
02/07/2025
ধরা যাক তার নাম আফরিন।
পরিচয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওরিয়েন্টেশনের দিনই চোখে পড়েছিলো। না পড়ে অবশ্য উপায়ও নেই, কারণ এরকম সুন্দ্রী মেয়ে সচরাচর চোখে পড়ে না। যেসব মেয়ে ব্রি সেবন করে, তাদের সাথে পরিচিত হতে সময় বেশি লাগে না। বটতলার নিচে ব্রি সেবন করতে করতে একদিন প্রথম কথা হয় ওর সাথে। সেদিনই বুঝে ফেললাম, সুন্দ্রী ও মাথায় বু্দ্ধিঅলা মেয়ে এই দুনিয়ার এক অতীব দুর্লভ সংমিশ্রণ। কারণ এই মেয়ে শুধু দেখতেই সুন্দ্রী, মাথায় বুদ্ধি-সুদ্ধি বা স্মার্টনেসের কোনো বালাই নেই।
আফরিন দেখতে সুন্দ্রী, পরিবার ভালো, অথচ সারাটাজীবন সে প্রেম করলো দুনিয়ার যাবতীয় ছ্যাছড়া পোলার সাথে। শুধু যেনতেন ছ্যাছড়া পোলা না; এরকম ছ্যাছড়া পোলা খুঁজে বের করাও একটা কষ্টসাধ্য কাজ। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার তিনমাস পর ও একদিন কানতে কানতে কইলো, দোস্ত আমার ব্রেকআপ। কারণ কি? কারণ যেই পোলার সাথে প্রেম করতো, সেই পোলা বিবাহিত। বউ ইটালিতে থাকে। দেশে আসছিলো কি এক কামে জানি। এক বছরের মতো ছিলো। এই এক বছরের বোরডম কাটাইতে সে আফরিনের সাথে প্রেম করসে। সারাজীবন মেয়েদের ক্ষেত্রে এসব স্বামী বিদেশ কেস শুনসি, সেদিন বুঝলাম পোলারাও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বিশেষ করে পানকির খোলারা সাফল্যের একদম শীর্ষে অবস্থান করছে।
এই ব্রেকআপের পর ওর সাথে সম্পর্কটা একটু জমলো। বেশ প্রেম প্রেম ভাব দেখাইলো কয়দিন। একদিন বনানীতে একটা ইনডোর কনসার্টে গেসিলাম ওর সাথে। সেদিন নিজে থেইকা কিসও করলো। এক সপ্তাহ পর কয় দোস্ত আম ইন লাভ। এইবার পোলা কে? দেইখা আগেরটাও চেয়েও ছ্যাছড়া লাগলো। বাসের হেল্পাররা যেমন তাপ্পি মারা জিন্স পইরা কাপড়ের বেল্ট একটু খানি নিচে ঝুলায় রাখে, সেরকম ফ্যাশন জ্ঞান সম্পন্ন এক পোলা। কয়দিন পর দেখি আমার সাথে কথা কয় না। কারণ জিগাইলাম, কিছুও কয়ও না। পরে আরেক বান্ধবী কইলো, ওর বয়ফ্রেন্ড দুনিয়ার যাবতীয় পোলার সাথে ওর কথা বার্তা বন্ধ কইরা দিসে। খুবই অ্যাবিউসিভ পোলা। মারামারি করে। এইটার সাথে প্রেম টিকলো আট মাস। হয়তো আরও কিছুদিন চলতো, কিন্তু তার আগেই পোলা জেলে গেলো। কারণ সে বিশিষ্ট গুটি ব্যবসায়ী।
তারপর আবার আমার কাছে আসা। রাতে ফেইসবুকে উত্তেজনামূলক চ্যাট। ফোনে ফিসফাস। সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসের চিপা চাপায় যৎসামান্য হাতাহাতি, তারপর একদিন জানলাম তার নতুন বয়ফ্রেন্ড হইসে। মাশআল্লাহ এই পোলা আগেরটাও চেয়েও কয়েক ডিগ্রি উপরে। কমলাপুরের লোকাল মাস্তান টাইপ। চুলে চল্লিশ টাকা দামের সস্তা সোনালি কিসিমের রং। নখে নেইলপলিশ। এইটারে দেইখাই আমার শরীর নাড়া দিয়ে উঠলো। কারণ এই টাইপের পোলারা কমলাপুরের নষ্ট বগীর ভিতর সস্তা গুটি সেবন কইরা উত্তেজিত হয়ে যায়। ওদের বাজেট থাকে একশ টাকা। এই একশ টাকার মধ্যেই ওরা ইয়ে খুঁজে লাগালাগি করে। মাঝেমধ্যে দামাদামি করে আবার বিশ টাকা কমায়াও ফেলে। এমন ফকিন্নি কিসিমের এক পোলা আফরিনের মতো হট ও সুন্দ্রীর সাথে লদকা লদকি করবে?
প্রচন্ড ফেডআপ হয়ে ওর সাথে কথা কওয়াই বন্ধ কইরা দিলাম। ততদিনে আমাদের দেশে ফ্রন্ট ক্যামেরার জোয়ার শুরু হইসে। সেন্ড নুডস তখন গ্লোবাল কালচার। এই ক্ষতির মাঝে দিয়া আমার একটু লাভও হইলো, কারণ আফরিন ওর বয়ফ্রেন্ডকে পাঠানোর জন্য যেসব নুডস তুলতো, মাঝে মাঝে আমাকে সেগুলো পাঠায় বলতো, দেখতো ক্যামন? আমি উত্তেজিত হওয়ার বদলে হতাশ হয়ে যাইতাম। এরেই মনেহয় কয়, লাখ টাকার বাগান খায় দুই টাকার ছাগলে!
এই পোলার সাথে ওর প্রেম চললো দীর্ঘদিন। এলাকায় চান্দার টাকার ভাগাভাগি নিয়া সেই পোলার এক ফ্রেন্ড মার্ডার হইলো। ছেলের বাপ ছেলেরে দুবাই পাঠায় দিলো। আফরিন হয়ে গেলো লোনলি। ততদিনে আমি বুইঝা ফালাইসি, যে মানুষের অনেক বিচিত্র রকমের ফেটিশ থাকে। আফরিনের ফেটিশ হচ্ছে এই টাইপের ফকিন্নির পোলাদের সাথে লদকা লদকি করা।
এই ব্রেকাপের পর আমার সাথে একবার ভালো লেভেলের মেকআউট হইলো। লদকা-লদকি করার জন দুইজন রুম টুম খোঁজা শুরু করসি, হঠাৎ দেখি ওর খবর নাই। খোঁজ নিয়া জানলাম ওর আবার প্রেম হইসে। পোলা হুজুর কিসিমের। বাবা মসজিদের ইমাম বা এই টাইপ কিছু। ছেলে সেখানে পার্ট টাইম মোয়াজ্জিন। শুইনা আমার মাথামুথা আউলা। পরে খোঁজ নিয়া দেখি ঘটনা আসলেই সত্য। আমার বান্ধবী আফরিন এবার পাল্টায় গেলো। সে ফেইসবুকে নাই। ইন্সটায় নাই। কোথাও নাই। প্রায় সাত মাস পর একদিন ম্যাসেজ পাঠায় জানাইলো, সে আলোর পথে গেছে। আমি মনে মনে খুশি হইলাম। কইলাম বেস্ট অব লাক।
এরপর ভার্সিটি থেকে পাশ করছি। চাকরিতে ঢুকসি। ওর আর খবর টবর নেয়া হয়নাই। প্রায় দুই বছর পর গতকাল হঠাৎ সে ইন্সটাগ্রামে নক দিলো। জানালো, তাদের প্রেম এখনো আছে। বিয়ের কথা বললেই নাকি ছেলে চেতে যায়। বিয়ের আগে লদকা-লদকি ধর্ম মোতাবেক নিষিদ্ধ হলেও সেই ছেলে সম্পূর্ণ ধর্মীয় কায়দায় লদকা লদকি করে। রুমডেটের আগে অযু করে। আতর লাগায়। বাতি নিভায়। ঘর অন্ধকার করে। কিসব দোয়াকালাম পইড়া তারপর নাকি কাম শুরু করে। কিন্তু ভুলেও পুসির দিকে তাকায় না। কারণ ওইখানে দৃষ্টি দেওয়া নিয়ে নাকি হাদিসে নিষেধাজ্ঞা আছে। এবং রুমডেট শেষে নাকি গোসল টোসল কইরা আবার ওরে নিয়া দুই রাকাত নফল নামাজও পড়ে। কথা শুইনা আমি পুরা পাগ্লায় গেলাম। এইরকম সাইকো কিসিমের পাগল আমার বাপের জন্মেও দেখিনাই ভাই।
এই ঘটনা থেকে আমরা এই শিক্ষা পাই যে, মেয়েরা শুধু ছেলেদের দেহ চায়। পাগল, সাইকো কিংবা ফকিন্নির পোলা হলেও কোনো সমস্যা নেই।
বিঃ দ্রঃ পুরুষের সবচেয়ে বড় শত্রু তার নিজের নুনু।