28/07/2025
শ্রম উপদেষ্টা বরাবর ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলার স্মারকলিপি
অবিলম্বে জাতীয় নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে আইনী সুরক্ষা দিয়ে জাতীয় নিম্নতম মূল মজুরি ৩০ হাজার টাকা ঘোষণা, আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড অধিকার ও কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তাসহ ১০ দফা দাবিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা বরাবর দেশব্যাপী স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসক মাধ্যমে ১০ দফা দাবিনামা পেশ করা হয়। ২৮ জুলাই দুপুরে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রেরিত স্মারকলিপিটি সিলেট ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিটি সিলেটের জেলা প্রশাসকের মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর মাধ্যমে পেশ করেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন দেশে মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৭ কোটি ৩৪ লক্ষ। যদিও বিভিন্ন প্রস্তাবনা/প্রতিবেদনে এ সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ কোটি বলা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশ শ্রমিকের কোন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই বলে বিবিএস তথ্যে জানানো হয়। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের এই বৃহৎ শ্রমিক ও শ্রমজীবী প্রচলিত শ্রমআইনের সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত। নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র, আইনস্বীকৃত কর্মঘন্টা ও ছুটি, মাতৃত্বকালীন সুবিধা ও ক্ষতিপূরণসহ শ্রমআইনের স্বীকৃত অধিকার অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ভোগ করতে পারছে না। রপ্তানিমুখী প্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলোতে শ্রমআইন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশী নজরদারী থাকা সত্তে¡ও শ্রমআইনকে পাশ কাটিয়ে শ্রমিকদের উপর তীব্র শ্রম শোষণ ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। দেশে জাতীয় মজুরি বোর্ড ও মজুরি নির্ধারণের দিকনির্দেশনা না থাকায় সর্বজনীন মজুরিও কার্যকরী নেই। প্রকৃত পক্ষে একজন শ্রমিক ও তার পরিবারের (৬ সদস্য হিসেব ধরে) প্রতিদিনের, প্রতি সপ্তাহের, প্রতি মাসের প্রকৃত মজুরি নিম্নতম মজুরি ধরে মূল মজুরির অর্ধেক বাড়িভাড়া এবং যাতায়াত ও চিকিৎসা বাবদ প্রয়োজনীয় খরচ যুক্ত করে মোট মজুরি নির্ধারণ করার বিষয়টি কার্যকরী করা হয় না। বর্তমান নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, গাড়িভাড়া, বাড়িভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ জীবন জীবিকার সকল ব্যয় হিসেব করলে ৬ সদস্যের একটি শ্রমিক পরিবারে ন্যূনতম ৩০ হাজার টাকা মূল মজুরি হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিল্প ও শ্রমিক অঙ্গনে উপরে উল্লেখিত সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন দুরাবস্থায় শ্রমিকরা জর্জরিত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের পক্ষ থেকে শ্রম উপদেষ্টা সমীপে ১০ দফা দাবিনামা উত্থাপন করা হচ্ছে। ১০ দফা দাবিনামা নিম্নরূপ :
১। মজুরি-বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি:
(ক) প্রতিনিয়ত মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে প্রতি ২ বছর অন্তর মজুরি পুন:নির্ধারণ করতে হবে।
(খ) ৮ ঘন্টা শ্রম দিবসের ভিত্তিতে আইনী সুরক্ষা দিয়ে জাতীয় ন্যূনতম মূল মজুরি ৩০,০০০/- টাকা ঘোষণা ও কার্যকরী করতে হবে।
(গ) নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমকাজে সমমজুরি নিশ্চিত করতে হবে।
(ঘ) মজুরি ও জীবনযাত্রার মান স্থিতিশীল রাখার প্রয়োজনে ‘ভেরিয়েবল ডিয়ারনেস এলাউন্স (পরিবর্তনশীল ভাতা)’ চালু করতে হবে।
(ঙ) চাকুরির বয়স তিন মাস পূর্ণ হলে মূল মজুরির সমপরিমাণ বছরে ২ টি উৎসব বোনাস প্রদানের নিয়ম কার্যকরী করতে হবে।
(চ) সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইনসেনটিভ বোনাস স্কীম ও হাজিরা বোনাস প্রদানসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে হবে।
(ছ) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সশস্ত্র বাহিনীর সমমূল্যে ও সমপরিমাণে সকল শ্রমিক-কর্মচারী ও মেহনতি জনগণের জন্য স্থায়ী রেশনিং চালু করতে হবে।
(জ) ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিশেষ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(ঝ) সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১০% হারে কন্ট্রিবিউটারী প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ৫% লভ্যাংশ শেয়ারের আইন কার্যকর করতে হবে।
(ঞ) ডিসমিসড (বরখাস্তকৃত) শ্রমিক কর্মচারীদেরকে সার্ভিস বেনিফিটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
(ট) জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে শ্রমআইন বাস্তবায়নে মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
২। মৌলিক ও ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সংক্রান্ত:
(ক) আইএলও কনভেনশন ৮৭ এবং ৯৮ অনুযায়ী সকল শ্রম সেক্টরে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও যৌথ দরকষাকষির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
(খ) ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার হরণ ও সংকোচন করতে সরকারি সংস্থার মালিক তোষণ নীতি ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
(গ) অত্যাবষকীয় পরিষেবা বিল-২০২২ ও সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিল করতে হবে।
(ঘ) শ্রম আদালতের সকল মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি এবং শ্রমিক কর্তৃক দায়েরকৃত মামলা বিনা খরচে পরিচালনার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
(ঙ) সকল শ্রমঘন অঞ্চলে প্রয়োজনীয় শ্রমআদালত প্রতিষ্ঠাসহ শ্রম আপিল আদালত স্থাপন করতে হবে।
(চ) নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র প্রদানের আইন কার্যকরীকরাসহ শ্রমআইন যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে ১ মে মজুরিসহ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে বাস্তবায়ন করতে হবে।
(ছ) সব ধরনের অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের ৯০ দিনের মধ্যে স্থায়ী করতে হবে। স্থায়ী পদে আউটসোর্সিং বন্ধ করে শূন্য পদে শিক্ষানবীশ শ্রমিককে নিয়োগ দিতে হবে।
(জ) সড়ক পরিবহণ আইন ও বিধিমালার শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী ধারা ও বিধি বাতিল করতে হবে।
(ঝ) সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীগণকে শ্রম আদালতে মামলা করার অধিকার দিতে হবে।
(ঞ) পল্লী বিদ্যুৎ, ই-কমার্স, রাইড শেয়ারিং, গৃহশ্রমিক, খনি শ্রমিকসহ সকল শ্রেণির শ্রমিকদের শ্রমআইনের আওতায় আনতে হবে।
(ট) আউটসোর্সিংসহ কন্ট্রাক প্রথা বিলোপ করতে হবে। নিয়োগকৃত আউটসোর্সিং কর্মীদের স্থায়ী করতে হবে।
৩। চাকরির নিরাপত্তা ও হয়রানীমূলক বদলী বন্ধ এবং ট্রেড ইউনিয়ন বিকাশের পরিবেশ নিশ্চিত করণ:
(ক) হয়রানীমূলক বদলি বন্ধ করতে হবে এবং পদাবনতি, ছাঁটাই, ডিসমিস ও টার্মিনেশনে চাকরিচ্যুতি বন্ধ করতে হবে।
(খ) আধুনিকীকরণের প্রয়োজনে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির পূর্ণ নিরাপত্তা ও ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হবে।
(গ) সড়ক-মহাসড়কে চালক, যাত্রী, পণ্য ও যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং পরিবহন সেক্টরে সকল ধরণের চাঁদাবাজী বন্ধ করতে হবে।
(ঘ) শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া, শিল্পাঞ্চলে সভা-সমাবেশ ও ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম পরিচালনার গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
(ঙ) শ্রমিকনেতাদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
৪। বাসস্থান, শিক্ষা ও যাতায়াত:
(ক) শিল্প এলাকা ভিত্তিক উপযুক্ত নিরাপত্তাসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য পরিবার নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বসবাসের উপযোগী বাসস্থান নির্মাণ করতে হবে।
(খ) চা শ্রমিকদের চাকরি শেষে বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করার আইন বাতিল করে তাদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
(গ) শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের সন্তানদের বিনামূল্যে শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পর্যাপ্ত উপযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।
(ঙ) শ্রমিক-কর্মচারীদের সাংস্কৃতিক মান বিকাশের জন্য লাইব্রেরি, পড়াশোনা, খেলাধুলা, শরীরচর্চাসহ সুস্থ সাংস্কৃতিক বিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
(চ) গার্মেন্টসসহ সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের তাদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৫। পেশাগত স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংক্রান্ত:
(ক) সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকার্ড প্রদানসহ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান ও শিল্পাঞ্চলে প্রয়োজনীয় হাসপাতাল তৈরী করতে হবে।
(খ) কর্মরত শ্রমিকদের প্রতিষ্ঠানের খরচে বছরে অন্তত দুই বার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
(গ) কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ও পেশাগত রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থাসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
(ঘ) চাকরির সময়কাল নির্বিশেষে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
(ঙ) সকল কর্মক্ষেত্রে সুপেয় পানিসহ খাবার ক্যান্টিন, টয়লেট ও বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা করতে হবে।
(চ) ট্যানারী ও কেমিক্যালসহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য নিস্কাশনের ব্যবস্থা করে পরিবেশ দূষণ মুক্ত করতে হবে।
(ছ) কর্মক্ষেত্র ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বসবাসের এলাকায় স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
(জ) কর্মক্ষেত্রে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নির্গমন ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬। নারী ও শিশু শ্রম সংক্রান্ত:
(ক) নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল শ্রমিকদের জন্য চাকুরির ক্ষেত্রে সমঅধিকার ও সমকাজে সমমজুরিসহ সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
(খ) গার্মেন্টসসহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রসূতিকালীন ৬ মাসের ছুটি ও ভাতা প্রদানসহ শিশু ও মায়ের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
(গ) স্ত্রী ও সন্তানের পাশে থাকার জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে মজুরিসহ অন্তত ১ (এক) মাসের পিতৃত্বকালীন ছুটি প্রদান করতে হবে।
(ঘ) নারী শ্রমিকদের মান-মর্যাদাহানি, ভয়-ভীতি, নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
(ঙ) যে কোন ধরণের সংহিসতা ও হয়রানি, নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
(চ) শিশু শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে গরীব, দু:স্থ ও অসহায় পরিবারের শিশুদের শিক্ষা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৭। আইন, সম্পাদিত চুক্তি ও ঘোষিত ওয়াদা বাস্তবায়ন:
শ্রমআইন অনুযায়ী প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা এবং সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া সরকার/সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে শ্রম ও শিল্প সম্পর্কিত সকল চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। নিম্নতম মজুরি ও চুক্তি যে সকল মালিক বাস্তবায়ন করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ, জরিমানা আদায় ও লাইসেন্স বাতিলের বিধান করতে হবে।
৮। শিল্প বিকাশ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন:
জাতীয় শিল্পের বিকাশের পথে বাধা জাতীয় স্বার্থ বিরোধী সকল চুক্তি বাতিল করে জাতীয় স্বার্থে শিল্পের বিকাশ এবং শ্রমিক কর্মচারীসহ জনগণের আর্থসামাজিক জীবনমান ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে-
(ক) ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তরিত সকল শিল্প-কারখানা সরকারি ব্যবস্থাধীনে চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
(খ) রাষ্ট্রায়াত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে বন্ধ ও রুগ্ন কলকারখানা প্রতিষ্ঠানসমূহ চালু করার জন্য দ্রæত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
(গ) পাট ও পাটজাত দ্রব্যের উৎপাদন ও রপ্তানী বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে পাট শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।
(ঘ) চিনি শিল্প ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বন্ধ করে চিনিকলসমূহের নিয়মিত উৎপাদন নিশ্চিত ও আখের ন্যায্য মূল্য প্রদান করতে হবে।
(ঙ) অনুৎপাদনশীল ও বিলাস দ্রব্যের আমদানী কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে দেশীয় শিল্পের উৎপাদন ও বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে।
(চ) জাতীয় অর্থনীতি ও শিল্প বিকাশের স্বার্থে কৃষি উৎপাদনের উপকরণের দাম কমানো এবং উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
(ছ) অসংগঠিত খাতসহ সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠন করতে হবে।
(জ) বিজ্ঞান প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি ও চাকরি অব্যাহত রাখার স্বার্থে সকল স্তরের শ্রমিকদের সমসাময়িক কাজের উপযোগী করে তুলতে রি-ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। শ্রমিক উচ্ছেদ বন্ধ করা:
(ক) সরকারি উদ্যোগে বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ অভিযানের নামে হকার ও দিনমজুরদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
(খ) ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইক উচ্ছেদ করা যাবে না। রিকশা ও ইজিবাইকের জন্য সড়কে আলাদা সার্ভিস লেন চালু করতে হবে।
১০। প্রবাসী শ্রমিক:
(ক) বিদেশে শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরসহ সকল ক্ষেত্রে হয়রানী বন্ধ এবং দেশে ফেরত আসার পরে তাদের কার্যকর সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
(খ) রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শ্রমিক প্রেরণের জন্য কার্যকর ও অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ প্রবাসী শ্রমিকদের প্রেরিত অর্থের সাথে ১০% বোনাস প্রদান করতে হবে।
(গ) প্রবাসী শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা ও হয়রানি বন্ধ এবং নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
(ঘ) বিদেশে অবস্থানরত দূতাবাসগুলোকে গতিশীল ও শক্তিশালীকরণসহ দুতাবাসগুলোতে শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
(ঙ) ইউএন চার্টার অনুযায়ী প্রবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রচলিত শ্রমআইনের সুবিধাদি নিশ্চিত করতে হবে।