16/07/2025
আজ ১৬ জুলাই।
বৈষম্যবিরোধী তথা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী 'শহীদ আবু সাঈদ দিবস'।
এবং আজ থেকেই মূলত 'Monsoon Revolution in Bangladesh' শুরু হয়েছিলো।
২০২৪ সালের আজকের এই দিনে অকুতোভয় আবু সাঈদ পুলিশের অব্যাহত গুলির সামনে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়েছিলেন। কাপুরুষ পুলিশবাহিনী নিরস্ত্র আবু সাঈদের বুকে নির্দ্বিধায় গুলি করে। মুহুর্তেই উত্তপ্ত রাজপথে লুটিয়ে পড়ে আবু সাঈদ। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতার আন্দোলন আরও তীব্র হয়, বেগবান হয় ফ্যাসিবাদের পতনধ্বনি। অত:পর দেশের তরে আবু সাঈদের এই আত্নদান যেনো হাজারো শহীদের জন্য প্রেরণার বাতিঘর হয়, হাসিমুখে আমাদের শিক্ষার্থীরা, সাধারণ জনগণ একে একে শহীদী মিছিলে নিজেদের বিলিয়ে দেয়। সে মিছিলের তোড়ে আন্দোলন এতই তীব্রতর হয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত এক দফার আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় এবং স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়।
এ যেনো ৮ শতাব্দী পূর্বে বখতিয়ারের ঘোড়ার দাপটে পেছনের দরজা দিয়ে অত্যাচারী লক্ষ্মণ সেনের পালিয়ে যাবার স্মৃতির রোমাঞ্চকর দৃশ্যেরই পুনরাবৃত্তি।
আবু সাঈদ তাই আমাদের নেতা, নতুন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার, স্বপ্নদ্রষ্টা।
বিদ্রোহী কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'আনন্দময়ীর আগমনে' কবিতায় ‘মরার দেশের মড়া-শান্তি’র প্রতি তীব্র শ্লেষে ভরা আঘাত হেনেছিলেন প্রিয় কবি। বলেছিলেন, ‘হান তলোয়ার, আন মা সমর, অমর হবার মন্ত্র দেখা’। এই অমর হওয়ার মন্ত্র সবাই খুঁজে পায় না। যে অল্প কিছু মানুষ তা খুঁজে পেয়েছে, তাঁদের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয়ী আবু সাঈদ নিঃসন্দেহে একজন। তার মৃত্যুঞ্জয়ী আত্নদানে ৫২ হাজার বর্গমাইলের এই ভূ-খণ্ডে আবারও স্বাধীনতার দামামা বেজে উঠে, অধিকার আন্দোলনে এক সুতোয়, এক প্রাণে বাঁধা পড়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিক-কুলি-মজুর-মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত সবাই।
শহীদ আবু সাঈদ তাই অমর, তার স্মৃতি চিরসবুজ, তার ত্যাগ চিরন্তন, তার সাহস চির বলীয়ান, চির প্রেরণা।