05/03/2025
পবিত্র মাসে পণ্যের মূল্য অশুদ্ধ কেন? এটা কি ব্যবসা, নাকি অত্যাচার ?
রমজান আসলেই কি আমাদের কাছে রহমত নাকি ব্যবসার মৌসুম? দোকানদারদের মুখে অদ্ভুত এক ঝলমলে হাসি, যেন তারা দোয়া পাচ্ছে - কিন্তু কার কাছ থেকে? গরীব মানুষের দীর্ঘশ্বাস থেকে?
🎭 সমস্যাটা ঠিক কোথায়?
রমজান শুরু মানেই বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যর দাম লাফিয়ে আকাশে ওঠা। চাল, ডাল, তেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ - সবকিছুই এমন দামে বিক্রি হয়, যেন বাজারে গিয়ে মনে হয় ,মানুষ এক মাস না খেয়ে থাকতে পারলেই ভালো!
কিন্তু ভাই, এক মাস আগেও তো সবকিছুর দাম স্বাভাবিক ছিল! তাহলে হঠাৎ করে এই আকাশচুম্বী দাম কেন? রমজান তো কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা নয়—আমরা তো ১২ মাস আগেই জানতাম যে এটি আসবে, তাই না?
🔍 কেন হচ্ছে এই ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধি?
১. অতিরিক্ত মজুদ ও কৃত্রিম সংকট:
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নেয়। আগে থেকে প্রচুর পণ্য কিনে মজুদ করে রাখে, যাতে দাম বাড়লে বেশি দামে বিক্রি করতে পারে।
২. মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি:
একদল মানুষ আছে যারা উৎপাদক আর ভোক্তার মাঝখানে থেকে ফায়দা লুটে। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়।
৩. মনিটরিং-এর অভাব:
সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যদি দুর্বল হয়, তাহলে এই সুযোগসন্ধানীরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
🚀 এর সমাধান কী?
সমস্যা আছে, কিন্তু সমাধানও আছে। কিন্তু আমরা যদি শুধু অভিযোগ করেই বসে থাকি, তাহলে কিছুই বদলাবে না। তাই চলুন, হাতে-কলমে কিছু করেই দেখি!
১. সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন:
দাম বেশি হলে বিকল্প দোকানে যান।
সবাই মিলে একত্রিত হয়ে অভিযোগ জানান।
২. সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করুন:
যদি কোথাও অস্বাভাবিক দাম দেখেন, স্থানীয় প্রশাসনকে জানান।
হটলাইন নম্বরে কল দিন, সামাজিক মাধ্যমে তথ্য ছড়িয়ে দিন।
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বা বাজারে অস্বাভাবিক দাম সম্পর্কে অভিযোগ জানানোর জন্য সরকার দুটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে:
1️⃣ ৩৩৩: এই নম্বরে কল করে আপনি দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ জানাতে পারেন।
2️⃣ ১৬১২১: জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের 'ভোক্তা বাতায়ন' হটলাইন, যেখানে ভোক্তারা তাদের অভিযোগ বা পরামর্শ দিতে পারেন।
অতএব, যদি কোথাও অস্বাভাবিক দাম লক্ষ্য করেন, তাহলে এই হটলাইন নম্বরগুলিতে কল করে অভিযোগ জানান। এতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবে, যা বাজার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।
৩. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবুন:
ইসলাম ব্যবসাকে উৎসাহিত করেছে, কিন্তু মুনাফাখোরি হারাম।
আল্লাহ স্পষ্ট করে বলেছেন, অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করা যাবে না। তাহলে এই অন্যায়ের জন্য শাস্তি কি হবে, ভাবুন!
৪. সাধারণ মানুষের জন্য ন্যায্য বাজার তৈরি করুন:
আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিতে পারি, যেখানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি হবে।
কমিউনিটি লেভেলে একসঙ্গে কিছু উদ্যোগ নিলে বড় পরিবর্তন সম্ভব।
✅ আপনার কাজ কী?
এই রোজায় আপনি কী করবেন? প্রতিবাদ করবেন, নাকি চোখ বন্ধ করে শুধু দুঃখ করবেন? সবাইকে সচেতন করুন, নিজে সচেতন হন! বাজারে গিয়ে অন্যায় দেখলে মুখ খুলুন, প্রশাসনকে জানান, এবং আল্লাহকে ভয় করুন!
কারণ, যারা মানুষকে কষ্ট দিয়ে ব্যবসা করে, তারা আল্লাহর শাস্তি থেকে কখনোই রেহাই পাবে না!