13/12/2025
১৮৬৫ সালে আব্রাহাম লিংকন থিয়েটারের আসনে বসে, বিশ্বাসের জায়গায়, কাছ থেকে গুলিবিদ্ধ হন।
১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী প্রার্থনার মুহূর্তে, নিরস্ত্র অবস্থায় পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে হত্যা হন।
২০০৭ সালে বেনজির ভুট্টো জনতার মাঝখানে, রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের পথে, কাছ থেকে হামলার শিকার হন।
তিনজনই ভিন্ন দেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন সময়।
আজ, বাংলাদেশে সেই একই প্যাটার্ন আবার চোখে পড়ছে।
ঢাকার রাজপথে শরীফ ওসমান হাদী—একজন রাজনৈতিক কর্মী ও প্রার্থী দিনের আলোয়, জনসম্মুখে কাছ থেকে গুলিবিদ্ধ হন। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি কোনো এলোমেলো সহিংসতাও নয়। এটি ছিল একটি বার্তা। গুলিটি দূর থেকে আসেনি। এটি এসেছে আত্মবিশ্বাস নিয়ে, নিশ্চিত উদ্দেশ্যে, যেন বলা হচ্ছে, “তুমি কথা বলেছ, তাই চুপ করাতে এসেছি।
লিংকন দাসপ্রথার কাঠামো ভাঙতে চেয়েছিলেন।
গান্ধী সাম্রাজ্যবাদকে নৈতিকভাবে পরাজিত করতে চেয়েছিলেন।
বেনজির ভুট্টো একটি অস্থির রাষ্ট্রে ভারসাম্য ফিরাতে চেয়েছিলেন।
হাদী—নিজের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে কথা বলছিলেন, মাঠে নেমেছিলেন। চারজনের পথ, সময় আলাদা। কিন্তু প্রতিক্রিয়া একটাই! বুলেট।
আসল প্রশ্ন হলো!
আমরা কি রাজনৈতিক সহিংসতাকে স্বাভাবিক করে ফেলছি?
মতভেদ কি এখন মৃত্যুদণ্ডের সমান?
আগামী প্রজন্ম কি রাজনীতিকে দেখবে যুক্তির জায়গা হিসেবে,
নাকি কেবল কবরের পথে?
হাদীর ঘটনা একটি নীরব রেফারেন্স পয়েন্ট হয়ে থাকবে।
যখন কেউ প্রশ্ন তুলতে গিয়ে থেমে যাবে, যখন কেউ মাঝপথে আপস করবে, যখন কেউ বলবে
“এই সময়টা ঠিক না”
সেখানে হাদী থাকবে, অদৃশ্যভাবে।