Lamha Islam - লামহা ইসলাম

Lamha Islam - লামহা ইসলাম মনের কল্পনা গুলো কলমে প্রকাশ করার নামই গল্প☺️🌺🥀

 েখানে_হৃদয়_সেখানে #লেখনিতে_লামহা_ইসলাম #পর্ব_৪৭ঢাকার শহর। রাত গভীর হলেও শহরের কিছু কোণায় ঘুম নামে না। এমনই এক কোণায়, পু...
11/06/2025

েখানে_হৃদয়_সেখানে

#লেখনিতে_লামহা_ইসলাম

#পর্ব_৪৭

ঢাকার শহর। রাত গভীর হলেও শহরের কিছু কোণায় ঘুম নামে না। এমনই এক কোণায়, পুরনো এক ভবনের দোতলায় আলো-আঁধারিতে বসেছে তিনটি ছায়ামূর্তি—অচেনা ব্যক্তি ১, অচেনা ব্যক্তি ২ এবং বস।

সামনে বড় স্ক্রিনে ভেসে আছে একটি ছবি। ছবিতে মুখ বোঝা যাচ্ছে না বোরকা পরিহিতা নারী , চোখে অদম্য আত্মবিশ্বাস—NA, দেশের অন্যতম প্রভাবশালী বিজনেসওম্যান। তার কোম্পানি বিশ্বের এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা এই তিন ভিলেনের জন্য হুমকি।

বস: সে আমাদের বিজনেস এর শত্রু, প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের বিপরীতে। আর আমরা এখনো কিছুই করতে পারিনি?

অচেনা ব্যক্তি ১: আমরা চেষ্টা করেছি, বস। কিন্তু মেয়েটা যেন ছায়ার মতোই সব ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায়।

অচেনা ব্যক্তি ২: তার পাশে সবসময় থাকে অসংখ্য গার্ড আর তার মেয়ে। আগুনের মতো তেজ।

বস: আমি কিছু শুনতে চাই না মানে না। আমি চাই যেভাবেই হোক ওদেরকে আমার নাগালে আনতে আমি আর তোদের সুযোগ দিব না এখন অনেক তোর ছেলেকে বল ফিল্ড এ নামতে আমি জানি ওর যে মগজ তাতে ও পারবে।

অচেনা ব্যাক্তি ২ : ওকে বস আমরা সকল রকম চেষ্টায় করে যায় কোন খামতি থাকবে না।

বস : আর চৌধুরী সাহেবের কি খবর।

অচেনা ব্যাক্তি ২ : ওরা তো আনন্দেই আছে মেয়ে আছে এখন।

বস : বেশিদিন না দেখা হচ্ছে চৌধুরী সাহেবের সাথে ওয়েট এন্ড সি।

অচেনা ব্যক্তি ১: NA এর মেয়ে ওর চোখ, কান আর সাহস—তিনটিই ভয়ঙ্কর। ও একা চলাফেরা করে, কারো প্রতি দায়বদ্ধ নয়, কিন্তু NA-এর ক্ষতি হবে বুঝলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে।

বস: তাহলে তাকে ‘ব্যস্ত’ রাখতে হবে। ফাঁদ পাতো, এমনভাবে যে সে বুঝতে না পারে।

---

অন্যদিকে

গভীর রাতে কাজ করছে। সামনে রিপোর্টের স্তূপ, বাইরে বজ্রপাতের শব্দ। হঠাৎ দরজায় শব্দ। ডুকলো তার মা NA

NA : তুমি আবার রাত জাগছো?

NA মেয়ে : একমাত্র রাতেই কাজটা শান্তিতে করা যায়।

NA : আমি একটু চিন্তিত তোমার সেইফটি নিয়ে। আবার আমাদের স্পাইমান ও ঠিক করে যোগাযোগ করছে না।

NA মেয়ে : ও সাবধান আছে আর আমার সাথে যোগাযোগ আছে কিন্তু তুমি সাবধান থেকো সতর্ক থেকো।

NA: তুমি না বুঝলেও, আমি বুঝি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

NA চলে গেলো।

__________

ধানমন্ডির এক ফাঁকা গলিতে দাঁড়িয়ে AD । হাতে ছোট একটা ডিভাইস, ভেতরে চলাফেরা ট্র্যাক করার প্রোগ্রাম। সে জানে, ওরা কিছু বড় করতে যাচ্ছে।

AD : আমি জানি তুমিই সে কিন্তু আমার প্রমান লাগবে যদি কেউ সত্যকে ধ্বংস করতে চায়, আমি তাদের থামাবো।

হঠাৎ পেছন থেকে একটা ছায়া এগিয়ে আসে। আসতে আসতে সেই ছায়া সামনে চলে এলো চোখ গুলো AD চেনে তাই চুপচাপ দেখছে কিছু বলছে না।

আমি জানি তুমি বুদ্ধিমতি তাই বলে এতদুর আসা তোমার উচিত হয়নি আমি আগেই বলেছি আমি খুব ভালো মানুষ নয়, তুমি কি ভেবেছো আমি বুঝতে পারবো না । তুমি একটা অনিয়ন্ত্রিত সমস্যা, মিস AD ।

AD : আর আমি জানি, সমস্যাগুলোই তোমাদের সবচেয়ে বড় ভয়।

দুইজনের মধ্যে মারাত্মক লড়াই শুরু হয়। দুজনেই দুজনের মুখোশ খুলতে চাইছে মারপিট পর্যন্ত লেগে গেলো তারপর ছায়াটা পালিয়ে গেলো আহত শরীর নিয়ে আর AD ভয়ংকরী হাসি দিল আর বললো তোমাদের সময় হয়ে গেছে এখন শুধু তোমাদের বস কে হাতের কাছে পাওয়া বাকি টাইম স্টার্ট নাও বি রেডি।

---

পরদিন – বিয়ন্ড কর্প-এর অফিসে।

NA একটি প্রস্তাব পান—বিদেশি এক বিনিয়োগকারী বিশাল অঙ্কে চুক্তি করতে চায়। ঠিক তখনই NA এর মেয়ে ডোকে আর তার সাথে ফিসফিস করে কথা বলে।

NA মেয়ে : এটা ফাঁদ। আমি লোকেশন ট্রেস করেছি—তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।

NA: আমি জানি এটা ফাঁদ। আমি সেখানে যাব, কিন্তু ওদের জালে ওদের কেই আটকাবো।

NA মেয়ে : ওকে আমি পাশে আছি থাকবো সকল প্ল্যান তৈরি করে ফেলবো আর দরকার পরলে আমি নিজে আ্যকশন এ নামবো এবার ওদের কে দেখাবো কার সাথে লড়তে এসেছে।
NA আর তার মেয়ে ঠিক করল, তারা সরাসরি বসকে ফাদে ফেলবে । কিন্তু ওরা জানে, বস শুধু শক্তিশালী নয়, সে খুব চালাকও।

NA মেয়ের ফোনে একটা নাম্বার থেকে কল আসলো আননোন ফোনটা রিসিভ করলো — হ্যালো ম্যাম আমি কোম্পানির মেনেজার আপনাদের কালকে একটা লোকেশন এ আসতে হবে ডিল টা ফাইনাল করার জন্য ।

NA মেয়ে : ওকে লোকেশন সেন্ড করে দিবেন ঠিক টাইমে পৌঁছে যাবো।
..

NA : তাহলে আগুন কে এবার সামনাসামনি দেখবো কি বলো।

NA মেয়ে : দেখা যাক কি হয় তুমি শুধু নিজের সুরক্ষা করো বাকিটা তো আমি আছিই।

লোকেশন অনুযায়ী NA কে পাঠানো হলো তার মেয়ে যাইনি।

NA একটা ভুতুড়ে, পুরনো জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করে, যেখানে বসের সেই গোপন আইডেন্টিটি সংক্রান্ত তথ্য লুকানো আছে।

ঘরটা পুরনো, অন্ধকার, প্রতিটি কোণে বাজে বাতাসের আওয়াজ আর কিছু একটা যেন ওতপ্রোতভাবে তাদের দেখছে।

NA হঠাৎ দেখে দেয়ালে একটা অদ্ভুত চিহ্ন — এটা আসলে বসের গোপন সঙ্কেত। তারা বুঝতে পারে, এই সঙ্কেতের মাধ্যমে বস গোপন বার্তা পাঠায় তার সহযোগীদের।

তাদের সামনে থাকে এক বড় পাজল—যা ঠিকঠাক না করলে তারা কোনো তথ্য খুঁজে পাবে না।

NA কি করছে না করছে সব কিছু তার মেয়ে দেখছে হিডেন ক্যামেরার মাধ্যমে । তারপর NA এর সামনে কিছু মুখোশধারী লোক আসলো প্রত্যকজন আসছে আর NA কে বেধে ফেলা হলো।

NA : এইসব কি? তোমরা আমাকে কেন আটকে রেখেছো আমি তো এসেছি ডিল করতে আমাকে এখানে কেনো আনা হলো।

অচেনা ব্যাক্তি : অনেক জালিয়েছেন ম্যাডাম আপনাকে হাতে আনতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে ।

NA : মানে কি বলছেন এইসব আমি বুঝতে পারছি না।

অচেনা ব্যাক্তি ২ : বুঝবেন বুঝবেন একটু অপেক্ষা করুন বস আসছে। তা আপনার মেয়ে কই ও আসলো না যে।

NA : ও তো বিজনেস এর কাজে বাহিয়ে আসতে পারেনি আল্লাহ বাঁচাইছে নাহলে তোদের মতো পচুর কবলে পরতে হতো।

বস : রিল্যাক্স এতো চিৎকার করা ভালো না স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ আস্তে আজ তো আপনার মেয়েও নেই যে বাঁচাবে।

NA : আমি মরতে ভয় পায় না তাই বি রেডি পরের সিন দেখার জন্য।

বস : মানে কি পাগল হয়ে গেলি বাধা অবস্থায় এতো পাওয়ার। এই কেও ওর মুখ খুল দেখি কে এই বিশ্ব সুন্দরী যাকে কেউ ই এখনো দেখেনি। এই যা ওর মুখ খুল।

NA : আরে থামেন ভাই ওহ নো সরি বোন থামেন এতো কিছু এখনি দেখলে হবে সামনের জন্য কিছু রাখেন।

বস ঘাবরে গেলো মানে বোন বলছে কেনো ওর বয়েস তো ছেলেদেরতাহলে?

NA : ভয় পেলে নাকি বোন।

বস : আব কিসের ভয়

NA : এইযে ছেলে থেকে মেয়ে বানিয়ে দিলাম তাই।

বস : কি সব বলছিস তুই তোর কি ব্রেনে সমস্যা নাকি।

NA : না না আমার ব্রেন একদম শার্প আছে

বস : এতো কথা বাদ তোর মুখ খুলবি নাকি আমি তোর মুখ খুলানোর ব্যাস্থা করবো।

NA : দেখবি তো অবশ্যই তার আগে শোন কিছু কথা বলি।

বস : কি কথা?

NA : তোর কি মনে দা বেস্ট বিজনেস ওম্যান তোর এক লোকেশন এ চলে এলো এটাও মানা যায়? যে পুরো বাংলাদেশে টপ এ আাছে সে এতো বোকা যে কারো ব্যাগরাউন্ড চেক না করেই একটা কোম্পানির সাথে ডিল করতে চলে এলো এটা একটু বেশি ইজি হয়ে গেলো না?

বস : তু..ই কি বলতে চাচ্ছিস

NA : আহা এই টুকুতেই তোতলালে হবে বাকিটা তো শোন.... তুই আমাকে এখানে আনিস নি আমি তোকে এখানে টনেছি বুঝেছিস তোরা যেদিন ই আমার কাছে গেছিস ওইদিন ই তোদের সব ডিটেইলস আমার জানা শেষ তাই ভাবলাম আমিও একটু খেলি তুই একা আর কত খেলবি এবার সামনাসামনি দেখা হোক তাই না।

বস : ইউ স্কাউন্ডাল তুই আমার সাথে গেম খেলছিস তোকে তো যেইনা NA কে ধরতে যাবে তখনই দরজা দিয়ে NA এর মেয়ে ডুকে আর বলে পিকচার আবি বাকি হে মাসিমা থামেন।

বস : বাহ ভালোই হলো মা মেয়েকে একসাথে পেয়ে গেলাম ।

NA মেয়ে : আমাদের দেখে কি আপনার কাঁচা খেলোয়ার মনে হয় মাসিমা.. একটু বাহিরে তাকিয়ে দেখেন আশেপাশে সব আমাদের লোক কোন দিক দিয়ে পালাবেন?

অচেনা ব্যাক্তি : এই টুকুনি মেয়ে আমাদের ভয় দেখাতে এসেছো সাহস তো কম না।

অচেনা ব্যাক্তি ২ : তোমার মার হাত পা বাধা আমার কাছে বন্দি

NA মেয়ে : কোথায় বাঁধা?

অচেনা ব্যাক্তি ২ : এইতো বাঁধা ।

NA : কই নেইতো...

তারপর মারে এক থাপ্পড়।

বস ভালো ভাবেই বুঝে গেছে ফাঁদে পরে গেছে তাই ভাবছে এখন কি করে বাচা যায় ঠিক তখনই ধোঁয়া এসে চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেলো। আবছা আলোয় একটা লোককে দেখলো তারপর সব হাওয়া।

NA মেয়ে : আ্যটাক ইমিডিয়েট।

ততক্ষণে সব ওদাও পালিয়েছে।

NA : এত কিছু করেও ধরতে পারলাম না কি করব এখন।

NA মেয়ে : আরে চিন্তা করো না আহত বাঘিনী আবার আসবে সো চিল চলো বাসায় যায়।

তারপর ওরা ওদের গার্ড নিয়ে চলে গেলো কিন্তু কে এই গোপন শত্রু যে আড়াল থেকে খেলছে পরে ভাববে এখন যাওয়া যাক।
চৌধুরী বাড়ি – ড্রয়িংরুম

বাড়িতে শুধু জেরিন, নিশি, রাহেলা আর হুমায়রা বেগম আছে। বাকিরা সবাই বাইরে। সবাই ড্রয়িংরুমে বসে গল্প করছে।

এমন সময় বাড়ির দরজায় ঢুকলো আয়মান আর আহিয়ান। দু’জন এসে সোফায় বসলো।

আয়মান:
নিশি, যাও তো, একটু শরবত করে আনো। বাইরে অনেক রোদ।

নিশি:
বসো তোমরা, আমি নিয়ে আসছি।

আহিয়ান:
আম্মু, আমারটায় চিনি একটু কম দিও।

নিশি:
ঠিক আছে।

আহিয়ান :
আম্মু, লামু কোথায়?

নিশি :
সে নবাবজাদি কোথায় আছে আমি কী করে জানবো? এখনো বাড়ি ফেরেনি, এটুকুই জানি।

আহিয়ান (কিছুটা অভিমান নিয়ে):
আম্মু, তুমি সবসময় বোনের সঙ্গে এমন করো কেন বলো তো?

নিশি কিছু না বলে চলে গেলো শরবত আনতে। তখনই দরজায় নওশেদ আর নিশান ঢুকলো। রান্নাঘর থেকে নিশি ওদের দেখতে পেলো, তারপর সবার জন্য শরবত বানাতে লাগলো।

নওশেদ:
ভাইয়া, তোমার ডিলের কী খবর? NA-দের সাথে?

আয়মান:
এই তো চলছে, প্রচুর পরিশ্রম করতে হচ্ছে, রে! বড় ডিল তো, তাই।

নিশান:
আমাকেও নিয়ে যাস না, দেখি একটু অভিজ্ঞতা হবে।

আহিয়ান:
কাল থেকে চল আমাদের সাথে।

নিশান:
ওকে।

রাহেলা:
যা তোরা, আগে ফ্রেশ হয়ে আয়। সারাদিন তো খাসওনি মনে হয়।

হুমায়রা:
গিন্নি কোথায়? এখনো ফিরছে না? ফোন করো।

জেরিন:
দাদি, আফা ফোন দিছিলো। বলেছে, একটু পরে আসবে।

নিশান (হাসি দিয়ে):
তোর কাছে ফোন আছে নাকি যে জানালি?

জেরিন:
বাড়ির ফোনে ফোন করছিলো।

নিশান:
ওহ, আচ্ছা।

সবাই ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

এরপর লামহা বাড়ি ফিরে এলো। দেখলো, কেউ নেই নিচে। সে সরাসরি নিজের রুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।

ডিনারের জন্য সবাই নিচে নামলো, লামহাও এল। দেখলো সবাই বসে গেছে, সে-ও গিয়ে বসলো।

হুমায়রা:
গিন্নি, আজ এত দেরি করলে যে?

লামহা (নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে):
একটু কাজ ছিল, বন্ধুদের সাথে।

নিশান (সন্দেহভাজন চোখে):
সত্যিই কাজ?

লামহা (ঠাণ্ডা গলায়):
আমি কারও কাছে কৈফিয়ত দেই না।

হুমায়রা :
শোনো, কাল সবাইকে হৃদ দাদুভাইদের বাড়িতে যেতে হবে। ওখানে দাওয়াত আছে। তাই যে যেখানেই থাকো, সবাইকে যেতে হবে।

নওশেদ:
কিন্তু মা, আমার তো কাজ আছে।

হুমায়রা:
আমি কিছু শুনতে চাই না, যেতে হবে।

এরপর সবাই চুপচাপ খেয়ে উঠে গেলো।

চলবে...
( এই পর্বটাও দিতাম না শুধু দিলাম তোমাদের সকলকে বলেছিলাম তাই কিন্তু তোমরা আমার দেওয়া টাস্ক পুরন করতে পারো নাই তাই এতো লেট করে দিলাম নাহলে আরও আগেই দিতাম যাই হোক সকলে মিলে ১০০ বেশি কমেন্ট করে ফেলো)

05/06/2025

আচ্ছা সকলে কি চাও ঈদের সালামি হিসেবে তোমাদের একটা পর্ব দেই নাকি?
যদি চাও সকলে আগ্রহ দেখাও নিম্নে ১০০ কমেন্ট হলে আমি ঈদে গল্প দিব শুধু তোমাদের জন্য ❤️

22/05/2025

সকলে তো দেখা যায় ভুলেই গেছো 😌আর বেশি না ঈদ এর পর থেকে আবার লেখা শুরু করবো ইনশাআল্লাহ সকলে পাশে থাকলেই হবে💝

07/05/2025

আর বেশি দিন না গল্প লেখা শুরু করবো😌সকলে পাশে থাকবা তো??

01/05/2025

কি গো ভুলে গেছো নাকি সবাই🥴🫣

24/04/2025

আমার সন্টু মন্টু পাঠক _ পাঠিকা গন তোমাদের অতি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি তোমাদের লেখিকা আফার ফোন ইন্তেকাল করেছে তাই গল্প লিখতে পারছে না 😌বাকিটা আপডেট নতুন ফোনে প্রান দেওয়ার পর বলব ততদিন তোমরা সুস্থ থাকো ভালো থাকো আমাকে ভুলে যেও না আবার🙂

21/04/2025

এই মুখোশের আড়ালে কে আছে??
পরিচিত মুখ নাকি আসলেই ভিলেন😌

 েখানে_হৃদয়_সেখানে  #লেখনিতে_লামহা_ইসলাম  #পর্ব_৪৬ ঈদের উৎসবের রঙ যেন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে।বাড়ির চারপাশে এখন আর নেই স...
20/04/2025

েখানে_হৃদয়_সেখানে

#লেখনিতে_লামহা_ইসলাম

#পর্ব_৪৬

ঈদের উৎসবের রঙ যেন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে।
বাড়ির চারপাশে এখন আর নেই সেই হাসি-ঠাট্টার গুঞ্জন, রান্নাঘরে নেই টুকটাক কোলাহল, উঠোনেও নেই কোনো হৈচৈ। আজ সবাই ফিরে যাবে নিজ নিজ গন্তব্যে।
সকালের আলোটা যেন আজ একটু বিষণ্ণ।

ভোরবেলা থেকেই ঝলমলে কাপড় পরে ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত নোমান। একপাশে আনিশা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের ওড়নাটা একটু একটু করে ভাঁজ করছে, যেন ওড়নার ভাঁজে ভাঁজে ঈদের স্মৃতি লুকিয়ে রাখতে চায়।
মুন সবার আগে তৈরি হয়ে সোফার এক কোণে বসে ফোন ঘাঁটছে, কিন্তু চোখে-মুখে খেয়াল নেই, কপালের মাঝখানে চিন্তার ভাঁজ।

দাদা, চাচা, চাচীরা উঠোনে দাঁড়িয়ে গাড়ি আসার অপেক্ষায়। লামহার মা একবার করে সবার জন্য কিছু না কিছু বেঁধে দিচ্ছেন—কারও হাতে পিঠা, কারও ব্যাগে শুঁটকি-মরিচ, কারও জন্য আমের আচার।

তুহিন: “এই বাড়িটা না... একেকবার এলে এমন লেগে যায়, যাবার সময় মনের মধ্যে কেমন খালি খালি লাগে।”
নোমান: “তোর তো খালি মন না, পেটটাও খালি হয়ে যাবে এখন থেকে! মামির হাতের রান্না খাবি কোথায়! আর তুই তো ক'দিন পরেই আসবি, তাই পেরা নিস না।”
মুন: “খালি রান্নার কথা বলছিস? এই সময়টুকু... একসাথে থাকা, হেসে-কান্না করা... এটা পাবো কোথায়?”
আয়মান: “এইজন্যই তো ঈদ... দূরের মানুষ কাছের হয়, ব্যস্ততা ভুলে সবাই আবার এক হয়।”
লামহা: “আপনারা না থাকলে আমি বুঝতেই পারতাম না, আমি আসলে কার মাঝে ভালো থাকি।”
আনিশা: “এই হৃদ ভাইয়ার সাথে তোর রসায়ন কিন্তু ঈদজুড়ে একটু অদ্ভুত ছিল। ভাবিস না, আমি খেয়াল করিনি।”
লামহা: “ও কিছু না... ঝগড়া ছাড়া তো আমাদের দু’জনের মধ্যে কিছু হয় না।”
আনিশা: “ঝগড়াই অনেক সময় সবচেয়ে গভীর সম্পর্কের শুরু হয়।”

গাড়ির হর্ণ বাজে।
সবাই একে একে ব্যাগ টেনে বাইরে চলে আসে। লামহা দাঁড়িয়ে থাকে বারান্দায়, তার চোখের কোণে জমে থাকা জল গোপনে মোছে।
নোমান: “আসি আপু, এবার আবার কাজের জগতে ফিরি। পরের ঈদ যেন আবার এমন হয়!”

হৃদ, আনিশা, আদিল—ওরা পরে যাবে, তবুও সকলের সাথে বিদায় নিচ্ছে। কে জানে, আবার দেখা হবে কি না!
লামহা কিছু বলে না, মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।

গাড়িগুলো একে একে বেরিয়ে পড়ে বাড়ির গেট দিয়ে।
লামহা হাঁটতে হাঁটতে উঠোনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে।
চারদিকটা হঠাৎ যেন কেমন খালি খালি লাগছে।
ঈদের আলো নিভে গিয়ে এখন শুধুই নীরবতা।
কিন্তু ওই নীরবতার ভেতরেও লুকিয়ে আছে কিছু রঙিন মুহূর্ত, কিছু চেনা চোখের ভাষা, আর কিছু না-বলা কথার ধ্বনি।

হৃদ গিয়ে লামহার পাশে দাঁড়ায়।
নিশান আসতে চেয়েও হৃদকে দেখে আর এগোয় না, আড়ালে চলে যায়।

হৃদ: “কি মিসেস খান? খারাপ লাগছে? চলো ঘুরে আসি, ভালো লাগবে।”
লামহা: “আমার খারাপ লাগে না কিছুতে, তা ভিপি সাহেব, আপনি কি জানেন ভার্সিটিতে নবীনবরণ হবে, সেখানে আপনি দায়িত্বে আছেন, আর আপনি ঘা দুলিয়ে বেড়াচ্ছেন!”
হৃদ: “এই তুমি আমাকে নাম ধরে ডেকো, তাও আবার এমন! আর একটু ‘আপনি’ থেকে ‘তুমি’ আসো না?”
লামহা: “ভালো না লাগলে দরজা খোলা আছে, আসতে পারেন।”
হৃদ: “তোমার মনটায় মনে হয় সিমেন্টের প্রলেপ দেওয়া, উন্নত মানের। না হলে একটা মেয়ে এতো গম্ভীর কী করে হয় ভাই!”
লামহা: “আমার জায়গায় থাকলে বুঝতেন। যাই হোক, আপনার নামের উন্নতি করি তাহলে, কী বলেন?”
হৃদ তো খুশি, ভাবলো—যাক, এখন ওদের সম্পর্কটা এগোবে! ভেবেই হেসে উঠলো।
লামহা: “আচ্ছা খান সাহেব, এখন আপনি আসতে পারেন। আপনার সাথে কথা বলার ইচ্ছে নেই।”
হৃদ: “দূর বেডি, বিয়ে করছি আজ এক মাস, বাসর তো দূর, রোমান্টিক কথাও বলতে পারলাম না—পোড়া কপাল আমার!”
লামহা: “আপনি চাইলে কপাল চেইঞ্জ হতে পারে।”
হৃদ: “কি করে?”
লামহা: “রিমিকে বিয়ে করুন, দেখবেন সব ঠিক।”
হৃদ: “ছ্যাহ! আর কোনো বুদ্ধি পেলে না তুমি? যাও, তোমার বুদ্ধি লাগবে না আমার।”
লামহা: “তাহলে যান, এখন আমার সামনে থেকে।”
হৃদ: “আচ্ছা, এখন যাচ্ছি, কিন্তু তোমার মন জয় করে আবার আসব, আমার মায়াবতী!”
হৃদ চলে গেল। লামহা হালকা হাসলো।

হৃদকে চলে যেতে দেখে নিশান ভাবলো লামহার কাছে যাবে। তাই আস্তে আস্তে গিয়ে লামহার পাশে দাঁড়ালো।
নিশান: “এই জীবনে তোকে না পাওয়ার আক্ষেপ আমার সারাজীবন থেকে যাবে, মায়াপাখি।”
লামহা: “তোমার ভালোবাসা বিশুদ্ধ, আমি মানি। কিন্তু তুমি মানুষটা জঘন্য।”
নিশান: “তুই চাইলেই পারতিস আমার হতে। তুই চাইলেই আমাদের সুন্দর একটা সংসার হতো। আমার এই ছন্নছাড়া জীবনে বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন হতো।”
লামহা: “আমি তো ওই নীরব চোখের আড়ালে ভয়ংকর চোখের খোঁজে আছি। পেয়ে গেলেই সকল জীবনের সমাপ্তি হবে।”
নিশান: “আগুন নিয়ে খেলিস না। আমি চাই না, আমার আঘাত তুই সহ্য করিস।”
লামহা: “আমি আঘাত সহ্য করি না। ওই আঘাতের ঘা শুকোনোর আগে আঘাতকারীকে তার যথাযথ শাস্তি দিয়ে দিই।”
নিশান: “একটা কথা বলবো।”
লামহা: “বাকি আছে কিছু?”
নিশান: “আমার হবি। বিশ্বাস কর, এই বিষাক্ত পরিবেশ ছেড়ে চলে যাবো। প্লিজ, তোকে ছাড়া আমি নিঃস্ব। যখন থেকে বুঝেছি ভালোবাসা কী, আমি তোকে দেখেছি। আমি ভালোবাসা বলতে তোকে বুঝি।”
লামহা: “সম্ভব না। আমি আমার পরিবারকে ভালোবাসি। আর এই পরিবারকে রক্ষা করার জন্যই আমার নতুন করে ফেরা। যে কারণে আমি আমার বোনের চোখের জল দেখেছি, আমার মার ভালোবাসা পাইনি। আমার মা আমাকে ঘৃণা করতেন। তাদের শাস্তি না দিয়েই তো আমি হাল ছাড়বো না। প্রত্যেকটা হিসাব আমি নেব।”
নিশান: “দাদাভাইয়ের কোনো খবর জানিস?”
লামহা: “মৃত মানুষের আবার খবর হয়?”
নিশান: “আমার সামনে নিজেকে চালাক প্রমাণ করার দরকার নেই। তবে আমি যদি আগের নিশান থাকতাম, তাহলে তোকে দুনিয়ার আর কারো হতে দিতাম না।”
লামহা: “চিন্তা করো না, সব হিসাব গোড়া থেকে তুলবো।”
নিশান: “আমার হবি। আমি তোকে ছাড়া নিজেকে শূন্য লাগে, অসহায় মনে হয়। ঘুমের মাঝে প্যানিক অ্যাটাক হয়। বুকের বাঁ পাশটা দেখছিস? প্রতি রাতে চিনচিন ব্যথা অনুভব হয়। এই ব্যথার ওষুধ দিতে পারবি না, পারবি না তাহলে তোকেও তো শাস্তি পাওয়া উচিত।”
লামহা: “আপনার কথাগুলো সুন্দর, মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। তবে আই অ্যাম নট ইন্টারেস্টেড।”
নিশান: “যখন থাকবো না, হয়তো তখন বুঝবি—আমি আছি বলেই তুই নিরাপদ।”
লামহা: “আমি নিজের রক্ষা নিজে করতে জানি।”
নিশান: “প্রকাশ্যটা দেখিস, সামলাস। অপ্রকাশ্যের গুলো?”
লামহা: “যাক, বাদ দাও। তুই আমার হলে জীবনটা পরিপূর্ণ হতো। সব শেষে মানতেই হয়, ভালোবাসা আমার জন্য না।”
নিশান: “নিজেকে আয়নায় দেখ, নিজের পরিচয় পেয়ে যাবি।”
নিশান: “ভালোবাসার উপরে কিছু হয় না। তুই যদি কাউকে ভালোবাসিস, তাহলে তার দোষ, গুণ, খারাপদিক—সব কিছুই তোর কাছে তুচ্ছ মনে হবে।”
লামহা: “আমি আবার এত মহান না। আমি তেমন মেয়ে, যে যেমন করবে, ঠিক তাকেই সেটাই ফিরিয়ে দিই। আমি ‘রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার’-এ বিশ্বাসী নই, আমি নিজেই রিভেঞ্জ নিতে পছন্দ করি।”
নিশান: “আই লাইক ইট।”
লামহা: “গুড।”

নিশান : ওহে মায়াবিনী,
আমার ৩.৫ ইঞ্চি কপালে তুই না থাকলেও,
আমার ২৮০ গ্রাম হৃদয়ে সারাজীবন থেকে যাবি।
আমিও হুমায়ূন ফরিদির মতো ৬০ বছর বয়সে বলবো—
আমি আজও একটা মেয়েকে অসম্ভব ভালোবাসি।”
লামহা আর কথা বাড়ালো না চলে গেলো।

__________________
মুহিব : স্যার এইবার যদি আমরা কাজটা না করতে পারি আমরা তাহলে আমাদের জানাযা পরবে বস। স্যার স্যার ফোন আসছে বস ফোন করেছে হয়ত।
অচেনা ব্যাক্তি : ফোন দে তুই বাহিরে যা আমার কথা আছে।
মুহিব চলে গেলো।
অচেনা ব্যাক্তি : হ্যালো বস। কেমন আছেন।
বস : তোর সাথে খোস গল্প করতে ফোন দেই নাই আমি ব্যাক করছি বাংলাদেশ এ তুই এক কাজ কর NA কাল প্রোগ্রামে যাচ্ছে তো খবর টা আমার কাছে এসেছে তোরা ওইদিন NA ধরবি আমি আসছি আর তোদের যে হিরো ওদের বলে দে রেডি থাকতে যে কোন টাইমে খেলা ঘুরে যেতে পারে আমি ওই চৌধুরী দের ধ্বংস চাই এইবার মুখোমুখি খেলা হবে।
অচেনা ব্যাক্তি : ইয়েস বস সব আপনার কথা মতোই চলছে আর ওরা অল টাইম রেডি আমরা শেষ ওরা আছে তাই তোদের যা বললাম তাই কর NA কে ধর আগে বাকি প্ল্যান আমি করছি এসে তোরা সকলে রেডি থাক
অচেনা ব্যাক্তি : ওকে বস আমি NA এর ব্যাবস্থা করছি বাকিটা আপনি আসুন।
তারপর ওদের কথা ওই পর্যন্তই শেষ।
_____________

অনুষ্ঠানের দিন

চারপাশ আলোয় ঝলমল। সাউন্ড চেক, ব্যানার, রিহার্সেল আর চায়ের কাপ নিয়ে ব্যস্ত সবাই। অডিটোরিয়ামের মেইন স্টেজে দাড়িয়ে হৃদ মাইক হাতে সবার তদারকি করছে। ওর কণ্ঠে এক আত্মবিশ্বাস, চোখে তীক্ষ্ণ নজর।

হৃদ: “সাউন্ডটা ঠিক করে দাও। মেইন গেটের সামনে সিকিউরিটি যেন স্ট্রিক্ট হয়। আজকের অতিথি আমাদের স্পেশাল গেস্ট—বিজনেস আইকন NA। ভুলচুক চলবে না।”

পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা রিমি কনুই দিয়ে নিলিমাকে ধাক্কা মারে।

রিমি : “দ্যাখ, হৃদকে কত হ্যান্ডসাম দেখাচ্ছে! লামহা না থাকলে তো কোন ঝামেলাই থাকতো না !”

নিলিমা : “কিন্তু লামহা আছে বলেই তো তুই এইভাবে কামড়াচ্ছিস!”

মিমি : “তোদের দুজনের নাটক চলুক, কিন্তু রিমি আজকে ওর মানসম্মান ডিটারজেন্ট ছাড়া ধুয়ে দিবি ”

রিমি : দেখ আজকে ওর কি অবস্থা করি সবার সামনে ”

__________

হৃদ নিজে গিয়ে NA কে অভ্যর্থনা জানায়। মিডিয়া, ক্যামেরা ফ্ল্যাশ, করতালির ভিড়ে NA উঠে আসেন স্টেজে। উনি আত্মবিশ্বাসী, স্মার্ট, সকলের মনোযোগ নিজের দিকে টেনে নেন।

NA : “আমি আজকের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে গর্বিত। তোমরা এ দেশের ভবিষ্যৎ, আর ভবিষ্যৎ তৈরির দায়িত্ব এখন তোমাদের হাতেই।”
প্রফেসর : ম্যাম আপনার মেয়ে কই ওর তো আসার কথা।
NA : আসলে আমাদের একটা বিদেশি কোম্পানির সাথে ডিল চলছে এটা নিয়ে ব্যাস্ত তাই ও আসতে পারেনি।
প্রফেসর : দেখার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু পারলাম না I এইটা আমাদের ব্যার্থতা।
NA : ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে দেখা হবে।
ওদের কথার মাঝে একটু পরিবেশ কোলাহল হয়ে গেলো।
রিমি এগিয়ে আসছে ওর ঠোঁটে খ্যাপা হাসি। আজ সাদা গাউনে এসেছে, মুখে সাজ কিন্তু চোখে বিষ। ওর হাতে একটা মাইক, যেটা ও চুরি করে নিয়েছে সাউন্ড টিমের চোখ ফাঁকি দিয়ে।

রিমি (নিজের মনে): “আজ লামহার মুখোশ খুলে যাবে... হৃদ দেখবে, ওর তথাকথিত প্রিন্সেস কেমন নাটক করে।”

মাইশা আর শিমু বুঝে ফেলে কিছু একটা হতে চলেছে

মাইশা: “তোর সন্দেহ ঠিক ছিল, রিমি আবার চাল শুরু করেছে। ও মাইক্রোফোন নিয়ে কী করবে?”

শিমু: “আমি ওকে থামাবো। এই নাটকের শেষ আজকে আমি করেই ছাড়বো।”

স্টেজে — NA কথা বলছেন, ঠিক তখন...

রিমি আচমকা স্টেজের সামনে উঠে মাইক্রোফোন অন করে দেয়।

রিমি : “এক মিনিট! আমি কিছু বলব! আজকের নবীন বরণে একটা বড়ো সত্য প্রকাশ করতেই হবে...”

সবার মধ্যে গুঞ্জন। নিরাপত্তা এগিয়ে আসছে। হৃদ দাঁতে দাঁত চেপে রিমির দিকে তাকায়।

হৃদ (চিৎকার করে): “স্টপ! রিমি, তুমি এখনই নামো। This is not your stage!”

রিমি: “না হৃদ, আজ আমার কথা শুনতেই হবে! তুমি জানো না, এই লামহা—এই শান্ত চেহারার মেয়েটা কী লুকিয়ে রেখেছে...”

সবার দৃষ্টি লামহার দিকে।

লামহা (চুপচাপ উঠে দাঁড়ায়, দৃপ্ত পায়ে স্টেজে আসে): “তুমি বলো রিমি, আজই মুখোমুখি হই। আমার কোনো ভয় নেই। কারণ আমি জানি তুমি কি করতে পারো, আর আমি কী হতে পারি।”

সবার সামনে দুই নারী—দুজন দুই মেরু। একদিকে বিষ, অন্যদিকে আগুন।
রিমির ব্যাবহার দেখে প্রিন্সিপাল এর রাগ উঠে গেলো। সে গিয়ে রিমিকে বকাঝকা করলো আর ওয়ার্ন করে দিলো আর টমন করলে বের করে দিবে রিমি ভয় পেয়ে নেমে গেলো কিন্তু যে প্ল্যান করে উঠেছিলো সেইটা করার জন্য আবারও চেষ্টা করবে এটাই ভাবছে।
তারপর প্রিন্সিপাল লামহার নামে ভালো কিছু বক্তব্য দিয়ে চলে গেলো কারন লামহাকে প্রিন্সিপাল ভালোভাবেই চিনে।

হৃদর চোখ লামহার চোখে। দুজনের মাঝে আগুন, বিদ্যুৎ—কিন্তু কেবল একপাশে ভালোবাসা।
তারপর NA স্টুডেন্ট দের উদ্দেশ্য বলা শুরু করলো।
প্রিয় ছাত্রছাত্রী,
আজকে আমি তোমাদেরকে এমন কিছু কথা বলতে চাই, যা হয়তো তোমাদের কারও জীবনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে এসে পৌঁছাবে।

তোমরা যারা বইয়ের পাতা উল্টে রাত জাগো, চোখে ঘুম নেই—তবু লক্ষ্য থেকে চোখ সরাও না… জানো তো? এই তোমরাই একদিন ইতিহাস লিখবে। হয়তো এখন কেউ তোমাকে দেখে না, কেউ তোমার চেষ্টাকে সম্মান দেয় না, হয়তো কেউ ভাবে—“তুমি পারবে না।”
কিন্তু বিশ্বাস করো, পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জিনিসগুলো গড়ে ওঠে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে।

তুমি হয়তো ক্লান্ত, হয়তো পড়ার টেবিলের সামনে বসে নিজের ওপর রাগ হচ্ছে, কেন তুমি এটা পারছো না! কিন্তু এটা স্বাভাবিক। এটা যদি সহজ হতো, সবাই পারত। তুমি আলাদা বলেই তোমাকে কঠিন পথে হাঁটতে হয়।

তোমার বন্ধুদের কেউ হয়তো চাকরি করছে, কেউ হয়তো বিদেশে চলে গেছে, কেউ হয়তো একটা স্টার্টআপ খুলেছে—আর তুমি? তুমি এখনো পড়ছো, একটার পর একটা পরীক্ষা দিচ্ছো, হতাশার সাথে যুদ্ধ করছো। মনে হচ্ছে তুমি পিছিয়ে পড়ছো?

না বন্ধুরা, তুমি পিছিয়ে পড়ছো না। তুমি প্রস্তুত হচ্ছো।
তুমি গড়ে তুলছো সেই ভিত, যেটার উপর দাঁড়িয়ে একদিন তুমি শুধু নিজের না—তোমার পরিবার, তোমার সমাজ, এমনকি দেশকেও গর্বিত করবে।

এ জীবন একটাই। এই জীবনে তুমি যদি নিজের স্বপ্নের পিছনে দৌড় নাাও—তবে আর কবে করবে? তুমি কি চাও না, এমন একটা সকাল আসুক যেদিন তোমার মা-বাবা বলবে—"এই ছেলেটাই, এই মেয়েটাই আমাদের গর্ব"?
তুমি কি চাও না, যে সমাজ একদিন তোমাকে বলেছিল 'তুমি পারবে না'—সেই সমাজ একদিন তোমার নাম শুনে থমকে দাঁড়াক?

তবে আজকেই শুরু করো। এখনই।
প্রতিদিন অল্প অল্প করে আগাতে থাকো।
একটা করে লক্ষ্য ঠিক করো, আর সেটা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত থেমো না।
বিপদ আসবেই, ব্যর্থতা আসবেই, কিন্তু সেগুলোকে ভয় নয়—তোমার জ্বালানী বানাও।
মনে রেখো, কেউ একদিনে বড় হয় না। বড় হতে সময় লাগে, সাহস লাগে, ধৈর্য লাগে। এবং সবশেষে, নিজের ওপর একটুখানি বিশ্বাস লাগে।

তোমার সময় আসবে।
তোমার গল্পও একদিন মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে।
তোমার জীবনই একদিন কারও আশার আলো হয়ে উঠবে।

তাই এখনই শুরু করো। থেমো না।
এই পথটা তোমার। এই যুদ্ধটা তোমার। আর বিজয়ও তোমারই হবে। আজকেআমি যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি একদিন তোমরাও দাঁড়াবে তোমরাও কাউকে এইভাবে মোটিভেট করবে তাই উদ্দেশ্য থেকে আলাদা হওয়া যাবে না।

চারিদিকে করতালি কত সুন্দর চিন্তাভাবনা । সকলে মুগ্ধ চারিদিকে হৈ হৈ NA গিয়ে নিজের সিটে বসল এই রকম ভাবে আরও কিছক্ষন অনুষ্ঠান চলল তারপর অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই NA বের হয়ে পড়লো তার সকল গার্ড তার আশেপাশেই আছে।
গাড়ি চলছে নিজের গতিতে পেছনে বসে আছে NA চৌধুরী, চোখ ছিল চুপচাপ অথচ সজাগ। শরীরে বয়সের হালকা ছাপ থাকলেও দেখে মনে হয় বয়সকালে অসম্ভব সুন্দরূ ছিলেন আর তার মনের ভেতরটা এখনো আগুনের মতই ক্ষ্যাপা। আজকের অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছেন নিজের বাড়িতে ।

হঠাৎ... সামনে একটা কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল গাড়ির পথ রোধ করে। ব্রেক কষে থেমে যেতে হল। অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এলো ১০ ১৫ জন মুখোশধারী লোক।

— “গাড়ি থেকে নামেন, ম্যাডাম। বেশি ঝামেলা করলে গুলি মারবো,”।

NA ধীরে ধীরে দরজা খুললেন। মুখে কোনো ভয় নেই, চোখ দুটোতে ঝলকানি।

— “তোমরা জানো না, আমি কে?”

একজন এগিয়ে এল তাকে ধরতে—তার আগেই NA চৌধুরীর লম্বা হিল জুতোটা ছিটকে এসে লাগল লোকটার বুকে। সেও পড়ে গেল গড়াগড়ি খেয়ে। অন্যজন ছুটে এলো পেছন থেকে, NA চৌধুরী দ্রুত ঘুরে ঘুষি মেরে তার মুখ ফাটিয়ে দিলেন।

একটা সময় শরীর ক্লান্ত হয়ে এল, তিনজনের সাথে লড়াই সহজ নয়—even for her. একজন তার হাত ধরে ফেলল, পেছন থেকে চেপে ধরল—ঠিক তখনই—

“আম্মু!!”

চিৎকার করে উঠে এল একটা কণ্ঠ। সামনের রাস্তায় আলো জ্বলে উঠলো—দুইটা ব্ল্যাক SUV থামল। দরজা খুলে বেরিয়ে এল বেশ কিছু গার্ড আর সবার সামনে দাঁড়িয়ে NA’র মেয়ে, চোখে রাগে আগুন।

— “ছাড়ো আমার মাকে!” মেয়েটার কণ্ঠ বজ্রের মত।

পাশ থেকে গার্ডরা ছুটে এল। মাত্র কয়েক সেকেন্ডে সব ওলটপালট। মুখোশধারীরা পালাতে চেষ্টা করলেও কেউ একজন ধরা পড়ে গেল। গার্ডরা তাকে কাবু করল।

NA চৌধুরী হাঁপাচ্ছিলেন। তবুও মুখে হাসি—

— “তুই এলি সময়মতো... আবারও একবার আমাকে বাঁচিয়ে দিলি,

— “তোমাকে কিছু হতে দিতাম না কখনও, আম্মু।”
পুলিশ এসে গিয়েছে, কিন্তু NA চৌধুরী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—"এই লোকটা পুলিশের হাতে নয়, আগে আমি জানবো কে পাঠিয়েছে ওকে।"

ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা মুখোশধারীর গালে জোরে চড় মারলেন NA এর মেয়ে।

— "তোর সাহস কেমন করে হয় আমার মাকে ছোঁয়ার? বল, কে পাঠিয়েছে তোকে!"

লোকটা থুতু ফেলল একপাশে। তাচ্ছিল্য করে বলল—

— "তোমাদের মতো মানুষদের কত শত্রু আছে জানো? গুনে শেষ করতে পারবে না। আমার মুখ কেউ জানে না, আর তোমার গার্ডরা যতই চেষ্টা করুক, কিছু জানবে না।"

NA চৌধুরী শান্ত গলায় বললেন—

— "তুমি তো ভুল করেই ফেলেছো, আমাকে ছোট করে দেখেছো। ভুলটা খুব ব্যয়বহুল হবে তোমার জন্য।"

তারপর নির্দেশ দিলেন,

— “এই লোকটা আমার হেড অফিসে নিয়ে চলো। পুলিশের চেয়ে আমাদের টিম বেশি কাজের।”

NA এর মেয়ে তাটে সম্মতি দিলো মা মেয়ে দুজনেই হৃদয়হীনা। তাও নিজের মায়ের প্রশংসা করার জন্য একটু বললো

— "তুমি আগের মতোই আছো, মায়ের মুখের আড়ালে যেন এক অন্য নারী।

NA শুধু একবার হাসলেন—

— "আমার মেয়েও তো এখন আগুন।"

গাড়ি ছাড়ার আগমুহূর্তে NA চৌধুরীর ফোনে একটি মেসেজ আসে।

“তোমার ফাইটিং অনেক দেখলাম, এবার মেয়েটাকে বাঁচিয়ে দেখাও।”

NA এর মেয়ে মায়ের ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে চমকে উঠল।

— "তারা এবার আমাকে টার্গেট করবে?"

NA’র চোখে তখন অন্যরকম অন্ধকার।

— "তাদের লক্ষ্য তুমি, কারণ তুমি আমার পিঠ। এখন খেলাটা শুরু হয়েছে, । এখন আমরা শিকার নই... শিকারি হবো।"

চলবে...

( বানানে ভুল থাকতে পারে সকলে ক্ষমাদৃষ্টিতে দেখবে ভুল ধরিয়ে দিও আর সকলে পাশে থাকো ১০০ এর বেশি কমেন্ট করে ফেলো)

20/04/2025

গুছিয়ে গল্প বলা যায় অনুভূতি না🙂🥀

19/04/2025

আজকে গল্প দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু একটা সমস্যার কারনে সম্পুর্ন শেষ করতে পারিনি😌আবার বিদ্যুৎ এ সমস্যা করছে তাই কালকে দিব ইনশাআল্লাহ 💖🫶

তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিনসে জানে তোমারে ভোলা কত কঠিন🫶💖 েখানে_হৃদয়_সেখানে  #গল্পফ্যাক্ট
18/04/2025

তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন
সে জানে তোমারে ভোলা কত কঠিন🫶💖

েখানে_হৃদয়_সেখানে

#গল্পফ্যাক্ট

16/04/2025

েখানে_হৃদয়_সেখানে

#লেখনিতে_লামহা_ইসলাম

#পর্ব_৪৫

রিমির এমন অবস্থায় বড়রা সকলে এসেছে, কাজিনমহল কেউ আসেনি। শুধু নিলিমা আর আদিল এসেছে, বাকিরা বাড়িতেই। সকলে বুঝে গেছে, রিমি এমন কিছু করেছিল যে নিজের ফাঁদে নিজেকেই পড়তে হয়েছে। এখন সকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলছে।

নাফিসা: স্যার, রিমি কেমন আছে? ও এখন ঠিক আছে তো? আর কোনো বিপদ নেই তো?

আসাদুজ্জামান: তুমি একটু শান্ত হও। ওর কিছু হয়নি, চুপ করে বসো।

নাফিসা: আমি ওর মাকে কী উত্তর দেব বলো! আমার ভরসায় ওকে রেখে গেছে। আমি কী করে ওর মার সামনে দাঁড়াবো?

ডাক্তার: She is out of danger. যে প্রবলেম হয়েছিল, তাতে আমরা সকলে ভয় পেয়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু করে দেওয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। এখন বাকিটা জ্ঞান ফেরার পর বলা যাবে।

নাফিসা: সত্যি বলছেন? ওর কিছু হয়নি? ধন্যবাদ, ডাক্তার।

আশফাক: হয়েছে, তোমরা ঠান্ডা হও। অনেকেই সকাল থেকে না খেয়ে আছো। যাও, সকলে বাড়িতে যাও।

আয়াত: হুম বাবা, চলুন। এখন সকলে যাই, পরে আবার আসব।

নাফিসা: ভাবী, তোমরা যাও। আমি ওর কাছে থাকি, তোমরা যাও।

আনিসুর: বাবা, আমি আপনাদের সবাইকে নিয়ে বাড়ি যাই। তারপর ওর জ্ঞান ফেরার পর আবার এসে দেখে যাব।

আসাদ: হ্যাঁ, চলুন। আমিও যাব। বাড়িতে সবাই টেনশনে আছে, আমরা গেলে ওরা নিশ্চিন্ত হতে পারবে।

আয়মান: হুম। এমন সময় আহিয়ানটারও বিজনেসের কাজে যেতে হলো। ঈদের আগের দিন আসবে, বেচারা।

নওশেদ: থাক, বাদ দাও ভাইয়া। চলো, বাড়িতে যাওয়া যাক।

তারপর সকলকে বুঝিয়ে বাড়িতে যাওয়া হলো।
রাত ১২ টা লামহা দাড়িয়ে আছে ছাঁদের এক প্রান্তে কারো আসার আওয়াজ পেলো চুপ চাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো । পেছনে ঘুরলো

লামহা : "এখানে কী চাই তোমার?"

নিশান : "তোর কাছ থেকে দূরে থাকতেই তো চেষ্টা করি। কিন্তু তবুও তোকে দেখলেই পা থেমে যায়।"

লামহা : "নাটক বাদ দাও, । আমি তোমার এসব ‘আকুল দৃষ্টি’ আর ‘নীরব ভালোবাসা’র গল্পে বিশ্বাস করি না। তুমি অন্যদের ম্যানিপুলেট করো, আমার সাথে সেটা চলবে না।"

নিশান : "আমি তোকে ভালোবাসি, লামহা। এটা কোনো গল্প না। কোনো কনফেশন না। এটা আমার দুর্বলতা।"

লামহা : "তুমি দুর্বল নও। তুমি চতুর। তুমি জানো কাকে কোথায় কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। আমার আশেপাশে থাকো কেন জানি? কারণ তুমি আমাকে দমিয়ে রাখতে চাও। আর আমি—আমি তোমার ঘৃণার বাইরে কিছু না।"

নিশান : "তুই চাইলে আমায় ঘৃণা করতে পারিস , তাও রোজ আসব। চাইলে অপমান কর, তাও চোখ রাখব তোর চেহারায়। কারণ তোকে ভালোবাসা মানে নিজেকে ধ্বংস করা—এবং আমি তাতেই রাজি।"

লামহা : "তাহলে মরো। আমার সামনে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার ভিখারি সাজতে এসো না। তুমি একটা বিষাক্ত ছায়া। আর আমি—আমি আলো খুঁজি।"

নিশান : "তুই আলো? এতটা অহংকার তো আগুনকেও মানায় না। তুই শুধু জানিস কীভাবে কাউকে গুঁড়িয়ে দিতে হয়। ভালোবাসার বদলে ঘৃণা ছুঁড়ে দিস ।"

লামহা : "হ্যাঁ, কারণ তুমি আমার মতো কাউকে পেতে পারো না। আমি তোমার হাতের মুঠোয় আসার মেয়ে নই।

নিশান : "তবুও তোকে ভালোবাসব। তুই আমাকে ঘৃণা কর, অপমান কর, ঠেলে দে—তবুও আমি তোর নামে জেগে উঠব, আর রাত নামলে তোর নামেই ঘুমিয়ে।
লামহা আর কোন কথা না বলে নিঃশব্দে চলে গেলো।
নিশান একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে লাগলো আর নিজের ভিতরে থাকা আবেগ দিয়ে বলতে শুরু করলো

তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম

কি দোষ দিবি তাতে

বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই

সকাল দুপুর রাতে

তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম

কি দোষ দিবি তাতে

বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই

সকাল দুপুর রাতে

আগুন জেনেও পুড়লাম আমি

দিলাম তাতে ঝাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

আগুন জেনেও পুড়লাম আমি

দিলাম তাতে ঝাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম

কি দোষ দিবি তাতে

বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই

সকাল দুপুর রাতে

তোর কারনে ভুললাম আমি

গোত্র জাতি কুল

কাঁটার সাথে করলাম সন্ধি

পায়ে পিষে ফুল

তোর কারনে ভুললাম আমি

গোত্র জাতি কুল

কাঁটার সাথে করলাম সন্ধি

পায়ে পিষে ফুল

কেমন করে সইবো আমি

প্রেম আগুনের তাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

কেমন করে সইবো আমি

প্রেম আগুনের তাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

পথ হারানো পথিক হলাম

সব হারিয়ে নিঃস্ব

তোর আমার এই প্রেমের কি

দাম দেবে বিশ্ব

পথ হারানো পথিক হলাম

সব হারিয়ে নিঃস্ব

তোর আমার এই প্রেমের কি

দাম দেবে বিশ্ব

প্রেমের নামে কিনলাম আমি

নিঠুর অভিশাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

প্রেমের নামে কিনলাম আমি

নিঠুর অভিশাপ

তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু

ছিলো পুরোটাই পাপ

তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম

কি দোষ দিবি তাতে

বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই

সকাল দুপুর রাতে

তুই যদি বুঝতি আমি তোকে কতটা চাই তাহলে তুই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করতি আফসোস আমার রুহুর ডাক তোর অব্দি পৌঁছাতে পারলাম না।

ঈদের তিনদিন আগে – দুপুর। সবাই শপিংয়ে বেরিয়েছে। দলের সদস্য: লামহা, হৃদ, আনিশা, মুন, তুহিন, তিশান, নোমান ও নতুন করে যোগ দিলো নিশান। নিশান মৃদু স্বভাবের, গভীর চোখের, এবং সবসময় লামহার দূরত্বটা বোঝে।

লোকেশন: গ্লিটজ স্কয়ার, ঢাকা।

ঢাকার সবচেয়ে দামি মল। সাততলা বিল্ডিং, যার একেকটা ফ্লোরই আলাদা থিমে সাজানো। পঞ্চাশেরও বেশি ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড। ভিতরে ঢুকলে ঘ্রাণ লাগে ল্যাভেন্ডার আর গরম চকোলেটের মিশ্র গন্ধ। গেটে ঢুকতে হয় স্ক্যানার দিয়ে। যারা ঢোকে, তারা জানে—এখানে কেবল শপিং হয় না, স্টেটমেন্ট তৈরি হয়।

সকালের আলোতে মলটা ঝকঝক করছে। লিফটে উঠে সবাই উঠে ৫ম তলায়। রঙিন দেয়াল, স্ট্রিং লাইট, ফুটেছে নতুন কালেকশনের পোস্টার।

তুহিন : ভাইরে, এত দামি জায়গায় আমি জুতা খুলে ঢুকি?

নোমান: পাগল! জুতা খোলার কথা না, খরচ শুনে জ্ঞান হারানোর কথা।

মুন: আমার তো মনে হচ্ছে এখানে দাম জিজ্ঞেস করলে সিকিউরিটি ধরে বের করে দেবে।

সবাই হেসে ওঠে। শুধু লামহা ঠান্ডা মুখে একটার পর একটা দোকানে ঢোকে। কারন ও জানে এরা জীবনে মজা ছাড়া আর কিছু বোঝে না। চোখে ঠান্ডা আগুন। খুঁটিয়ে দেখে। ওয়েস্টার্ন টপ, হাই-ওয়েইস্টেড ট্রাউজার, কালো সিল্কের শাড়ি, স্টোন স্টাডেড হ্যান্ডব্যাগ।

(তিশান, মুন, আনিশা প্রথমে এক শাড়ির দোকানে ঢুকে পড়ে। বাকিরা পেছনে, একটু ধীর গতিতে হাঁটে। হঠাৎ লামহার হাঁটার গতি কমে আসে।)

হৃদ: আবার কী হলো? পা ব্যথা?

লামহা : আমার শরীরের খবর রাখার দায় আপনার না।

হৃদ: কিন্তু তুমি যদি মাঝরাস্তায় পড়ে যাও, আমারই তুলতে হবে। তাই আগেই জিজ্ঞেস করলাম বুঝলে মিসেস খান।

লামহা : আমি পড়লে, তুলতে কেউ লাগবে না। আমি নিজেই উঠে দাঁড়াতে পারি।

হৃদ: তুমি যে সিল্ক শাড়ি পছন্দ করো না—বলে ছিলে একবার।

লামহা: আপনি আমার পছন্দ মনে রাখেন ?

হৃদ : না। আমি তোমার অপছন্দগুলো বেশি মনে রাখি।

লামহা : ব্যস্ত থাকেন নিজের পছন্দ নিয়ে, অন্যেরটা বোঝার দরকার নেই।

মুন: দ্যাখো দ্যাখো! এই দোকানে অফার চলছে।

আনিশা: আমি তো ঠিক করে ফেলেছি। শুধু মেহেদির সঙ্গে ম্যাচ করাতে হবে।

তুহিন: আমি এখন পাঞ্জাবি কিনবো, তারপর বাকি সময়টা বসে তিশানের টেনশন দেখবো।

তিশান: আমার কোনো টেনশন নেই। আমি ফ্যাশন সেন্স দিয়ে বাজার কাঁপাতে এসেছি!

লম্বা দৃষ্টি বিনিময়। নিশান দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে, চুপচাপ। তার চোখে কিছু বোঝা যায় না, শুধু অপেক্ষার মতো একটা ছায়া

(আনিশা, মুন, তিশান আর তুহিন চলে যায় আলাদা দিকে। নিশান চুপচাপ দাঁড়িয়ে লামহার প্রতি ক্ষণিক তাকায়। হৃদ আর লামহার মধ্যকার রসায়ন যেন শীতলতা ছুঁয়ে আগুনে পরিণত হচ্ছে।)

(সবাই শেষপর্যায়ে এসে পৌঁছায় ৭ম তলায়—যেখানে রেস্টুরেন্ট: “Sapphire Garden Bistro”। ঢাকার সবচেয়ে দামি রুফটপ ডাইনিং। চারপাশ কাঁচে মোড়ানো। ভিতরে ঝাড়বাতির আলো। গ্লাস টেবিল। ওয়েটারদের পোশাক কালো স্যুটে।)

তিশান : ভাই, এখানে পানি খাইলেও হাজার টাকা?

তুহিন: আমি তো আগেই বলছি—মেনু হাতে নিলেই টাকা আর টাকা।

(একটা কোণে সবাই বসে। ছয়জনের জন্য একসাথে সিট মেলেনি। তাই দুটো টেবিল জোড়া লাগানো হয়েছে। ওয়েটার মেনু দেয়—একটা মেনু খুলতেই চকচকে পাতার গায়ে অদ্ভুত সব নাম।)

মুন: “Grilled salmon with avocado mousse”... এ আবার কিসের নাম?

নোমান : ওটা হচ্ছে—‘ভালোবাসার আগুনে পোড়া মাছের পাশে ইমোশন মাখানো পুদিনা’।

(সবাই হেসে ওঠে। শুধু লামহা মেনু নামিয়ে রাখে।)

লামহা: আমার জন্য ব্ল্যাক কফি। আর কিছু লাগবে না।

হৃদ: ব্ল্যাক কফি এর জন্যই তো বলি মুখ দিয়ে কেনো তেতো কথা বের হয় ।

লামহা : কারণ আমি তেঁতো কথা পছন্দ করি।

( রেস্টুরেন্টে হালকা মিউজিক বাজে। ফ্লোরে বিদেশি গানের সুর, কাচের বাইরে সন্ধ্যার ঢাকাকে আলোকিত করছে বিলবোর্ড আর লাইট। নিশান লামহার দিকে তাকিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। আনিশা তাকে লক্ষ্য করে। কিন্তু কিছু বলে না।)

নিশান : এই মেয়েটা কিসে গড়া? কে ওকে এতো রুঢ় করে তুলেছে?

(এদিকে খাবার আসে। ওয়েটার পরিবেশন করে: ভেজান পার্মিজান স্যুপ, স্পাইসি চিকেন উইথ চিজ ব্ল্যাঙ্ক, আর একজোটে কোল্ড কফি আর বাটারক্রোক। সবাই খেতে ব্যস্ত। শুধুমাত্র লামহা একটা সিগনেচার চায়ের অর্ডার দেয়—‘Lavender Lemon Soulbrew’।)

নিশান: এটা কেমন চা?

লামহা: আমার মতো—হালকা গন্ধ, গভীর স্বাদ, আর যাকে সবাই চুমুক দিতে ভয় পায়।

তারপর সকলে মিলে যার যার পছন্দ মতো কেনাকাটা করে চলে এলো সকলের অবস্থায় খারাপ এরা বাড়িতে ডুকে সোফায় বসে পড়লো শুধু মাত্র লামহা চলে গেলো উপরে। লামহা আহিয়ান এর জন্য বাড়ির সবার জন্যই কিনেছে সবকিছু জেরিন এর কাছে দিয়ে চলে গেলো যাতে জেরিন সবাইকে দিয়ে দেয়।

আসাদ : সবাই দেখি কেনাকাটা শেষ আমাদের কেউ নিয়েই গেলো না।

হৃদ : চিন্তা করো না তোমার গিন্নি তোমাদের জন্য এনেছে সবকিছু।

হুমায়রা : আমার গিন্নি সব দিক থেকেই বেস্ট ।

নিশি : হয়েছে এবার যাও সকলে আসো আমি রান্না করেছি ।

তারপর সকলে চলে গেলো রেস্ট নিতে।

চাঁদ রাত | রাত ১১:৩২ মিনিট | লামহার বাড়ি, বাইরের উঠোন থেকে শুরু, পরে ঘরের ভিতর

চাঁদের আলো মিশে আছে রঙিন ফেয়ারি লাইটের ঝিলমিলে।৷ ছাদে সাজানো হয়েছে বালিশ-পাতা মাদুর দিয়ে। মাঝখানে ছোট্ট একটা টেবিলে সাজানো মেহেদি, চিপস, চকোলেট আর সফট ড্রিংকস। আকাশে টকটকে চাঁদ, আর মাটিতে জমে উঠছে ঈদের চাঁদের রাতের চিরচেনা উচ্ছ্বাস।

মুন : — "এই যে! সবাই এক জায়গায় বসো! মেহেদির আসল ফাইট তো এখন শুরু!"

আনিশা : "আমি কিন্তু প্রথম! আমার ডিজাইন আগে থেকে রেডি আছে। ফুল মুন মেহেদি!"

নোমান : "তাহলে আমি চাঁদ বানাবো। হাতে, পিঠে, গালে!"

তুহিন : "এই, ফাজলামো কম কর, তোর বানানো ডিজাইন শেষবার তিশানের হাতে দাগ হয়ে গেছিল রে!"

লামহা ছাড়া মেহেদি নাই!"

কিন্তু লামহা?

— ঘরের ভেতর |

বেডরুমের ভিতর, লামহা জানালার ধারে বসে। চোখে তার উদাস দৃষ্টি। চারদিকে আনন্দের শব্দ, অথচ তার চারপাশ নিঃস্তব্ধ। হাতে মোবাইল, স্ক্রিন অফ। চাঁদের আলো মুখে পড়েছে।

একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সে বলে নিজেকেই —
— "চাঁদের রাত... কত হাসাহাসির দিন ছিল এক সময়। এখন শুধু মুখোশ। মুখোশের ঈদ।"

দরজায় টোকা। আহিয়ান।
— "ভেতরে আসতে পারি?"

লামহা : "তোমাদের মতো সেলিব্রেটরদের ওখানে থাকা উচিত, এখানে না।"

আহিয়ান : তুই৷ এভাবে একা বসে থাকলে ঈদের রাতটা অসম্পূর্ণ লাগে।" আমার কোম্পানির কাজে যেতে হয়েছিলো জানিিসই তো প্লিজ রাগ করিস না সোনা বনু আমার।

লামহা : "অসম্পূর্ণতা আর অভ্যাস হয়ে গেছে । আজকে মেহেদি, কাল সেলাই করা জামা... এর পরদিন হয়তো মানুষই বাদ যাবে আমার কাছ থেকে।"

আহিয়ান : — "আমার মনে হয়, আজ একটু বাকি সবার মতো হ হাস, একটু জোর করেই। হয়তো পরে হাসিটাই সত্যি হয়ে যাবে।"

লামহা তাকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেও না।

এই সময় পেছন থেকে হঠাৎই দরজা ধাক্কা দিয়ে ঢুকে পড়ে পুরো গ্যাং — আনিশা, মুন, তুহিন, তিশান, নিশান, নোমান, হৃদ

মুন৷ , : — "চুপ করে বসে থাকা মানা! আমাদের কুইন মেহেদি পরবে, আর সেটা আমার হাতে!"

লামহা : — "আমি বলেছি না? আমি মেহেদি পরবো না। আমার ধৈর্য নেই ওসব বসে থাকার।"

তুহিন :৷ "ওহ আল্লাহ ! আমাদের মুড-কিলার এসে গেছে! হে ঈদের মালিক ওকে একটু মুড-অন করে দাও!"

তিশান : "আমি বলে দিচ্ছি, যদি আজকে মেহেদি না পরিস, তাহলে ঈদের সকালে সবাই তোকে কালো জামা পড়তে বাধ্য করবো!"

নোমান : এইটা ধর! খা! হাসিস! আর চুপচাপ বসে থাকিস না!"

আনিশা : "দেখ, তুই আমাদের সাথে থাকলে এই ছাদটা আলোকিত হয়। আজকের রাতের সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটার হাতে মেহেদি না থাকলে ঈদটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।"

এক মুহূর্ত স্তব্ধতা। লামহা চোখ বন্ধ করে। একটু নরম হয়ে যায় গলা —
— "একটা হাত... শুধু একটা ডিজাইন। কাউকে যদি শান্তি দেয়... তাহলে করো।"

সবাই একসাথে তালি মেরে চেঁচিয়ে ওঠে!
— "ইয়েসস!! মেজাজি কুইন রাজি!!"

আনন্দে উল্লাস, ঝলমলে হাসির বন্যা। মেহেদির প্যাকেট খুলে ফেলে সবাই, কাঁধে চেপে ধরছে লামহাকে, কেউ হাত সামলাচ্ছে, কেউ পেছনে ওর চুল বেঁধে দিচ্ছে।

আহিয়ান একপাশে দাঁড়িয়ে শুধু চেয়ে থাকে — শান্ত, গর্বিত দৃষ্টিতে। যেন সে বুঝতে পারে, এই সামান্য জিতের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে সম্পর্কের সবচেয়ে সত্য অনুভব।

— চাঁদের আলোয় লামহার হাত মেহেদিতে রাঙা, চোখে অল্প এক চিলতে হাসি। বাকিরা সবাই চারপাশে বসে, গল্প করছে, হাসছে। চাঁদ যেন আকাশ থেকে নিচে নেমে এসেছে এই উঠোনেই।
আস্তে আস্তে সকলেই হাতে মেহেদি লাগাচ্ছে আর মারামারি হাসাহাসি করছে।
নিশান : ছেলেদেরর মেহেদী দেওয়া হারাম।
মুন : একদিন একটু করে সবার সাথে আনন্দ করে দিলে কিছু হবে না মুন নিশান এর গাতেও চাঁদ আকিয়ে দিলো।
তারপর এলো হৃদ এর পালা হৃদ হাত বাড়িয়ে দিলো আর বললো শোন চাঁদের মাঝখানে লিখে দিবি মিসেস খান।
তিশান : আরে ভাই এইটা ঈদ তোর বিয়ে না তাই রঙ্গ লিলা বাদ দে।
হৃদ : আমার হাত আমার ইচ্ছে তাই চুপচাপ আমি যা বলবো তাই করে দে।
লামহা : সকলে মেহেদি দিচ্ছিস বাড়ির বড়দের একটা লাগাই দে ভালো হবে
মুন : অফস সেই বুদ্ধি দিছিস বেহেন। তারপর সবাই মিলো দৌড় লাগালো বড়দের কাছে আজকে ওদের দেখে সকলে বাচ্চা মনে করবে এমন বিহেব করছে সকলে।
আসলে ঈদ বলতেই আনন্দ সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে আপন করা ওদের ঈদ টাকেই বলে ঈদ সকলে মিলে মজা।

ঈদের সকাল | সকাল ৭:৪৫ | লামহার বাড়ি | উঠোন – বারান্দা – ড্রইংরুম

আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে দুর থেকে। মিষ্টি সকালের আলো ভিজে আছে পাতায় পাতায়। বাড়ির উঠোনে দুধ-সাদা কুয়াশার আস্তর মিশে গেছে ঈদের দিনের আনন্দে। চারদিকে শোভা পাচ্ছে রঙিন ঈদের জামা, আতরের হালকা গন্ধ আর মায়ের হাতে গরম পায়েস সেমাই - নানা রকম রান্না।

লামহা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। তার চুল খোলা, চোখে কাজল, আর হাতে আগের রাতের মেহেদির গাঢ় রঙ।
সে ধীরে ধীরে ঠোঁটে একটা হালকা লিপস্টিক দিচ্ছে, কিন্তু চোখে-মুখে আজও সেই ঠান্ডা ভাব।

পেছন থেকে মুন ঢুকে পড়ে, রঙিন শাড়ি পরে – ঝাঁ চকচকে হাসি মুখে।
— “তুই কি সবসময় এত রাজকুমারীর মতো থাকিস নাকি আজ স্পেশাল কোনো প্ল্যান আছে?”
লামহা হেসে বলে না কিছু, শুধু একটা চোখ তুলে দেখে।
— “প্ল্যান? হুম... ঈদ তো আমার কাছে সাইলেন্ট ডে।"

মুন গালে হাত দিয়ে বলে “তুই সত্যিই অদ্ভুত লামহা। তোকে নিয়ে একদিন একটা থ্রিলার লিখবো!”
(দুজনেই হাসে কিন্তু লামহার হাসি অল্প)

এদিকে উঠোনে —
আনিশা, তুহিন, তিশান আর নোমান মিলে তুলকালাম করছে। কেউ সেলফি তুলছে, কেউ ছানার জিলাপি খাচ্ছে, কেউ দৌড়ে দৌড়ে আতর মাখিয়ে দিচ্ছে একে অপরকে।

আহিয়ান ফর্মাল পাঞ্জাবি পরে এসে দাঁড়িয়েছে বারান্দায়। তার চোখ কিন্তু কাউকে খুঁজছে —
লুকিয়ে লুকিয়ে আনিশার দিকে একবার দেখে নেয়, তারপর মুখ ফিরিয়ে নেয়।

ঠিক তখনই হৃদর প্রবেশ — ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি, চোখে রোদচশমা, চুল হালকা উসকোখুসকো, হাতে একটা খোলা ডায়রি।

তিশান বলে চেঁচিয়ে:
— “ঈদের দিনও কি ভাইয়া কবি হবেন ভাবছেন?

হৃদ : “কাব্য লিখিনি। কিছু নাম লিখেছি… কাকে আজ ঈদের শুভেচ্ছা জানাবো, আর কাকে না।”

সবার মধ্যে একটু হাসাহাসি শুরু হয়, কিন্তু লামহার চোখ স্থির থাকে হৃদর দিকে। হৃদ একবার চোখ তোলে, কিন্তু কিছু বলে না।

হঠাৎ পেছন থেকে আনিশা এসে বলে:
— “সবাই প্রস্তুত তো? নামাজের পর আমরা ফ্যামিলি ফটো তুলবো। এবার কাউকে বাদ দেওয়া হবে না।”

সবাই হইহই করে ওঠে, কেউ পাঞ্জাবি ঠিক করে, কেউ আয়নার সামনে দৌড়ায়।

বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা লামহা শুধু বলে:
— “তোমরা যাও, আমি পরে আসছি। একটু একা থাকতে চাই।”

হৃদ সেই কথাটা শুনে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে তার দিকে। কথা না বলে পাশে দাঁড়ায়। দুজনেই চুপ। কয়েক সেকেন্ড পর হৃদ বলে:
— “তোমার চোখের নিচে কালো ছায়া। রাতে ঘুম হয়নি?”

লামহা : — “ঘুম আর স্বস্তি – দুটোই যেন খুব ব্যস্ত আজকাল। আমার কাছে আসার সময় পায় না।”

হৃদ : “তোমাকে বলেছিলাম, মেহেদির ডিজাইন আস্তে আস্তে রঙে ভরে ওঠে। দেখেছো মিলেছে তো।

লামহা হালকা হাসে শুধু।

হৃদ : ঈদ মোবারক মিসেস খান। দোয়া করি আমার বউয়ের যাতে এই ঈদের দিনেয় উছিলায় তার স্বামীর প্রতি দয়া মায়া হয়।
লামহা : ঈদ মোবারক আর আপনাকে বলেছি কারো সামনে এইসব কথা বলবেন না তাও কেনো বলছেন ভিপি সাহেব এইটা ঠিক না।
হৃদ : আচ্ছা সরি তা বিবি সাহেবা আপনার কি সালামি লাগবে।
লামহা : সালামি দিলে তো গত ২৬ বছরের গুলোও দিতে হবে।
হৃদ : আগ্গে আগামী বছরের গুলোও একসাথে দেয় কি বলেন।
লামহা : থাক দরকার নেই।
হৃদ : দরকার আছে তোমার জন্য তোমার রুমের ডয়ারে তোমার ঈদের গিফ্ট আর সালামি দেওয়া আছে দেখো।
এই কথার পর এক মুহূর্ত চুপ। পেছনে ঈদের নামাজের প্রস্তুতির আওয়াজ, হালকা আতরের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। হৃদ সবার সাথে মাঠে চলে গেলো নামাজ পড়তে।
আর লামহা চলে গেলো ওর রুমে গিয়ে দেখলো ওর ডয়ারে একটা প্যাকেট মোড়ানো আর ছোট বক্স সেখানো দেওয়া আছে চিরকুট ঈদের দিন শাড়িটা পড়বেন আমার বিবি সাহেবা দেখে চক্ষু দুটোর তৃষ্ণা কমবে। চিরকুট পড়ে লামহা অজান্তেই হেসে দিলো আর ভাবলো ফটোশুট এর সময় শাড়ি পড়বে আর কত রোবট এর মতো জীবন পার করবে।

ঈদের নামাজ শেষ। বাড়ির গেট খুলে একে একে সবাই ঢুকছে।]

আয়মান : — “আল্লাহ, এই গরমে তো নামাজ পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যাব!”

আসাদ চৌধুরি : — “নামাজ শেষে সালামি চেয়ে কেউ যদি আসে, আমি কিন্তু চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়বো!”

আশফাক — “ওদের হ্যান্ডশেক দেখলেই বুঝি, নোট ছাড়া ছাড়বে না!”

সালামি স্পেশাল স্কোয়াড: নোমান, হৃদ, নিশান, আদিল, নিলিমা, , মুন, আনিশা, তুহিন, তিশান—রেডি!

নোমান : “চাচা, আজকে তো আপনি সবচেয়ে স্মার্ট লাগছে!”
নওশেদ : “এই তো, চাটুকারিতা শুরু! কী চাই বলো?”
নোমান :— “টাকা। কেবল নোট হলেই চলবে, কয়েন নেবো না!”

হৃদ : — “চাচা, আগে তো আপনি দিতেন গায়ে হাত বুলিয়ে। আজকাল শুধু কথা দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।”
নওশেদ (হেসে হেসে ৫০ টাকার একটা নোট বাড়িয়ে):
— “এই নাও, এক্সক্লুসিভ পুরাতন নোট, স্মৃতিস্বরূপ!”
হৃদ :— “পুরাতন নোট দিলে আমরা পুরাতন দোয়া করবো!”
[এদিকে আসাদ চৌধুরী চুপিচুপি সোফায় গিয়ে বসেছেন]

নিশান (পেছন থেকে কানে হাত দিয়ে):
— “, দাদু সালামি না দিলে আমরা ফেসবুকে লিখে দেবো আপনি নামাজে যাননি!”
আসাদ চৌধুরী : — “আরে আরে, এই হচ্ছে ডিজিটাল হুমকি! এই নাও, কিন্তু বেশি আশা করো না!”
জেরিন : দাদু , ঈদে যদি ঈদের আনন্দ না পান, সেটা কিন্তু আমাদের নয়—আপনার দোষ!”
আসাদ (হালকা হেসে):
— “তোমাদের জোরাজুরিরে এখন মনে হচ্ছে বেঁচে আছি!”

[আয়মান আসাদুজ্জামান চুপচাপ একটা কোণে দাঁড়িয়ে আছেন]

লামহা : আপনারা কি মজা দেখছেন নাকি?
আয়মান (মুচকি হেসে পকেট থেকে ২০০ টাকার একটা চকচকে নোট বের করে):
— “এই নাও, কানাডিয়ান নয়, বাংলাদেশি নতুন নোট!”
মুন (হাঁ করে):
— “আমি তো পাই আঙ্কেল তোমরা এমন একচোখামি করঋো কেনো দাও আমাদের।
আয়মান: — “তোমাদেরটা ইনস্টলমেন্টে দিচ্ছি, তিন বছরে!”
মুন (বিরক্ত মুখে):— “তাহলে আমি তিন বছর ঈদে হাসবো না!”

[আনিশা এসে আনিসুর এর দিকে এগিয়ে আসে]

আনিশা:— “বাবা, আমি তো তোমাকে ফলো করি না, কিন্তু সালামির লোভে আজ তোমাকে ফলো করলাম!”
আনিসুর (হেসে):— “তাহলে এখন আনফলো করার সময় হয়েছে!
”আনিশা (ভেংচি কেটে):
— “সালামি দেও , না হলে তোমাকে TikTok-এ ট্রেন্ড করিয়ে দেবো!”

[তুহিন আর তিশান মিলে গান ধরেছে]

তুহিন-তিশান (একসাথে গাইছে):— “সালামি না দিলে হবে না, দাও দাও সালামি দাও!
না দিলে আমরা গাইবো আরও, নাচবো সবার সামনে আও!”
হুমায়রা বেগম : — “ওরে বাবা! আজকে আমরা বাঁচবো না, টাকা দিয়েই যাবো!”

[সবাই একে একে টাকা পেয়ে খুশিতে চিৎকার করছে, কেউ নাচছে, কেউ দৌড়াচ্ছে]

নোমান : — “এবার ব্যাগ কিনতে যাবো!”
হৃদ:— “আমি তো একটা খাসি বুক করে ফেললাম মনে মনে!”
মুন : — “ঈদের সবচেয়ে মজার জিনিস? সালামির জন্য বড়দের কাঁপুনি!”

[পেছনে দাঁড়িয়ে বড়রা হেসে হেসে পরাজিত সৈন্যদের মতো পরস্পরের দিকে তাকাচ্ছে]

আয়মান : — “এইবার মনে হচ্ছে আমরাই ছোট হয়ে গেলাম!”
আসাদ চৌধুরী: — “ওদের সামনে কেউ কিছু বললেই শাস্তি হিসেবে টাকা দিতে হয়! ভয়ংকর অবস্থা!”

দুপুর ১টা। পুরো ঘরে বিরাট রান্নার গন্ধ, মাংস, পোলাও, কাবাব, দই—ঘ্রাণেই জিভে পানি এসে যাচ্ছে।

আয়াত : — “একটা দিন, একটা মাত্র দিন যদি আমি বসে খেতে পারতাম!”
আনিসুর : — “তখন তুমি অসুস্থ থাকো, আর আমরাই রান্না করে বসে থাকি!”

আনিশা : — “সবাই এখন উঠোনে চলে আসো! ফ্যামিলি ফটোসেশান স্টার্ট!”
নিলিমা: — “না না, আমার চুল ঠিক হয়নি! দাঁড়াও আয়না দেখি!”
মুন : — “আমার পেছন থেকে ছবি তুলবা না, বলেই দিলাম!”
[সবাই একে একে উঠোনে এসে দাঁড়াচ্ছে, লাইন করে ছবি তোলার প্রস্তুতি।]
এমন সময় উপর থেকে লামহা নীল রংয়ের শাড়ি মুখে নেয় কোন মেকআপ এতেই যেনো ওকে পরির মতো লাগছে । সকলে হা হয়ে তাকিয়ে আছে নিশান হৃদ সকলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিশান চোখ সরিয়ে না এই নারিকে সে কুদৃষ্টিতে দেখতে পারবে না।
মুন : আমারে কেউ বাঁচা আমি তো ক্রাশ খাইছি এই সুন্দরী রমনীর উপরে যদি আমি ছেলে হতাম ওরে বিয়ে করতামই জানু মাভ ইউ৷
আহিয়ান : হয়ছে তোর ভাব বাদ এবার সকলে ছবি তুলবো আয়।

নোমান : — “ভাইয়া! আমার মাথায় টুপি ভালো লাগছে? ইনস্টাগ্রামের জন্য সিঙ্গেল পিক দিতে হবে।”
তুহিন:— “তুই শুধু টুপি পরছিস, আমি তো খালি পায়ে এসেছি, যেন ঈদের টোনটা গ্রাম্য থাকে!”
তিশান (ছোট্ট গলায়):
— “কেউ আমার স্যান্ডেল সরিয়ে দিয়েছে! ছবি তুলবো কিভাবে?”

[ক্লিক ক্লিক ক্লিক—ক্যামেরার আওয়াজ, খ্যাঁত রোদে চোখ ছোট করে কেউ হাসছে, কেউ বকাঝকা করছে।]

নিশান (ছবি তোলার পর):
— “চলো এবার খেতে বসি, আর সহ্য হচ্ছে না!”
আনিসুর (চেয়ারে বসে):
— “এইবার দেখো, আমি সবার আগে প্লেট হাতে নিয়েছি। কেউ আটকাতে পারবে না!”

[ডাইনিং টেবিলে সবাই একে একে বসছে, বড়দের আগে ছোটদের খাবার পরিবেশন শুরু!]

আয়মান:
— “আরে এইটা কী? মাংসের প্লেট খালি? আমি তো খেতেই বসিনি!”
লামমহা (ঠোঁট বাঁকিয়ে):
— “আগে আসলে আগে পাবে, এটা ঈদের নতুন নিয়ম।”
আসাদ চৌধুরী (রসিক গলায়):
— “ছোটরা আগে খায়, বড়রা শুধু বিল দেয়। এটাই আধুনিক ঈদ সংস্কৃতি!”

[খাওয়ার মাঝে কেউ কেউ হাসতে হাসতে মুখে ভাত ছিটিয়ে ফেলছে, কেউ কোল্ড ড্রিংক চেয়ে ঝগড়া করছে।]

মুন:— “দইয়ের পাত্রটা কে সরিয়েছে! আমি তো এক ফোঁটা পাইনি!”
নিলিমা (চোখ ছোট করে):— “তুমি ছবিতে বেশিই সুন্দর হয়েছো, তাই দই দিইনি!”
সবাই হেসে গড়াগড়ি।
জেরিন : আফা আমি আইনা দেয় ফ্রিজ এ আছে।
মুন : দরকার নেই সোনা তুই খা।
[খাওয়া শেষে—ঘুমানোর চেষ্টায় ব্যর্থ বড়রা, আর নতুন এনার্জি নিয়ে ছোটদের দৌড়ঝাঁপ]

হুমায়রা বেগম (বিছানায় শুয়ে শুয়ে):
— “একটু চোখ বন্ধ করবো ভাবলেই কারো না কারো পেঁচাল আর ভালো লাগছে না৷
নওশেদ শুয়েছে , হঠাৎই আদিল এসে ঝাঁপ দিয়ে উঠলেন তার পিঠে):
— “চাচা, আপনি তো সালামিতে কারচুপি করেছেন! আমি গুনে দেখেছি!”
নওশেদ (বই রেখে):
— “তুই না ডাকাত হলে কি হতে পারতি? সব হিসাব তোর মুখস্থ!”

বিকেল ৪টা। উঠোনে ছোটরা বড় একটা খেলার আয়োজন করেছে—বল হাতে নোমান, আদিল, নিশান, তুহিন, তিশান, আর আশেপাশে মেয়েরা চিৎকারে ব্যস্ত।

নোমান (বল হাতে):
— “শোনো সবাই! এবার ঈদের বিশেষ ম্যাচ: বাচ্চা বনাম কাঁচা!”
তুহিন:
— “মানে কী?”
নিশান:
— “মানে যারা শেভ করতে পারে না, তারাই বাচ্চা!”
তিশান (চিৎকার করে):
— “আমিও খেলবো! আমিও শেভ করিনি!”

[বল ছুঁড়ে মারামারি, কেউ দৌড়াচ্ছে, কেউ হোঁচট খাচ্ছে, পুরো উঠোনে গণ্ডগোল।]

আচমকা!
একটা বল উড়ে গিয়ে পড়ে— আহিয়ান ভাইয়ার জামায়! জামার পেছনের অংশ একটানে ছিঁড়ে যায়।
আহিয়ান : — “এই কী হইলো?! আমার ডিজাইনার পাঞ্জাবি!”
নোমান : — “ভাইয়া... এইটা আমি ইচ্ছা করে মারি নাই!”
লামমহা : — “এই জামা তো ছিঁড়েই গেল! ঈদের স্পেশাল ‘রিপড ভার্সন’!”
আনিশা (মোবাইল তুলে):— “রেকর্ড করে ফেলি? ‘When Eid Goes Wrong’ সিরিজে এটা মাস্ট!”
আহিয়ান (পিছনের অংশ ধরে রাখার চেষ্টা করছে):
— “কারো মাথায় যদি একটু লজ্জা থাকে, ফোন নামাও!”

নিলিমা (হাসি চেপে রাখতে না পেরে):
— “আপনার পাঞ্জাবি এখন জেন্টস ব্যাকলেস!”
মুন: — “এই ছবি দিয়ে ঈদের গিফট বানালে কেমন হয়?””

[আহিয়ান নিজের জামার ছেঁড়া অংশ ধরে বসে আছে, আর সবাই হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে]

আহিয়ান : “আমি কারো সঙ্গে কথা বলবো না আজকে... ঈদের দিনটা আমার শেষ!”
লামমহা : — “আর কিছু না হোক, ভাইরাল জামার মালিক তুমিই!”
নোমান : — “ভাইয়া, তুমি চাইলে আমি আমার জামা দিয়ে দেই…”
আহিয়ান — “তোর গায়ে আমার জামা আসবে? আয় পাঞ্জাবি ছিঁড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কও ছিঁড়ে ফেলি!”

তারপর আবার শুরু হয়ে গেলো হাসাহাসির রোল সবাই মজা করছে শুধু রিমি বেেচেরা হসপিটালের সাদা ফ্লর দেখছে আহ কি কষ্ট উচিত কাম।

---
চলবে......

( সকলে মিলে ১০০ কমেন্ট তারাতারি করে ফেলো)

Address

Tangail
1900

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Lamha Islam - লামহা ইসলাম posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share