28/02/2025
অ্যাব্রাহাম ছিল একটা মার্কিন হাইস্কুলের ছাত্র। খুব ভালো ফুটবল খেলত। ফুটবলের জন্যই স্কুলে সে রীতিমতো তারকা বনে গিয়েছিল। সবাই তাকে পছন্দ করে। পড়ালেখায়ও সে বেশ ভালো। স্কুলে অ্যাব্রাহামের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন মিস্টার জ্যাকসন।
একদিন জ্যাকসন লক্ষ করলেন, ক্লাসে অ্যাব্রাহামের মন নেই। সে কেবল অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে, কী যেন ভাবে। জ্যাকসন তাঁর প্রিয় ছাত্রকে ক্লাসের পর দেখা করতে বললেন। জানতে চাইলেন, ‘ কী হয়েছে তোমার?’ অ্যাব্রাহাম জানাল, তাঁর বাসায় খুব ঝামেলা চলছে। মা-বাবা প্রতিদিন ঝগড়া করেন। যেকোনো দিন তাঁরা আলাদা হয়ে যাবেন। সামনে পরীক্ষা। আবার খুব গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টও আসছে। সবাই তাকিয়ে আছে অ্যাব্রাহামের দিকে। এই চাপ সে আর নিতে পারছে না।
জ্যাকসন কিন্তু ছাত্রকে কোনো লম্বা বক্তৃতা শোনালেন না। উপদেশ দিলেন না। বরং একটা অদ্ভুত অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন। বললেন, ‘তুমি কাল সকালে একটা পাতিলে পানি আর একটা গাজর নেবে। তারপর পাতিলটা চুলায় বসিয়ে দেবে। পানি গরম করবে। কী হয়, আমাকে জানাবে।’ অ্যাব্রাহাম বাধ্য ছেলের মতো তা-ই করল। পরদিন স্যারকে জানাল, পানি গরম হওয়ার পর গাজরটা সেদ্ধ হয়ে একদম নরম হয়ে গেছে।
জ্যাকসন এবার আরেকটা অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন। বললেন, ‘এবার তুমি গাজরের বদলে পানিতে একটা ডিম রাখবে। কী হয়, আমাকে জানাবে।’
পরদিন অ্যাব্রাহাম জানাল, পানির গরমে ডিমটা সেদ্ধ হয়ে শক্ত হয়ে গেছে।
স্যার বললেন, ‘তুমি এবার পানিতে এক চামচ কফির দানা দেবে। দেখবে কী হয়।’ অ্যাব্রাহাম তা-ই করল। পরদিন জানাল, যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। কফি পানির সঙ্গে মিশে গেছে।
স্যার লম্বা দম নিয়ে বললেন, ‘শোনো, তুমি যখন চারপাশ থেকে চাপ অনুভব করবে, তখন চাইলে গাজরের মতো নরম হয়ে যেতে পারো, কিংবা ডিমের মতো শক্ত হতে পারো। মনে মনে বলতে পারো, “তোমরা আমার ওপর চাপ দিচ্ছ? ঠিক আছে, আমিও শক্ত হয়ে থাকব।” তাতে কিন্তু তোমার কষ্টই বাড়বে। তোমাকে যা করতে হবে, সেটা হলো কফির দানার মতো আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। খেয়াল করে দেখো, গাজর বা ডিমের ক্ষেত্রে কিন্তু পানির কোনো পরিবর্তন হয়নি। গাজর নরম হয়ে গেছে, ডিম শক্ত হয়েছে। কিন্তু কফির দানা তার চারপাশ বদলে ফেলেছে। কফির ক্ষেত্রে পানিটা আর শুধু পানি নেই।’
মাল্টন্যাশনালের এক এম্লয়ি যোগাযোগ করেছিলেন আমার সাথে। তার কোম্পানিটি আমেরিকান, প্রোডাক্ট সাপ্লাই হয় ভারত থেকে। গত সাত মাসে ভারত থেকে তাদের প্রোডাক্ট আসতে সমস্যা হচ্ছে আর এবার আমেরিকার পট পরিবর্তনের পর তার কোস্পানী বিশ্বব্যাপী কর্মী ছাটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার প্রভাব নিশ্চিতভাবেই আমাদের দেশের উপর পড়বে। কি করা যায় সেটা নিয়েই তিনি খুবই চিন্তিত।
ডেমন ওয়েস্ট ও জন গর্ডনের লেখা দ্য কফি বিন: আ সিম্পল লেসন টু ক্রিয়েট পজেটিভ চেঞ্জ বইটি থেকে আমি তাকে পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করলাম। গল্পটা যারা জানেন না তাদের জন্যই আবার শেয়ার করলাম। যদিও জানি, গল্পটা হয়ত তাকে কিছুদিনের মতো মটিভেশন দিবে কিন্ত সমস্যার সমাধান করবে না। তবে অস্হির সময়ে নিজে মটিভেটেড থেকে অন্যকে মটিভেটেড রাখাই "কফি বিন এটিটিউড"।