16/12/2025
৫৪ বছরের ইতিহাসে কলঙ্ক
বিজয় দিবসে প্রশাসনিক অবহেলায় তাহিরপুর উপজেলা শহীদ মিনার।
প্রতিবেদক:- শুভ, তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ।
মহান স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস—যে দিনটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক—সেই দিনে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় यादগার শহীদ মিনারটি পড়ে ছিল রঙহীন, অবহেলিত ও প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায়। স্বাধীনতার ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বিজয় দিবসে শহীদ মিনার কোনো রঙ বা সাজসজ্জা ছাড়াই পড়ে থাকতে দেখা গেছে—যা নিঃসন্দেহে একটি লজ্জাজনক ও ক্ষমার অযোগ্য অধ্যায়।
স্থানীয়রা বলছেন, এটি নিছক অবহেলা নয়—এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি চরম অবমাননা। প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন কীভাবে চোখ বুজে এই অবহেলা করলো—সে প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিকের দায়িত্বহীন ভূমিকার কারণেই বিজয় দিবসের আগেও শহীদ মিনার রঙ করা হয়নি—এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। বিজয়ের দিনে ফুল দিয়ে দায় সারা হলেও শহীদদের স্মৃতির প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাহাত হাসান রাব্বি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“আমার ২৯ বছরের জীবনে কখনো বিজয় দিবসে শহীদ মিনারকে এমন অবমাননাকর অবস্থায় দেখিনি। এটি কেবল অবহেলা নয়—এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করার শামিল।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রশাসন কি শুধু পুষ্পস্তবক দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে? শহীদ মিনার রঙ ও সাজানো কি প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না? নাকি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তাদের কাছে গুরুত্বহীন?”
একজন ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,
“শহীদ মিনার অবহেলা মানে মুক্তিযুদ্ধকে অবহেলা। এটি কোনো ছোট ভুল নয়—এটি জাতির ইতিহাসের ওপর সরাসরি আঘাত।”
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, যারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষা করতে ব্যর্থ, তারা প্রশাসনে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।
সচেতন মহলের প্রশ্ন—
সরকারি অনুদান কোথায় গেল? কার গাফিলতিতে শহীদ মিনার র নিশ্চিত করা হয়নি? এই অবহেলার দায় কে নেবে?
স্থানীয়রা অবিলম্বে দায়ীদের জবাবদিহি, তদন্ত এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে বিজয় দিবসে আর কখনো শহীদ মিনার এভাবে অবহেলিত না হয়—সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।