21/05/2025
জীবনে বড়লোক হবেন যেভাবে ?
এক সময় ভাবতাম, জীবনে বড় কিছু করতে হলে পড়াশোনা করতে হয়, ডিগ্রি লাগে, মেধা লাগে। ভেবেছিলাম, সরকারি চাকরিই জীবন। কিন্তু পরে বুঝলাম, এই দেশে পড়াশোনা করে হয় শিক্ষিত বেকার, আর রাজনীতি করে হয় সম্মানিত নেতা।
পাশের বাড়ির তানভীর ভাই স্কুলে নিয়মিত ফেল করত। পরীক্ষার সময় টিফিন বক্সে চিট-পেপার নিয়ে ঢুকত, আর গার্জিয়ান মিটিং হলে তার মাকে দারোয়ান ঘরে বসিয়ে রাখা হতো।
আজ সে এলাকার “তানভীর ভাই” না, তানভীর সাহেব। SUV চড়ে, হাতে রোলেক্স, চোখে রে-ব্যান। অথচ আমি এখনো ‘আপনার আবেদন গৃহীত হয়নি’ টাইপ চিঠি পড়ি!
তানভীর ভাই কী করলেন জানেন?
রাজনীতি করলেন।
প্রথমে দলের একজন ছোট নেতার সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে দিলেন—
“নেতার সঙ্গে আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা।”
পোস্ট ভাইরাল। কমেন্টে:
👉 “এই ছেলে একদিন অনেক দূর যাবে।”
👉 “সত্যিকারের দেশপ্রেমিক!”
তারপর একদিন রাস্তা ঝাঁট দিলেন, এক বৃদ্ধার জন্য ওষুধ কিনে দিলেন—সব ক্যামেরার সামনে।
তারপর এল গ্যাঞ্জামের রাজনীতি।
এলাকায় এক ভদ্রলোক ছিল, নামাজ পড়ে, চুপচাপ চলত।
তাকে বলা হল, “জামাত-শিবির-রাজাকার”!
কেন? কারণ উনি তানভীর ভাইয়ের পথের কাঁটা।
লোকটা আত্মগোপনে গেল, আর তানভীর ভাই “সাধারণ জনগণের কণ্ঠস্বর” হয়ে উঠলেন।
রাজনীতিতে সফল হতে না পারলে সমস্যা নেই।
👉 পিএস হন,
👉 ক্যাশিয়ার হন,
👉 নেতার জন্য পানি ধরেন,
👉 সোশ্যাল মিডিয়ায় তার নামে গলা ফাটান।
তাও না পারলে?
👉 নেতার মেয়ের সাথে প্রেম করুন।
👉 বিয়েটা টেনে আনুন।
সেটাও যদি না হয়?
👉 নেতার ড্রাইভার হোন।
👉 নেতার বাবুর্চী হোন।
👉 নেতার পিয়ন হোন।
👉 নেতার বাসায় কাজ করেন ।
👉 প্রয়োজনে নেতার বাসার সুইপার হোন।
রাজনীতির ছায়ায় থাকলেই চলবে। একটা পদ লাগবেই। একটা ছবি, একটা পোস্ট, একটা গ্যাঞ্জাম—এই তিনেই বাজিমাত।
আমার এক বন্ধু এখন নেতা সাহেবের ব্যক্তিগত সহকারী। আগে কিনা আমাদের কাছে টিফিন চেয়ে খেত।
আজ অফিসে ঢুকতে গেলে ও বলে—
“স্যার এখন ব্যস্ত, সময় নিয়ে আসবেন।”
আমি ফিরে আসি—চোখে হাসি, মনের ভেতর দীর্ঘশ্বাস।
এই দেশে যদি কিছু করতে না পারেন—রাজনীতি করুন!
মেধা লাগবে না, ডিগ্রি লাগবে না, সিভি লাগবে না।
শুধু দরকার—
👉 এক নেতা,
👉 এক ছবি,
👉 আর একটু ‘চালাকি’।
পেছনে তাকাতে হবে না, শুধু সামনে চলুন…
কারণ সামনে পাওয়ার,
আর পেছনে শুধু পরীক্ষার প্রশ্নপত্র! #বাংলাদেশ #বাংলাদেশী