22/11/2025
ওয়াজ মাহফিলে মিডিয়া কর্মীরা সম্মান পায় না কেনো?
আজকের পৃথিবীতে ইসলামী মিডিয়ার জন্যই একটি ছোটো মাহফিল মুহুর্তেই লাখো–কোটি মানুষের ঘরে পৌঁছে যায়। বহু দাতা, শুভাকাঙ্ক্ষী বা দূর-দূরান্তে থাকা মানুষ মিডিয়ার মাধ্যমে ওয়াজ শুনে উপকৃত হন। প্রতিষ্ঠানের প্রচার, দাতাদের আস্থা— সবকিছুই টিকে আছে এই নীরব যোদ্ধাদের কল্যাণে।
কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা— মাহফিলে প্রায় সব কিছুর বাজেট থাকলেও মিডিয়াকর্মীদের জন্য থাকে না সামান্য আয়োজনও। বরং তাদের দিকে অনেক সময় বাঁকা চোখে তাকানো হয়, ধমকানো হয়, কখনো কখনো অপমানও করা হয়। অথচ যাদের লাখটাকার যন্ত্রপাতি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টেকনাফ-তেতুলিয়ায় বিরামহীন দৌঁড় আর রাতজাগা পরিশ্রমের ফলে মাহফিল বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। তাদের জন্য এক কাপ চা বা সামান্য ভাড়ার টাকাও বরাদ্দ থাকে না।
অনেকে ভুল ধারণা পোষণ করেন যে, ইসলামী ভিডিওর ভিউ দিয়ে নাকি প্রচুর আয় হয়, মিডিয়াওয়ালারা গাড়ি-বাড়ি সব কিনে। বাস্তবে ধর্মীয় কন্টেন্টে মনিটাইজেশন খুবই কম; একই ভিউতে অন্য চ্যানেল যা আয় করে, তার তুলনায় ইসলামী চ্যানেলের আয় থাকে নগণ্য। যাতায়াত, যন্ত্রপাতি, শ্রম, ডাটা খরচ— সব মিলিয়ে বেশিরভাগ সময় খরচই উঠে আসে না। তারপরও তারা থাকেন শুধু দ্বীনের খেদমতের নিয়তে।
অনেক মাহফিলে ক্যামেরা দেখলে শ্রোতারা বিরক্ত হয়ে বলে "এই! তোমরা সামন থেকে সরে দাঁড়াও, না হয় এই করবো-সেই করবো"। এটুকু বুঝও তাদের নেই যে, ওরা তো আমাদেরকে ডিস্টার্ব করতে আসেনি। ওরা এসেছে আমাদেরকে কম্বলের নিচে শুয়ে শুয়ে মাহফিল উপভোগ করার সুযোগ করে দিতে। কর্তৃপক্ষও ব্যাখ্যা দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ায় না, বরং শ্রোতাদের পক্ষ নিয়ে মিডিয়া ওয়ালাদেরকে বাজে কথা বলে। যেনো মিডিয়ার কাজ কোনো মূল্যহীন সেবা!
যখন বড়ো বড়ো মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ধর্মীয় কন্টেন্টে বিমুখ, তখন ইসলামী মিডিয়াই আমাদের ঈমানি সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। যদি আমরা এখন তাদের সম্মান না দিই, একদিন এই আলো নিভে গেলে ক্ষতি হবে আমাদেরই।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের হক বুঝার তাওফিক দিন।
✒️ Mamunur Rashid