08/08/2025
জুমার দিন, শুক্রবার যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুমআর নামাজ আদায় করা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান পুরুষের জন্য ফরজ এবং জামাতে অংশগ্রহন করা অত্যবশ্যক।
শরিয়ত অনুমোদিত কোন বিশেষ কারণ ছাড়া জুমার জামাতে অংশগ্রহণ না করলে বান্দা গু*নাহগার হবে। কেউ যদি কোনো কারণে জুমার জামাতে উপস্থিত হতে না পারে, তবে সে জোহরের নামাজ আদায় করবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে জুমার নামায কেন একাকী পড়া যায় না, ইসলাম জুমার জামাতের প্রতি এত গুরুত্বারোপ কেন করেছে?
ইসলামী শরিয়তে এ বিষয়ে কী বলা আছে আমরা আজ তা জানবো-
আলেমরা এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, জুমার নামাজ দ্বারা শুধু নামাজই উদ্দেশ্য নয় বরং এর দ্বারা দ্বিনের প্রচার, ধর্মীয় বিধি-বিধান বাস্তবায়ন, সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ, জান্নাতের সুসংবাদ ও জা*হান্না*মের ব্যাপারে সতর্ক করা এবং মুসলিম সমাজে ঐক্য ও সামাজিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করাও উদ্দেশ্য।
আর এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য জুমার নামাজের জন্য জামাত, খুতবা পাঠ ও উচ্চৈঃস্বরে কোরআন তিলাওয়াতের বিধান দেওয়া হয়েছে।
(আহকামে ইসলাম আকল কি নজর মে, পৃষ্ঠা ৭৯)
কোনো মুসলিম সাওয়াবের নিয়তে সামর্থ্য অনুযায়ী শুক্রবার উত্তম খাবার গ্রহণ করে, তবে আশা করা যায় ,আল্লাহ তাকে বঞ্চিত করবেন না।
হাদীস শরীফে আছে, জুমা’আর দিন যে ব্যক্তি গোসল করে পূর্বাহ্ণে প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোনো কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের খুব কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না,
সেই ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন এবং সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়! এ জন্যই ইসলাম জুমার দিনের বিশেষ মর্যাদা এবং জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তাই একাকী জুমার নামাজ আদায় করলে উল্লিখিত উদ্দেশ্যগুলো পূরণ হয় না, তাই জুমার নামাজ একাকী আদায় করা যায় না।
জুমার দিন দুপুরে গোসল করে পরিষ্কার পোষাক পরিধান করে আযানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করা উত্তম। জুমার নামাজের আজান হওয়ার পর জুমার নামাজের প্রস্তুতি ছাড়া অন্য কোনো জাগতিক কাজে লিপ্ত থাকাও বৈধ নয়।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কোরো, এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি করো।’
(সুরা : জুমা, আয়াত : ৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অবহেলার কারণে তিন জুমা ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।
(সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৩৬৯)
এ প্রসঙ্গে সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) বলেন, জুমার প্রকৃতি, তার কল্যাণ ও উপকারিতার দাবি হলো, শহরের কেবল এক মসজিদেই আদায় করা হবে। শহর বড় হলে একাধিক মসজিদেও আদায় করা যেতে পারে। সব মুসলমান সপ্তাহে এক দিন একবার এক স্থানে একত্র হবে। এতে তাদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব দৃঢ় হবে।
অন্যদিকে জামাতে অংশ-গ্রহণের কারণে মুসলমানের বিশ্বাস ও আমল বিকৃতি ও ভুল- বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
সংগৃহীত।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে জুমার নামাজ আদায় করার তাওফিক দিন।