16/04/2025
েখানে_হৃদয়_সেখানে
#লেখনিতে_লামহা_ইসলাম
#পর্ব_৪৫
রিমির এমন অবস্থায় বড়রা সকলে এসেছে, কাজিনমহল কেউ আসেনি। শুধু নিলিমা আর আদিল এসেছে, বাকিরা বাড়িতেই। সকলে বুঝে গেছে, রিমি এমন কিছু করেছিল যে নিজের ফাঁদে নিজেকেই পড়তে হয়েছে। এখন সকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলছে।
নাফিসা: স্যার, রিমি কেমন আছে? ও এখন ঠিক আছে তো? আর কোনো বিপদ নেই তো?
আসাদুজ্জামান: তুমি একটু শান্ত হও। ওর কিছু হয়নি, চুপ করে বসো।
নাফিসা: আমি ওর মাকে কী উত্তর দেব বলো! আমার ভরসায় ওকে রেখে গেছে। আমি কী করে ওর মার সামনে দাঁড়াবো?
ডাক্তার: She is out of danger. যে প্রবলেম হয়েছিল, তাতে আমরা সকলে ভয় পেয়েই গিয়েছিলাম। কিন্তু সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু করে দেওয়ায় তেমন ক্ষতি হয়নি। এখন বাকিটা জ্ঞান ফেরার পর বলা যাবে।
নাফিসা: সত্যি বলছেন? ওর কিছু হয়নি? ধন্যবাদ, ডাক্তার।
আশফাক: হয়েছে, তোমরা ঠান্ডা হও। অনেকেই সকাল থেকে না খেয়ে আছো। যাও, সকলে বাড়িতে যাও।
আয়াত: হুম বাবা, চলুন। এখন সকলে যাই, পরে আবার আসব।
নাফিসা: ভাবী, তোমরা যাও। আমি ওর কাছে থাকি, তোমরা যাও।
আনিসুর: বাবা, আমি আপনাদের সবাইকে নিয়ে বাড়ি যাই। তারপর ওর জ্ঞান ফেরার পর আবার এসে দেখে যাব।
আসাদ: হ্যাঁ, চলুন। আমিও যাব। বাড়িতে সবাই টেনশনে আছে, আমরা গেলে ওরা নিশ্চিন্ত হতে পারবে।
আয়মান: হুম। এমন সময় আহিয়ানটারও বিজনেসের কাজে যেতে হলো। ঈদের আগের দিন আসবে, বেচারা।
নওশেদ: থাক, বাদ দাও ভাইয়া। চলো, বাড়িতে যাওয়া যাক।
তারপর সকলকে বুঝিয়ে বাড়িতে যাওয়া হলো।
রাত ১২ টা লামহা দাড়িয়ে আছে ছাঁদের এক প্রান্তে কারো আসার আওয়াজ পেলো চুপ চাপ আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো । পেছনে ঘুরলো
লামহা : "এখানে কী চাই তোমার?"
নিশান : "তোর কাছ থেকে দূরে থাকতেই তো চেষ্টা করি। কিন্তু তবুও তোকে দেখলেই পা থেমে যায়।"
লামহা : "নাটক বাদ দাও, । আমি তোমার এসব ‘আকুল দৃষ্টি’ আর ‘নীরব ভালোবাসা’র গল্পে বিশ্বাস করি না। তুমি অন্যদের ম্যানিপুলেট করো, আমার সাথে সেটা চলবে না।"
নিশান : "আমি তোকে ভালোবাসি, লামহা। এটা কোনো গল্প না। কোনো কনফেশন না। এটা আমার দুর্বলতা।"
লামহা : "তুমি দুর্বল নও। তুমি চতুর। তুমি জানো কাকে কোথায় কীভাবে ব্যবহার করতে হয়। আমার আশেপাশে থাকো কেন জানি? কারণ তুমি আমাকে দমিয়ে রাখতে চাও। আর আমি—আমি তোমার ঘৃণার বাইরে কিছু না।"
নিশান : "তুই চাইলে আমায় ঘৃণা করতে পারিস , তাও রোজ আসব। চাইলে অপমান কর, তাও চোখ রাখব তোর চেহারায়। কারণ তোকে ভালোবাসা মানে নিজেকে ধ্বংস করা—এবং আমি তাতেই রাজি।"
লামহা : "তাহলে মরো। আমার সামনে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার ভিখারি সাজতে এসো না। তুমি একটা বিষাক্ত ছায়া। আর আমি—আমি আলো খুঁজি।"
নিশান : "তুই আলো? এতটা অহংকার তো আগুনকেও মানায় না। তুই শুধু জানিস কীভাবে কাউকে গুঁড়িয়ে দিতে হয়। ভালোবাসার বদলে ঘৃণা ছুঁড়ে দিস ।"
লামহা : "হ্যাঁ, কারণ তুমি আমার মতো কাউকে পেতে পারো না। আমি তোমার হাতের মুঠোয় আসার মেয়ে নই।
নিশান : "তবুও তোকে ভালোবাসব। তুই আমাকে ঘৃণা কর, অপমান কর, ঠেলে দে—তবুও আমি তোর নামে জেগে উঠব, আর রাত নামলে তোর নামেই ঘুমিয়ে।
লামহা আর কোন কথা না বলে নিঃশব্দে চলে গেলো।
নিশান একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে লাগলো আর নিজের ভিতরে থাকা আবেগ দিয়ে বলতে শুরু করলো
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল দুপুর রাতে
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল দুপুর রাতে
আগুন জেনেও পুড়লাম আমি
দিলাম তাতে ঝাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
আগুন জেনেও পুড়লাম আমি
দিলাম তাতে ঝাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল দুপুর রাতে
তোর কারনে ভুললাম আমি
গোত্র জাতি কুল
কাঁটার সাথে করলাম সন্ধি
পায়ে পিষে ফুল
তোর কারনে ভুললাম আমি
গোত্র জাতি কুল
কাঁটার সাথে করলাম সন্ধি
পায়ে পিষে ফুল
কেমন করে সইবো আমি
প্রেম আগুনের তাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
কেমন করে সইবো আমি
প্রেম আগুনের তাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
পথ হারানো পথিক হলাম
সব হারিয়ে নিঃস্ব
তোর আমার এই প্রেমের কি
দাম দেবে বিশ্ব
পথ হারানো পথিক হলাম
সব হারিয়ে নিঃস্ব
তোর আমার এই প্রেমের কি
দাম দেবে বিশ্ব
প্রেমের নামে কিনলাম আমি
নিঠুর অভিশাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
প্রেমের নামে কিনলাম আমি
নিঠুর অভিশাপ
তোর আমার প্রেমে ছিলোরে বন্ধু
ছিলো পুরোটাই পাপ
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
কি দোষ দিবি তাতে
বন্ধু তোরে খুঁজে বেড়াই
সকাল দুপুর রাতে
তুই যদি বুঝতি আমি তোকে কতটা চাই তাহলে তুই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করতি আফসোস আমার রুহুর ডাক তোর অব্দি পৌঁছাতে পারলাম না।
ঈদের তিনদিন আগে – দুপুর। সবাই শপিংয়ে বেরিয়েছে। দলের সদস্য: লামহা, হৃদ, আনিশা, মুন, তুহিন, তিশান, নোমান ও নতুন করে যোগ দিলো নিশান। নিশান মৃদু স্বভাবের, গভীর চোখের, এবং সবসময় লামহার দূরত্বটা বোঝে।
লোকেশন: গ্লিটজ স্কয়ার, ঢাকা।
ঢাকার সবচেয়ে দামি মল। সাততলা বিল্ডিং, যার একেকটা ফ্লোরই আলাদা থিমে সাজানো। পঞ্চাশেরও বেশি ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড। ভিতরে ঢুকলে ঘ্রাণ লাগে ল্যাভেন্ডার আর গরম চকোলেটের মিশ্র গন্ধ। গেটে ঢুকতে হয় স্ক্যানার দিয়ে। যারা ঢোকে, তারা জানে—এখানে কেবল শপিং হয় না, স্টেটমেন্ট তৈরি হয়।
সকালের আলোতে মলটা ঝকঝক করছে। লিফটে উঠে সবাই উঠে ৫ম তলায়। রঙিন দেয়াল, স্ট্রিং লাইট, ফুটেছে নতুন কালেকশনের পোস্টার।
তুহিন : ভাইরে, এত দামি জায়গায় আমি জুতা খুলে ঢুকি?
নোমান: পাগল! জুতা খোলার কথা না, খরচ শুনে জ্ঞান হারানোর কথা।
মুন: আমার তো মনে হচ্ছে এখানে দাম জিজ্ঞেস করলে সিকিউরিটি ধরে বের করে দেবে।
সবাই হেসে ওঠে। শুধু লামহা ঠান্ডা মুখে একটার পর একটা দোকানে ঢোকে। কারন ও জানে এরা জীবনে মজা ছাড়া আর কিছু বোঝে না। চোখে ঠান্ডা আগুন। খুঁটিয়ে দেখে। ওয়েস্টার্ন টপ, হাই-ওয়েইস্টেড ট্রাউজার, কালো সিল্কের শাড়ি, স্টোন স্টাডেড হ্যান্ডব্যাগ।
(তিশান, মুন, আনিশা প্রথমে এক শাড়ির দোকানে ঢুকে পড়ে। বাকিরা পেছনে, একটু ধীর গতিতে হাঁটে। হঠাৎ লামহার হাঁটার গতি কমে আসে।)
হৃদ: আবার কী হলো? পা ব্যথা?
লামহা : আমার শরীরের খবর রাখার দায় আপনার না।
হৃদ: কিন্তু তুমি যদি মাঝরাস্তায় পড়ে যাও, আমারই তুলতে হবে। তাই আগেই জিজ্ঞেস করলাম বুঝলে মিসেস খান।
লামহা : আমি পড়লে, তুলতে কেউ লাগবে না। আমি নিজেই উঠে দাঁড়াতে পারি।
হৃদ: তুমি যে সিল্ক শাড়ি পছন্দ করো না—বলে ছিলে একবার।
লামহা: আপনি আমার পছন্দ মনে রাখেন ?
হৃদ : না। আমি তোমার অপছন্দগুলো বেশি মনে রাখি।
লামহা : ব্যস্ত থাকেন নিজের পছন্দ নিয়ে, অন্যেরটা বোঝার দরকার নেই।
মুন: দ্যাখো দ্যাখো! এই দোকানে অফার চলছে।
আনিশা: আমি তো ঠিক করে ফেলেছি। শুধু মেহেদির সঙ্গে ম্যাচ করাতে হবে।
তুহিন: আমি এখন পাঞ্জাবি কিনবো, তারপর বাকি সময়টা বসে তিশানের টেনশন দেখবো।
তিশান: আমার কোনো টেনশন নেই। আমি ফ্যাশন সেন্স দিয়ে বাজার কাঁপাতে এসেছি!
লম্বা দৃষ্টি বিনিময়। নিশান দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে, চুপচাপ। তার চোখে কিছু বোঝা যায় না, শুধু অপেক্ষার মতো একটা ছায়া
(আনিশা, মুন, তিশান আর তুহিন চলে যায় আলাদা দিকে। নিশান চুপচাপ দাঁড়িয়ে লামহার প্রতি ক্ষণিক তাকায়। হৃদ আর লামহার মধ্যকার রসায়ন যেন শীতলতা ছুঁয়ে আগুনে পরিণত হচ্ছে।)
(সবাই শেষপর্যায়ে এসে পৌঁছায় ৭ম তলায়—যেখানে রেস্টুরেন্ট: “Sapphire Garden Bistro”। ঢাকার সবচেয়ে দামি রুফটপ ডাইনিং। চারপাশ কাঁচে মোড়ানো। ভিতরে ঝাড়বাতির আলো। গ্লাস টেবিল। ওয়েটারদের পোশাক কালো স্যুটে।)
তিশান : ভাই, এখানে পানি খাইলেও হাজার টাকা?
তুহিন: আমি তো আগেই বলছি—মেনু হাতে নিলেই টাকা আর টাকা।
(একটা কোণে সবাই বসে। ছয়জনের জন্য একসাথে সিট মেলেনি। তাই দুটো টেবিল জোড়া লাগানো হয়েছে। ওয়েটার মেনু দেয়—একটা মেনু খুলতেই চকচকে পাতার গায়ে অদ্ভুত সব নাম।)
মুন: “Grilled salmon with avocado mousse”... এ আবার কিসের নাম?
নোমান : ওটা হচ্ছে—‘ভালোবাসার আগুনে পোড়া মাছের পাশে ইমোশন মাখানো পুদিনা’।
(সবাই হেসে ওঠে। শুধু লামহা মেনু নামিয়ে রাখে।)
লামহা: আমার জন্য ব্ল্যাক কফি। আর কিছু লাগবে না।
হৃদ: ব্ল্যাক কফি এর জন্যই তো বলি মুখ দিয়ে কেনো তেতো কথা বের হয় ।
লামহা : কারণ আমি তেঁতো কথা পছন্দ করি।
( রেস্টুরেন্টে হালকা মিউজিক বাজে। ফ্লোরে বিদেশি গানের সুর, কাচের বাইরে সন্ধ্যার ঢাকাকে আলোকিত করছে বিলবোর্ড আর লাইট। নিশান লামহার দিকে তাকিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। আনিশা তাকে লক্ষ্য করে। কিন্তু কিছু বলে না।)
নিশান : এই মেয়েটা কিসে গড়া? কে ওকে এতো রুঢ় করে তুলেছে?
(এদিকে খাবার আসে। ওয়েটার পরিবেশন করে: ভেজান পার্মিজান স্যুপ, স্পাইসি চিকেন উইথ চিজ ব্ল্যাঙ্ক, আর একজোটে কোল্ড কফি আর বাটারক্রোক। সবাই খেতে ব্যস্ত। শুধুমাত্র লামহা একটা সিগনেচার চায়ের অর্ডার দেয়—‘Lavender Lemon Soulbrew’।)
নিশান: এটা কেমন চা?
লামহা: আমার মতো—হালকা গন্ধ, গভীর স্বাদ, আর যাকে সবাই চুমুক দিতে ভয় পায়।
তারপর সকলে মিলে যার যার পছন্দ মতো কেনাকাটা করে চলে এলো সকলের অবস্থায় খারাপ এরা বাড়িতে ডুকে সোফায় বসে পড়লো শুধু মাত্র লামহা চলে গেলো উপরে। লামহা আহিয়ান এর জন্য বাড়ির সবার জন্যই কিনেছে সবকিছু জেরিন এর কাছে দিয়ে চলে গেলো যাতে জেরিন সবাইকে দিয়ে দেয়।
আসাদ : সবাই দেখি কেনাকাটা শেষ আমাদের কেউ নিয়েই গেলো না।
হৃদ : চিন্তা করো না তোমার গিন্নি তোমাদের জন্য এনেছে সবকিছু।
হুমায়রা : আমার গিন্নি সব দিক থেকেই বেস্ট ।
নিশি : হয়েছে এবার যাও সকলে আসো আমি রান্না করেছি ।
তারপর সকলে চলে গেলো রেস্ট নিতে।
চাঁদ রাত | রাত ১১:৩২ মিনিট | লামহার বাড়ি, বাইরের উঠোন থেকে শুরু, পরে ঘরের ভিতর
চাঁদের আলো মিশে আছে রঙিন ফেয়ারি লাইটের ঝিলমিলে।৷ ছাদে সাজানো হয়েছে বালিশ-পাতা মাদুর দিয়ে। মাঝখানে ছোট্ট একটা টেবিলে সাজানো মেহেদি, চিপস, চকোলেট আর সফট ড্রিংকস। আকাশে টকটকে চাঁদ, আর মাটিতে জমে উঠছে ঈদের চাঁদের রাতের চিরচেনা উচ্ছ্বাস।
মুন : — "এই যে! সবাই এক জায়গায় বসো! মেহেদির আসল ফাইট তো এখন শুরু!"
আনিশা : "আমি কিন্তু প্রথম! আমার ডিজাইন আগে থেকে রেডি আছে। ফুল মুন মেহেদি!"
নোমান : "তাহলে আমি চাঁদ বানাবো। হাতে, পিঠে, গালে!"
তুহিন : "এই, ফাজলামো কম কর, তোর বানানো ডিজাইন শেষবার তিশানের হাতে দাগ হয়ে গেছিল রে!"
লামহা ছাড়া মেহেদি নাই!"
কিন্তু লামহা?
— ঘরের ভেতর |
বেডরুমের ভিতর, লামহা জানালার ধারে বসে। চোখে তার উদাস দৃষ্টি। চারদিকে আনন্দের শব্দ, অথচ তার চারপাশ নিঃস্তব্ধ। হাতে মোবাইল, স্ক্রিন অফ। চাঁদের আলো মুখে পড়েছে।
একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সে বলে নিজেকেই —
— "চাঁদের রাত... কত হাসাহাসির দিন ছিল এক সময়। এখন শুধু মুখোশ। মুখোশের ঈদ।"
দরজায় টোকা। আহিয়ান।
— "ভেতরে আসতে পারি?"
লামহা : "তোমাদের মতো সেলিব্রেটরদের ওখানে থাকা উচিত, এখানে না।"
আহিয়ান : তুই৷ এভাবে একা বসে থাকলে ঈদের রাতটা অসম্পূর্ণ লাগে।" আমার কোম্পানির কাজে যেতে হয়েছিলো জানিিসই তো প্লিজ রাগ করিস না সোনা বনু আমার।
লামহা : "অসম্পূর্ণতা আর অভ্যাস হয়ে গেছে । আজকে মেহেদি, কাল সেলাই করা জামা... এর পরদিন হয়তো মানুষই বাদ যাবে আমার কাছ থেকে।"
আহিয়ান : — "আমার মনে হয়, আজ একটু বাকি সবার মতো হ হাস, একটু জোর করেই। হয়তো পরে হাসিটাই সত্যি হয়ে যাবে।"
লামহা তাকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেও না।
এই সময় পেছন থেকে হঠাৎই দরজা ধাক্কা দিয়ে ঢুকে পড়ে পুরো গ্যাং — আনিশা, মুন, তুহিন, তিশান, নিশান, নোমান, হৃদ
মুন৷ , : — "চুপ করে বসে থাকা মানা! আমাদের কুইন মেহেদি পরবে, আর সেটা আমার হাতে!"
লামহা : — "আমি বলেছি না? আমি মেহেদি পরবো না। আমার ধৈর্য নেই ওসব বসে থাকার।"
তুহিন :৷ "ওহ আল্লাহ ! আমাদের মুড-কিলার এসে গেছে! হে ঈদের মালিক ওকে একটু মুড-অন করে দাও!"
তিশান : "আমি বলে দিচ্ছি, যদি আজকে মেহেদি না পরিস, তাহলে ঈদের সকালে সবাই তোকে কালো জামা পড়তে বাধ্য করবো!"
নোমান : এইটা ধর! খা! হাসিস! আর চুপচাপ বসে থাকিস না!"
আনিশা : "দেখ, তুই আমাদের সাথে থাকলে এই ছাদটা আলোকিত হয়। আজকের রাতের সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটার হাতে মেহেদি না থাকলে ঈদটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।"
এক মুহূর্ত স্তব্ধতা। লামহা চোখ বন্ধ করে। একটু নরম হয়ে যায় গলা —
— "একটা হাত... শুধু একটা ডিজাইন। কাউকে যদি শান্তি দেয়... তাহলে করো।"
সবাই একসাথে তালি মেরে চেঁচিয়ে ওঠে!
— "ইয়েসস!! মেজাজি কুইন রাজি!!"
আনন্দে উল্লাস, ঝলমলে হাসির বন্যা। মেহেদির প্যাকেট খুলে ফেলে সবাই, কাঁধে চেপে ধরছে লামহাকে, কেউ হাত সামলাচ্ছে, কেউ পেছনে ওর চুল বেঁধে দিচ্ছে।
আহিয়ান একপাশে দাঁড়িয়ে শুধু চেয়ে থাকে — শান্ত, গর্বিত দৃষ্টিতে। যেন সে বুঝতে পারে, এই সামান্য জিতের ভেতরেই লুকিয়ে থাকে সম্পর্কের সবচেয়ে সত্য অনুভব।
— চাঁদের আলোয় লামহার হাত মেহেদিতে রাঙা, চোখে অল্প এক চিলতে হাসি। বাকিরা সবাই চারপাশে বসে, গল্প করছে, হাসছে। চাঁদ যেন আকাশ থেকে নিচে নেমে এসেছে এই উঠোনেই।
আস্তে আস্তে সকলেই হাতে মেহেদি লাগাচ্ছে আর মারামারি হাসাহাসি করছে।
নিশান : ছেলেদেরর মেহেদী দেওয়া হারাম।
মুন : একদিন একটু করে সবার সাথে আনন্দ করে দিলে কিছু হবে না মুন নিশান এর গাতেও চাঁদ আকিয়ে দিলো।
তারপর এলো হৃদ এর পালা হৃদ হাত বাড়িয়ে দিলো আর বললো শোন চাঁদের মাঝখানে লিখে দিবি মিসেস খান।
তিশান : আরে ভাই এইটা ঈদ তোর বিয়ে না তাই রঙ্গ লিলা বাদ দে।
হৃদ : আমার হাত আমার ইচ্ছে তাই চুপচাপ আমি যা বলবো তাই করে দে।
লামহা : সকলে মেহেদি দিচ্ছিস বাড়ির বড়দের একটা লাগাই দে ভালো হবে
মুন : অফস সেই বুদ্ধি দিছিস বেহেন। তারপর সবাই মিলো দৌড় লাগালো বড়দের কাছে আজকে ওদের দেখে সকলে বাচ্চা মনে করবে এমন বিহেব করছে সকলে।
আসলে ঈদ বলতেই আনন্দ সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে আপন করা ওদের ঈদ টাকেই বলে ঈদ সকলে মিলে মজা।
ঈদের সকাল | সকাল ৭:৪৫ | লামহার বাড়ি | উঠোন – বারান্দা – ড্রইংরুম
আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে দুর থেকে। মিষ্টি সকালের আলো ভিজে আছে পাতায় পাতায়। বাড়ির উঠোনে দুধ-সাদা কুয়াশার আস্তর মিশে গেছে ঈদের দিনের আনন্দে। চারদিকে শোভা পাচ্ছে রঙিন ঈদের জামা, আতরের হালকা গন্ধ আর মায়ের হাতে গরম পায়েস সেমাই - নানা রকম রান্না।
লামহা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। তার চুল খোলা, চোখে কাজল, আর হাতে আগের রাতের মেহেদির গাঢ় রঙ।
সে ধীরে ধীরে ঠোঁটে একটা হালকা লিপস্টিক দিচ্ছে, কিন্তু চোখে-মুখে আজও সেই ঠান্ডা ভাব।
পেছন থেকে মুন ঢুকে পড়ে, রঙিন শাড়ি পরে – ঝাঁ চকচকে হাসি মুখে।
— “তুই কি সবসময় এত রাজকুমারীর মতো থাকিস নাকি আজ স্পেশাল কোনো প্ল্যান আছে?”
লামহা হেসে বলে না কিছু, শুধু একটা চোখ তুলে দেখে।
— “প্ল্যান? হুম... ঈদ তো আমার কাছে সাইলেন্ট ডে।"
মুন গালে হাত দিয়ে বলে “তুই সত্যিই অদ্ভুত লামহা। তোকে নিয়ে একদিন একটা থ্রিলার লিখবো!”
(দুজনেই হাসে কিন্তু লামহার হাসি অল্প)
এদিকে উঠোনে —
আনিশা, তুহিন, তিশান আর নোমান মিলে তুলকালাম করছে। কেউ সেলফি তুলছে, কেউ ছানার জিলাপি খাচ্ছে, কেউ দৌড়ে দৌড়ে আতর মাখিয়ে দিচ্ছে একে অপরকে।
আহিয়ান ফর্মাল পাঞ্জাবি পরে এসে দাঁড়িয়েছে বারান্দায়। তার চোখ কিন্তু কাউকে খুঁজছে —
লুকিয়ে লুকিয়ে আনিশার দিকে একবার দেখে নেয়, তারপর মুখ ফিরিয়ে নেয়।
ঠিক তখনই হৃদর প্রবেশ — ধবধবে সাদা পাঞ্জাবি, চোখে রোদচশমা, চুল হালকা উসকোখুসকো, হাতে একটা খোলা ডায়রি।
তিশান বলে চেঁচিয়ে:
— “ঈদের দিনও কি ভাইয়া কবি হবেন ভাবছেন?
হৃদ : “কাব্য লিখিনি। কিছু নাম লিখেছি… কাকে আজ ঈদের শুভেচ্ছা জানাবো, আর কাকে না।”
সবার মধ্যে একটু হাসাহাসি শুরু হয়, কিন্তু লামহার চোখ স্থির থাকে হৃদর দিকে। হৃদ একবার চোখ তোলে, কিন্তু কিছু বলে না।
হঠাৎ পেছন থেকে আনিশা এসে বলে:
— “সবাই প্রস্তুত তো? নামাজের পর আমরা ফ্যামিলি ফটো তুলবো। এবার কাউকে বাদ দেওয়া হবে না।”
সবাই হইহই করে ওঠে, কেউ পাঞ্জাবি ঠিক করে, কেউ আয়নার সামনে দৌড়ায়।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা লামহা শুধু বলে:
— “তোমরা যাও, আমি পরে আসছি। একটু একা থাকতে চাই।”
হৃদ সেই কথাটা শুনে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে তার দিকে। কথা না বলে পাশে দাঁড়ায়। দুজনেই চুপ। কয়েক সেকেন্ড পর হৃদ বলে:
— “তোমার চোখের নিচে কালো ছায়া। রাতে ঘুম হয়নি?”
লামহা : — “ঘুম আর স্বস্তি – দুটোই যেন খুব ব্যস্ত আজকাল। আমার কাছে আসার সময় পায় না।”
হৃদ : “তোমাকে বলেছিলাম, মেহেদির ডিজাইন আস্তে আস্তে রঙে ভরে ওঠে। দেখেছো মিলেছে তো।
লামহা হালকা হাসে শুধু।
হৃদ : ঈদ মোবারক মিসেস খান। দোয়া করি আমার বউয়ের যাতে এই ঈদের দিনেয় উছিলায় তার স্বামীর প্রতি দয়া মায়া হয়।
লামহা : ঈদ মোবারক আর আপনাকে বলেছি কারো সামনে এইসব কথা বলবেন না তাও কেনো বলছেন ভিপি সাহেব এইটা ঠিক না।
হৃদ : আচ্ছা সরি তা বিবি সাহেবা আপনার কি সালামি লাগবে।
লামহা : সালামি দিলে তো গত ২৬ বছরের গুলোও দিতে হবে।
হৃদ : আগ্গে আগামী বছরের গুলোও একসাথে দেয় কি বলেন।
লামহা : থাক দরকার নেই।
হৃদ : দরকার আছে তোমার জন্য তোমার রুমের ডয়ারে তোমার ঈদের গিফ্ট আর সালামি দেওয়া আছে দেখো।
এই কথার পর এক মুহূর্ত চুপ। পেছনে ঈদের নামাজের প্রস্তুতির আওয়াজ, হালকা আতরের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। হৃদ সবার সাথে মাঠে চলে গেলো নামাজ পড়তে।
আর লামহা চলে গেলো ওর রুমে গিয়ে দেখলো ওর ডয়ারে একটা প্যাকেট মোড়ানো আর ছোট বক্স সেখানো দেওয়া আছে চিরকুট ঈদের দিন শাড়িটা পড়বেন আমার বিবি সাহেবা দেখে চক্ষু দুটোর তৃষ্ণা কমবে। চিরকুট পড়ে লামহা অজান্তেই হেসে দিলো আর ভাবলো ফটোশুট এর সময় শাড়ি পড়বে আর কত রোবট এর মতো জীবন পার করবে।
ঈদের নামাজ শেষ। বাড়ির গেট খুলে একে একে সবাই ঢুকছে।]
আয়মান : — “আল্লাহ, এই গরমে তো নামাজ পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যাব!”
আসাদ চৌধুরি : — “নামাজ শেষে সালামি চেয়ে কেউ যদি আসে, আমি কিন্তু চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়বো!”
আশফাক — “ওদের হ্যান্ডশেক দেখলেই বুঝি, নোট ছাড়া ছাড়বে না!”
সালামি স্পেশাল স্কোয়াড: নোমান, হৃদ, নিশান, আদিল, নিলিমা, , মুন, আনিশা, তুহিন, তিশান—রেডি!
নোমান : “চাচা, আজকে তো আপনি সবচেয়ে স্মার্ট লাগছে!”
নওশেদ : “এই তো, চাটুকারিতা শুরু! কী চাই বলো?”
নোমান :— “টাকা। কেবল নোট হলেই চলবে, কয়েন নেবো না!”
হৃদ : — “চাচা, আগে তো আপনি দিতেন গায়ে হাত বুলিয়ে। আজকাল শুধু কথা দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।”
নওশেদ (হেসে হেসে ৫০ টাকার একটা নোট বাড়িয়ে):
— “এই নাও, এক্সক্লুসিভ পুরাতন নোট, স্মৃতিস্বরূপ!”
হৃদ :— “পুরাতন নোট দিলে আমরা পুরাতন দোয়া করবো!”
[এদিকে আসাদ চৌধুরী চুপিচুপি সোফায় গিয়ে বসেছেন]
নিশান (পেছন থেকে কানে হাত দিয়ে):
— “, দাদু সালামি না দিলে আমরা ফেসবুকে লিখে দেবো আপনি নামাজে যাননি!”
আসাদ চৌধুরী : — “আরে আরে, এই হচ্ছে ডিজিটাল হুমকি! এই নাও, কিন্তু বেশি আশা করো না!”
জেরিন : দাদু , ঈদে যদি ঈদের আনন্দ না পান, সেটা কিন্তু আমাদের নয়—আপনার দোষ!”
আসাদ (হালকা হেসে):
— “তোমাদের জোরাজুরিরে এখন মনে হচ্ছে বেঁচে আছি!”
[আয়মান আসাদুজ্জামান চুপচাপ একটা কোণে দাঁড়িয়ে আছেন]
লামহা : আপনারা কি মজা দেখছেন নাকি?
আয়মান (মুচকি হেসে পকেট থেকে ২০০ টাকার একটা চকচকে নোট বের করে):
— “এই নাও, কানাডিয়ান নয়, বাংলাদেশি নতুন নোট!”
মুন (হাঁ করে):
— “আমি তো পাই আঙ্কেল তোমরা এমন একচোখামি করঋো কেনো দাও আমাদের।
আয়মান: — “তোমাদেরটা ইনস্টলমেন্টে দিচ্ছি, তিন বছরে!”
মুন (বিরক্ত মুখে):— “তাহলে আমি তিন বছর ঈদে হাসবো না!”
[আনিশা এসে আনিসুর এর দিকে এগিয়ে আসে]
আনিশা:— “বাবা, আমি তো তোমাকে ফলো করি না, কিন্তু সালামির লোভে আজ তোমাকে ফলো করলাম!”
আনিসুর (হেসে):— “তাহলে এখন আনফলো করার সময় হয়েছে!
”আনিশা (ভেংচি কেটে):
— “সালামি দেও , না হলে তোমাকে TikTok-এ ট্রেন্ড করিয়ে দেবো!”
[তুহিন আর তিশান মিলে গান ধরেছে]
তুহিন-তিশান (একসাথে গাইছে):— “সালামি না দিলে হবে না, দাও দাও সালামি দাও!
না দিলে আমরা গাইবো আরও, নাচবো সবার সামনে আও!”
হুমায়রা বেগম : — “ওরে বাবা! আজকে আমরা বাঁচবো না, টাকা দিয়েই যাবো!”
[সবাই একে একে টাকা পেয়ে খুশিতে চিৎকার করছে, কেউ নাচছে, কেউ দৌড়াচ্ছে]
নোমান : — “এবার ব্যাগ কিনতে যাবো!”
হৃদ:— “আমি তো একটা খাসি বুক করে ফেললাম মনে মনে!”
মুন : — “ঈদের সবচেয়ে মজার জিনিস? সালামির জন্য বড়দের কাঁপুনি!”
[পেছনে দাঁড়িয়ে বড়রা হেসে হেসে পরাজিত সৈন্যদের মতো পরস্পরের দিকে তাকাচ্ছে]
আয়মান : — “এইবার মনে হচ্ছে আমরাই ছোট হয়ে গেলাম!”
আসাদ চৌধুরী: — “ওদের সামনে কেউ কিছু বললেই শাস্তি হিসেবে টাকা দিতে হয়! ভয়ংকর অবস্থা!”
দুপুর ১টা। পুরো ঘরে বিরাট রান্নার গন্ধ, মাংস, পোলাও, কাবাব, দই—ঘ্রাণেই জিভে পানি এসে যাচ্ছে।
আয়াত : — “একটা দিন, একটা মাত্র দিন যদি আমি বসে খেতে পারতাম!”
আনিসুর : — “তখন তুমি অসুস্থ থাকো, আর আমরাই রান্না করে বসে থাকি!”
আনিশা : — “সবাই এখন উঠোনে চলে আসো! ফ্যামিলি ফটোসেশান স্টার্ট!”
নিলিমা: — “না না, আমার চুল ঠিক হয়নি! দাঁড়াও আয়না দেখি!”
মুন : — “আমার পেছন থেকে ছবি তুলবা না, বলেই দিলাম!”
[সবাই একে একে উঠোনে এসে দাঁড়াচ্ছে, লাইন করে ছবি তোলার প্রস্তুতি।]
এমন সময় উপর থেকে লামহা নীল রংয়ের শাড়ি মুখে নেয় কোন মেকআপ এতেই যেনো ওকে পরির মতো লাগছে । সকলে হা হয়ে তাকিয়ে আছে নিশান হৃদ সকলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিশান চোখ সরিয়ে না এই নারিকে সে কুদৃষ্টিতে দেখতে পারবে না।
মুন : আমারে কেউ বাঁচা আমি তো ক্রাশ খাইছি এই সুন্দরী রমনীর উপরে যদি আমি ছেলে হতাম ওরে বিয়ে করতামই জানু মাভ ইউ৷
আহিয়ান : হয়ছে তোর ভাব বাদ এবার সকলে ছবি তুলবো আয়।
নোমান : — “ভাইয়া! আমার মাথায় টুপি ভালো লাগছে? ইনস্টাগ্রামের জন্য সিঙ্গেল পিক দিতে হবে।”
তুহিন:— “তুই শুধু টুপি পরছিস, আমি তো খালি পায়ে এসেছি, যেন ঈদের টোনটা গ্রাম্য থাকে!”
তিশান (ছোট্ট গলায়):
— “কেউ আমার স্যান্ডেল সরিয়ে দিয়েছে! ছবি তুলবো কিভাবে?”
[ক্লিক ক্লিক ক্লিক—ক্যামেরার আওয়াজ, খ্যাঁত রোদে চোখ ছোট করে কেউ হাসছে, কেউ বকাঝকা করছে।]
নিশান (ছবি তোলার পর):
— “চলো এবার খেতে বসি, আর সহ্য হচ্ছে না!”
আনিসুর (চেয়ারে বসে):
— “এইবার দেখো, আমি সবার আগে প্লেট হাতে নিয়েছি। কেউ আটকাতে পারবে না!”
[ডাইনিং টেবিলে সবাই একে একে বসছে, বড়দের আগে ছোটদের খাবার পরিবেশন শুরু!]
আয়মান:
— “আরে এইটা কী? মাংসের প্লেট খালি? আমি তো খেতেই বসিনি!”
লামমহা (ঠোঁট বাঁকিয়ে):
— “আগে আসলে আগে পাবে, এটা ঈদের নতুন নিয়ম।”
আসাদ চৌধুরী (রসিক গলায়):
— “ছোটরা আগে খায়, বড়রা শুধু বিল দেয়। এটাই আধুনিক ঈদ সংস্কৃতি!”
[খাওয়ার মাঝে কেউ কেউ হাসতে হাসতে মুখে ভাত ছিটিয়ে ফেলছে, কেউ কোল্ড ড্রিংক চেয়ে ঝগড়া করছে।]
মুন:— “দইয়ের পাত্রটা কে সরিয়েছে! আমি তো এক ফোঁটা পাইনি!”
নিলিমা (চোখ ছোট করে):— “তুমি ছবিতে বেশিই সুন্দর হয়েছো, তাই দই দিইনি!”
সবাই হেসে গড়াগড়ি।
জেরিন : আফা আমি আইনা দেয় ফ্রিজ এ আছে।
মুন : দরকার নেই সোনা তুই খা।
[খাওয়া শেষে—ঘুমানোর চেষ্টায় ব্যর্থ বড়রা, আর নতুন এনার্জি নিয়ে ছোটদের দৌড়ঝাঁপ]
হুমায়রা বেগম (বিছানায় শুয়ে শুয়ে):
— “একটু চোখ বন্ধ করবো ভাবলেই কারো না কারো পেঁচাল আর ভালো লাগছে না৷
নওশেদ শুয়েছে , হঠাৎই আদিল এসে ঝাঁপ দিয়ে উঠলেন তার পিঠে):
— “চাচা, আপনি তো সালামিতে কারচুপি করেছেন! আমি গুনে দেখেছি!”
নওশেদ (বই রেখে):
— “তুই না ডাকাত হলে কি হতে পারতি? সব হিসাব তোর মুখস্থ!”
বিকেল ৪টা। উঠোনে ছোটরা বড় একটা খেলার আয়োজন করেছে—বল হাতে নোমান, আদিল, নিশান, তুহিন, তিশান, আর আশেপাশে মেয়েরা চিৎকারে ব্যস্ত।
নোমান (বল হাতে):
— “শোনো সবাই! এবার ঈদের বিশেষ ম্যাচ: বাচ্চা বনাম কাঁচা!”
তুহিন:
— “মানে কী?”
নিশান:
— “মানে যারা শেভ করতে পারে না, তারাই বাচ্চা!”
তিশান (চিৎকার করে):
— “আমিও খেলবো! আমিও শেভ করিনি!”
[বল ছুঁড়ে মারামারি, কেউ দৌড়াচ্ছে, কেউ হোঁচট খাচ্ছে, পুরো উঠোনে গণ্ডগোল।]
আচমকা!
একটা বল উড়ে গিয়ে পড়ে— আহিয়ান ভাইয়ার জামায়! জামার পেছনের অংশ একটানে ছিঁড়ে যায়।
আহিয়ান : — “এই কী হইলো?! আমার ডিজাইনার পাঞ্জাবি!”
নোমান : — “ভাইয়া... এইটা আমি ইচ্ছা করে মারি নাই!”
লামমহা : — “এই জামা তো ছিঁড়েই গেল! ঈদের স্পেশাল ‘রিপড ভার্সন’!”
আনিশা (মোবাইল তুলে):— “রেকর্ড করে ফেলি? ‘When Eid Goes Wrong’ সিরিজে এটা মাস্ট!”
আহিয়ান (পিছনের অংশ ধরে রাখার চেষ্টা করছে):
— “কারো মাথায় যদি একটু লজ্জা থাকে, ফোন নামাও!”
নিলিমা (হাসি চেপে রাখতে না পেরে):
— “আপনার পাঞ্জাবি এখন জেন্টস ব্যাকলেস!”
মুন: — “এই ছবি দিয়ে ঈদের গিফট বানালে কেমন হয়?””
[আহিয়ান নিজের জামার ছেঁড়া অংশ ধরে বসে আছে, আর সবাই হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে]
আহিয়ান : “আমি কারো সঙ্গে কথা বলবো না আজকে... ঈদের দিনটা আমার শেষ!”
লামমহা : — “আর কিছু না হোক, ভাইরাল জামার মালিক তুমিই!”
নোমান : — “ভাইয়া, তুমি চাইলে আমি আমার জামা দিয়ে দেই…”
আহিয়ান — “তোর গায়ে আমার জামা আসবে? আয় পাঞ্জাবি ছিঁড়ার সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কও ছিঁড়ে ফেলি!”
তারপর আবার শুরু হয়ে গেলো হাসাহাসির রোল সবাই মজা করছে শুধু রিমি বেেচেরা হসপিটালের সাদা ফ্লর দেখছে আহ কি কষ্ট উচিত কাম।
---
চলবে......
( সকলে মিলে ১০০ কমেন্ট তারাতারি করে ফেলো)