
11/02/2025
একটি দল যেখানে জাকির হাসান, জাকের আলী, তানজিম সাকিবদের মতন তরুণ ব্যাটার ছিলো, আবার রিস টপলি, রাকিম কর্ণওয়াল, জর্জ মান্সি, পল স্টার্লিং, এরন জোন্সদের মতন বড় বিদেশী ছিলো, তারা আর যাই করুক টেবিলের ৭ নম্বরেতো থাকবে না তাইতো? Well, ক্রিকেট সম্ভবত এতটাও সোজা না। কারণ আজ সেই দলই টেবিলের ৭ নম্বরে আছে। কিন্তু এমন পতনটা এই দলের হলো কিভাবে? কোন মিস ম্যানেজমেন্টের কারণে এই পতনটা হলো?
সেটা বুঝতে প্রথমে চলুন ড্রাফটে যাই। তাদের ড্রাফটে নেওয়া দেশী ক্রিকেটারগুলো ঠিক এমন।
Set 1: Rony Talukdar, Mashrafe Bin Mortaza
Set 2: Al Amin Hossain, Arafat Sunny
Set 3: Ruyel Miah, Ariful Haque
Set 4: Nihad Uz Zaman, Nahidul Islam
এটা বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে নেওয়া দেশী ক্রিকেটার। এরমধ্যে মাশরাফি বিপিএলে খেলতেই পারে নাই, অন্যদিকে আরাফাত সানীকে চিটাগাং নিয়ে গেছে। তাদের রিপ্লেসে এসেছে সুমন খান আর টিপু সুলতান। এবং ড্রাফটের পর দলে এসেছেন জাওয়াদ আবরার এবং সাজ্জাদুল হক রিপন।
এখন প্রত্যেক সেট দেখুন আর ভাবুন, তারা কি বেটার প্লেয়ার নিতে পারতো না? যেমন সেট ২ এর সময় ধরুন। আল আমিন হোসেনের জায়গায় এবাদত হোসেন। এবাদতকে যেখানে বরিশাল নিয়েছে সেট ৩ এর প্রথম কলে। আবার আরিফুল হকের জায়গায় নাঈম হাসান, রিশাদ হোসেন, শাহাদাত হোসেন দিপু, আকবর আলী এমন অনেক নামই ছিলো যারা আরিফুলের থেকে ভালো চয়েজ হতো।
সিলেটের ড্রাফটের প্রথম কলই ছিলো রনি তালুকদার। যদিও রনি তালুকদার বিপিএলের জন্য ভালো নাম, কিন্তু ২০২৪ এর ফর্ম আর ঘরোয়াতে রনির যা ফর্ম ছিলো তাতে রনি তালুকদারকে প্রথম কলেই কোনো দল নিবে সেটা ভাবাও হাস্যকর। যেখানে সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাঈম শেখরা ছিলো। এমনকি তারা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকেও সেই সময় অনেকটা ইগনোর করেছিলো। কিন্তু রনি তালুকদারের স্থলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ থাকলে কি আজ সিলেট ক্যাপ্টেন্সি সংকটে পড়তো?
ক্যাপ্টেন্সিতে যেখানে অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি নুরুল হাসান সোহান, এনামুল হক বিজয়, তামিম ইকবাল, মিথুন আলী কিংবা মেহেদী মিরাজের মতন প্রসিদ্ধ কাউকে নিয়েছিলো, সেখানে সিলেট ক্যাপ্টেন্সি দেয় আরিফুল হককে। পারা যেতো না এই দায়িত্ব জাকির হাসান বা জাকের আলীর মতন কাউকে দিতে? আরিফুল নিজেও ক্যাপ্টেন্সি বা বল-ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেনি তেমন। অথচ সে দিনের পর দিন ক্যাপ্টেন্সিতে অটো চয়েজ হিসাবে খেলে গেছে। অথচ এই দায়িত্বটা তরুণ কাউকে দিলে ব্যাপারটাই অন্যরকম হতো।
সবচাইতে বড় যে সমস্যা এই দলের ছিলো সেটি হলো পরিপূর্ণ মিডিল অর্ডার ব্যাটার না থাকা। তারা ওপেনার আর ফিনিসার কেনাতে এত ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে যে মিডিল অর্ডারেও কাউকে হাল ধরতে হয় সেটা হয়ত ভুলেই গিয়েছে। ফলে এই দলের একবার উইকেট পড়া শুরু করলে সেটা থামানো অনেকটাই কঠিন হয়ে যেতো।
হয়তবা এই দলটা ভালোই করতো, হয়তোবা ভূলগুলো শুধরানো যেতো। মাঝে হওয়া এনসিএল টি২০তে ভালো করা কয়েকটা ক্রিকেটারকে দলে ভেড়াতেই পারতো সিলেট ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ওভার কনফিডেন্স একপ্রকার শেষই করে দিয়েছে। সাথে মাঠের বাইরের কান্ডতো আছেই। সব মিলিয়ে এই দল সিলেটবাসীকে হতাশাই দিয়েছে।
এই দলটা হয়ত আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে, চকচক করিলেই সোনা হয় না। অন্যদের সাথে তুলনা করলে অন্তত সুপার ফোর যাবার দাবিদার ছিলো এই দল। কিন্তু একের পর এক ভূলের কারণে এই দল শুধু তলানীতেই গিয়েছে। রাজশাহীর বিদেশীদের সাথে তুলনা করলে অনেক এগিয়েই ছিলো তারা। তবে আজ রাজশাহী কোথায়, আর সিলেট কোথায়? হয়ত সিলেট একটা শিক্ষা বিপিএলের জন্য।
#সংগৃহিত