14/08/2023
কোরআনের পাখির মৃত্যুতে কবি মুসা আল হাফিজ হাফি. এর অশ্রু মাখা পোস্ট।
হাওর-বাঁওড়-বিল, জলা কিংবা নদীর স্নেহে সিক্ত লোকালয় নিজের মতোই থাকবে । তাল, তমাল , হিন্তাল আর হিজল-করচের পাতা মাতিয়ে লোকায়ত বাতাস বয়ে যাবে।
রাতজাগা পাখিরা নিজেদের আবেশ উদযাপন করবে দুঃখ-সুখের উপবনে । ঝোপের পাশে জোনাক জ্বলবে, বাঁশঝাড়ে পাখির পাখার আওয়াজ আর ঘাস ফড়িং এর শরীরের মতো কোমল রং থাকবে আকাশময়।
কয়েকটি তারা ইতস্তত মুখ লুকাবে গ্রাম্য বধূর মতো, গৃহস্তঘরে মোরগের দীর্ঘ সংগীত শুনা যাবে ; এরই মধ্যে আযানের আওয়াজ আমাদের আরেকটি ফজরের জন্য জাগিয়ে তুলবে।
নামাজ থেকে সবুজ পথে ছড়িয়ে পড়া মুসল্লিারা দেখবে ‘জলার দিকে বকের ঝাঁক উড়ে যাচ্ছে‘, একটি নতুন সকালকে আলিঙ্গণ করছে বাংলাদেশ । মোরগ ফুলের মত লাল সূর্যোদয় হবে।
তারা ঘরে ফিরবে। কুরআন তেলাওত করবে। তারপর মনে পড়বে একটি পাখির কথা, যে মধুর সুরে ও মনোহর মাধুরিতে শুনাতো আল কুরআনের বাণী ও ব্যাখ্যা। হৃদয়ের ক্যাসেট প্লেয়ার অন করে তার আওয়াজবাহী হাওয়ায় কতবার প্রাণোচ্ছল হয়েছে কত জীবন!
সেই পাখির সুর চিত্তের চেরাগ জ্বালিয়ে শুনতে হতো। এ সুর আবেশের ছিলো না, ছিলো জাগরণের। একটি মোহন ও সজীব বিশ্বাসদীপ্ত জীবনের জন্য।
না, সেই পাখি বাগানে নেই। বাগানও বিরান। তারা রোদন করবে।
প্রতিটি মৃত্যু কাউকে না কাউকে কাঁদায়। তারপর সব ঠিক আগের মতো। সবাই ভুলে যায়।
কিন্তু এই পাখিকে ভুলবার উপায় নেই। কারণ নিজেদেরকে চিনবার পথের মোড়ে তার আওয়াজ অনবরত প্রতিধ্বনিত হতে থাকবে।
মহান প্রভুর মেহমান হয়ে তিনি হয়তো পরম সুখে থাকবেন ওপারে। কিন্তু এখানে আমরা যতোবারই নিজেদের বাড়ীর দিকে ফিরবো, তার চেনা আওয়াজ আরো অর্থপূর্ণ হয়ে আমাদেরকে আমাদের অর্থকে চেনাবে।
শেখাবে, কাকে বলে ঝড়ের উজানে বেঁচে থাকা!