
11/10/2025
৯০ দশকের স্বপ্নকন্যা: মাহমুদা আমীন শায়না
মাহমুদা আমীন শায়না—একটি নাম, যা ৯০ দশকে বাংলাদেশের তারুণ্যের একটি বড় অংশের কাছে ছিল এক আভিজাত্যপূর্ণ সৌন্দর্যের প্রতীক। যখন কেবল স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো সবেমাত্র ডানা মেলতে শুরু করেছে, সেই সময়ে দেশীয় টেলিভিশন এবং বিজ্ঞাপনের জগতে সায়নার উপস্থিতি এনেছিল এক নতুন আধুনিকতা ও গ্ল্যামার।
সায়নার আবেদন ছিল চিরাচরিত বাঙালি সৌন্দর্যের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন—এক কথায় ** sophisticated (পরিশীলিত)**। তাঁর ছোট করে কাটা চুল, যা সেই সময়ে রক্ষণশীল সমাজে এক ধরনের সাহসিকতা বহন করত, এবং তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী চাহনি—এগুলো তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল। শায়নার এই আধুনিকতা নব্বই দশকের শহুরে তরুণদের কাছে ছিল অনুসরণীয় এবং কাঙ্ক্ষিত। তিনি যেন স্ক্রিনে ফুটিয়ে তুলতেন সেই সময়ের উঠতি মধ্যবিত্ত পরিবারের আত্মবিশ্বাসী, কর্মজীবী নারীর প্রতিচ্ছবি।
শায়নার তারকাখ্যাতি তুঙ্গে ওঠে মূলত টেলিভিশন কমার্শিয়াল (টিভিসি)-এর মাধ্যমে। ল্যাক্স, কেয়া কসমেটিকস, বা এমন আরও বহু পণ্যের বিজ্ঞাপনে তিনি ছিলেন প্রধান মুখ। তাঁর প্রতিটি টিভিসি ছিল উচ্চ মানসম্পন্ন প্রোডাকশন এবং প্রতিটি দৃশ্যে তাঁর স্নিগ্ধতা, ভঙ্গি ও হাসি দর্শকদের মুগ্ধ করত। বিজ্ঞাপনগুলো নিছকই পণ্য প্রচার ছিল না; বরং তা হয়ে উঠেছিল সেই সময়ের ফ্যাশন এবং জীবনযাত্রার মানদণ্ড।
তাঁর টিভিসিগুলোর উপস্থাপনা ছিল এতটাই দৃষ্টিনন্দন যে, ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই টিভিসির বিরতিতে অধীর আগ্রহে তাঁর ঝলক দেখার অপেক্ষায় থাকত। বিশেষ করে ছেলেদের কাছে, তাঁর পর্দা উপস্থিতি ছিল যেন স্বপ্নের রাজকুমারীর মতো।
বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি শায়না বেশ কিছু জনপ্রিয় নাটকেও অভিনয় করেছেন, যেখানে তাঁর অভিনয় দক্ষতাও প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি এমন সব চরিত্রে অভিনয় করতেন যা ছিল সাধারণত শিক্ষিত, আধুনিক এবং স্বাধীনচেতা। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান ছিল মিডিয়ায় একটি নতুন ধরনের ফ্যাশন ও সৌন্দর্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা। তাঁর স্টাইল নব্বইয়ের দশকের ফ্যাশন ট্রেন্ডকে প্রভাবিত করেছিল।
আজও যখন নব্বইয়ের দশকের কথা ওঠে, মাহমুদা আমীন শায়নার নাম এক নস্টালজিক আবেগে মনে আসে। তিনি কেবল একজন মডেল বা অভিনেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন নব্বইয়ের দশকের সেই রঙিন সময়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা বহু তরুণের কৈশোর ও তারুণ্যের স্মৃতিতে এক মিষ্টি ক্রাশ হিসেবে অমর হয়ে আছে।
_________ ________ ________
📜 Copyright Notice:
This page's entire content is copyright protected
© Mahmudul Hasan Jahid.
If you want to copy this text, please include the page's name.Otherwise, please share it — this maintains respect and avoids copyright issues.