছর পার করেছি আল্লাহ !!
কত জায়গায় কত পিক রেখে এসেছি নিজের, ছোটবেলার কাজা নামাজগুলো পড়া হয়নি, হ্যা গত রমজানের ভাঙতি রোজাও তো বাকি আছে কাজা করা! ফেসবুক, ইন্সটা আইডিগুলো ডিয়েক্টিভেট করার জন্যও এই ফেরেশতা আমাকে এক মিনিট দিচ্ছে না?
আরে এখনই মরব নাকি আমি? এই কম বয়সে? অসম্ভব!
আশ্চর্য! আযরাইল আলাইহি ওয়া সাল্লাম একা আসেন নি, সাথে করে ৪জন ফেরেশতাদেরকে নিয়ে এসেছেন!
আরে! আমাকে ৪জন ফেরেশতা মারছে কেন?
আমার মুখে আঘাত করছে, পিছনেও আঘাত করছে!!
আম্মু.. বাঁচাও! থামো তোমরা! কেন এভাবে মারছো?
কখনো ফেইল করলেও তো আমার বাবা মা আমাকে মারে নি?
আমাকে মারছো কেন? আমি তো ছোটবেলা থেকে ৫ওয়াক্ত নামাজ পড়েছিলাম, প্রেম করিনি, কই ২-১ জন ছাড়া ছেলে ফ্রেন্ডও ছিল না, ভার্সিটিতে প্রায়ই হিজাব পরে যেতাম, রমজানে রোজা রাখতাম! আমি তো একটা ভদ্র মেয়ে ছিলাম আমার ক্যাম্পাসের!!
ওহ মনে পড়েছে মাঝে মাঝে ঘুরতে গেলে একটু ছবি আপলোড করে ফলোয়ার বানিয়ে রাখা ছেলেদের চোখকে শান্তি দিতাম। এজন্য আমার মৃত্যুর সময় আমাকে এভাবে সংবর্ধনা দেয়া হবে? এত কষ্ট দেয়া হবে? আরে! আমার গলা দিয়ে তো আওয়াজও নের হচ্ছে না! কে তাড়াবে এই ফেরেশতাগুলোকে আমাদের বাসা থেকে, সবাইকে ডাকছি কেউ কথা শুনতে পারছে না কেন?
আমার আত্মাটা বের হতে চাচ্ছে না। কারণ আমি মরতে একদমই প্রস্তুত নই, আমি ভয় পাচ্ছি.. আমার ফেরেশতারা আমার রুহটা টেনে নিচ্ছে ,
প্রত্যেকটি রগে যেন আমার রুহ আটকে আছে, প্রত্যেকটি রগ, মাংস কেটে কেটে রুহটাকে বের করে ফেলছে তারা..
-"ভাইরে... আমি বলছি তো, আমাকে একটু সময় দিন, আমার সবকিছুর জন্য তওবা করতে হবে, ভাই এখন থেকে আমি ঠিক হয়ে যাব, এবার আমি প্রকৃত মুমিন বান্দার মত আচরণ করব! ভাই শুনুন তো??"
আমি আর সহ্য করতে পারলাম না, বাঁচতে পারলাম না
আমার পুরো অস্তিত্ব ভেঙ্গে গেল। এই কষ্ট সারা দুনিয়ার সব কষ্টের থেকে বড় ছিল, অথচ আমি ভয় পাইনি এই কষ্টকে, একে ভোগ করার আগে।
আমার রুহ বের করে ফেলেছে, আমাকে নিয়ে আসমানে চলা শুরু করেছে -
আসমানের দরজার ওপাশের ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করলো - "এটা কে?"
তারা উত্তর দেয় - "এ হচ্ছে এর সন্তান"
তখন আসমানের দরজা খোলা হলো না, আসমানের ফেরশতারা বললো - "এটা তো সেই খবিশ রুহ যেটা খবিশ দেহের মধ্যে ছিল। এটা তো ওই হতভাগ্য রুহ, যেটা হতভাগ্য দেহের মধ্যে ছিল। এর জন্য আসমানের দরজা খোলা যাবে না একে ফেরত পাঠাও"
আমার জন্যে আসমানের দরজা খোলা হলো না, জান্নাতের দরজা খোলা হলো না, আমাকে নিয়ে তারা এখন সেখান থেকে আল্লাহর তৈরি কারাগার 'সিজ্জিনে' নিয়ে আসলো! ৭ম জমিনের এই জায়গাটাতে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিলো ওরা, এখানে এত বিষধর সাপ বিচ্ছু, হ্যা এই তো সেই সাপ যা দুনিয়াতে নিঃশ্বাস ফেললে কখনোই দুনিয়াতে কোন শস্য ফলতো না, আমাকে কি কামড়াবে এরা? প্লিজ না, আমি একবার দুনিয়াতে যাব, এক সেকেন্ডের জন্য আমাকে যেতে দাও, আমার খুব প্রয়োজন একটা সেকেন্ড! আমি সাপের কামড় অনেক ভয় পেতাম.. এখানের একেকটা সাপ তো পৃথিবীর সব সাপের বাপেরও বাবা! আমি আম্মুকে চাই! আম্মু!!
বিষে নীল হয়ে শুয়ে আছি, হাত পা নাড়াতে পারছি না, আমার হাত পা আমার কোন অর্ডার শুনে না, এখানে সবাই আল্লাহর অর্ডারে কাজ করে, আমার কান্নার কোন পাত্তা দেয়না এরা, এরা আমাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে দুই পাশের মাটি একসাথে চাপ দিয়ে আমার পাজরের হাড্ডিগুলো একটা আরেকটার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে। অনেক ব্যথা দিয়েছে.. অনেক...!
এখানেই আমার রুহকে বন্দী রাখা হবে যতক্ষণ না কিয়ামত কায়েম হবে.. আমাকে ততদিন আযাব দেয়া হবে! আমি বাঁচতে চাই.. আমি দুনিয়াতে ফিরতে চাই?
আমার কোন জ্ঞান ছিল না এই সপ্তম জমিনের সবচেয়ে ভয়ংকর কারাগারের আযাব সম্পর্কে!!
সত্যিই আমার কবরটা একটা জাহান্নামের গর্ত, এইতো সেদিন বেঁচে ছিলাম, কোন শাস্তিই দেন নি আল্লাহ আমাকে দুনিয়াতে, নামাজ না পড়ে পর্দা না করেও আল্লাহর দেয়া কোন নিয়ামত থেকেই বঞ্চিত হইনি। কত শান্তি ছিল আমার দুনিয়ার জীবনে। কিন্তু আমি এখন জাহান্নামের একটা গর্তে আছি, ছোট্ট একটা জাহান্নামে আমি আছি এখন..
আমি মনে করতে পারছি হাদিসটি।
ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রাম আইডিতে রেখে আসা ছোট বোনটার তুলে দেয়া আমার এত সুন্দর পিকগুলো আমাকে প্রত্যেকদিন আমার নতুন ঘর- "কবরে"
নতুন নতুন গুনাহ দিচ্ছে, আমি যদি আমার বোনকে মেরে ফেলতে পারতাম এখন.. ও কি বুঝেছে আমি এত তাড়াতাড়ি মরে যাব..
ইশ! কেউ যদি আমার আইডিটা রিপোর্ট করে নষ্ট করে দিত! আমার আযাব থামাচ্ছে না কেন কেউ!
শুধু ছবি নাকি, আমি তো যত নতুন গান শুনেছিলাম, তার সাক্ষীও স্ট্যাটাস দিয়ে রেখে এসেছি...! আমার শেয়ার দেখে তনু না সেদিন ওই ইংলিশ গানটা নামালো?
হ্যা আমি তো সুবাহকে আমার মৃত্যুর ৩দিন আগেও মনে হয় কয়েকটা মুভি দিয়ে এসেছিলাম, ও কি আরো অনেককে মুভিটা দিলো? আমার আযাব থামছে না কেন? ওদের জন্যই, সব দোষ ওদের, একটা মূর্খও জানতো না গুনাহে জারিয়া কাকে বলে.. নতুন নতুন গুনাহ আসছেই আমার কাছে ওদের জন্যই.. ওরা বেঁচে আছে কেন? ওদেরও শাস্তি হওয়া উচিত এখনই।
আমার তুলে দেয়া গ্রুপ পিক সবাই ফেসবুকে আপলোড করেছে, এজন্যও আমার কেন আযাব হবে?
ইশ আমি তো পিকটায় ছিলাম ও না.. শুধু ওদের বেপর্দার কোন প্রতিবাদ না করে পিক তুলে গুনাহ করতে সাহায্য করেছি!
ওদের পাপকাজে সাহায্য করে নিজে কষ্ট পাচ্ছি এখন..
ওরা তো প্রতিদিন ছবি দিয়েই যাচ্ছে, আর আমার কি হয়ে গেল?
শখ করে নবীনবরণ প্রোগ্রামে গান গেয়েছিলাম! ওটাও তো ইউটিউবে আপলোড করেছে বড় ভাইয়ারা, সব ছেলেগুলো রেকর্ড করেছিল! আমার আযাব কি থামবে না ওদের জন্য? আহ! সহ্য হচ্ছে না এত ব্যথা!
আচ্ছা, কোন ছেলেটা যেন আমার সব পিক চুরি করে কয়েকটা ফেইক আইডিতে দিয়েছিল? আইডিগুলো কি এখনো আছে? তখন তো গর্বও হয়েছিল আমার সৌন্দর্যের জন্য ফেইক আইডি ক্রিয়েট হয়..
কিন্তু এখন ওই ফেইক আইডিগুলি আমাকে কি বিনিময় দিচ্ছে?
যেই "ছোট ভাই/ বেস্ট ফ্রেণ্ড" বানানো ছেলেদের কাছে আমার পিক ছিল, এরা পিকগুলো ডিলেট করছে না কেন এখনো? কি চাস রে ভাই তোরা?
আমি তো মরে গেছি! আমাকে কেন দেখছিস ? আমাকে বাঁচা প্লিজ!
আমার গর্দভ বান্ধবীগুলো আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস কেন দিচ্ছে? আমার আইডিটা শেয়ার কেন করছে?
সব গুনাহের সাক্ষী তো ওখানে.. ওরা কি চায় আরো ছেলেরা আমাকে দেখুক এখন? ওরা আমাকে আরো শাস্তি দিচ্ছে আরো...!
একি? সেই ভর্তির সময়ে আমার দেয়া ছবি নিয়ে ভার্সিটি ডিপার্টমেন্ট ব্যানার করে 'আমরা শোকাহত' র ্যালি করছে কেন আমার মৃত্যুতে?
আরে ১মাস হয়ে গেল, ব্যানার গুলো নামাচ্ছে না কেন? রাস্তা থেকে? আমাকে আরও কেন দেখিয়ে বেড়াচ্ছে কেন রাস্তার হাজারটা ছেলের সামনে?
কাকে দিচ্ছি দোষ? কি লাভ অন্যদের দুষে?
দোষ তো আমারই, আমিই গুনাহে জারিয়া রেখে আজ কবরে আসলাম।
বেশিরভাগ ফ্রেন্ডই তো আমাকে সাহায্য করেছে আজকে বিষাক্ত সাপ ও বিচ্ছুগুলোর কামড় খেয়ে নীল হয়ে পড়ে থাকার জন্য.. ওরা জানে না এই সাপ কেমন বিষ ঢুকায় আমার শরীরে.. আমি ছাড়া কেউ বুঝবে না। পৃথিবীতে আমার কোন বন্ধু ছিল না মারইয়াম ছাড়া, সবাই শত্রু ছিল।
হুম, সূরা যুররুখে ছিল সেদিন বন্ধুবর্গ একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে। হুম, মৃত্যু তো ছোট বিচারদিবস। দোস্ত, তোরা এখন আমার শত্রু। Now I hate u guys a lot, i hate u all..
বাবা মা, নানু, ছোটকি আর মারইয়াম ছাড়া কেউ আমার জন্য দুয়া করছে না কেন? আমার জন্য একটু কিছু নেক আমল পাঠাও আযাব থামাতে! আমাকে তোমরা কেউ ভালোবাসো না আম্মু? প্লিজ আমার জন্য কিছু পাঠাও। ভুলে গেলে নাকি আমার কথা? এখন আমার সবার দুয়া, সদকা কত প্রয়োজন ছিল.. এরা আস্তে আস্তে একেবারে ভুলে যাবে আমাকে। আমার নামটা এদের মন থেকেই উঠে যাবে একদিন। ছোটকিটা কত বোকা, এখনো ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ছবি তুলছে.. কবরে আমার মতই শুধু গুনাহ নিয়েই ঢুকবে। কোন ভালো কাজ আনতে হবে এটা যেন ওর মাথাতেই নেই! হায়রে বোকা বোন আমার..
আমার চেনা মানুষদের মধ্যে মারইয়াম ছাড়া কেউ আমাকে সাবধান করত না, কেউ বলত না "দোস্ত, এসব রঙ্গিলা স্কার্ফ টার্ফ বাদ দিয়ে ভালো করে আসল হিজাব (পর্দা) কর, এভাবে সেজে গুজে বেড়াস না, এই সৌন্দর্য আল্লাহর দেয়া গিফট, তোর কাছে এটা আমানত। অপাত্রে খরচ করিস না দোস্ত.. নামাজ পড়িছিলি কাল?"
আমি না আমার আইডির বায়ো দিয়ে রেখেছিলাম- 'I am Proud to be A Muslim' আমি জানতাম না মুসলিম মানে আত্মসমর্পণকারী!
মুসলিম শব্দের অর্থ তো আমি বুঝিনি কখনোই সেই হলো মুসলিম যে তার রূপকে বেগানা ছেলেদের সামনে দেখানোর মেয়েলি স্বভাবজাত ইচ্ছাটাকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে ইসলামে প্রবেশ করেছে!
এখন আমার কবরে এমন সব ফেরেশতারা আমার মাথায় বাড়ি দিতে থাকবে, সারা শরীরে মারতে থাকবে যারা বধির ও অন্ধ!
আমি এত চিল্লাচ্ছি, এরা কেউ আমার চিৎকার শুনছে না, কোন মানুষ ও শুনছে না, জ্বীনও শুনছে না!
শুধু সমগ্রজগতের জীবেরা শুনবে আমার চিৎকার আর আল্লাহর আযাবের ভয়ে কাঁপতে থাকবে.. কি লাভ?
যাদের শোনা এখন উচিত ছিল তাদের কারো কানে যাবে না এই চিৎকার, কেউই শুধরাবে না। শুধু প্ল্যান করবে আমারই মত "আমি একদিন ঠিকই ভালো হয়ে যাব"
মারইয়াম যেদিন বলেছিল ফেসবুক থেকে পিকগুলো ডিলেট করতে, সত্যিইই আমি ওয়াদা করেছিলাম আমি কিছুদিন পরই পর্দা করব, আমি আর কিছুদিন সময় পেলেই ভালো হয়ে যেতাম, আমি সময় পেলাম না!
সত্যিই কি সময় পাইনি? নাকি আল্লাহর কাছে ফিরে আসা, তওবা করাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আরো কিছুদিন পাপের মধ্যে ডুবে থাকার দুঃসাহস করেছি!
কেন আমি সেদিন আল্লাহর অবাধ্যতা করতে করতেই আরেকটা দিন 'বেশি' বাঁচার মত রিস্ক নিয়েছিলাম? কেন??
হাদিসে ছিল, "তোমরা যদি মৃতের কবরের আযাবের চিৎকার শুনতে তোমরা কোনদিন কাউকে দাফন দিতে না লাশ ফেলে পালাতে"
আফসোস আমি জানতাম না!
আমি মুসলিম হয়েও কবরে শান্তি পেলাম না!
আমার ছবিগুলো আমাকে শান্তি দিলো
না! সত্যি আমি পাল্টাতে চেয়েছিলাম, আমি সত্যি বলছি, তোমরা থামো, আমি সত্যিই পাল্টামতাম। আমি ভেবে রেখেছিলাম, এই সেমিস্টারটা পাশ করলেই ঠিকভাবে পর্দা করতাম... সত্যি...............
______প্রত্যেকটা দিন তোমার জন্য নতুন একটা সুযোগ, তওবার দরজা খোলা আছে ২৪ঘণ্টা.. আল্লাহর ওয়াস্তে কবিরা গুনাহ গুলো ধুয়ে আসো এক মিনিটের তওবাতে..
প্রতিজ্ঞা করে আসো আর বেপর্দা হবে না,
প্রোফাইল পিকচার, আর কাভার পিকচার দেয়ার জন্য এই সৌন্দর্য না। রাস্তার হাজারটা লোককে দেখিয়ে বেড়ানোর জন্য এই সৌন্দর্য না। আল্লাহকে সিজদা করার জন্য এই সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য তোমার স্বামীর জন্য।
তুমি যেভাবে সৌন্দর্য প্রকাশ করে সুখ খুঁজছো তা আল্লাহর অবাধ্যতা, এতে কোন উপকার নেই, ছিলও না
আল্লাহ জানতেন এটা আরও কত মেয়ের স্বামীকে নষ্ট করত.. কত ফিতনা হত দুনিয়ার জমিনে।
আমার মত হয়ো না বোন.... আমার সৌন্দর্য আমাকে জাহান্নামের আগুনে ঝলসাচ্ছে, এটাই বাস্তবতা, কুরআন অস্বীকার করো? আল্লাহর আযাবকে অস্বীকার করো? ভয় পাও না জাহান্নামের আগুনকে তাইনা? কাউকে কোনদিন আগুনে পুড়ে মরতে দেখেছো তুমি? ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মরতে থাকা সারা শরীর আগুনে ঝলসে যাওয়া মানুষদের কষ্ট কোনদিন দেখেছো? কিভাবে পুড়তে দিবে তোমার এত সুন্দর স্কিনকে? যেটার পেছনে এত সময় আর টাকা ব্যয় করছো? আসলে তোমার শরীরকে তুমি একটুও ভালোবাসো না। তুমি তোমার নিজেকে একটুও ভালোবাসো না। মিথ্যুক তুমি।
আল্লাহর দাসী তুমি, আর আল্লাহর অবাধ্য হয়ে বেঁচে যাবে ভাবছো? আল্লাহ তোমাকে এত সুন্দর করে না বানালেও তো এত বেপর্দা (বেহায়া) হতে না! এতদিন আগুনেও পুড়তে না। সৌন্দর্য, বডি ফিটনেসই কাল হয়ে দাঁড়ালো তোমার জন্য।
আমিও তো অনেক সুন্দর শেইপে ছিলাম, কতদিন জাংক ফুড, মিল্কশেইক খাইনি, ফিগারের জন্য.. সুন্দর আউটফিটের জন্য। আর মরার ঠিক ৭২ঘণ্টার মাথায় সারা শরীরটা ফুলে গোল হয়ে যাচ্ছিল আমার।
তারপর পচা গন্ধ বের হতে শুরু করেছিল। এই শরীরের জন্য কি না করেছিলাম আমি, সেগুলো কোন লাভই দেয় নি। যদি আরো কিছু ভালো কাজ নিয়ে আসতাম, কবরে আজ আমি এই পচা দুর্গন্ধ নিয়ে মার খেতাম না.. অনেক ভালো থাকতাম।
কাল সকালটা হয়ত তোমার নাও দেখা হতে পারে। তওবা করলে আজই করো, এখন করো। ওজু করে এই ওয়াক্তের নামাজটা পড়ে আসো। কাল সকাল থেকে তোমার নতুন জীবন শুরু হবে। হ্যা, তোমার সমস্ত পাপ তওবার পর নেকিতে পাল্টে যাবে, কুরআনে আছে। তোমাকে আল্লাহ ভালোবেসে ফেলবেন। তোমার জীবন রিস্টার্ট হয়েছে। কেন আসছো এই পৃথিবীতে তুমি? _আল্লাহর ইবাদত করতে! তোমাকে এই সুস্থ শরীর এই চোখ নাক মুখ কেন দেওয়া হয়েছে? _আল্লাহর আদেশে ঢেকে রাখার জন্য, এখনো তুমি গাফেল (উদাসীন) ?
আজই তওবা করে সব পাপগুলোকে মুছে শান্তিতে ঘুমাতে যাও বোন। শয়তান তোমাকে "আগামীকাল" "আগামী মাস" "আগামী বছর" বলে ধোঁকা দিচ্ছে! কবরে না যাওয়া পর্যন্ত এই আগামীকাল কোনদিনও শেষ হবে না। যারা বলে বিয়ে হয়ে গেলে পর্দা করব বাচ্চা বড় হলে নামাজ পড়া শুরু করব তাদের এই জীবনে কখনোই হয়ত পর্দা/নামাজ হবে না! সে নিজেকেই নিজে প্রত্যেকটা দিন ধোঁকা দিচ্ছে..! কবরে পৌঁছে দিবে তোমাকে তোমার এই ধোঁকাবাজি..
তোমার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো তোমাকে সাবধান করেছিল -
"বিকাল হয়ে গেলে সকালের অপেক্ষা কারো না, আর সকাল হয়ে গেলে বিকালের অপেক্ষা করো না, সুস্থতাকে অসুস্থতার আগে গুরুত্ব দাও এবং মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে গুরুত্ব দাও।"
যেদিন আমি মারা যাই সেদিনও আমি ভেবেছিলাম পরদিন সকাল আমি বাঁচব, আমার এই হাদিসটা সত্যি জানা ছিল না!
তাও তুমি ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করতে চাও?
আরও কটা দিন সময় চাও বেহায়াপনা নিয়ে পড়ে থাকার জন্যে? তাহলে আমার গল্পটাই শুরু থেকে পড়ো।
Your life,
your decision.
Your body
Now show or hide
নাহলে এই বডির মালিকের হুকুমই এই বডির উপর কায়েম হবে আজ বা কাল। আর তুমি সেই মজা আস্বাদন করবে, প্রস্তুত?
# কাল_থেকে_ভালো_হয়ে_যাব।
© Ananya Nusrat