27/11/2025
জকিগঞ্জে ২য় শ্রেণির স্কুল শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু: গোয়ালঘর থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জকিগঞ্জ উপজেলার বারঠাকুরী ইউনিয়নের আমলশিদ গ্রামে ৯ বছর বয়সী এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে নিজ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে শিশুটির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কিশোরীর নাম ঝুমা আক্তার। সে আমলশিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ও দিনমজুর হারুন আহমদের ষষ্ঠ কন্যা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে ধানক্ষেতে বড় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে ঝুমা। পরে মসজিদের ইমামের কাছে টিউশনে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যায় তাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে বড় বোনের মেয়ে গোয়ালঘরে গরুর রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর বড় বোন সাবিনা ইয়াসমিন দ্রুত নিচে নামিয়ে পুলিশকে খবর দেন।
পরিবারের দাবি, ঝুমা আত্মহত্যা করেছে। তবে ৪ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার শিশুটি কীভাবে গোয়ালঘরের প্রায় ৭ ফুট উঁচু তীরে রশিতে ঝুলে পড়লো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আশপাশে কোনো সিঁড়ি, চেয়ার বা উঠার উপকরণ পাওয়া যায়নি। মরদেহ উদ্ধারকালে গরুর ব্যবহৃত রশি গলায় প্যাঁচানো ছিল।
খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্নার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “পরিবারের দাবি—শিশুটি হয়তো খেলতে গিয়ে অসাবধানতায় রশিতে জড়িয়ে পড়ে মারা গেছে। তারা ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফনের অনুমতির আবেদন করতে চাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ বলছে, কোনো অপরাধের প্রমাণ না মিললেও এটি একটি সংবেদনশীল মৃত্যু। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি আইনগতভাবে বিবেচনা করা হবে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি রহস্যজনক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা তদন্তপূর্বক স্বচ্ছ ব্যাখ্যার দাবি জানিয়েছেন।