The Sylhet Times

The Sylhet Times Publisher | Content Writer

03/04/2025

বাংলাদেশে এক নতুন আইন পাশ হয়েছে।

এই আইনের ফলে মন্দির এবং পূজা সংক্রান্ত কমিটিতে অন্তত দুইজন মুসলমান সদস্য রাখার কথা বলা হয়েছে।

মন্দিরে পূজা আর্চনা কেমন হবে সেটা নিয়ে হিন্দুরা নয়, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত ফয়সালা দিবে।

মন্দিরগুলি কিভাবে পরিচালনা হবে, মন্দিরে আসা অনুদান কিভাবে ব্যয় করা হবে তা হিন্দুরা না বরং মুসলিমসহ সকল ধর্মের লোকেরা মিলে গঠিত একটি "সেকুলার" কমিটি ঠিক করবে।

মন্দির কমিটিতে থাকার জন্য আগে হিন্দু শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ হওয়া জরুদী ছিল। এখন আর সেই নিয়ম নাই।

এরকম আরও বেশ কিছু নিয়ম আছে এই আইনে। আইনটা করা হয়েছে হিন্দুদের ভালর জন্যই।

এতটুকু পড়েই আঁতকে উঠবেন না। বটবৃক্ষের আশীর্বাদে এবং মঙ্গল পূজার বড় বড় রকেটগুলির কল্যানে বাংলাদেশে এমন কিছু হয় নাই। ইন্ডিয়াতে হয়েছে। জঙ্গি থুক্কু মুসলমানদের ওয়াকফ নিয়ে এরকম একটা আইন পাশ হয়েছে। জয় শ্রী রাম - সেকুলারিজম আভি ভি জিন্দা হ্যায়।

30/03/2025

১৭ বছর পর এই দেশে সত্যিকারের ঈদ আসলো।

মাথার উপরে জালিমের জুলুম নাই।

কোন পরিবারের কর্তৃত্ব নাই। রাস্তাঘাটে কোন হয়রানি ছাড়াই ৪০ লাখ মানুষ ঢাকা থেকে নিরাপদে বাসায় গেছে।

বহু বছর পর বাজারে আগুন নাই। মানুষ দান করতেছে বেশি। বড় কোন দুর্ঘটনার ঘটনাও আসেনি।

উৎসবের সংজ্ঞা কী? ভয় না থাকা।

আমাদের উপর চাইপা বসা সেই ভয়টা আর নাই।

আমাদের ঈদ বহু বছর পর উৎসবে ফিরলো।

চলেন আমরাও আমাদের উৎসবের কাছে ফিরি।

নজরুলের মতো করে বলি,

তোরে জীবনজুড়ে মারলো ছুড়ে ইট পাথর যারা,
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ!!

আমাদের দেশজুড়ে গত ১৭ বছরে শুধুই ইট পাথর। এইবার আমাদের সেই ইট পাথর দিয়ে মসজিদ গড়ার পালা।

ঈদ মুবারক স্বাধীন বাংলাদেশ!!

ঢাল হৃদয়ের তোর তশতরিতে, সিন্নি তৌহিদের
তোর দাওয়াত কবুল করবেন হজরত, হয় মনে উম্মিদ!!

30/03/2025

মির্জা আব্বাসের একটা ছেলে আছে, কি জানি নাম। তার পোস্ট টোস্ট দেখলে মনে হয় বাপে টিনেজ পোলারে নতুন মোবাইল কিনে দিয়েছে আর সেটা দিয়ে ফেসবুক চালাচ্ছে।

যাহোক, এই ছেলে একদিন ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে যার মোটামুটি "ভদ্র" সারমর্ম এমন, মহিলাদের রাজনীতি করা বেহুদা।

আয়রনি হইছে, তার মা মহিলা দলের নেত্রী আর তার দলের প্রধান হচ্ছেন আমাদের বেগম জিয়া।

এই ছেলেরে আবার নেতা বানাইতে চায়!

বাবার বয়স হয়েছে। বাথরুমে যেতে প্রায়ই একটা সুন্দর রঙ করা দেওয়ালে হাত দিয়ে ফেলেন। ওটা ধরে হাঁটেন বলে হাতের ছাপ পড়ে য...
30/03/2025

বাবার বয়স হয়েছে। বাথরুমে যেতে প্রায়ই একটা সুন্দর রঙ করা দেওয়ালে হাত দিয়ে ফেলেন। ওটা ধরে হাঁটেন বলে হাতের ছাপ পড়ে যায়। হাত ময়লা থাকলে বা তেল থাকলে তো কথাই নেই।
আমার স্ত্রীর এটা অপছন্দ। সত্যি কথা বলতে কি, আমারও। অনেক বলেছি, কিন্তু উনি মনে রাখতে পারেননা বা দেওয়ালটা না ধরে পারেন না। অল্পবয়সে পরিচ্ছন্ন মানুষই ছিলেন।

একদিন মাথা ধরেছিল বলে নিজে নিজেই কপালে তেল মালিশ করেছিলেন। সেদিন ছাপটা বেশী পড়ে গেল। স্ত্রী আমার ওপর চেঁচামেচি করলেন। আমিও কড়াভাবে বাবাকে বলে দিলাম ঐ দেওয়ালে হাত না ছোঁয়াতে। তাঁকে লজ্জিত ও বিমর্ষ লাগলো। দেখে আমার মায়া হল, তবে মুখে কিছু বললাম না।

বাবা ঐ দেওয়াল ধরা বন্ধ করলেন; একদিন পড়ে গেলেন। আর বিছানা থেকে উঠলেন না। কিছুদিন পরে গত হলেন।

রঙের মিস্ত্রি ডেকে বাড়ী রঙ করাতে গেলে আমার ছেলে দাদুর হাতের ছাপ লাগা অংশটা মুছতে বাধা দিল। সে তাঁকে খুব ভালোবাসত। মিস্ত্রি তার কাজে বেশ দক্ষ ও উদ্ভাবনী প্রতিভার ছিল। সে ঐ ছাপগুলো বাঁচিয়ে রেখে অপূর্ব একটা বৃত্ত এঁকে দিল। একটা ডিজাইনও করে দিল।

এরপর যত মানুষ আমাদের বাড়ী আসত, ঐ জায়গার শিল্পকর্ম দেখে খুব প্রশংসা করত।

কালের যাত্রায় আমিও একদিন বৃদ্ধ হলাম। হাঁটবার সময় একদিন আমারও দেওয়াল ধরার প্রয়োজন হল, কিন্তু বাবার সঙ্গে ব্যবহার মনে পড়ে যাওয়ায় নিজেকে সংবরণ করলাম। ছেলে ব্যাপারটা দেখে আমায় বারবার বলল দেওয়ালের সাপোর্ট নিতে--যাতে পড়ে গিয়ে কোনো বিপদ না ঘটাই। উপলব্ধি করলাম, ছেলে আমার পাশে আছে।

নাতনী ছুটে এসে ওর কাঁধে ভর দিতে বলায় আমার চোখে জল এসে গেল। আমি যদি এটা করতাম তাহলে বাবা হয়ত আর কিছুদিন বাঁচতেন।

নাতনী যত্ন করে সোফায় বসিয়ে ওর ড্রয়িং খাতা দেখাল যেখানে আমার বাবার হাতের ছাপের ঐ দেওয়ালটার স্কেচ এঁকে ও উচ্চ প্রশংসা পেয়েছে। মন্তব্য ছিল : " *আমরা আশা করি প্রত্যেক বাচ্চা বড়দের এইরকম শ্রদ্ধা করবে।"*
আমি স্তম্ভিত, বিস্মিত হয়ে গেলাম ........ এক অজানা অপরাধবোধে নিজেকে অপরাধী মনে হল।

একদিন আমরা সবাই বয়স্ক হব। এই বাচ্চাদের মত আমরাও যদি ওই দিনগুলোয় বড়দের যত্ন নিতাম তাহলে পৃথিবীটা কত সুন্দর হত।........................................
(মার্ক টোয়েনের একটি সুন্দর ইংরাজি লেখার বঙ্গানুবাদ )

30/03/2025

[] আয়াতুল কুরসি []

কোরআনুল কারীমের দ্বিতীয় ও বড় সুরা ‘সুরা বাক্বারাহ’র ২৫৫ নং আয়াতটি হচ্ছে আয়াতুল কুরসি।

আল্লাহর গুণ বর্ণনায় ও মর্যাদার দিক থেকে এটি কোরআনের সর্ববৃহৎ আয়াত [মুসলিমঃ ৮১০]। হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায়, ফজিলত ও মর্যাদায় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে এই আয়াতটি। এটি মহান আল্লাহর গৌরবময় গুণাবলী, তাঁর সুউচ্চ মর্যাদা এবং তাঁর পরাক্রমশালীতা ও মহানুভবতা সম্বলিত সংক্ষিপ্ত শব্দে বহুল অর্থবিশিষ্ট অতীব মহান আয়াত। অনেকেই এ সূরার আয়াতুল কুরসিতে “ইসমে আযম” আছে বলে মত দিয়েছেন।

এর অনেক ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন, এটা পড়লে রাতে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকা যায় (ইবনে কাসীর)। ‘যে প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল-কুরসি নিয়মিত পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে একমাত্র মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন অন্তরায় থাকে না।’ [নাসায়ী, দিন-রাতের আমলঃ ১০০]

এ আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি, গুনাবলী ও বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ১০টি অংশ বর্নিত হয়েছে।

আসুন, মর্যাদাপূর্ন এই আয়াতটি পড়ে নেই-

اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-

আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তাঅ খুযুহু সিনাতুঁও ওয়া লা নাওম। লাহু মা ফিস্ সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি। মাং জাল্লাজি ইয়াশফাউ ইংদাহু ইল্লা বি-ইজনিহি। ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়া মা খালফাহুম; ওয়া লা ইউহিতুনা বিশাইয়্যিম্ মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শাআ; ওয়াসিআ কুরসিইয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি; ওয়া লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুওয়াল ’আলিয়্যুল আজিম।
(বাংলা উচ্চারণটি কোরআনের আরবী উচ্চারণের সাথে যাচাই করে বিশুদ্ধভাবে পড়ে নেয়া জরুরী)

অর্থ:-
“আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁরই। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে, তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।”

‘কুরসি’র অর্থ কেউ বলেছেন, মহান আল্লাহর জ্ঞান। কেউ বলেছেন, শক্তি ও মাহাত্ম্য। কেউ বলেছেন রাজত্ব এবং কেউ বলেছেন আরশ। তবে মহান আল্লাহর গুণাবলীর ব্যাপারে মুফাস্সীরদের নীতি হল, তাঁর গুণগুলি যেভাবে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সেগুলির কোনরকম কল্পকাহিনী, অপব্যাখ্যা ও ধরন-গঠন নির্ণয় না করেই তার উপর পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস স্থাপন করা। কাজেই এটাই বিশ্বাস করতে হবে যে, এই কুরসির ধরন ও আকৃতি কেমন এবং তাতে মহান আল্লাহ কিভাবে আসীন হন, তা আমাদের পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব না। কেননা, যদিও তার অর্থ জানা সম্ভব হলেও; কিন্তু তার প্রকৃতত্ব আমাদের কাছে সম্পুর্ন অজানা।

ইবনে কাসীর বলেনঃ এ আয়াতটিতে দশটি বাক্য রয়েছে। প্রতিটি বাক্যের সাথেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা রয়েছে।

(১) প্রথম বাক্য (اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ) অর্থাৎ ‘তিনিই আল্লাহ যিনি ব্যতিত ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো ইলাহ নেই।’ এতে আল্লাহ শব্দটি অস্তিত্ববাচক নাম (لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ) সে সত্তারই বর্ণনা, যে সত্তা ইবাদাতের যোগ্য। মহান আল্লাহ ব্যতীত আর কোন সত্তা-ই ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য নয়। তিনিই একমাত্র হক মা’বুদ। আর সবই বাতিল উপাস্য।

(২) দ্বিতীয় বাক্য (الْحَيُّ الْقَيُّومُ) অর্থ্যাৎ ‘তিনি সদা জীবিত এবং বিদ্যমান।’ আরবী ভাষায় حَيٌّ অর্থ হচ্ছে জীবিত। আল্লাহর নামের মধ্য থেকে এ নামটি ব্যবহার করে বলে দিয়েছে যে, তিনি সর্বদা জীবিত; মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। قَيُّوم শব্দ কেয়াম থেকে উৎপন্ন, এটা ব্যুৎপত্তিগত আধিক্যের অর্থে ব্যবহৃত। এর অর্থ হচ্ছে এই যে, তিনি নিজে বিদ্যমান থেকে অন্যকেও বিদ্যমান রাখেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। ‘কাইয়ূম’ আল্লাহর এমন এক বিশেষ গুণবাচক নাম যাতে কোন সৃষ্টি অংশীদার হতে পারে না। তাঁর সত্তা স্থায়ীত্বের জন্য কারো মুখাপেক্ষী নয়। কেননা, যে নিজের স্থায়ীত্ব ও অস্তিত্বের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী, সে অন্যের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ কি করে করবে?

(৩) তৃতীয় বাক্য لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ অর্থ্যাৎ ‘আল্লাহ তা'আলা তন্দ্রা ও নিদ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।’ পূর্ববর্তী বাক্যে ‘কাইয়ূম’ শব্দে মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, আসমান ও যমীনের যাবতীয় বস্তুর নিয়ন্ত্রণকারী হচ্ছেন আল্লাহ্‌ তা’আলা। সমস্ত সৃষ্টিরাজি তাঁর আশ্রয়েই বিদ্যমান। এতে করে হয়ত ধারণা হতে পারে যে, যে সত্তা এত বড় কার্য পরিচালনা করেছেন, তাঁর কোন সময় ক্লান্তি আসতে পারে এবং কিছু সময় বিশ্রাম ও নিদ্রার জন্য থাকা দরকার। পরবর্তী বাক্য দ্বারা সীমিত জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে জানানো হয়েছে যে, আল্লাহকে নিজের বা অন্য কোন সৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করবে না, নিজের মত মনে করবে না। তিনি সমকক্ষতা ও সকল তুলনার উর্ধ্বে। তাঁর পরিপূর্ণ ক্ষমতার পক্ষে এসব কাজ করা কঠিন নয়। আবার তাঁর ক্লান্তিরও কোন কারণ নেই। আর তাঁর সত্তা যাবতীয় ক্লান্তি, তন্দ্রা ও নিদ্রার প্রভাব থেকে মুক্ত ও পবিত্র।

(৪) চতুর্থ বাক্য (لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ) অর্থাৎ ‘আকাশ এবং যমীনে যা কিছু রয়েছে সে সবই আল্লাহর মালিকানাধীন।’ তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইচ্ছাশক্তির মালিক। যেভাবে ইচ্ছা তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

(৫) পঞ্চম বাক্য (مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ) অর্থাৎ ‘এমন কে আছে যে, তার সামনে কারো সুপারিশ করতে পারে, তার অনুমতি ব্যতীত?’ এতে বুঝা যায় যে, যখন আল্লাহ্ তা'আলা যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর মালিক এবং কোন বস্তু তাঁর চাইতে বড় নয়, তাই কেউ তাঁর কোন কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করার অধিকারী নয়। তিনি যা কিছু করেন, তাতে কারো আপত্তি করার অধিকার নেই। তবে এমন হতে পারত যে, কেউ কারো জন্য সুপারিশ করে, তাই এ বিষয়টিও স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে যে, এ ক্ষমতাও কারো নেই। তবে আল্লাহর কিছু খাস বান্দা আছেন, যারা তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে তা করতে পারবেন, অন্যথায় নয়। যেমন হাদীসে এরশাদ হয়েছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম আমি সুপারিশ করব।’ [মুসলিমঃ ১৯৩] একে ‘মাকামে-মাহমুদ’ বলা হয়, যা শুধুমাত্র রাসূল (সাঃ) এর জন্য খাস। অন্য কারো জন্য নয়।

(৬) ষষ্ঠ বাক্য (يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ) অর্থাৎ ‘আল্লাহ্ তা'আলা অগ্র-পশ্চাত যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনা সম্পর্কে অবগত।’ অগ্র-পশ্চাত বলতে এ অর্থও হতে পারে যে, তাদের জন্মের পূর্বের ও জন্মের পরের যাবতীয় অবস্থা ও ঘটনাবলী আল্লাহর জানা রয়েছে। আর এ অর্থও হতে পারে যে, অগ্র বলতে সে অবস্থা বোঝানো হয়েছে যা মানুষের জন্য প্রকাশ্য, আর পশ্চাত বলতে বোঝানো হয়েছে যা অপ্রকাশ্য। আয়াতের ব্যাপকতায় উভয়দিকই বোঝানো হয়।

(৭) সপ্তম বাক্য (وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ) অর্থাৎ ‘মানুষ ও সমগ্র সৃষ্টির জ্ঞান আল্লাহর জ্ঞানের কোন একটি অংশবিশেষকেও পরিবেষ্টিত করতে পারে না।’ কিন্তু আল্লাহ তা'আলা যাকে যে পরিমাণ জ্ঞান দান করেন শুধু ততটুকুই সে পেতে পারে। এতে বলা হয়েছে যে, সমগ্র সৃষ্টির অণু-পরমাণুর ব্যাপক জ্ঞান আল্লাহর জ্ঞানের আওতাভুক্ত, এটা তাঁর বৈশিষ্ট্য। মানুষ অথবা অন্য কোন সৃষ্টি এতে অংশীদার নয়।

(৮) অষ্টম বাক্য (وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ) অর্থাৎ ‘তাঁর কুরসি এত বড় যার মধ্যে সাত আকাশ ও যমীন পরিবেষ্টিত রয়েছে।’ হাদীসের বর্ণনা দ্বারা এতটুকু বোঝা যায় যে, আরশ ও কুরসি এত বড় যে, তা সমগ্র আকাশ ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। ইবনে কাসীর আবু যর গিফারী (রাঃ)এর উদ্ধৃতিতে বর্ণনা করেছেন যে, ‘তিনি রাসূল (সাঃ)কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কুরসি কি এবং কেমন? তিনি (রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম, কুরসির সাথে সাত আসমানের তুলনা একটি বিরাট ময়দানে ফেলে দেয়া একটি আংটির মত। আর কুরসির উপর আরশের শ্রেষ্ঠত্ব যেমন আংটির বিপরীতে বিরাট ময়দানের শ্রেষ্ঠত্ব।’ [ইবনে হিব্বান: ৩৬১ বায়হাকী: ৪০৫]

(৯) নবম বাক্য (وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا) অর্থাৎ ‘আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষে এ দুটি বৃহৎ সৃষ্টি, আসমান ও যমীনের হেফাজত করা কোন কঠিন কাজ বলে মনে হয় না।’ কারণ, এই অসাধারণ ও একক পরিপূর্ণ সত্তার পক্ষে এ কাজটি একান্তই সহজ ও অনায়াসসাধ্য।

(১০) দশম বাক্য (وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ) অর্থাৎ ‘তিনি অতি উচ্চ ও অতি মহান।’ পূর্বের নয়টি বাক্যে আল্লাহর সত্তা ও গুণের পূর্ণতা বর্ণনা করা হয়েছে। তা দেখার এবং বোঝার পর প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলতে বাধ্য হবে যে, সকল শান-শওকত, বড়ত্ব ও মহত্ব এবং শক্তির একমাত্র মালিক আল্লাহ তা'আলা।

এ দশটি বাক্যে আল্লাহর পরিচয় ও গুনাবলীর পূর্ণ বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

28/03/2025

ইলেকশন ডিসেম্বরে হবে নাকি জুনে হবে, সেই ডিসিশন বরং জনগণের উপর ছেড়ে দেওয়া হোক।

গণভোট হোক।

যেহেতু নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান, এই সমস্যার সমাধানও নির্বাচনেই হোক।

রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই জনগণের প্রতিনিধি তবে তারাই একমাত্র জনগণ না। আমাদের মতো অ্যাপলিটিক্যাল লাখ লাখ মানুষ এই দেশে আছে।

তাদের ডিসিশনটাও জানা হোক।

ঈদ যাত্রায় কোন হয়রানি নাই। এখন পর্যন্ত সরকারকে গালি দেওয়ার জন্য কেউ গুম বা গ্রেফতার হয় নাই। জিনিসপত্রের দাম কম। ঈদের বাজারেও একটা জিনিসের দাম বাড়ে নাই। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঈদের দুইদিন আগেও ঠিক টাইমে ট্রেন ছাড়তেছে।

তো, স্বাভাবিকভাবেই আমি চাই এই সরকার বেশিদিন থাকুক। আমার মতো আমপাবলিকের তো ভাই সুবিধা।কোন নেতাকে সালাম দিতে হচ্ছে না। ক্যাডার বাহিনীর উৎপাত নাই।

আবার যারা রাজনীতি করে, তারা চাইবে রাজনৈতিক সরকার।

তাদের চাওয়ার মধ্যেও ভাগ আছে। কেউ বলছে ডিসেম্বরে ইলেকশন দাও। কেউ বলছে জুনে। কেউ বলছে সংস্কার। কেউ বলছে বিচার।

তো সব মিলাইয়াই একটা গণভোট হোক।

গণভোটের প্রশ্ন অপশন থাকে ৪ টা। ইউনূস সরকারকে কতদিনের জন্য চাই।

একটা অপশন থাকুক এই বছর জুনের মধ্যে ইলেকশন।

আরেকটা থাকবে ডিসেম্বর।

আরেকটা জুন ২০২৬।

আরেকটা থাকবে ২/৩/৪ বছরের জন্য।

মানুষ যদি চায়, সরকার এই জুনের মধ্যেই ইলেকশন দিয়ে বিদায় নিক।

আর মানুষ যদি চায় ১, ২ বা ৩ বছরও থাকতে পারে।

এই প্রসেস মোটেও নতুন না।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই গণভোট সিস্টেমেই ক্ষমতার ম্যান্ডেট নিয়েছিলেন। আমরা পেয়েছিলাম আমাদের ইতিহাসের বেস্ট স্টেটসম্যানকে।

সবকিছুই কেন সুশীল সমাজ আর রাজনৈতিক দলের হাতে বর্গা দিতে হবে?

এসবের বাইরের সাধারণ মানুষের মতামত দেওয়ার ওয়েটা এখানে কই?

অথচ এই দেশ যতটা মির্জা ফখরুলের, যতটা নাহিদ ইসলামের, যতটা শফিকুর রহমানের, ততটাই আমার, ততটাই আপনার।

গণভোট এই জায়গাটা সমান কইরা দেবে।

অন্তত এতো এতো রক্ত দেওয়ার পর এখন তো অন্তত দেশের মালিকানায় সবার সমান হিস্যা হওয়া উচিত, নাকি?

আশা করি, এতে নির্বাচনপন্থী কোন দলের আপত্তির জায়গাটা থাকবে না।

28/03/2025

গতরাত ফজরের পর আল্লাহ ফেরেশতাদের বললেন। দেখি কার কি আমলনামা এনেছো! কে কি কি দোয়া করেছে একটু দেখাও!

দায়িত্বরত ফেরেশতারা সব আমলনামা খুললো। কেউ নেক হায়াত চেয়েছে। কেউ নেক মৃত্যু চেয়েছে। কেউ পরিবার পরিজন, দেশ দশ এবং প্রিয়জনের জন্য দোয়া করেছে। কেউ শহিদদের জন্য জান্নাত এবং সর্বোপরি শহিদ পরিবারের জন্য উত্তম বিনিময়ের দোয়া করেছে। ইত্যাদি।

তারপর আল্লাহ বললেন, ঐ দোয়াগুলো কিসের? সামনে আনছো না যে! ফেরেশতারা বললো। হে মালিকুল জাবরি ওয়াল কাদরি! এই ধরণের দোয়া আমরা আগে তেমন পাই নি। এবার নতুন কিছু দোয়া এসেছে। এগুলোর অর্থ আমরা বুঝতে পারছি না।

আল্লাহ বললেন, দোয়াগুলো খুলো তো দেখি। দোয়াগুলো আল্লাহর সামনে পেশ করা হলো। আল্লাহ তায়ালা দোয়াগুলো দেখলেন। দেখে, কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে পূণরায় বললেন, আচ্ছা দোয়াগুলো যত্ন করে রেখে দাও।

ফেরেশতারা জানতে চাইলেন, হে মালিকুল মওত! এগুলো কিসের দোয়া ছিল?

জবাবে আল্লাহ বললেন। এগুলো ছিল ইলেকশনের দোয়া। দোয়ায় তারা কায়মনোবাক্যে ইলেকশন চেয়েছে। বলেছে, // 'হে আল্লাহ নির্বাচন দিন।// হে আল্লাহ ইলেকশন দিন।//

ফেরেশতারা জানতে চাইলো, নির্বাচন কী হে মালাকুতুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি? আর এই লোকগুলো কারা?

আল্লাহ ফেরেশতাদের বললেন, আগে নির্বাচন হোক, পরে টের পাবা!

28/03/2025
হোসাম সাবাতের শেষ ক'টি কথাএ লেখা আপনি পড়তে শুরু করেছেন মানে, আমাকে হ ত্যা করা হয়েছে। হ ত্যা করেছে ইজরায়েলি আধিপত্যবাদী ব...
27/03/2025

হোসাম সাবাতের শেষ ক'টি কথা

এ লেখা আপনি পড়তে শুরু করেছেন মানে, আমাকে হ ত্যা করা হয়েছে। হ ত্যা করেছে ইজরায়েলি আধিপত্যবাদী বাহিনী।

এসব যখন শুরু হচ্ছে, আমি তখন মাত্র ২১, দু'চোখে স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। জীবনের শেষ এগারো মাস, আমি প্রতিটি মুহূর্ত উৎসর্গ করেছি আমাদের মানুষগুলির জন্য। উত্তর গাজার নারকীয় ঘটনা আমি পল অনুপল নথিবদ্ধ করেছি কারণ ওরা যে সত্য ধামাচাপা দিতে চায় তা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। এ ক'মাস রাস্তার ধারে, তাঁবুতে, স্কুলে-যেখানে পেরেছি সেখানে ঘুমিয়েছি। প্রত্যেক দিন বেঁচে থাকার জন্য আমায় লড়তে হয়েছে। খিদেয় কষ্ট পেয়েছি দিনের পর দিন, কিন্তু আমি নিজের মানুষগুলিকে কখনও দূরে ঠেলে দিইনি।

আল্লাহ জানেন, আমি সাংবাদিক হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছি। শুধু সত্যটুকু তুলে ধরব বলেই আমি সর্বস্ব বাজি লাগিয়েছি—আর অবশেষে আজ বিশ্রাম পাওয়া গেল—গত আটমাস এই বিশ্রামটুকু কী অধরা ছিল!

আমি যা কিছু করেছি ফিলিস্তিনি লড়াইয়ের উপর আমার অটুট বিশ্বাস থেকেই করেছি। আমি বিশ্বাস করি এই মাটি আমাদের, তাই এই জমি রক্ষা করতে প্রাণ দেওয়া, এখানকার মানুষের সেবা করাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় গৌরব বলে জেনেছি।

এখন, আপনাদের কাছে আমার প্রার্থনা: গাজা নিয়ে কথাবার্তা থামাবেন না। বিশ্ব যাতে মুখ ফিরিয়ে নিতে না পারে। লড়াই যেন কিছুতেই না থামে। আমাদের গল্পগুলি বলতে থাকুন, যতদিন প্যালেস্টাইন স্বাধীন না হয়।

— শেষ বিদায়
হোসাম সাবাত
উত্তর গাজা

27/03/2025

পালিয়ে যাবার আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলো, হা/সি/নার ভাইপো তাপস। সে ২০২০ সালের ইলেকশনে মেয়র হয়!!!

আপনি কি মনে করে তাপস বৈধ ভোটে মেয়র হইসে? না হয় নাই। কিন্তু তার ভোট যে অবৈধ, সেটার কোন আইনি ভিত্তি ছিলো না। সবই ছিলো পারসেপশনের ব্যাপার।

তাপসের মেয়র হওয়াকে চ্যালেঞ্জ করে, ফল বাতিল ও পুনরায় ইলেকশনের দাবীতে সেই ইলেশকশনে তাপসের রাইভাল ইশরাক মামলা করে।

আজকে মামলায় রায় হয় তাপসের মেয়র হওয়া অবৈধ। এতোদিন যেইটা পারসেপশন ছিলো, এখন সেইটা আইনি ভিত্তি পেলো।

২০২০ সালের অবৈধ নির্বাচনে তাপস মেয়র হওয়ায় তাকে শাস্তি দেয়া যাবে। সে মেয়র হয়ে যে সুবিধা নিয়েছে তা ইচ্ছা করলে ফেরত নেয়ার আদেশ জারী করা যাবে। তাপস যেসকল প্রকল্প নিয়েছে তা চাইলে বাতিলও করা যাবে। অবৈধভাবে মেয়র হওয়ায় তাপসকে ও যারা এই নির্বাচন করতে সহযোগীতা করেছে, তাদেরও শাস্তি দেয়ার পথ এই রায়ে সুগম হলো।

এতো বড় একটা কাজ ইশরাক আইনি লড়াই করে আমাদের এনে দিলো। আর আমরা কিনা ইশরাকে বলতেসি, সে নির্বাচন ছাড়া মেয়র হইতে চায়! তাকে ধন্যবাদ না দিয়ে ব্যাশিং করতেসি।

শুনেন ভাইয়েরা! ইশরাক মামলা করেছিলো ফল বাতিল ও পুনরায় নির্বাচন আয়োজনের জন্য। নিজেকে মেয়র বানাইতে সে মামলা করে নাই।

Ishraque Hossain - ইশরাক হোসেন

21/03/2025

[] সূরা ক্বাদর []

আমরা বলি শবে ক্বদর। আরবিতে লাইলাতুল ক্বদর। যার অর্থ অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুল’ অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হলো—ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা।

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর পূর্ববর্তী নবী এবং তাদের উম্মতগণ দীর্ঘায়ু লাভ করার কারনে বহু বছর তারা আল্লাহর ইবাদাত করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উম্মতের আয়ু অনেক কম হওয়ায় তাদের পক্ষে আল্লাহর ইবাদত করে পূর্ববর্তীদের সমকক্ষ হওয়া কিছুতেই সম্ভবপর নয় বলে সাহাবীদের মনে আক্ষেপের প্রেক্ষিতে তাদের চিন্তা দুর করার জন্য সুরা ক্বদর নাজিল হয়। আর এ সূরা নাজিল করে এই রাতের ইবাদত ও নেক আমলকে হাজার মাসের ইবাদতের তুলনায় উত্তম বলে ঘোষনা করা হয়।

আসুন জেনে নেই, কি আছে মহিমান্বিত লাইলাতুল ক্বদরের এ রাতে? এ রাতটা কেমন?

•আল্লাহ তা‘আলা এই রাত্রিতে পবিত্র কোরআন নাযিল করেছেন।

•এই রাত্রির ইবাদত হাজারো মাসের ইবাদত অপেক্ষা শ্রেয়।

•এই রাত্রিতে রহমতের ভান্ডার নিয়ে অগনিত ফেরেশতা জিবরাঈল আ:-এর নেতৃত্বে পৃথিবীতে আগমন করেন।

•ফেরেশতারা পৃথিবীতে আল্লাহর রহমত বিতরণ করেন।

•এ রাতে পৃথিবীতে ফেরেশতারা এত বেশি অবতরণ করেন যে, তাদের সংখ্যা পাথরকুচির চেয়েও বেশি। (মুসনাদে আহমাদ: ২/৫১৯)।

•’যে ব্যক্তি এই রাত্রির কল্যাণ থেকে বঞ্চিত, সে সব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত’ (নাসায়ী: ৪/১২৯, মুসনাদে আহমাদ: ২/২৩০, ইবনেমাজা)।

•এ রাত্রিতে মানুষের আগামী এক বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। আল্লাহ বলেন: ‘আমি তো এটা (কুরআন কারিম) অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে (লাইলাতুলকদরে), আমি তো সতর্ককারী। এ রাতে প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে ফায়সালা করা হয় আমার নির্দেশে’ (সূরা: দুখান-৩-৫)। ইরানসহ ভারতীয় উপমহাদেশে অনেকে সূরা দুখানের এই তিনটি আয়াতকে নিজেদের মত ব্যাখ্যা করে শবে বরাতের আয়াত বলে চালিয়ে দেন। অথচ এই আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, এটা সেই রাত যে রাতে কোরআন নাজিল হয়েছে। কোরআন নাজিল হয়েছে রমজান মাসে। তাই শাবান মাসের ১৪ তারিখের রাত অর্থাৎ শবে বরাতের সাথে এই আয়াতের কোন সম্পর্ক নাই। তাছাড়া কোরানে শবে ক্বদর নিয়ে একটি পুরো সূরাই আছে৷ অথচ শবে বরাত নিয়ে কিছুই বলা নেই৷ তবে ‘হাসান হাদিস' নামে পরিচিত দ্বিতীয় স্তরের হাদিসে শবে বরাতের উল্লেখ আছে৷ ইরানসহ ভারতীয় উপমহাদেশ ছাড়া অন্যকোন জায়গায় শবে বরাতের কোন উল্লেখ নাই। তাই আমাদের উচিত কোরআনে নাযিলকৃত সূরার মাধ্যমে হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ লাইলাতুল ক্বদর বা শবে ক্বদরের রাতের ইবাদত করা।

•’এই রাতে যে ব্যক্তি বিশুদ্ধ ঈমান নিয়ে আল্লাহর কাছে সাওয়াব প্রাপ্তির আশায় ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহগুলো মাফ করে দেয়া হবে’ (বুখারি: ১০৯১, মুসলিম:৭৬০)।

•"আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমযান শেষ দশক প্রবেশ করত, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা রাত ইবাদত করতেন, ইবাদতের জন্য নিজ পরিবার পরিজনদেরকেও জাগাতেন এবং কোমর শক্ত করে বেঁধে নিতেন (কঠোর পরিশ্রম করতেন)।" (বুখারী ও মুসলিম)

•"আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আল্লাহর ইবাদতের জন্য) যত পরিশ্রম করতেন, অন্য কোন মাসে তেমন পরিশ্রম করতেন না। (অনুরূপভাবে) রমযানের শেষ দশকে যত পরিশ্রম করতেন অন্য দিনগুলিতে তত পরিশ্রম করতেন না।" (বুখারী ও মুসলিম)

•"আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নিবেদন করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (ভাগ্যক্রমে) লাইলাতুল কদর জেনে নিই, তাহলে তাতে কোন (দোয়া) পড়ব? তিনি বললেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা‘ফু আন্নী।’ অর্থাৎ “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।" (তিরমিযী হাসান সহীহ)

*** এবার পড়ে নেই এই সূরাটি। জেনে নেই, এই রাতের সম্মানে নাজিলকৃত সূরা ক্বদরে কি বলা হয়েছে -***

(১. إِنَّآ أَنزَلۡنَـٰهُ فِى لَيۡلَةِ ٱلۡقَدۡرِ
ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল কাদরি
‘আমি একে নাযিল করেছি ক্বদরের রাত্রিতে’।

কোরআন নাজিল শুরু হয় হেরা গুহায় ক্বদরের রাত্রিতে। কোরআনের প্রথম পাঁচটি আয়াত (সূরা ‘আলাক্ব ১-৫ আয়াত) নাজিল করে জিব্রীল (আঃ) চলে যান। খৃষ্টীয় হিসাবে এ দিনটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ১০ই আগষ্ট। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর বয়স ছিল চান্দ্রবর্ষ হিসাবে ৪০ বছর ৬ মাস ১২ দিন এবং সৌরবর্ষ হিসাবে ৩৯ বছর ৩ মাস ২২ দিন।

পুরা কুরআন জিব্রীল (আঃ) একত্রে লওহে মাহফূয থেকে রামাযান মাসের ক্বদর রাত্রিতে নিম্ন আকাশে এনে বায়তুল ইযযাতে রাখেন (ইবনু কাসীর)। অতঃপর সেখান থেকে লেখক ফেরেশতাগণ জিব্রীলকে বিশ রাত্রিতে বারে বারে আবৃত্তি করে শুনান। অতঃপর জিব্রীল সেটা নিয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর উপরে বারে বারে নাযিল করেন। কুরআন লওহে মাহফূযে সুরক্ষিত ছিল (বুরূজ ৮৫/২১-২২)। সেখান থেকে প্রয়োজন মাফিক আল্লাহ জিব্রীল মারফত তাঁর রাসূলের নিকটে প্রেরণ করেছেন। যা ২৩ বছরে শেষ হয়েছে।

২. وَمَآ أَدۡرَٮٰكَ مَا لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ
ওয়ামা আদরাকা মা লাইলাতুল কাদরি
‘আপনি কি জানেন ক্বদরের রাত্রি কি?’

‘লায়লাতুল ক্বদর’ অর্থ আল্লাহ বলেছেন, ‘বরকতময় রাত্রি’ (দুখান ৪৪/৩)। কেন এটি ‘বরকতময়’ তার ব্যাখ্যাও আল্লাহ দিয়েছেন, ‘এরাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়’ (দুখান ৪৪/৪)। অর্থাৎ সৃষ্টির পূর্বে নির্ধারিত তাক্বদীর হ’তে আগামী এক বছরের হায়াত-মউত-রূযী ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের তাক্বদীর ফেরেশতাদের হাতে এ রাতে অর্পণ করা হয়। এ রাতে কুরআন নাযিলের সূচনা হওয়াটাও ছিল তাক্বদীরের একটা অংশ। আর কুরআন নাযিলের ফলে এ রাতের মর্যাদা শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তাই লাইলাতুল ক্বদরই হচ্ছে ভাগ্য রজনী।

৩. لَيۡلَةُ ٱلۡقَدۡرِ خَيۡرٌ۬ مِّنۡ أَلۡفِ شَہۡرٍ۬
লাইলাতুল কাদরি খাইরুম মিন আলফি শাহর
‘ক্বদরের রাত্রি হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম’।

আরবরা ألف বা ‘হাজার’ শব্দ ব্যবহার করে থাকে ‘কোন বস্ত্তর চূড়ান্তসীমা’ বুঝানোর জন্য। অর্থাৎ কেবল এক হাযার মাসের নয়, বরং এ রাতের ইবাদত ও নেক আমল হাযার হাযার রাতের ইবাদতের তুলনায় উত্তম।অনেকে হাযার মাসের ব্যাখ্যা ৮৩ বছর ৪ মাস করেছেন। এগুলি আরবদের বাকরীতির বিরোধী। বস্ত্ততঃ এখানে ‘হাজার রাত্রি’ বলে অসংখ্য ও অগণিত রাত্রি বুঝানো হয়েছে।

৪. تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَـٰٓٮِٕكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيہَا بِإِذۡنِ رَبِّہِم مِّن كُلِّ أَمۡرٍ۬
তানাযযালুল মালাইকাতু ওয়াররূহ, ফিহা বিইযনি রাব্বিহিম মিন কুল্লি আমরিন
‘এ রাতে অবতরণ করে ফেরেশতাগণ এবং রূহ, তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে বিভিন্ন নির্দেশনা সহকারে’।

অর্থাৎ এ রাতে রহমত ও বরকতের ডালি নিয়ে জিব্রীলের নেতৃত্বে অগণিত ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করে আল্লাহর বিশেষ অনুমতিক্রমে। ‘যাতে বিভিন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত থাকে এবং মৃত্যু ও রূযির হিসাব নির্ধারিত থাকে’ (ইবনে কাসীর)। যেমন আল্লাহ বলেছেন, ‘এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়’ (দুখান ৪৪/৪)।

এখানে ‘রূহ’ অর্থ জিব্রীল (আঃ)। যেমন অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন- ‘অতঃপর আমি তার (মরিয়ামের) নিকটে আমার রূহকে (জিব্রীলকে) পাঠালাম। অতঃপর সে তার (মরিয়ামের) নিকটে পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল’ (মারিয়াম ১৯/১৭)। আলোচ্য আয়াতে ‘ফেরেশতাগণ’ বলার পরে পৃথকভাবে ‘রূহ’ বলে ফেরেশতাগণের সর্দার হিসাবে জিব্রীল (আঃ)-এর স্বতন্ত্র মর্যাদা নির্দেশ করা হয়েছে।এরাতে আল্লাহর বিশেষ অনুমতিক্রমে বিশেষ ফেরেশতামন্ডলী বিশেষ নির্দেশসমূহ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে।

এ রাতে ফেরেশতাগণ অধিক সংখ্যায় অবতরণ করে অধিক বরকতের কারণে। অধিকহারে বরকত ও রহমতের অবতরণের সাথে সাথে ফেরেশতাগণও অধিকহারে অবতরণ করে থাকে। যেমন তারা কুরআন তেলাওয়াত ও আল্লাহকে স্মরণ করার মজলিসসমূহ ঘিরে রাখে। সেখানে প্রশান্তির বিশেষ রহমত নাযিল করে। তারা ইলম অন্বেষণকারীর প্রতি সম্মানের জন্য তাদের ডানাসমূহ বিছিয়ে দেয়।

৫. سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ
সালা-মুন্ হিয়া হাত্তা- মাতলাই’ল্ ফাজর্।
‘এ রাতে কেবলই শান্তি বর্ষণ। যা চলতে থাকে ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত’।

এ রাতে কেবলই মঙ্গল। ফজর পর্যন্ত কোন অমঙ্গল নেই। এ রাতে আল্লাহ শান্তি ব্যতীত অন্য কিছুই নির্ধারণ করেন না। এটি নিরাপদ রাত্রি। এ রাতে শয়তান কোন মন্দ বা কষ্টদায়ক কাজ করতে সক্ষম হয় না।

20/03/2025

ফিলিস্তিনের শিশুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার সব পথ হারিয়ে ফেলেছি। কেবল চোখের পানি দিয়ে কি দায়মুক্তি মিলবে?

Address

Sylhet

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when The Sylhet Times posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share