
17/08/2025
শাসক-শোষক গোষ্ঠির লুণ্ঠনের হাত থেকে নদী, পাহাড়, প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় দেশপ্রেমিক শক্তি সোচ্চার হোন।
বালি পাথর মহালে ইজারা প্রথা বাতিল, সনাতন (বেলচা, বালতি, নেট) পদ্ধতিতে বারকি শ্রমিকদের কর্মের নিশ্চয়তা বিধান করে সরকারিভাবে ক্রয়-বিক্রয়কেন্দ্র চালু এবং সাদাপাথর লুণ্ঠনকারী ও মদতদাতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটি।
১৬ আগস্ট বিকেল ৫টায় নগরির সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে এক বিক্ষোভ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার-এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল, সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, স’মিল শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইমান আলী, অন্যতম নেতা আনোয়ার হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ শাহপরাণ থানা কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. নাছির মিয়াসহ প্রমুখ
নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাধীন সাদা পাথর খ্যাত পর্যটন স্পট থেকে পাথর লুটপাটের মহাউৎসব শুরু হয়। সরকার প্রথম দিকে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে আসলেও পরবর্তীতে নিরীহ শ্রমিকদের হয়রানি করা হয়। স্থানীয়দের মতে শতকোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। প্রকৃত লুটেরা এবং তাদের মদতদাতাদের আইনের আওতায় না এনে গরিব অসহায় দিনমজুর মানুষদের হয়রাণি করে চলেছে। রাজনৈতিকভাবে এখন যাঁদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে চুনোপুঁটি। রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
লুটপাটের এক পর্যায়ে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্তাগণ অভিযান পরিচালনা করলে পাথর মহালে ঘাটেবাঁধা কাঠের তৈরি সারিবদ্ধ বারকি নৌকা। সাথে সাথে বারকি ধ্বংসের আদেশ নাজিল হল, সঙ্গীয় অধিনস্থরা হেমার দিয়ে আঘাতে আঘাতে ধ্বংস করতে লাগলেন একের পর এক বারকি নৌকা। বারকি শ্রমিকরা দূর থেকে তাকিয়ে দেখছিলেন অসহায় নয়নে, নৌকা ছিদ্র হয়ে পানি উঠছে, কোনটির গলই ভাঙ্গছে। চোখের সামনে ধ্বংস হচ্ছে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। ক্ষোভে দুঃখে বুক ফেটে যাচ্ছে তবুও নির্বাক। তাদের পক্ষে কারও কিছু বলার নেই।
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল বলেন, সিলেট অঞ্চলের বালু-পাথরের ইতিহাস দুই শতবছরেরও অধিককাল হবে। ব্রিটিশ আমল থেকে আশির দশক পর্যন্ত সনাতন পদ্ধতিতে বালু-পাথর আহরিত হতো। আশির দশক পর্যন্ত আহরিত বালু-পাথর আহরণের হাতিয়ার ও পদ্ধতি পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য কোনও হুমকি ছিল না, বরং সনাতন পদ্ধতিতে বেলচা বালতি ও নেটের সাহায্যে বালু-পাথর আহরণ নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ রক্ষায় ছিল সহায়ক ও স্বাভাবিক। অর্থাৎ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করেই চলতো বালু-পাথর আহরণের কর্মযজ্ঞ।
সভা থেকে নেতৃবৃন্দ শাসক-শোষক গোষ্ঠির লুণ্ঠনের হাত থেকে নদী, পাহাড়, প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় দেশপ্রেমিক শক্তির প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।