KobiGaan

KobiGaan বাংলা গানে চেতনার টানে

28/11/2025
26/07/2025

কে এই নুরুল আমিন। আমরা তাকে অনেকেই চিনি বা জানি। তার সংক্ষিপ্ত জীবনী বর্ণনা করা হলো:

বহুদিন পূর্বে তার পূর্ব পুরুষগণ সুদুর ভারতের আসাম রাজ্যে বসতী স্থাপন করেছিলেন। সেখান থেকে পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানের রসুলপুরের ঢলুয়াতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসতী স্থাপন করেন তার পিতা আঃ জলিল, চাচা আঃ করিম ও রহিম উদ্দিন। পাকিস্তান আমলে ১৯৬৪ সালের ১০ মে এই ঢলুয়াতেই তিনি জন্ম গ্রহন করেন। তিনি যখন ৪থ শ্রেণির ছাত্র তখন তার বাবা মারা যায়। পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে তাকেই সংসারের হাল ধরতে হয়। এর মাঝেই তার চাচা রহিম উদ্দিন কড়ই আটার বিখ্যাত সাপের উঝা হযরত আলীর নিকট সাপের বিষ ঝাড়ানো মন্ত্র শিখে। এবং এলাকায় ঐতিহ্যবাহী বেহুলা গানের সূত্রপাত ঘটায়। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের শেষের দিকে নুরুল আমিন কে বেহুলা সাজিয়ে বাড়ি বাড়ি গান করে ডালা ভাসানো শুরু করে। এই থেকেই নুরুল আমিন বেহুলা গানে জড়িয়ে পড়েন। তার গানের তাল লয় সুর ও নাচের বাচন ভংগি দেখে একটি গানের দলের ম্যানেজার তাকে আহবান করেন তাদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য। তাই সে আশ্রা সাধক মেম্বারের রুপবান যাত্রা গানের দলে যোগদান করেন। এবং সেই রুপবান গানের দলে রুপবানের অভিনয় করে খুব সুনাম অর্জন করেন। সেখানেই তিনি পাচ বছর থেকে যান। পাচ বছরের মাঝে তিনি সংসারের কোন খোজ খবর নেন নাই। শুধু গান নিয়ে পড়ে থাকতেন। সাধক মেম্বারের গানের দল বিলুপ্ত হলে তিনি আবার গ্রামে ফিরে এসে সংসারে মনযোগ দেন।

এরপর নুরুল আমিন অনেক নাটক থিয়েটারে যাত্রা গানে নায়িকার অভিনয় করে সুখ্যাতি অর্জন করেন। রাম যাত্রা গানে সীতা হরণ পালায় সীতার অভিনয় করে এবং রাজা হরিশ্চন্দ্র যাত্রা পালায় বামা ঠাকুরের অভিনয় করে অনেক পুরস্কার লাভ করেন। এলাকার ছোট ও যুবক ছেলেদের নিয়ে বেহুলা গানের দল গঠন করেন। ততকালীন সময়ে ঢোল,বাশি, হারমোনিয়ামের কোনো প্রচলন ছিলো না। শুধু চটক তায়া ও খোঞ্জন বাজিয়ে পাড়ার এ বাড়ির ও বাড়ির উঠান আংগিনায় বেহুলা গান গাইতেন। তখন থেকেই তার বেহুলা গানের দল প্রকাশ হতে থাকে।

পাশাপাশি তিনি বাড়ীর পাশে পীর ক্যাবলা মুর্শিদ চান মরহুম হাফিজ উদ্দিন ব্যাপারীর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন বৈঠকী গান শিখেন এবং ফকিরা বৈঠকে গান পরিবেশন করেন। কত সহস্র ফকিরা বৈঠক করেছেন তার কোনো হিসাব নিকাশ আমাদের নিকট নেই। এর থেকেই তিনি ফকির উপাধি লাভ করেন। এবং অনেকে তাকে ফকির নুরুল আমিন বলে ডাকতে শুরু করে।

তিনি একসময় ফকিরা গান গাইতে গাইতে বাউল শিল্পী বনে যান। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বায়না করে বাউল গান করতেন। এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগে কীর্তন পরিবেশন করতেন। পাশাপাশি তিনি কোরআন ও হাদীস শরীফ সম্পর্কে অনেক জানাশোনা ছিলেন। তিনি অনেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরআন শরীফ শিক্ষা দিতেন।

এরপর তিনি চাচা রহিম উদ্দিন এর কাছ থেকে ওঝা বিদ্যা অর্জন করেন। শুধু তাই নয় দাদা ওস্তাদ কড়ই আটার হযরত আলীর থেকেও সাপের বিষ নামানো শিখে। পাশাপাশি নিজ গ্রামের মুন্সী শুকুর মাহমুদ থেকেও অনেক মন্ত্র ও কবিরাজী শিক্ষা গ্রহন করেন।
এরপর ধলাপাড়ার বিখ্যাত আরেক ওঝা রামরুপ থেকেও তিনি সাপধরা এবং সাপের বিষ নামানো মন্ত্র শিখে। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের শেষ দিন নৌকা নিয়ে বেহুলা গান গাইতে রামরুপের বাড়ী যাইতেন এবং নদীতে ডালা ভাসাতেন।

ততকালীন সময়ে গ্রামে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ছিলো না। তাই, তিনি সাপের বিষ নামানো মন্ত্র শিখে মানুষকে সাপে কামড় দিলে তা বিনামূল্যে ঝেরে নামাতো এবং আল্লাহর রহমতে মানুষ সুস্থ হয়ে উঠতো।

তিনি বিভিন্ন দল থেকে বিভিন্ন রকমের বেহুলা গান সংগ্রহ করতেন এবং তিনি বহু রকমের বেহুলা গান মুখস্ত করেছেন ও নিজে রচনা করেছেন। বর্তমানে অনেক বেহুলা গানের দল এ সমস্ত গান জানেই না।

তার কিছুদিন পর, মতি মেলেটারীর পরিচালনায় বেহুলা দল আবার সংগঠিত হয়। এবং নুরুল আমিন বেহুলার অভিনয় করে বহু সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করে। তার মতো নাচের বাচন ভংগি এখন পর্যন্ত কোনো দলের কোনো বেহুলার হয় না। এবং ভবিষ্যতে হবে কিনা তাও আমাদের জানা নেই। সেই দল ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকে।
অনেকদিন পর ওস্তাদ নুরুল আমিন ও আরফান ম্যানেজারের উদ্যোগে পুনরায় বেহুলা গানের দল সংগঠিত হতে থাকে। ভুট্টু মেম্বার সাহেব কে সভাপতি করে ধলপুর গানের প্রতিযোগিতায় প্রথম রাউন্ডে খুব সুনাম অর্জন করে আসে।
২য় দফায় যখন গানের আসর করে তখন শালিকা রসুলপুর হতে বেশ কিছু সংস্কৃতিমনা লোক বেহুলা গানের দলে যোগদান করে।
ততকালীন সময়ে ডাঃ হাফিজ উদ্দিন এর পরিচালনায় এই গানের দল আরো একধাপ এগিয়ে যায়। এই গানের দল কে আরো দুইধাপ উপরে উঠার জন্য ফজলুর রহমান তালুকদারের মাথায় এমন এক বুদ্ধি আসলো যে আমরা সর্বপ্রথম যাত্রা স্টেজের মতো মঞ্চ করে গান পরিবেশন করবো। এবং তার খরচ আমরা বহন করবো। তার পরামর্শ অনুযায়ী সর্ব প্রথম বেহুলা গান মঞ্চে পরিবেশন হলো। সেই প্রতিযোগিতায় টাংগাইল জেলার ২২ টি দলের শালিকা রসুলপুর দল প্রথম স্থান অধিকার করলো এবং পুরস্কার এনে শিরোপা জয় করলো। ইহাতেই নুরুল আমিন ওঝার সারাজীবনের সাধনা সার্থক হলো। ফজলুর রহমান তালুকদারের কারিগরি নির্দেশনায় যে মঞ্চ হয়েছিলো সেই থেকে সারা বাংলায় বেহুলা গান এখন আর মাটিতে হয় না। সেই তালুকদারের মঞ্চ এখন সকল দলের বেহুলা গান মঞ্চে পরিবেশন হয়। তিনি যে মডেল করেছিলেন সেই মডেলেই চলছে এই লোকসংগীত বেহুলা গান। বেহুলা গান আসলে লোকসংগীত। অঞ্চল ভেদে একে ভাষান যাত্রা বলে থাকে।
পরিশেষে ওঝা নুরুল আমিন ফকির তার জীবদ্দশায় প্রতিবছর বাংলা সনের শ্রাবণ মাসের শেষ দিন তার বাড়িতে বেহুলা গানের আসর জমাতো। এবং আমৃত্যু তিনি মানবসেবা করে গেছেন। তিনি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। ডায়াবেটিস নামের দুরারোগ্য ব্যাধিতে ১ লা জুন, ২০১৭ সালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গ্রামের হিন্দু মুসলিম সকলে মিলে তার অন্তিম যাত্রায় শরীক হয়। তিনি মৃত্যুর আগে তার ছোট ছেলে রুহুল আমিন কে অনেক কিছু শিখিয়ে যান। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে রুহুল আমিন প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের শেষদিন তার বাড়িতে বেহুলা গানের আয়োজন করে এবং মনসার ডালা ভাষায়।
ওঝা নুরুল আমিনের জীবনে অনেক বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও তিনি এই গান ছাড়েন নাই। অনেক ত্যাগ তিতিক্ষায় এই গান কে উজ্জীবিত রেখেছিলেন। পাশাপাশি তিনি তার বিদ্যার দ্বারা আল্লাহর রহমতে অনেক মানুষের জীবন সংশয় দূর করেন। তার অনেক বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী বর্তমানে রয়েছে। আপনারা সকলেই তার জন্য দোয়া করবেন। তার বিদেহী আত্মা যেনো বেহেশত বাসী হয়।

05/01/2025
05/10/2024

স্থায়ী বিশ্লেষণ

"দয়াল তুমি বিনে এই ভুবনে
আমার কেহ নাই
আপন কেহ নাইরে দয়াল
আপন কেহ নাই।"

এই স্তবকে গুরু অহন সাঁই গভীর আধ্যাত্মিকতা ও সত্যের সঙ্গে তাঁর আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, পৃথিবীর এই ভবনে ঈশ্বর ছাড়া তাঁর আর কোনো সঙ্গী নেই। ভক্তের এই উপলব্ধি তাঁর জীবনের সমস্ত দুঃখের সমাধান এবং সুখের উৎস। ঈশ্বরই তাঁর একমাত্র আশ্রয়; এর মধ্যে রয়েছে আত্মসমর্পণ ও নিবেদন, যা তাঁকে ঈশ্বরের সান্নিধ্যের দিকে ধাবিত করে।

---

প্রথম স্তবক বিশ্লেষণ

"যার কারনে হলো জনম
আজ বুঝিলাম তার মরম
তাই তোমারই রুপটি স্মরণ
পদে পদে পাই॥"

প্রথম স্তবকে ভক্ত তাঁর জীবনের উদ্দেশ্যকে তুলে ধরেছেন। ঈশ্বরের রূপ স্মরণ করাই যেন তাঁর জীবনের আসল লক্ষ্য। এই স্তবকে ভক্তির গভীরতা এমনভাবে প্রতিফলিত হয়েছে যে, তিনি ঈশ্বরের রূপে নিজেকে মগ্ন করতে চান। প্রতিটি পদক্ষেপে ঈশ্বরের সান্নিধ্য অনুভব করা তাঁর জন্য অপরিহার্য; ভক্ত চান তাঁর অস্তিত্বের প্রতিটি অংশ ঈশ্বরের প্রতি উৎসর্গিত হোক।

---

দ্বিতীয় স্তবক বিশ্লেষণ

"রইবো তোমার চরন আশে
রাইখো সদা তোমার পাশে
বুঝিনা হয় ভজন কিসে
ঐ পদে মরিতে চাই॥"

দ্বিতীয় স্তবকে ভক্ত তাঁর অসহায়ত্ব ও অক্ষমতা ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানেন না কিভাবে সঠিকভাবে ভজন করতে হয়, তবে তাঁর একমাত্র কামনা ঈশ্বরের চরণে মৃত্যুবরণ করা। এটি আত্মসমর্পণের চূড়ান্ত অবস্থান, যেখানে ভক্ত ঈশ্বরের চরণে আশ্রয় খোঁজেন এবং তাঁর সান্নিধ্যে নিজেকে বিলীন করতে চান। এই স্তবক তাঁর নির্ভরতা এবং ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাসকে তুলে ধরে।

---

তৃতীয় স্তবক বিশ্লেষণ

"জ্ঞানহীন অধম অহন
দয়া ভিক্ষা দাও দয়াল ধন
নইলে বৃথা মানব জনম
এ জীবন নাহি চাই॥"

তৃতীয় স্তবকে অহন সাঁই তাঁর নিজেকে 'জ্ঞানহীন অধম' হিসেবে পরিচিত করেছেন। এই বিনয় ঈশ্বরের প্রতি তাঁর অগাধ প্রেম ও আত্মসমর্পণের চিহ্ন। ভক্ত মনে করেন, ঈশ্বরের দয়া ছাড়া তাঁর জীবন অর্থহীন। কৃপা প্রার্থনা করে তিনি জীবনের উদ্দেশ্য ও অর্থ খুঁজে পান। এই স্তবক ভক্তির গভীর বিনয় ও কৃপা প্রার্থনার একটি শক্তিশালী চিত্র।

---

সারাংশ

গানটির প্রতিটি স্তবকে ভক্তির একাধিক স্তর প্রকাশ পেয়েছে। ভক্ত ঈশ্বরের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করেছেন এবং জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে ঈশ্বরের স্মরণ ও সান্নিধ্যকে গ্রহণ করেছেন। ঈশ্বরের প্রতি ভক্তের অগাধ প্রেম, বিনয়, এবং আত্মসমর্পণের এই অনুভূতি গানের মাধ্যমে উচ্চ আধ্যাত্মিকতার এক চিত্র তুলে ধরে। জীবনসত্য খুঁজে পাওয়ার জন্য ভক্ত ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসেন, যা এই গানকে আধ্যাত্মিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত করেছে।

এই বিশ্লেষণ আমাদের হৃদয়ে এক গভীর শান্তি এবং ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে, যা আমাদের আধ্যাত্মিক যাত্রাকে আরও সমৃদ্ধ করে।

05/10/2024

অহন সাঁইজীর গীতি "গুরুর ভজন" একটি গভীর আধ্যাত্মিক রচনা, যা মানব জীবনের আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক দিকগুলোকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। এই গীতিতে গুরুর ভজন, প্রেমের অভাব, সম্পর্কের নেতিবাচক প্রভাব এবং মানুষের উদ্দেশ্য হারিয়ে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিশ্লেষিত হয়েছে। প্রতিটি স্তবকেই মানব জীবনের সংকট এবং আত্মিক সম্পর্কের জটিলতা সুনিপুণভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।

স্থায়ী বিশ্লেষণ:

"মনরে, কেমনে হবে গুরুর ভজনা
ভবমায়ায় হলেম বন্দি, হলোনা বন্দনা ॥"

এখানে গুরুর ভজনের গুরুত্ব এবং মায়ার প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। গুরুর ভজন হলো আত্মার শান্তির উৎস, যা আমাদের দেহের বন্ধন থেকে মুক্তি দেয়। মায়া আমাদের আত্মিক মুক্তির পথে বাধা সৃষ্টি করে। এখানে বলা হচ্ছে যে, মায়ার জালে বন্দি থাকলে গুরুর ভজনের প্রকৃত স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। গুরুর সঙ্গে প্রেম আমাদের এই বন্দিত্ব কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে, যা মানবজীবনের আধ্যাত্মিকতার মূল ভিত্তি। পংক্তিটি মূলত মনের অবস্থা এবং গুরুর ভজনার পথ নিয়ে আলোচনা করেছে। মায়ার প্রভাব থেকে মুক্ত না হলে, গুরুর প্রতি সঠিক ভক্তি বা সেবা করা সম্ভব নয়।

১ম স্তবক বিশ্লেষণ:

"ভজন বিনে কূজন মিলে
সুমন হলে সুজন মিলে।
দীলে যদি দীল না মিলে
পাবো শুধু বঞ্চনা ॥"

এই স্তবকে ভজনের অভাবকে প্রেমের অভাব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভজনের মাধ্যমে সুমন (সততা) এবং সুজন (ভালবাসা) এর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়, যা সত্যিকারের সুখের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু যদি অন্তরে প্রেমের সংযোগ না থাকে, তবে জীবন শুধুমাত্র বঞ্চনা ও হতাশায় পরিণত হয়।

ভক্তি ও হৃদয়ের প্রকৃত মিলন ছাড়া আধ্যাত্মিক পূর্ণতা অর্জন সম্ভব নয়, এবং এর অভাব হলে কেবল বঞ্চনাই জীবনের সঙ্গী হবে।

২য় স্তবক বিশ্লেষণ:

"ভ্রাতৃ পুত্র বন্ধু যত
কূপথে টানে অবিরত।
বেহুশ চলন যত্র তত্র
অন্তরে বয় যন্ত্রনা ॥"

এখানে সম্পর্কের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ভাই, সন্তান এবং বন্ধুদের মধ্যে সম্পর্কগুলো প্রায়শই ভুল পথে পরিচালিত করে এবং যন্ত্রণা সৃষ্টি করে। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে এই সম্পর্কগুলো আমাদের জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে।

নিকটজনদের ভুল প্রভাব এবং নিজস্ব অজ্ঞানতায় মানুষ সহজেই ভুল পথে পরিচালিত হয়, যার ফলে তার জীবনে অন্তর্দাহ বা মানসিক যন্ত্রণা নেমে আসে।

৩য় স্তবক বিশ্লেষণ:

"ভুবন মুরতি কেমন
অন্ধ রতি'র দ্বন্দ কেমন।
মূল হারিয়ে কান্দে খোকন
রতি'র সাধন হলোনা ॥"

এই স্তবকে মানুষের অবস্থার এবং উদ্দেশ্য হারিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। "অন্ধ রতি" মানুষের বিভ্রান্তি এবং অজ্ঞতার চিহ্ন, যা প্রেমের সঠিক উপলব্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।

পৃথিবীর মোহ এবং অন্ধ রতির দ্বন্দ্বে পড়ে মানুষ নিজের আসল সত্ত্বা বা মূল হারিয়ে ফেলে। আধ্যাত্মিক পথে না থাকলে, জীবনের প্রকৃত অর্থ এবং সুখ উপলব্ধি করা সম্ভব হয় না, যার ফলে মানুষ কষ্ট পায়।

সারসংক্ষেপ:

অহন সাঁই এর "গুরুর ভজন" গীতি আমাদের শেখায় যে, গুরুর ভজন এবং আত্মিক সম্পর্কগুলো মানব জীবনে অপরিহার্য। যদি মানুষের মধ্যে সত্যিকার উদ্দেশ্য ও আন্তরিকতা না থাকে, তবে জীবন অর্থহীন ও যন্ত্রণাময় হয়ে ওঠে। গুরুর নির্দেশনা মেনে চলা এবং আত্মিক সাধনার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া আমাদের মুক্তির পথে নিয়ে যেতে পারে।

গুরুপ্রেম শুধুমাত্র প্রেমের অনুভূতি নয়, বরং এটি আত্মিক উন্নতির একটি অপরিহার্য উপাদান।

05/10/2024

গুরু অহন এর গীতি "আমার জীবন বাত্তি নিভে নিভুক তোমার বাত্তি যেন নিভেনা" একজন ভক্তের গুরুর প্রতি গভীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং আত্মসমর্পণের প্রতীক। এই গীতিতে ভক্ত তার নিজের জীবনের সংকটময় অবস্থার মধ্যেও গুরুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছেন এবং গুরুর আধ্যাত্মিক আলোর মাধ্যমে জীবনের সমস্ত বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে উঠার প্রার্থনা করেছেন। প্রতিটি স্তবকে গুরুর প্রতি ভক্তের গভীর আস্থা, প্রেম এবং আত্মিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

স্থায়ী বিশ্লেষণ :
"আমার জীবন বাত্তি নিভে নিভুক
তোমার বাত্তি যেন নিভেনা গো
বাত্তি যেন নিভেনা।"

এখানে ভক্ত তার জীবনের বাত্তিকে নিভে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা জীবনের এক অন্তিম সংকেত প্রকাশ করে। ভক্ত প্রার্থনা করছেন যেন তার নিজের জীবন নিভে গেলেও, গুরুর আধ্যাত্মিক আলো কখনো নিভে না যায়। এখানে "গুরুর আলো" জ্ঞান, পথপ্রদর্শক শক্তি এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতীক, যা ভক্তের জন্য অপরিহার্য। গুরুর আলোর উপস্থিতি ভক্তের জীবনের সত্যিকারের অর্থ ও দিকনির্দেশনা দেয়।

১ম স্তবক বিশ্লেষণ :

"রোজ নিশির ভজনে
আমার মনের আসনে
ও প্রাণনাথ অনাথেরে
নৈরাশ করোনা।"

১ম স্তবকে ভক্ত প্রতিদিনের ভজনের মাধ্যমে গুরুকে স্মরণ করেন এবং গুরুকে তার অন্তরের আসনে স্থান দেন। "প্রাণনাথ" শব্দটি ব্যবহার করে ভক্ত গভীর আবেগ ও ভালোবাসার প্রকাশ করেছেন, যেখানে ভক্ত নিজেকে আশ্রয়হীন মনে করে গুরুর করুণা প্রার্থনা করেন। গুরুর করুণা ব্যতীত ভক্তের জীবনে শান্তি নেই, এবং তাই তিনি প্রার্থনা করছেন যেন গুরুর কাছ থেকে তিনি কখনো নিরাশ না হন।

২য় স্তবক বিশ্লেষণ:

"অন্ধজনার নয়ন কোণে
আছো দয়াল সযতনে
মিছে মায়ার ভব সংসার
ওগো সার করো না।"

২য় স্তবকে গুরুকে দয়ালু হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যিনি অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত মানুষদের জন্য আলোর দিশা দেখান। ভক্ত প্রার্থনা করছেন যেন গুরুর করুণায় তিনি মায়ার মিথ্যা আকর্ষণ থেকে মুক্তি পান। সংসারকে "মিছে মায়া" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ভোগ, বিলাস এবং মিথ্যা আকর্ষণে পরিপূর্ণ। ভক্ত সংসারের এই মোহ থেকে মুক্তি চান, যা শুধুমাত্র গুরুর সাহায্যেই সম্ভব।

৩য় স্তবক বিশ্লেষণ:

"ভজনে মোর হলে কমতি
শুধরে নিও এ মিনতি
কবুল করো মন আরতি
নাহয় খোকন বাঁচবেনা।"

৩য় স্তবকে ভক্ত তার উপাসনায় কোনো ঘাটতি থাকলে, গুরুকে তা শুধরে নেওয়ার জন্য প্রার্থনা করছেন। তিনি স্বীকার করছেন যে গুরুর করুণা ছাড়া তার জীবন অর্থহীন। ভক্তের জীবন সম্পূর্ণরূপে গুরুর অনুগ্রহের ওপর নির্ভরশীল। ভক্তের আত্মসমর্পণ এবং গুরুর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস এই স্তবকে প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে।

সারসংক্ষেপ:

অহন সাঁইজীর গীতির মূল ভাবনায় গভীর আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে, যা একজন ভক্তের জীবনে গুরু কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা প্রকাশ করে। ভক্তের জীবনে যখন সংকট নেমে আসে, তখন তার আশ্রয় ও নির্ভরতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন গুরু। এই গীতির প্রতিটি স্তবকে ভক্তের গুরু-নির্ভরশীলতা, গভীর আস্থা, প্রেম, এবং আত্মসমর্পণের প্রকাশ পাওয়া যায়।

ভক্তের জীবন আলোকিত করার জন্য গুরুর আধ্যাত্মিক আলোকে জীবনের অপরিহার্য দিশা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। গুরু এখানে জ্ঞানের প্রতীক, যিনি ভক্তকে পথ দেখান এবং ভক্তকে মায়ার মিথ্যা আকর্ষণ থেকে মুক্তি দেন। গুরুর প্রতি এই আস্থা ও প্রেমই ভক্তের জীবনকে অর্থপূর্ণ ও সার্থক করে তোলে। ভক্ত উপলব্ধি করেন যে, গুরুর করুণা ছাড়া তার জীবন অচল, এবং গুরুর আলোর মাধ্যমেই তিনি জীবনের চরম সুখ ও আত্মিক মুক্তির সন্ধান পান।

সারসংক্ষেপে বলা যায়, এই গীতি একজন ভক্তের জীবনে গুরুর অপরিসীম গুরুত্ব ও গুরুর করুণা লাভের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।

05/10/2024

অহন সাঁই এর "আশেক হলে ধণ্য জনম হবে।" এই পদটি গভীর আধ্যাত্মিকতা ও প্রেমের পথ নির্দেশ করে, যেখানে সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মাধ্যমে আত্মার মুক্তি অর্জনের কথা বলা হয়েছে এবং আল্লাহর ওলী খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি আধ্যাত্মিকতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত করা হয়েছে। তিনি অসীম দয়া ও করুণার প্রতীক, যার মাধ্যমে প্রেমিক তার পথ খুঁজে পায়। খাজা বাবার দয়া প্রেমিকের আত্মাকে শুদ্ধ করে এবং তাকে আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে পরিচালিত করে। এই দয়া ও করুণার মধ্যে রয়েছে আধ্যাত্মিক আলো, যা প্রেমিককে প্রকৃত সত্যের দিকে নিয়ে যায়। আধ্যাত্মিকতা এবং শুদ্ধির এই পথের মাধ্যমে প্রেমিক মুক্তির দিকে ধাবিত হয়। পদটির বিশ্লেষণ নিম্নরূপ:

---

স্থায়ী বিশ্লেষণ

আশেক হলে ধণ্য জনম হবে।
আজমীরে অসীম দয়াতে,
খাজা বাবা নিবে।

"আশেক হলে ধণ্য জনম হবে"—এই পঙক্তিতে সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর ভালোবাসা ও প্রেমিকের অবস্থানকে তুলে ধরা হয়েছে। "আশেক" বলতে বোঝানো হয়েছে সেই ব্যক্তিকে, যে তার পুরো অস্তিত্ব স্রষ্টার প্রতি উৎসর্গ করে এবং প্রেমের পথে নিজেকে সমর্পণ করে। এই নিঃস্বার্থ প্রেমিক জীবনের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় এবং তার জীবন ধন্য হয়ে ওঠে।
"আজমীরে অসীম দয়াতে, খাজা বাবা নিবে"—এতে আধ্যাত্মিক গুরু খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির দয়া ও করুণার কথা বলা হয়েছে। খাজা বাবার আশীর্বাদ এবং অসীম দয়া সেই ব্যক্তির প্রতি বর্ষিত হয়, যিনি আধ্যাত্মিকতার পথে নিজেকে সমর্পণ করেন। তাঁর করুণায় প্রেমিক সঠিক পথ খুঁজে পায় এবং মুক্তির দিকে অগ্রসর হয়। খাজা বাবার দয়ার মধ্যে রয়েছে আধ্যাত্মিক শুদ্ধি ও মুক্তির প্রতিশ্রুতি।

---

২য় স্তবক বিশ্লেষণ:

আত্মা যে তোর কলুষিত
দুঃখ শোকে ব্যাথিত।
মজিলে সে ত্বরায়িতো,
কী করে বুঝিবে।

"আত্মা যে তোর কলুষিত দুঃখ শোকে ব্যাথিত"—এই পঙক্তিতে আত্মার কলুষিত ও দুঃখ-ভারাক্রান্ত অবস্থার কথা বলা হয়েছে। এখানে আত্মাকে দুঃখ, শোক, এবং পাপের ভারে অবনত দেখানো হয়েছে, যার ফলে আত্মা তার স্বাভাবিক পবিত্রতা হারিয়ে ফেলেছে এবং আধ্যাত্মিক শান্তি ও মুক্তি থেকে দূরে সরে গেছে।

"মজিলে সে ত্বরায়িতো, কী করে বুঝিবে"—এখানে বলা হচ্ছে, আত্মা যদি খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির মতো আধ্যাত্মিক গুরুর প্রেমে বা তাদের নির্দেশিত পথে নিমগ্ন হয়, তবে স্রষ্টার প্রতি প্রেম ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভের জন্য তা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চালিত হবে। কিন্তু এই দ্রুতগতির আধ্যাত্মিক যাত্রায় যদি আত্মা কলুষিত থাকে, তখন সে আধ্যাত্মিকতার গভীর তাৎপর্য এবং সঠিক পথ বোঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

অর্থাৎ, আত্মা যদি দুঃখ-কষ্টে কলুষিত হয় এবং আধ্যাত্মিকতার পথে ধাবিত হওয়ার আগেই শুদ্ধ না হয়, তবে প্রকৃত মুক্তি বা সঠিক আধ্যাত্মিক উপলব্ধি সম্ভব হবে না। আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার মাধ্যমে গুরুর করুণা ও সঠিক পথের সন্ধান লাভ করতে হবে, নতুবা আত্মার জ্ঞান অন্ধকারেই থেকে যাবে।

---

৩য় স্তবক বিশ্লেষণ:

অনন্ত প্রেম এলো নিয়ে
কুড়ারে মন সেথায় গিয়ে।
কি কারণে হলো জনম,
জ্ঞান যোগে কহিবে।

"অনন্ত প্রেম এলো নিয়ে কুড়ারে মন সেথায় গিয়ে"—এই পঙক্তিতে "অনন্ত প্রেম" বলতে সৃষ্টিকর্তার প্রতি সীমাহীন এবং চিরন্তন প্রেমকে বোঝানো হয়েছে। "কুড়ারে মন" অর্থ হলো মনকে স্রষ্টার প্রেমের জন্য প্রস্তুত করা এবং সেই প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিমজ্জিত করা। "আজমীরে গিয়ে" খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির আধ্যাত্মিকতা ও তাঁর দ্বারা প্রদর্শিত পথের দিকে ইঙ্গিত করে। এই আধ্যাত্মিক প্রেম মানুষকে স্রষ্টার নিকটবর্তী করে এবং আত্মার শুদ্ধির পথ খুলে দেয়। আজমীরের আধ্যাত্মিক পরিবেশে এই প্রেম আত্মাকে শুদ্ধ করে এবং প্রকৃত সত্যের দিকে পরিচালিত করে।

"কি কারণে হলো জনম, জ্ঞান যোগে কহিবে"—এখানে বলা হয়েছে, মানুষের জন্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, তা আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও যোগসাধনার মাধ্যমে জানা সম্ভব। আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও যোগের মাধ্যমেই মানুষ তার জীবনের আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে উপলব্ধি করতে পারে। সাধারণ জাগতিক জীবনে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সহজ নয়, কিন্তু আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে মানুষ তার অস্তিত্বের গভীরতা ও জন্মের কারণ জানতে সক্ষম হয়।

এই দুই পঙক্তির মাধ্যমে আধ্যাত্মিক প্রেমের গুরুত্ব এবং জীবন ও জন্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুসন্ধানের পথ নির্দেশ করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও যোগ সাধনার মাধ্যমেই সম্ভব।

---

৪র্থ স্তবক বিশ্লেষণ:

আজ ভুলে যা তুই ভবমায়া
পাবিরে বাবাজীর ছায়া।
খোকন বলে, আশেক হলে,
জ্ঞান নয়ন খুলিবে।

"আজ ভুলে যা তুই ভবমায়া, পাবিরে বাবাজীর ছায়া"—এই পঙক্তিতে ভবমায়া বলতে বোঝানো হয়েছে পৃথিবীর জাগতিক মায়া বা প্রলোভন, যা মানুষের মনকে আধ্যাত্মিকতার পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এখানে বলা হচ্ছে, যদি তুমি এই জাগতিক মায়া ও প্রলোভন ভুলে যাও, তবে তুমি খাজা বাবা (খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি) এর আশ্রয় বা ছায়া লাভ করতে পারবে। খাজা বাবা আধ্যাত্মিকতার প্রতীক এবং তাঁর দয়া ও নির্দেশনার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার আত্মার মুক্তির পথ খুঁজে পায়।

"খোকন বলে, আশেক হলে, জ্ঞান নয়ন খুলিবে"— এখনে অহন সাঁই বলছেন যে, যদি তুমি সত্যিকারভাবে আশেক (প্রেমিক) হও, অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিঃস্বার্থ প্রেমে নিজেকে উৎসর্গ করো, তাহলে তোমার জ্ঞানের নয়ন খুলে যাবে। এর অর্থ হলো, সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর প্রেমের মাধ্যমে তুমি আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবে এবং জীবনের প্রকৃত সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।এই পঙক্তিতে বলা হচ্ছে, জাগতিক মায়া ও প্রলোভন ত্যাগ করে খাজা বাবার ছায়ায় যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং আধ্যাত্মিক প্রেমের মাধ্যমে জ্ঞান লাভের গুরুত্ব। প্রেমের মাধ্যমেই মানুষ আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর হতে পারে এবং প্রকৃত জ্ঞান লাভ করতে পারে।

সারাংশ:

গুরু অহন এর এই পদটি গভীর আধ্যাত্মিকতা ও প্রেমের প্রতীক হিসেবে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসার মাধ্যমে আত্মার মুক্তির কথা তুলে ধরে। এখানে খাজা বাবার দয়া ও করুণার মাধ্যমে প্রেমিকের আত্মা শুদ্ধ হয়ে আধ্যাত্মিক মুক্তির পথে অগ্রসর হয়। পদটির বিভিন্ন স্তবকে আধ্যাত্মিক প্রেম, আত্মার কলুষতা, এবং জাগতিক মায়া ত্যাগ করে খাজা বাবার ছায়ায় যাওয়ার গুরুত্ব আলোচনা করা হয়েছে।

প্রথম স্তবকে বলা হয়েছে যে, সত্যিকার প্রেমে আত্মনিবেদন করলে জীবন ধন্য হয়। দ্বিতীয় স্তবকে আত্মার দুঃখ ও শোকের কথা উল্লেখ করে আধ্যাত্মিক শুদ্ধতার প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয়েছে। তৃতীয় স্তবকে "অনন্ত প্রেম" দিয়ে মানুষের জন্মের উদ্দেশ্য উপলব্ধির পথ খোঁজার কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ স্তবকে জাগতিক প্রলোভন ত্যাগ করে খাজা বাবার আশ্রয়ে যেতে এবং প্রেমের মাধ্যমে জ্ঞান লাভের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। সারসংক্ষেপে, এই পদটি প্রেম ও আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে মানুষের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়ার পথ নির্দেশ করে।

Address

Rasulpur
Tangail
1983

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when KobiGaan posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to KobiGaan:

Share