
15/11/2024
অনুপমা নিয়ে রিভিউ লিখেছেন প্রিম মাহমুদুল ভাই।
—এই প্রথম বারের মতো ইসলামি বইমেলায় আসা হলো। মেলায় চলছে প্রারম্ভিককাল। সূচনা লগ্ন। উপরন্তু শুক্রবার। যার দরুন তেমন জমে উঠেনি মেলা-প্রাঙ্গন। বইমেলার সুবিশাল প্রাঙ্গনে জুড়া শোভা পাচ্ছে বিশাল আকারের এক নন্দিত ক্যালিগ্রাফি। বলা যায় অধুনাতন ক্যালিগ্রাফির স্বর্ণযুগ চলছে ।
মেলায় আসলাম মনভরে দেখব বলে, ঘুরবো মেলা জুড়ে। কিনবো ঘুরে ঘুরে কাঙ্খিত সমূহ বই। সেই সুবাদে অলিগলি মাড়াতে শুরু করলাম।পছন্দের কিছু বই কিনতে পারলেও সঙ্গত কারণে কেনা হলো না প্রবল আগ্রহের "অনুপমা "বইটি।
বস্তুত একরাশ আনন্দের মাঝে কিঞ্চিৎ হতাশা নিয়ে ফিরে এলাম।
এক সপ্তাহ পর "অনুপমার" উদ্দেশ্যে দ্বিতীয়বার বই মেলায় আসলাম। তবে এবার হতাশ হলাম না। পেয়ে গেলাম কাঙ্খিত বই অনুপমা। হতাশার দেয়াল ভেঙে বইটি হাতে পেয়ে স্বানন্দে ফিরে এলাম মাদরাসায়।
পরীক্ষা শেষে ছুটি। আনন্দের মহালগ্নে "অনুপমা" সাথে নিতে একদম ভুলিনি। পুরোটা পথজুড়ে নিবিষ্ট মনে পড়েছি আর আপ্লুত হয়েছি, আপ্লুত হয়েছি আর পড়েছি। মনে পেলব অনুভব করেছি। বগিতে কোলাহল থাকলেও মনযোগে ছেদ পড়েনি বিন্দুমাত্র।
প্রিয় রিফাত ভায়ের নিপুণ লিখনীতে ফুটে উঠেছে এক পুণ্যবতী নারীর অনুপম জীবনী। মহীয়সী বছিরুন নেছার জীবনের খণ্ড খণ্ড অংশ গুলোকে মুক্ত করেছেন পাঠকের জন্য। তিনি পাঠের অঙ্গনে যেমন ছিলেন তীক্ষ্ণ মেধাবিনী তেমনি সংসারে ছিলেন শ্রেষ্ঠ গৃহীনী। যার সাক্ষর জীবনের পরতে পরতে রেখে গিয়েছেন। বিদ্যা শেখানোর পাশাপাশি দিয়েছেন মানুষত্বের দীক্ষা। তার দানের হাত ছিল সব সময় প্রসস্ত। কোমল হৃদয়ের অধিকারী তবে শাসনের বেলায় অতি কঠোর। অনুপম আত্মজীবনী আর নিপুণ হাতের লেখনী– দুয়ের মিলনে সৃষ্টি হয়েছে নিরুপম এক পান্ডুলিপি।
যার শব্দের চঞ্চলতা পাঠকের হৃদয় কাড়ে,লেখকের পাথেয় জোগায়। বাক্যের শালীনতা পাঠকের হৃদয় সৈকতে তরঙ্গের ঢেও তুলে। গল্পের মোহে সজিব হয়ে উঠে তনুমন। প্রতিটি গল্পের পরতে পরতে রয়েছে অযুত শিক্ষা। যা কোন আঁধার মানবীকে গড়ে তুলতে পারে পূণ্যময়ী রূপে।
সুতরাং পাঠক বন্ধুরা! পড়ুন এবং জানুন একজন মহীয়সীর জীবন সম্পর্কে। তুলে আনুন জীবন চলার অজস্র পাথেয়। এ কথা আমি হলফ করে বলতে পারি;বইয়ের আদ্যোপান্ত পড়ে আপনি বলতে বাধ্য হবে দারুণ "মাশাল্লাহ"।
বই: অনুপমা
লেখক: রহমতুল্লাহ রিফাত
প্রকাশনায় : আবাবিল প্রকাশন
পরিবেশনায় : দারুল ইলম।